বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী

চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে অনেকেই নাজেহাল। নারী-পুরুষ উভয়ই এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। প্রতি দিন গড়ে ৫০ থেকে ১০০টি চুল এমনিতেই পড়ে। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় চুল পড়লে সেটা কিন্তু চিন্তার বিষয় হতে পারে। নারী সৌন্দর্যের একটি অন্যতম অংশ মাথার চুল। মেয়েদের মাথার চুল পড়া একটা অনন্তকালীন সমস্যাও। মহিলাদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন, শ্বশুরবাড়ি এসে চুল পড়া শুরু হয়েছে, বাবার বাড়িতে ভালো ছিলাম। আবার কলকাতার মেয়ে মালদায় বিয়ে হয়েছে, তাঁর ধারণা মালদার আসার পর থেকেই তাঁর বেশি করে চুল পড়ে যাচ্ছে। আবার মালদার মেয়ে কলকাতায় এসে তাঁর মনে হচ্ছে, মাথার চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে। এরকম একটি মজার উদাহরণ দিলাম এই কারণে যে, জায়গা না স্থান বদলের সঙ্গে চুল পড়ে যাওয়া বা পাতলা হয়ে যাওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে, কোথাও কোথাও জলে বেশি মাত্রার আয়রন থাকলে হয় তো কারও কারও এরকম সমস্যা হয়। যদিও জলের আয়রন নেই এমন জায়গা খুঁজে বার করা খুব কঠিন ব্যাপার। তাই জায়গা বা জলের দোষ দিয়ে লাভ নেই, কারণ চুল পড়া বা পাতলা হয়ে যাওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে।
বিজ্ঞানসম্মত ভাবে দেখতে হবে ঠিক কেন চুল পড়ছে? আগেই বলেছি, চুল পড়ার অনেক কারণ আছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য—
বংশগত কারণেও চুল পড়তে পারে। সাধারণত দেখা যায় ২২ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে মাথার চুল ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। ফলে যাঁর ২২ বছর বয়সের আগেই বিয়ে হয়েছে, তাঁর ধারণা শ্বশুরবাড়ি এসেই বোধহয় চুল পড়তে শুরু করেছে। তাই পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে চুল পড়ার সঙ্গে তাঁর বংশগত কারণে টাকের কোনও সম্পর্ক আছে কিনা।
অনেক সময় শরীরে আয়রণের ঘাটতির জন্যও চুল পড়তে পারে।
থাইরয়েডের সমস্যা থাকলেও এরকম হয়।
শরীরে হরমোনের পরিমাণ কমবেশি হলেও এমনটা হতে পারে।
অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, ধূমপান এবং ওজন কমানোর জন্য অতিরিক্ত ডায়েটও চুল পড়ার কারণ হতে পারে।
অতিরিক্ত কাজের চাপেও চুল পড়ে।
অনেক সময় সন্তান সামলে নিজের যত্ন নেওয়ার সময় হয় না। সেক্ষেত্রে হয় তো সঠিক সময়ে শ্যাম্পু করা হচ্ছে না। অনেকের ধারণা শ্যাম্পু করলে চুল বেশি ওঠে। এখানে বলে রাখি, গায়ে সাবান মাখলে যেমন গায়ের লোম পড়ে যায় না, তেমনি শ্যাম্পু করলেও চুল পড়ে না। সুতরাং এই ধারণা ভ্রান্ত।
অনেক সময় রক্তাল্পতা এবং পুষ্টিহীনতার কারণেও চুল পড়ে।
মহিলাদের ক্ষেত্রে মেনোপজের পর অ্যান্ড্রোজেনেক হরমোন বেড়ে গিয়েও অনেক সময় চুল পড়া শুরু হয়। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো, পুরুষদের মাথায় টাক পড়ার মূলেও হরমোনের ভারসাম্যহীনতা অন্যতম দায়ী।
বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, প্রোটিন, আয়রনের অভাবেও চুল পড়ে।
এছাড়াও মেয়েদের পিসিওডি-র বা মাসিকের সমস্যা থাকলেও চুল পড়তে পারে।
আবার অনেক ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্যও কারও কারও মাথা থেকে চুল পড়তে পারে।

কাজেই কেন চুল পড়ছে, তার বহু কারণ থাকতে পারে। তাই চুল পড়ার সমস্যা থাকলে ত্বক বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়াই ভালো। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, কারা চুলের চিকিৎসা করেন? ত্বক বিশেষজ্ঞরাই চুলের চিকিৎসা করে থাকেন। সুতরাং ভালো ত্বক বিশেষজ্ঞকে দেখিয়ে তাঁর পরামর্শ মতো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তবেই ওষুধ খাওয়াই উচিত। নিজে থেকে নানা রকমের তেল, লোশন, বিভিন্ন গাছের পাতার নির্যাশ ইত্যাদি না মাখাই উচিত।

যোগাযোগ: ৯৮৩১৫৮৫০৮০, ৯৮৩০৩৮২৪৯৮

Skip to content