বুধবার ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


হ্যাঁ আপনারা তাঁকে চেনেন। আলাপ নেই কিন্তু দেখেছেন বিলক্ষণ! একজন বয়স্ক মানুষ দাড়িগোঁফ কামানো, কামানো মাথায় কাঁচাপাকা মোটা চৈতন, পরনে কখনও সুতির পাজামা পাঞ্জাবী কখনও হাফশার্ট প্যান্ট। বয়স বাড়লেও শরীরের গড়ন টানটান আঁটোসাটো। গ্রীষ্মের দিনে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে একখানা ভাঁজকরা টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে। কখনও কখনও, হাতে একটি ছাতা, জলের বোতল, বা বর্ষাকালে বর্ষাতি পরে। শীতকালে হাফসোয়েটার বা সাধারণ একটা তুষের চাদর গায়ে আপনারা তাঁকে বড় বড় রেল স্টেশন, বাস ডিপো, মল, পার্কের বাইরে দেখেছেন। না, তিনি কোনও দাঁতের মাজন বা বাতের ব্যাথা কমানোর ওষুধ বিক্রি করেন না বা কোন ধর্মীয় প্রচারও করেন না। তিনি কখন কোনও কথাই বলেন না।

তবে ওই ভাঁজকরা টেবিলে বা পাশের স্ট্যান্ডিতে লাগানো মেয়েদের ওপর ধর্ষণ-যৌন ও সামাজিক নির্যাতনের বিস্তারিত তথ্যসম্বলিত নানান পোস্টারগুলো অনেক বেশি কথা বলে। অবাক করে ভিড়করা মানুষজনকে। কেউ কখনও এমন শোনেনি, দেখেনি। রাজনৈতিক দল বা মোমবাতি হাতে নিয়ে প্রতিবাদী বিশিষ্টেরা বা সমাজকর্মীরা, তখনই কথা বলেন যখন এমন কোনও মর্মান্তিক ঘটনা যা নিয়ে টিভি বা সংবাদপত্রে তোলপাড় হয়। মোদ্দা কথা হেডলাইন হয়। কিন্তু দিনের পর দিন, মাসের পর মাস শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা তুচ্ছ করে একজন বৃদ্ধ কেন এ সমাজে মেয়েদের ওপর ঘটে যাওয়া লাঞ্ছনা নিয়ে এই নিরবিচ্ছিন্ন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন? আমাদের সমাজের কাছে এসব তো রোজগার ঘটে যাওয়া গা-সওয়া ঘটনা। মেয়েদের লাঞ্ছনা অপমান শারীরিক নির্যাতন ধর্ষণ বা গুমখুনের ঘটনা প্রায় রোজই ঘটছে। আমাদের শহরে বা আমাদের রাজ্যের কোথাও! বা আমাদের পাশের রাজ্যে আমাদের দেশে কোথাও না কোথাও। আমরা তো রোজই টিভিতে বা কাগজে শুনছি দেখছি বা পড়ছি আবার চ্যানেল পালটে বা খবরের কাগজের পাতা উলটে অন্যকোথা অন্য কোনওখানে চলেও যাচ্ছি। কিন্তু এই বৃদ্ধের উদ্দেশ্য কী? তার অতীতই বা কী??

খুব কম লোকেই বৃদ্ধকে কখনও-সখনও নিজের সাথে কথা বলতে দেখেছে তখন যেন নিজের বিবেকের সঙ্গে কথা বলেন বৃদ্ধ। বলতে থাকেন কেন এসব প্রসঙ্গ মানুষের সামনে তুলে ধরাটা জরুরি, ভীষণ ভীষণ জরুরি!! আবার একসময় তিনি নিজেকেই যেন বলছেন এটা পাগলামো-এ সমাজের কোনও বদল হবে না!! তিনি নিজেই আবার তার পালটা উত্তর দিচ্ছেন, বদল হবে, নিশ্চয়ই হবে। তাই এ লড়াই দরকার আমাদের সমাজের সামনে এই বিষয় এইসব তথ্য প্রকাশ করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ কেউ ধর্ষণ-যৌন নির্যাতন নিয়ে প্রকাশ্যে মহিলাদের সপক্ষে কথা বলতে চায় না। মানবিকতার নামে অভিযুক্তদের, ধর্ম বা বয়স বা যথার্থ প্রমাণের অভাবে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। আসামিদের মুক্ত করার জন্য ব্যয়বহুল আইনজ্ঞরা আদালতে কৌশলগত লড়াই চালাচ্ছেন, মাসের পর মাস বছরের পর বছর।
ভাঁজ করা টেবিলে এবং স্ট্যান্ডিতে বেশ কয়েকটি পোস্টারে নানাবয়সী মহিলাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া অপরাধের তথ্য রয়েছে, রয়েছে আমাদের দেশে হরিয়ানা থেকে পশ্চিমবঙ্গ বা দিল্লি থেকে কেরল পর্যন্ত নারীনিগ্রহের পরিস্থিতি সম্পর্কিত নানান কিছু, গ্রাফ-প্রতি ঘন্টায় ধর্ষণের প্রামাণ্য পরিসংখ্যান। ধর্ষণে এদেশের রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রীদের জড়িত থাকার খবরাখবর, শিশুধর্ষণ, গণধর্ষণ ও অভিযুক্ত অপরাধীদের শাস্তি না পেয়ে বেকসুর ছাড়া পাওয়ার সংখ্যাতত্ত্ব। সব দেখা যায় তার এই প্রতিদিনের নিঃশব্দ একক প্রতিবাদে। কেবলমাত্র একটি পোস্টারে এক আবেদনে বলা হয়েছে যেকোনও ধর্ষণই অত্যন্ত দণ্ডনীয় অপরাধ এবং যেকোন বয়সের মহিলাদের ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নের জন্য মৃত্যুদন্ডই এই জাতীয় জঘন্য অপরাধীর একমাত্র দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। তা না হলে এই রোগ সারবে না এবং গোটা সমাজের গোটা জাতির ক্ষয়ের কারণহবে।

কেন্দ্রীয় সরকার বারোবছর বা তার চেয়ে কম বয়সী মেয়েদের নির্যাতনের জন্য অপরাধীদের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন–কিন্তু যে কোনও বয়সের মহিলাদের বিরুদ্ধে সমস্ত অপরাধীদের জন্য একই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা উচিত। এই আবেদনে আরও দাবি জানানো হয়েছে এধরণের মামলা বিশেষ ক্ষমতার আদালতেই হওয়া উচিত। যেখানে কোনও পুরুষ নয় কেবলমাত্র মহিলা বিচারকই গোপনে শুনবেন ভুক্তভোগীর বিস্তারিত বয়ান। পোস্টারটিতে বলা হয়েছে এ বিষয়ে ভারতের মাননীয় রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে লেখা এক আবেদনপত্র পাঠানো হবে। তাতে স্বাক্ষর করার জন্যে সকলশ্রেণির মানুষের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে

আবেদনপত্রে আশা করা হয়েছে কলকাতা সহরে প্রায় দেড় কোটিরও বেশি মানুষের বাস। গ্রাম ও শহরতলি থেকে সপ্তাহের প্রতিটি কাজের দিনে লোকাল ট্রেনে প্রায় ৩৫ লাখ ডেলিপ্যাসেঞ্জার আসেন- এছাড়া পাব্লিক প্রাইভেট বাসে অটোরিকশা, ট্যাক্সি বা প্রাইভেট গাড়িতে আসেন অফিসযাত্রী ব্যবসায়ী কলেজপড়ুয়া। বা মালপত্র কিনতে বা বেচতে ট্রাকে ম্যাটাডোরে সব মিলিয়ে আরো কয়েকলক্ষ মানুষ রোজ আসেন। পুরুষোত্তম ঝা তাদের মধ্যে মাত্র দশ হাজার মানুষের স্বাক্ষর পেলেই নিজে যাবেন দিল্লীর রাষ্ট্রপতি ভবনে সে আবেদন জমা করতে। কিন্তু পাঁচটি বছর কেটে গেছে মাত্র দশ হাজার মানুষের স্বাক্ষর এখনও তিনি পাননি। কিন্তু ঝা-জি হারতে জানেন না।
আরও পড়ুন:

গা ছমছমে ভৌতিক উপন্যাস: মিস মোহিনীর মায়া, পর্ব-২৫: আফিফা কি ভয়ংকর ভাবে তার প্রতিশোধ নিল

কলকাতার পথ-হেঁশেল, পর্ব-১০: রাজ ও স্প্যানিশ

কিন্তু কে এই পুরুষোত্তম ঝা? কে এই জেদি বৃদ্ধ মানুষটি? কেন তাঁর এই জেদ? তাঁর জীবনকাহিনি আমাদের জানতে হবে। ১৯৫৩ সাল থেকে আজ অবধি বাংলার আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে অস্তিত্ব টিকিয়ে বেঁচে থাকা এক আমজনতার এ এক অদ্ভুত জীবনকথা।

পুরুষোত্তম নরোত্তম ঝা মৈথিলী ব্রাহ্মণ পরিবারের মানুষ। তবে গত তিন প্রজন্ম ধরে তাঁদের হুগলি জেলার তারকেশ্বরে বসবাস। দাদা দেবোত্তম ও তারকেশ্বর শিবমন্দিরের পুরোহিত হয়েছিলেন। বাবা নরোত্তমও এখানে এই হুগলিতেই জন্মেছেন। তাঁর বাবা দ্বিজোত্তমের রীতি অনুসরণে নরোত্তম প্রধান মন্দিরের পুরোহিত হয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৫৩ সালে জন্মগ্রহণ করা পুরুষোত্তম বড় দুই দাদাদের মতো পুরোহিত হলেন না- প্রাইমারি সেকেন্ডারি স্কুলে অন্যান্য স্থানীয় বাসিন্দাদের মতো জীবন শুরু করেছিলেন, মাথার মোটা চৈতন বা টিকিটা বাদ দিলে তিনি ছিলেন পাড়ার আর পাঁচটা ছেলের মতো।

পাড়ায় পাড়ায় ফুটবল খেলা অলিগলি চিরে দামোদর নদীর ধার ধরে ধরে সাইকেল চালিয়ে যাওয়া বা বন্ধুদের সঙ্গে সূর্যাস্ত থেকে ঝুপ করে নেমে আসা সন্ধে ছুঁয়ে দেখা। সে বড় সুখের সময় ছিল। বাবা কাকা মা কাকিমা দাদা বৌদিরা রুপোলি পর্দার উত্তম-সুচিত্রার রোমান্স উপভোগ করছেন, ছেলে-ছোকরারা ফুটবল ম্যাচ। সার্কাস, যাত্রা, মেলা বা দুর্গাপুজো, মহরম, হোলি, ঈদ, গুড ফ্রাইডে, বড়দিন একই উৎসাহ-উদ্দীপনায় সমানভাবে উপভোগ করছে সকলে। সাধারণ মানুষের সমাজ জীবনে বড় একটা রাজনৈতিক প্রভাব বা জটিলতা ছিল না। বড় কোনও দলবাজি, বিচ্ছেদ, বা বাধা ছিল না।
আরও পড়ুন:

অমর শিল্পী তুমি, পর্ব-১১: কার মন ভোলাতে এলে তুমি আজ…

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-১৮: সুন্দরবনে বিচিত্র অবয়বের দেবতা জ্বরাসুর

সময়টা ১৯৬৯ সালে যখন পুরুষোত্তম ক্লাস ইলেভেনের ফাইনাল দেবে । সেটা প্লাস টু সিলেবাসের আগে মানে হায়ারসেকেন্ডারি তখনও আজকের এইচএস নয়। পুরুষোত্তমদের ফাইন্যাল পরীক্ষার ঠিক পরে পরেই হঠাৎ উগ্র রাজনৈতিক বাদপ্রতিবাদ শুরু হল। নকশাল যুগের সূচনার সঙ্গে সঙ্গে গোটা সামাজিক পরিমণ্ডল বদলে গেল। সমাজ বদলানোর স্বপ্ন নিয়ে একদিকে একঝাঁক তরুণ আর তাদের পিছনে এক বিশেষ আদর্শে অনুপ্রাণিত কয়েকজন পরিণত মানুষ। অন্যদিকে কঠিন কঠোর পুলিশ ও প্রশাসন। সেটা বোমা-পাইপগানের যুগ। দুপক্ষের মানুষ মরছে। ধনী ব্যবসায়ী নকশাল আন্দোলন বিরোধী রাজনৈতিক নেতা সরকারী আমলারা একপক্ষের বিচারে ছিলেন বুর্জোয়া আর আন্দোলনকারীদের আক্রমণ হোত তাদের ওপর। অপরদিকে পুলিশের নির্দয় নৃশংস প্রতি-আক্রমণ হত আন্দোলনকারীদের ওপর। পুলিশের বিচারে তারা ক্রিমিনাল অপরাধী। সে যুদ্ধে অনেক সাধারণ মানুষেরও প্রাণ যেত। যারা এই যুদ্ধের কোনও পক্ষেই নেই। এভাবেই পুলিশ ফায়ারিঙের মধ্যে একদিন পুরুষোত্তম তার প্রাণের বন্ধু সন্টুকে হারালো।

ভরসন্ধেবেলা সন্টু সাইকেলে করে লন্ড্রির থেকে বাড়িতে কাচানো জামাকাপড় আনছিল। সন্টুদের বাড়ির গলিটা থানার পাশ দিয়ে। আচমকা পরপর দুটো বোমা পড়ল থানার কম্পাউন্ডে। সম্ভবত সন্টু কিছু বোঝার আগেই থানা থেকে ফায়ারিং শুরু হল। আশেপাশে যারা ছিল তারা দেখল হতভম্ব ছেলেটা ভয়ে সাইকেল থেকে নেমে পড়েছে কিন্তু নড়তে পারেনি। বুকের কাছে ধরে থাকা বাবার সাদা পাঞ্জাবি-শার্টে আস্তে আস্তে তাজা রক্তের টকটকে লাল রং ছড়িয়ে পড়ছে হাত থেকে ছেড়ে যাওয়া সাইকেলটা একটু একটু করে মাটিতে পড়ছে।

কিছুদিন পর রেজাল্ট বের হল। তখন পরীক্ষার রেজাল্ট অনলাইনে পাবার কথা স্বপ্নেও ভাবা যেত না, তখন গেজেট বের হোত। উত্সাহী বেকার ছেলেপুলেরা কিছু বাড়তি রোজগারের আশায় রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে গেজেট কিনতে ভোরবালা ছুটে আসত এই কলকাতা শহরে। নিজের নিজের এলাকায় ফিরতেই ছাত্রছাত্রী তাদের বাবা কাকা দাদা-দিদিরা তাদের ছেঁকে ধরতেন। সাধারণভাবে পাশ করলে তারা সামান্য টাকা নিয়েই রেজাল্ট জানাতো। রেজাল্ট ভালো বা খুব ভাল হলে তাদের কাছ থেকে তারা কিছু বেশি টাকা রোজগার করতো। পুরুষোত্তম সেকেন্ড ডিভিশনে পাশ করেছিল। যুক্তিসঙ্গত ভাবে গেজেটওলারা ৫ টাকা দিতে বলেছিলেন। তবে পুরুকে আরও একটি ফলাফল জানতে হয়েছিল। ঠিক তার পরের রোল নম্বরটাই ছিল সন্টুর-ফার্স্ট ডিভিশন। গেজেটের মালিক সন্টুর জন্যে দশ টাকা চাইল। ভিড় বাড়ছে। কিন্তু হতভম্ব পুরুষোত্তম।
আরও পড়ুন:

হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-২০: অক্টোবর মাসের ষোলো, কী হল! কী হল?

ইতিহাস কথা কও, পর্ব-১৪: মধুপুর ধাম, বাণেশ্বর মন্দির ও ধলুয়াবাড়ি সিদ্ধ নাথ শিবমন্দির

তার কাছে একটা দশটাকার নোট। সেটা দিয়ে বলেছিল খানিকপরে এসে বাকি পাঁচটাকা দিয়ে যাবে। ছেলেটি পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাকি পাঁচটাকার ছাড় দিয়েছিল। সে পরামর্শ দিয়েছিল সে যেন তাঁর ফার্স্ট ডিভিশন পাওয়া বন্ধুর কাছ থেকে এই দশটাকা নিয়ে নেয়। তাহলে তার রেজাল্টের পাঁচটা টাকা ফ্রি হয়ে যাবে। হতবাক পুরুষোত্তম জানায় তার ফার্স্টডিভিশন পাওয়া বন্ধু সন্টু আর নেই। পরীক্ষার ঠিক পরেই পুলিশের ফায়ারিঙের মধ্যে পড়ে গিয়ে সন্টু মারা গেছে। গেজেটের ছেলেটির কথা বন্ধ হয়ে যায়। হাতের দশটা টাকা পুরুষোত্তমকে ফিরিয়ে দিয়ে ছেলেটি মুখ লুকিয়ে ভিড়ে মিশে যায়।

কলেজে Pre-University কোর্সে ভর্তি হল পুরুষোত্তম।
১৯৭১ সাল। ভারত প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের মানবতা ও গণতান্ত্রিক অধিকার সংরক্ষণ ও সুরক্ষার জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধঘোষণা করল। পাকিস্তানি শাসকদের ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে নেমেছিল। ১লা ডিসেম্বর পাকিস্তানিবাহিনী ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করল। তখন খুব চালু এমপ্লয়মেন্ট নিউজ। পুরুষোত্তম দেখল একটা খবর। ফোর্ট উইলিয়মে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ভর্তির জন্যে স্ক্রিনিং হবে মাত্র দুদিন পর। ১৯৭১ আজকের ডিজিটাল যুগ ছিল না, ইন্সট্যান্ট পাসপোর্ট ছবি তোলার উপায় নেই। আজকের মতো কোনও ফটোকপিয়ার মেশিন নেই। তাই দুদিনের মধ্যে সমস্তকাগজপত্র গুছিয়ে নেওয়া একটা সাংঘাতিক ব্যাপার ছিল।

পুরুষোত্তম খেলাধুলোয় বরাবর তুখোড়। মোটামুটি একজন অ্যাথলিটের মতোই ফিট ছোটবয়সে কাবাডি, কৈশোরে ফুটবল যৌবনে নিয়মিত বডি বিল্ডিং এবং নিয়মিত যোগব্যায়াম। স্বাভাবিকভাবে ওজন উচ্চতা ১৬০০ মিটার দৌড়ের মাপকাঠি সহজেই টপকে গেলো পুরুষোত্তম। প্রি-ইউনিভার্সিটি ছাত্র হিসাবে লেখা পরীক্ষাতেও অসুবিধে হল না। মৈথিলী ব্রাহ্মণ পরিবারের পুরুষোত্তম পি এন ঝা হিসেবে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিল। —চলবে।
* বসুন্ধরা এবং… দ্বিতীয় খণ্ড (Basundhara Ebong-Novel Part-2) : জিৎ সত্রাগ্নি (Jeet Satragni) বাংলা শিল্প-সংস্কৃতি জগতে এক পরিচিত নাম। দূরদর্শন সংবাদপাঠক, ভাষ্যকার, কাহিনিকার, টেলিভিশন ধারাবাহিক, টেলিছবি ও ফিচার ফিল্মের চিত্রনাট্যকার, নাট্যকার। উপন্যাস লেখার আগে জিৎ রেডিয়ো নাটক এবং মঞ্চনাটক লিখেছেন। প্রকাশিত হয়েছে ‘জিৎ সত্রাগ্নি’র নাট্য সংকলন’, উপন্যাস ‘পূর্বা আসছে’ ও ‘বসুন্ধরা এবং…(১ম খণ্ড)’।

Skip to content