শনিবার ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫


নতুন বছরে সাফল্য দিয়ে শুরু করল ইসরো। এ বার ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর স্যাটেলাইট এক্সপোস্যাট ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর খুঁজতে পাড়ি দিল মহাকাশে। এটিই দেশের প্রথম এক্স-রে পোলারিমিটার স্যাটেলাইট। আর বিশ্বে দ্বিতীয়। এর আগে শুধু নাসা এই ধরনের কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠিয়েছে।

ইসরোর স্যাটেলাইট এক্সপোস্যাট মহাকাশে কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান ও পর্যবেক্ষণ করবে বলে ইসরো জানিয়েছে। পাশাপাশি ‘এক্সপোস্যাটের’ তালিকায় রয়েছে উজ্জ্বলতম ৫০টি শক্তির উৎস পর্যবেক্ষণ। ইসরোর বিজ্ঞানীরা এই কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে মহাকাশের নিউট্রন স্টারগুলিকেও পর্যবেক্ষণ করবেন।
স্যাটেলাইট এক্সপোস্যাট উৎক্ষেপণের জন্য বছরের প্রথম দিনটিকেই বেছে নেয় ইসরো। শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস রিসার্চ সেন্টার থেকে আজ সোমবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে সফল উৎক্ষেপণ হয়। স্যাটেলাইট এক্সপোস্যাট পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিক্ল বা পিএসএলভি-র পিঠে চেপে তার যাত্রা শুরু করে। উল্লেখ্য, এটি পিএসএলভি-র ৬০তম মহাকাশ যাত্রা। এক্স হ্যান্ডেলে ইসরোর তাদের এই সাফল্যের কথা ঘোষণা করেছে। এখন এক্সপোস্যাটক আপাতত থাকবে পৃথিবী থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দূরের কক্ষপথে।
আরও পড়ুন:

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-২৯: সুন্দরবনের জনপ্রিয়তম পীর—পীর গোরাচাঁদ

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৫২: বইয়ের সব কপি কবির নির্দেশে বাজার থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল

স্যাটেলাইট এক্সপোস্যাট মহাকাশে পাঁচ বছর থাকবে। অর্থাৎ এর আয়ু পাঁচ বছর। এই মিশনটিতে মোট ২৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এই কৃত্রিম উপগ্রহ পৃথিবীর উপরে নিচের কক্ষপথেই প্রদক্ষিণ করবে বলে জানানো হয়েছে। স্যাটেলাইট এক্সপোস্যাট ভূমি থেকে সর্বোচ্চ ৫০০-৭০০ কিলোমিটার উচ্চতায় থাকবে।

এই কৃত্রিম উপগ্রহে মোট দু’টি পেলোড রয়েছে। একটি পোলিক্স (পোলারিমিটার ইনস্ট্রুমেন্ট ইন এক্স-রে)। আর অন্যটি হল এক্সস্পেক্ট (এক্স-রে স্পেকট্রোস্কোপি অ্যান্ড টাইমিং)। পোলিক্স এবং এক্সস্পেক্ট পেলোড দুটি যৌথ ভাবে তৈরি করেছে রমন রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং ইউআর রাও স্যাটেলাইট সেন্টার।

আরও পড়ুন:

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৫: ঠাকুরবাড়ির দখিনা বাতাস— জ্ঞানদানন্দিনী দেবী

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-২৬: বৃন্দাবনে জননী সারদা

জানা গিয়েছে, এক্সপোস্যাট মহাকাশে ঘুরে ঘরে এক্স-রশ্মির উৎস খুঁজার কাজ চালাবে। কৃষ্ণগহ্বরের উপস্থিতি, সন্ধান, উৎস-সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করবে এই স্যাটেলাইট। এ ভাবে কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কে গবেষণায় নতুন দিক দেখাতে চলেছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। মহাকাশে এক্স রশ্মির উৎস খুঁজবে এক্সপোস্যাট। এর মাধ্যমে কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কে গবেষণায় নতুন দিশা পেতে চলেছে ইসরো। কৃষ্ণগহ্বরের উপস্থিতি, সন্ধান, উৎস প্রভৃতি নানা তথ্য জোগাড় করবে এই কৃত্রিম উপগ্রহ।

কোনও নক্ষত্র যখন ধ্বংস হয়ে যায়, তখন কৃষ্ণগহ্বর এবং নিউট্রন স্টার সৃষ্টি হয়। ব্রহ্মাণ্ডে সর্বোচ্চ শক্তির মহাকর্ষজ বলের অধিকারি এই কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল। যার সম্পর্কে খোঁজ চালাবে এক্সপোস্যাট। অন্যদিকে, নিউট্রন স্টার তৈরি হয় বেশ কিছু নিউট্রন কণা গাঢ় ঘনত্বে একসঙ্গে হয়ে। নিউট্রন স্টারের ব্যাসার্ধ কমবেশি ৩০ কিলোমিটারের মতো হয়। এই সব নিউট্রন স্টারকেও পর্যবেক্ষণ করবে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর স্যাটেলাইট এক্সপোস্যাট।

Skip to content