শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


চাঁদের আরও কাছাকাছি চন্দ্রযান-৩। ছবি: ইসরো।

আর মাত্র ১৭৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে। ব্যাস, তাহলেই চাঁদে পৌঁছে যাবে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর তৈরি চন্দ্রযান-৩। সোমবার চাঁদের আরও কিছুটা কাছাকাছি পৌঁছয় এই মহাকাশযান। সফল ভাবে চন্দ্রযান-৩ তার কক্ষপথ পরিবর্তন করেছে।

ইসরো এক টুইটে জানায়, সাফল্যের সঙ্গে চন্দ্রযান-৩ আরও একটি কক্ষপথ পরিবর্তন করেছে। এখন চন্দ্রযান-৩ ১৫০ কিমি X ১৭৭ কিমি কক্ষপথে অবস্থান করছে। মহাকাশযানটি এখন চাঁদের টানে তার কক্ষপথে চারপাশে পাক খাচ্ছে। পরের ধাপে আগামী ১৬ অগস্ট সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ চন্দ্রযান-৩ কক্ষপথ পরিবর্তন করবে। এখনও আরও দু’টি কক্ষপথ পেরোনো বাকি রয়েছে। চন্দ্রযান-৩ এর পর ১৫০ কিমি দূরের কক্ষপথে পৌঁছে যাবে।

শেষ গন্তব্য চাঁদ থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরের কক্ষপথ। চন্দ্রযান-৩ সেখান থেকেই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামবে। শেষ ধাপে এসে ধীরে ধীরে গতি কমিয়ে ‘চন্দ্রযান’ চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরের মধ্যে চলে আসবে। কারণ, পৃথিবীর চেয়ে চাঁদের আকর্ষণবল ছয় গুণ কম। এর পরেই আসল পরীক্ষা অপেক্ষা করছে। অনেকটা পাখির পালকের মতো নামবে সে। চার বছর আগে এই পর্যায়ে এসে ইসরোর ‘চন্দ্রযান-২’ ব্যর্থ হয়েছিল।
ইসরো জানিয়েছে, চন্দ্রযান ৩-এর সৌরচালিত ল্যান্ডার বিক্রম আগামী ২৩ বা ২৪ অগস্টের মধ্যে চাঁদের মাটিতে নামতে পারে। সৌরচালিত রোভার প্রজ্ঞান সেখান থেকেই বেরিয়ে চাঁদের মাটিতে নামবে। চাঁদে বিক্রমের মাধ্যমে প্রজ্ঞান কী ভাবে নামবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ল্যান্ডার মডিউল। চাঁদের মাটি থেকে চন্দ্রযান-৩ এর দূরত্ব যখন ৩০ কিমি হবে, তখন অনেকটা পালকের মতো বিক্রম নামতে থাকবে। এই প্রক্রিয়া চলবে ২০ মিনিট ধরে। বিক্রম চাঁদের মাটি ছোঁয়ার পর তার দরজা খুলে যাবে। আর তার পেট থেকে বেরিয়ে আসবে প্রজ্ঞান। গতবার চন্দ্রযান অভিযানে এই ধাপেই সমস্যা দেখা দিয়েছিল।
আরও পড়ুন:

মন্দিরময় উত্তরবঙ্গ, পর্ব-২: ভারতের স্থাপত্যশৈলীতে ভিতরকুঠি টেরাকোটা শিব মন্দিরের অবদান অপরিসীম

পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-২৪: রিমঝিম ঘিরে শাওন…আবার লতা, কিশোর ও পঞ্চমের সেই জাদু

আগামী ২৩ অগস্ট সন্ধ্যা ৫টা ৪৭ মিনিট নাগাদ ল্যান্ডার বিক্রমের রোভার প্রজ্ঞানকে নিয়ে অবতরণ’ (সফট ল্যান্ডিং) করার কথা। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের ‘লঞ্চিং প্যাড’ থেকে গত ১৪ জুলাই দুপুর ২টো ৩৫ মিনিটে সফল উৎক্ষেপণ হয় ‘চন্দ্রযান-৩’-এর। উৎক্ষেপণের ২২ দিন পর চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছেছে চন্দ্রযান-৩।
আরও পড়ুন:

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৬: গার্হস্থ্য জীবনের প্রারম্ভে ভৈরবী ব্রাহ্মণীর আগমন

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৩২: আটার চেয়ে ময়দা ঢের গুণ ভালো?

চাঁদে মানুষহীন মহাকাশযান পাঠানোর ক্ষেত্রে এটি ইসরোর তৃতীয় অভিযান। এর আগে দু’বার ইসরোর অভিযান ব্যর্থ হয়েছে। ইসরো-র পরিকল্পনা অনুযায়ী চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করার কথা ‘চন্দ্রযান-৩’ এর। সফল ভাবে ল্যান্ডার বিক্রম যদি চাঁদের মাটি ছুঁয়ে ফেলে তবেই রোভার প্রজ্ঞানকে অবতরণ করাতে পারে। পুরো পর্ব সফল ভাবে মিটলে ভারতীয় মহাকাশ অভিযানের ইতিহাস অন্য শিখরে পৌঁছবে। সে ক্ষেত্রে আমেরিকা, রাশিয়া, চিনের পরে চতুর্থ দেশ হিসাবে ভারত তালিকায় জায়গা করে নেবে।

আপনার রায়

ইসরোর চন্দ্রযান-৩ কি তৃতীয় বারের এই অভিযানে সাফল্যের স্বাদ পাবে?

Skip to content