বুধবার ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী।

চন্দ্রযান-৩ শেষ পর্যন্ত চাঁদে ল্যান্ডার বিক্রমকে নামাতে পারে কি না, বুধবার সন্ধ্যায় দেশবাসীর চোখ ছিল সেই দিকে। অবশেষে মহাকাশে ইতিহাস তৈরি করেছে ইসরো। এ বার চাঁদে সফল মহাকাশযান অভিযানের করানো দেশের তালিকায় ভারত চলে এসেছে চতুর্থ স্থানে। এর আগে আমেরিকা, রাশিয়া এবং চিন চাঁদে সফল মহাকাশযান অবতরণ করে। এদিকে তালিকায় চতুর্থ স্থান দখল করলেও, চাঁদের দক্ষিণ মেরু আবিষ্কারের কৃতিত্বও পেল ভারতের ইসরো। তবে শুধু চন্দ্রাভিযান নয়, ইসরোর বিজ্ঞানীরা নিঃশব্দে অন্য একটি লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছেন। এখন ইসরোর ভাবনায় চাঁদের সঙ্গে সূর্যও রয়েছে। এই সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই ‘আদিত্য-এল১’ পাড়ি দেবে সূর্যে। এমনটাই জানিয়েছে ইসরো।
ইসরো সূত্রে খবর, প্রথম বার সূর্যে অভিযানের কথা ভাবছে ইসরো। ভারত খুব শীঘ্রই সূর্যের পথে রওনা হবে। প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। রাত-দিন কাজ চলছে। চাঁদের মতো সূর্যের পৃষ্ঠে যেহেতু নামা সম্ভব নয়, তাই উচ্চ প্রযুক্তির ‘আদিত্য-এল১’ মহাকাশযানকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পাঠানো হবে। মহাকাশযান ওই নির্দিষ্ট স্থান (পয়েন্ট) অবধি গিয়ে ঘুরতে থাকবে। ওই পয়েন্টকে ‘ল্যাগরেঞ্জিয়ান পয়েন্ট ১’ বলা হয়। এখানে সূর্য এবং পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি থাকে না। এই ‘ল্যাগরেঞ্জিয়ান পয়েন্ট ১’-এ ‘আদিত্য-এল১’-কে পৌঁছে দিলে সেটি আজীবন সেখানে থেকে যাবে। ইসরো সেটাই করতে চাইছে। আগামী ২ বা ৩ সেপ্টেম্বর উচ্চ প্রযুক্তির ‘আদিত্য-এল১’ মহাকাশযানকে পাঠানো হবে।
আরও পড়ুন:

এই পাঁচটি কারণে বাড়ছে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব, জেনে নিন কোনটি সবচেয়ে বেশি দায়ী

 

আদিত্য-এল১ মিশনের লক্ষ্য কী?

আদিত্য-এল১ মিশনের লক্ষ্য হল সূর্যের জলবায়ু, সৌর শিখা, সৌর ঝড়-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে ইসরো। সেই সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হবে সূর্য থেকে নির্গত তরঙ্গ, চৌম্বকীয় ক্ষেত্র।

পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে সূর্যের অভিকর্ষ বল, পৃথিবীর অভিকর্ষ বল এবং মহাকাশযানের কেন্দ্রাভিগ বল কাজ করে। ‘ল্যাগরেঞ্জিয়ান পয়েন্ট ১’ বা ‘এল-১’ বিন্দু এমনই একটি অবস্থান যেখানে এই তিনটি বলই পরস্পর বিপরীত ভাবে কাজ করে। ফলে সেখানে ‘আদিত্য-এল১’ স্থির হয়ে থেকে তার কাজ চালিয়ে যেতে পারবে।

৭ ধরনের বৈজ্ঞানিক পেলোড থাকবে ‘আদিত্য-এল১’ মহাকাশযানে। যেগুলির সাহায্যে সূর্যকে নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হবে সূর্যের ফোটোস্ফিয়ার, ক্রোমোস্ফিয়ার, সূর্যের বাইরের স্তরের উপর। নজর রাখা হবে অভিযান সফল হলে বিজ্ঞানের আরও এক দরজা খুলে যাবে। ইসরোর কথায়, ‘ল্যাগরেঞ্জিয়ান পয়েন্ট ১’ বা ‘এল-১’ থেকে সূর্যের সম্বন্ধে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া সহজ হবে।

রিভিউ: নতুন থ্রিলার সিরিজ ‘সাড়ে ষোলো’—সিজন-১ ষোলো কলা পূর্ণ করেছে

আরও পড়ুন:

অমর শিল্পী তুমি, পর্ব-8: চলতি কা নাম কিশোর

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৮: নহবতে সহধর্মিণী সারদা

চন্দ্রযান-৩-এর চাঁদের মাটি ছুঁতে ৪০ দিন সময় লাগলেও, সূর্যের ‘ল্যাগরেঞ্জিয়ান পয়েন্ট ১’-এ পৌঁছতে অনেক বেশি সময় লাগবে। সূর্য এবং পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শূন্য ওই জায়গায় পৌঁছতে ‘আদিত্য-এল১’ এর সময় লাগবে ১৮০ দিন, অর্থাৎ ছয় মাস। ‘চন্দ্রযান-৩’-কে পৃথিবী থেকে চাঁদে পৌঁছতে ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার পথে পাড়ি দিতে হয়েছে। সেখানে ‘ল্যাগরেঞ্জিয়ান পয়েন্ট ১’-এ পৌঁছতে ‘আদিত্য-এল১’কে পাড়ি দিতে হবে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে। তাই ১৮০ দিন সময় লাগবে। এই প্রথম ইসরো এত দূরে কোনও মহাকাশযানকে পাঠাবে।

Skip to content