রবিবার ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫


এক ফ্রেমে: পঞ্চম, লতা, কিশোর ও আশা।

১৯৬৮ সালের আরও একটি ছবিতে কিশোরের সঙ্গে কাজ করেন পঞ্চম। ছবিটির নাম ‘অভিলাষা’। এই ছবির দুটি বিশেষত্ব কী জানেন? এই ছবিতে পঞ্চমের সুরে প্রথমবার লতা মঙ্গেশকর এবং কিশোর কুমার একসঙ্গে কণ্ঠদান করেন। গানটি হল—‘পেয়ার হুয়া হ্যায় জবসে মুঝকো নেহি চ্যান আতা’। শুনে দেখবেন কখনও। অসম্ভব সহজ সরল একটি সুরে গায়ক গায়িকা দুজনেই তাঁদের নিজগুণে মাতিয়ে রেখেছেন শ্রোতাদের। আরও একটি ঘটনা ঘটে। এই ছবিতে প্রথমবারের জন্য ভুপিন্দর সিং পঞ্চমের সুরে গান করেন। সেই থেকেই শুরু। মান্না দে-র সঙ্গে একই গানে গলা মিলিয়েছেন ভুপি। গানটি হল ‘ইয়ারও হামারা কেয়া’। পাশ্চাত্য ঘেঁষা একটি সুর এবং ছন্দ। অনবদ্য।

এর ঠিক পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৬৯ সালে আসে ‘পেয়ার কা মৌসম’ ছবিটি। পঞ্চমের সুরে কিশোর গেয়ে ওঠেন ‘তুম বিন যায়ু কাহা’ গানটি। মনোহারী সিংয়ের ম্যান্ডলিন দিয়ে শুরু হওয়া এই গানটি কেউ কখনও শোনেননি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া এই দেশে বিরল। তাই এই গানটি সম্পর্কে নতুন করে বাক্য ব্যয় করা নিষ্প্রয়োজন।
১৯৭০ সালে সাড়া ফেলে দেওয়া আরেকটি ছবি ‘কটি পতঙ্গ’। কিশোর কুমার আবার উজাড় করে দেন নিজেকে। আবার এ ভাবেও বলা যেতে পারে যে, পঞ্চম কিশোরের গায়কীকে কাজে লাগিয়ে একের পর এক ফুল ফোটান এই ছবির বেশিরভাগ গানে। ‘পেয়ার দিওয়ানা হোতা হ্যায়’, ‘ইয়ে শাম মস্তানি’, ‘ইয়ে জো মহব্বত হ্যায়’ গানগুলি যেন একে অপরকে টেক্কা দিতে সদা প্রস্তুত। কেউ কারও কাছে যেন হারতে নারাজ। আর এখানেই লুকিয়ে থাকে কিশোর-পঞ্চম জুটির সার্থকতা।

এই ছবির গানগুলি শ্রোতাদের চোখ খুলে দেয়। তারা যেন অনুধাবন করতে শুরু করেন, এই জুটি একত্রে কাজ করলে আগামী দিনে আরও কত কালজয়ী গান তারা উপহার হিসেবে পেতে সক্ষম হবেন। ফলস্বরূপ শ্রোতাদের প্রত্যাশাও এবার ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। বলা বাহুল্য, এই সত্যটি হয়তো কিশোর-পঞ্চম নিজেরাও এতদিনে বুঝে গিয়েছিলেন। তাই তাঁরা নিজেরাও নিজেদের অজান্তে কখন যে একে অপরের প্রতি দায়বদ্ধ হয়ে পড়েন তা হয়তো তাঁরা নিজেরাও ঠিকভাবে বুঝে উঠতে পারেননি।
একই সালে আরও দুটি ছবিতে তাঁরা একসঙ্গে কাজ করেন। ছবি দুটি হল ‘কিঁউ কি সাস ভি কভি বহু থি’ এবং আর একটি হল ‘এহসান’। এই ছবির গান ‘আজা তুঝে পেয়ার কর লু ও জানে জানা’ কিশোর-আশা গেয়েছিলেন। প্রবল ভাবে সাড়া ফেলে দিয়েছিল গানটি। এর ঠিক পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৭১ সালে মুক্তি পাওয়া আর একটি ছবি ‘অধিকার’-এ পঞ্চমের সুরে কিশোর-আশা আরও একটি মিষ্টি গান শ্রোতাদের উপহার দেন। গানটি হল, ‘কই মানে ইয়া না মানে জো কাল তক থে আনজানে’। নিশ্চিতভাবে গানটি আপনারা সবাই শুনেছেন। যদি কোনও কারণে না শুনে থাকেন একটিবার শুনবেন । একবার শুনলে আবারও শুনতে ইচ্ছে করবেই। একই সালে মুক্তি পাওয়া ‘হাঙ্গামা’ ছবির একটি গান ‘আয় দুর সে বাত করানা’ গানটি কিশোর-আশা দু’জনেই খুব মজা করে উপস্থাপিত করেছেন। নেপথ্যে আবার সেই পঞ্চম। এই ভাবেই এগোচ্ছিল কিশোর-পঞ্চমের কর্মকাণ্ড।

কিন্তু এবার যেন সামনে এলো আরও বড় কিছু করে দেখাবার এক মহাসুযোগ। ১৯৭১ সালে মুক্তি পেল শক্তি সামন্ত প্রযোজিত এবং পরিচালিত ছবি ‘অমর প্রেম’। ছবির কাজের জন্য ডাক পড়লো পঞ্চমের। শক্তি সামন্ত ছবিটি সম্পর্কে অবগত করলেন পঞ্চমকে। ছবির গল্পটি কী, কীভাবে ছবিটি শুরু হবে, বিভিন্ন ঘটনাবহের মধ্যে দিয়ে কোথায় কেমন ভাবে ছবিটি সমাপ্ত হবে, ছবির চরিত্রগুলি কে কেমন, কে কোন চরিত্রে অভিনয় করছেন সব বিস্তারিতভাবে বোঝালেন পঞ্চমকে। তারপর দিলেন সেই গুরুদায়িত্ব। তিনি জানালেন, ছবির নিরিখে আনন্দ বক্সীর লেখা গানগুলিতে পঞ্চমকেই সুর দিতে হবে। পঞ্চম এবার বসলেন আনন্দ বক্সীর সঙ্গে। গানগুলি নিয়ে পুঙ্খানুপঙ্খভাবে আলোচনা সারলেন।

যদি খুব ভালো করে ভেবে দেখা যায়, এই ছবির ‘চিঙ্গারই কই ভরকে’, ‘কুছ তো লোগ কাহেঙ্গে’ এবং ‘ইয়ে কেয়া হউয়া’ এই তিনটি যুগান্তকারী গান কিশোর-পঞ্চমকে এক অন্য উচ্ছতায় নিয়ে যায়। অভাবনীয় সৃষ্টি, রাগের বিন্যাস এবং গায়কী। এই তিনটি গুণে গুণান্বিত এই তিনটি গান যেন আকাশের সীমাকেও ছাড়িয়ে আরও উর্ধ্বে বিচরণ করে, আজকের তারিখেও। পঞ্চমের সুর আর কিশোরকণ্ঠের আবেগ এই দুইয়ের মিশ্রণ এই তিনটি গানের আবেদনকে যেন দিগন্ত ছাড়িয়ে আরও সুদূরপ্রসারী করে তোলে। দু’জনে আবার চোখে আঙুল দিয়ে সবাইকে দেখিয়ে দেন যে তাঁরা একে ওপরের পরিপূরক।
আরও পড়ুন:

পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-১০: কিশোর কণ্ঠের উপর যেন এক অলিখিত দাবি ছিল পঞ্চমের

ডায়েট ফটাফট: জেনে নিন নিয়মিত ব্রেকফাস্টে ওটস খাওয়ার ১০ উপকারিতা

‘ওগো তুমি যে আমার…’— আজও তাঁর জায়গা কেউ নিতে পারেনি/২

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-১৪: ভয়ংকর গর্ভ

এই ছবিতে পঞ্চমের সাফল্যের পর যারপরনাই খুশি হয়েছিলেন কে জানেন? তিনি পঞ্চমের জন্মদাত্রী, অর্থাৎ মীরা দেব বর্মন। প্রাণভরে আশীর্বাদ করেছিলেন পঞ্চমকে। মায়ের কায়মনবাক্যে করা আশীর্বাদ এবং শুভকামনার শক্তি কতখানি হতে পারে সেটি পরবর্তীকালে আমরা দেখতে পাই পঞ্চমের সাফল্যের মধ্যে দিয়ে। তাঁর সাফল্যের মাত্রা বোধহয় পুরস্কারের অঙ্কে মাপা নেহাতই মূর্খামি হবে। তাঁর সাফল্য লুকিয়ে আছে তাঁর মান, যশ এবং তাঁর প্রাসঙ্গিকতায়। সেই যুগেও এবং আজকের দিনেও। কেন বলছি জানেন? আজকের রিমেকের জমানায় বেশিরভাগ গানই পঞ্চমের। তাঁর গানের অংশ আমরা আজও বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে শুনতে পাই।

এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আসা এক বিশেষ মোবাইল ফোনের বিজ্ঞাপনে ‘বার্নিং ট্রেন’ ছবির একটি আবহ সঙ্গীতকে হুবহু ব্যাবহার করা হয়েছে। তাই পঞ্চমের সৃষ্টিগুলি শুধু দেশের গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। পঞ্চম-মাদকতা আছণ্য করে রেখেছে গোটা বিশ্বকে। তাই তিনি শুধু আমাদের দেশেরই নন। তিনি আন্তর্জাতিক। তিনি নিজের সময়ের থেকে অন্তত তিরিশ বছর এগিয়ে ছিলেন। তাই এ হেন রাহুল দেব বর্মন পুরস্কার পেয়েছেন কি পাননি, পেলেও সেই সংখ্যাটি কত, এই আলোচনা বা বিতর্কগুলি আজকের দিনে এক কথায় নিষ্প্রয়োজন। নেহাতই সময় এবং বাক্যের অপচয়।

আপনারা এতক্ষণে হয়তো ভাবছেন কিশোর-পঞ্চমের যুগ্ম কর্মকাণ্ডের কথা বলতে গিয়ে এই কথাগুলির অবতারণা কেন করছি। করছি কারণ কিশোর কুমারের গাওয়া গানগুলির ক্ষেত্রে পঞ্চম যেন সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে নিজের প্রতিভার সবকটি দরজা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। কিশোর কণ্ঠের গভীরতা, সুরের পরিপূর্ণতা, কণ্ঠের মাধ্যমে অভিনয় করার সহজাত ক্ষমতা, যে কোনও মুডের গানকে অভিনেতার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গাওয়ার অপরিসীম পারদর্শিতা এবং ইয়র্ডলিং। এতগুলিকে একসঙ্গে একজনের মধ্যে খুজে পেয়ে পঞ্চম নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেননি।

তাঁর সুরে কোন গান কিশোর কুমার গাইবেন এই কথাটিই হয়তো পঞ্চমকে আলাদা করে অভিনব কিছু করার প্রেরণা যোগাতো। সঙ্গীতজগতের অনেক দিকপালই এই কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। একই বছর মুক্তি পায় ‘পরায়া ধন’। কিশোর গেয়ে ওঠেন ‘আজ উনসে পাহেলি মুলা কাত হগি’। রাকেশ রোশনের ঘোড়ার ছন্দের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অপূর্ব সুর এবং কিশোরের প্রেমিক কণ্ঠ গানটিকে বিশেষ ভাবে আলোকিত করে।
আরও পড়ুন:

গরম দুধের গন্ধ ভালো লাগে না? রইল সহজ সমাধান

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-১৯: পাকা আম খাবেন, নাকি কাঁচা আম?

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৩৪: স্বপ্ন ও দুঃস্বপ্নের ‘রাত-ভোর’

চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-১৯: কুরদার ইকো রিসর্ট—অনাবিস্কৃত এক মুক্তা

মেহমুদ অভিনীত ‘লাখো মে এক’ ছবির ‘চানদা ও চানদা’ গানটির কথাই যদি ধরা যায়, কি মিষ্টি সুর ভাবুন তো! যেন মনে হয় মেহমুদ কিশোর কুমারের গলাটি ধার করে গাইছেন। নাসির হোসাইন পরিচালিত ‘ক্যারাভান’ ছবির ‘হাম তো হ্যায় রাহি দিল কে’ গানটিতে পঞ্চম আবার ব্যবহার করেন কিশোরকণ্ঠ। না শুনে থাকলে শোনার বিনীত অনুরোধ রইল।

‘বুড্ডা মিল গেয়া’ ছবির ‘ভালি ভালি সি এক সুরত’ গানটি মনে পড়ছে? কিশোর-আশার এই ডুয়েট গানটিতে কিশোর নিজের কণ্ঠের দ্বারা নায়কের যে চাঞ্চল্যকে ফুটিয়ে তুলেছেন সেটি এক কোথায় অনবদ্য। আর আশা? তিনিও তাঁর চিরসবুজ কণ্ঠ দ্বারা একই ভাবে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে গেছেন গানটিকে। একই ছবির ‘রাত কলি এক খাব মে আই’ গানটি কিশোরকে দিয়ে গাওয়াবার সিদ্ধান্তটি হয়তো ছিল যথাযথ। কী অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন গানটি। একোস্টিক স্প্যানিশ ব্যাবহার করার পাশাপাশি একটি অব্লিগেটো কী সুন্দর ভাবে কাজে লাগিয়েছেন পঞ্চম।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অব্লিগেটো হল একটি মিউজিক্যাল পিস যা একটি গানের নেপথ্যে ক্রমাগত বেজে চলে, যা হয়ে ওঠে গানটির একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এটি সেই যুগে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পাশ্চাত্য সঙ্গীতে ব্যবহার করা হতো। অব্লিগেটো ব্যবহার করে একটি গানের আবেগ বা আবেদনকে অনেকাংশে বাড়িয়ে তোলা যায়। এটি প্রধানত ভায়োলিন, গিটার অথবা পিয়ানোর দ্বারা বাজানো হয়ে থাকে। আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে সেটির সঙ্গে গানটির কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু গানটি চলাকালীন যদি হঠাৎ করে অব্লিগেটোটি থামিয়ে দেওয়া হয় তখনই গানটিতে কিসের যেন একটি অভাব অনুভূত হয়। একটু যেন খালি খালি লাগে।
আরও পড়ুন:

বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-৫৫: প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নবপ্রজন্ম-মীনমিত্রের পরামর্শে গ্রামগঞ্জেও মাছচাষ বিকল্প আয়ের দিশা দেখাতে পারে

বৈষম্যের বিরোধ-জবানি, পর্ব-১৯: উন্নয়নের কাণ্ডারী নির্ণয়ে পিতৃতান্ত্রিক পক্ষপাতিত্ব

মুড়ি মুড়কির মতো অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া কতটা ক্ষতিকর? জানুন চিকিৎসকের মতামত

১৯৭১ সালেই মুক্তি পায় দেবানন্দ পরিচালিত ছবি ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম’। একটি নেপালি ধুনকে আশ্রয় করে গড়ে ওঠা ‘কানছি রে কনছি রে’ (কিশোর-লতা ডুয়েট) আজও বিশেষভাবে আমাদের মন কাড়ে। অথবা বোনের উদ্যেশ্যে এক ভাইয়ের গাওয়া গান ‘ফুলো কা তারো কা সবকা কহেনা হ্যায়’। গানটিতে কী পরিমান স্নেহ, আবেগ আর ভালোবাসা মাখানো আছে ভাবুনতো। অব্লিগেটো, ইন্টারলুড এবং সেই মনমাতানো কিশোরকণ্ঠের করুন আবেগ। আবারও যেন প্রমাণিত হয় কিশোর-পঞ্চমের সার্থকতা। আনন্দ বক্সীর কলম থেকে বেরিয়ে আসা এই ছবির আরও একটি গান ‘দেখো ও দিওয়ানও তুম ইয়ে কাম না কারো’ গানটিকে, একটু খেয়াল করে দেখুন, পঞ্চম কিশোরকে দিয়ে অনেকটা কীর্তনের ঢংয়ে গাইয়েছেন। অথচ একটি আধুনিকতার ছোঁয়া রেখে গিয়েছেন পুরো গানটি জুড়ে। কারণ একটাই। সেটি হল ছবির দৃশ্য।

আমরা যদি এই গানটিকেই একটি কর্তাল এবং একটি খোলের সাহায্যে গাই তখন গানটিকে কিন্তু অনেকাংশেই একটি কীর্তনের মতো শোনাবে। অথচ কিশোরের কথা, দৃশ্যপটের কথা এবং নায়ক দেবানন্দের কথা মাথায় রেখে গানটিতে প্রধানত তবলা, মাদল, তেনোর স্যাক্স, বাঁশি, সেতার আর ভায়োলিনের সাহায্যে একটি আধুনিকতার মোড়কে মুড়ে আমাদের এই গানটি উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে। আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে বলতে হয়, এই গানটি কিশোর-পঞ্চমের যৌথভাবে দেওয়া একটি উপহার। আমাদের সবার জন্য।—চলবে
* পঞ্চমে মেলোডি (R D Burman): সৌম্য ভৌমিক, (Shoummo Bhoumik) সঙ্গীত শিল্পী।

Skip to content