শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী। সংগৃহীত।

 

মিত্রভেদ

আমাদের বিচিত্র এই জগৎ-সংসারে সকল মানুষই নিজেদের খাওয়া-পরা জোগার করতে ভিন্ন ভিন্ন পেশার আশ্রয়ে পরস্পর পরস্পরের উপর বিভিন্ন উপায় প্রয়োগ করতে থাকে। এ জগৎ চলেই শুধু একে অন্যকে শোষণ করে। উদাহরণ হিসেবে পঞ্চতন্ত্রকাল একটি লম্বা তালিকা দিয়েছেন। বলেছেন, পৃথিবীপতি রাজাদের খাওয়া-পরা চলে দেশের মানুষকে শোষণ করেই; তাঁদের বোকা বানিয়ে। বলা ভালো, ছলে, বলে কিংবা কৌশলে তাঁদের উপর সাম-দান প্রভৃতি বিভিন্ন উপায় প্রয়োগ করেই চলে তাঁদেরজীবন-যাপন; তাই প্রজা না থাকলে রাজবৃত্তি চলে না। রাজার অন্নসংস্থানই হয় প্রজাবর্গকে শোষণ করে। উন্নতিকামী রাজাকে তাই অর্থশাস্ত্রকার বলেছেন বিজিগীষু হতে; রাজা বিজিগীষু হলে তবেই তিনি যত নতুন নতুন রাজ্য জয় করবেন, ততই তিনি প্রজারূপ ধনে পূর্ণ হয়ে উঠবেন। তেমনই চিকিত্সকের বৃত্তি চলে রোগীকে অবলম্বন করে, যেমন বণিকদের সম্পদবৃদ্ধি নির্ভর করে গ্রাহকদের উপরে—যে বণিকের কাছে যত পরিমাণ গ্রাহক, সে বণিক তাঁর বাণিজ্যক্ষেত্রে তত বেশি সফল। পণ্ডিতরা চায় মূর্খদের, কারণ মূর্খদের উপর জ্ঞানভাণ্ডার উজার করেই চলে তাঁদের খাওয়া-পরা। তাই দেশের সকলে পণ্ডিত হয়ে গেলে প্রকৃত পণ্ডিতের দাম থাকে না; মূর্খদের মাঝেই পণ্ডিতের সম্মান। তাই পণ্ডিতের লক্ষ্য মূর্খের অনুসন্ধান। চোরেরা যেমন খোঁজে অসাবধানীদের; যে সমস্ত মানুষজন সদা-সর্বদা সতর্ক থাকেন, তাঁদের জিনিসপত্র চুরি যাওয়ার ভয়ও কম। তাই চোরেরা সবসময় সন্ধান করে অসাবধানী মানুষজনকে; তাদেরও খাওয়া-পরা চলে সেই অসাবধানীদেরকেই আশ্রয় করে। ভিক্ষুকদের তেমন গেরস্ত বাড়ির ভিক্ষাদানের উপর ভরসা করেই পেট চলে; গণিকাদের ভাত-কাপড় জোটে কামীজনকে শোষণ করে, তাঁদের আনন্দ দিয়ে। শিল্পীদের বৃত্তিও ঠিক তেমনই, জগৎ-সংসারের মানুষকে আনন্দ দিয়েই তাঁদের পেট চলে। বলা ভালো—

সামাদিসজ্জিতৈঃ পাশৈঃ প্রতীক্ষন্তে দিবানিশম্‌।
উপজীবন্তি শক্তান্‌ হি জলজা জলদানিব।। (মিত্রভেদ, ১৬৮)


মানেটা হল, মানুষ যেমন আকাশে মেঘের প্রতীক্ষা করে, কারণ মেঘের থেকে জল বর্ষিত হলে তবেই পৃথিবী শস্য-শ্যামলা হয়, যা সমস্ত প্রাণীর অন্নসংস্থানের সহায়ক; ঠিক তেমনই ভাবে জগতের সকল পেশার মানুষই সকলের উপর দিবারাত্র সাম-দান প্রভৃতি বিভিন্ন উপায়ের জাল বিছিয়ে রেখেপ্রতীক্ষা করে; কে কখন কার জালে ধরা দেয় কেবল সেই উদ্দেশ্যে। সকলের অন্নসংস্থানই সকলের উপর নির্ভর করেহয়ে থাকে—এইটাই এই বিচিত্র জগতের নিয়ম।

এককথায় সহজভাবে বলতে গেলে যেটা বলতে হয় সেটা হল—“every producer seeks the buyers for their products”—সকল উত্পাদনকারীরাই তাদের তৈরি পণ্য বিক্রি করবার জন্য তার নির্দিষ্ট ক্রেতার সন্ধান করেন। ভাবুন তো, কয়েকটি মাত্র শব্দ খরচ করেই অর্থনীতির জটিলতত্ত্ব, যাকে অর্থনীতির পরিভাষায় “গুণকপ্রক্রিয়া” বা ইংরেজিতে যাকে “multiplier effect” বলে, সেটা কেমন সহজ উদাহরণ দিয়ে একেবারে দার্শনিকের মতো শিশু রাজপুত্রদেরকে বুঝিয়ে দিলেন পঞ্চতন্ত্রকার। “গুণক প্রক্রিয়া” বা “multiplier effect” বিষয়টিকে অর্থনীতির ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয়—“the multiplier effect is based on the idea that the increased spending from one party becomes income for another party, who spends a portion of that income, and so on.” অর্থাৎ একজন ভোক্তার রোজগারের অতিরিক্ত কিছু অংশ অন্য ক্রেতার রোজগারের উত্স হয়। জগৎ-সংসার অপরকে ভোগ করেই এগিয়ে চলে; সমগ্র দেশের অর্থনীতি এই পারস্পরিক রোজগারের উপরই দাঁড়িয়ে। তবে এইটাও ঠিক যে, সাপের মতো খলচরিত্রের লোকেরা পরদ্রব্য অপহরণ বা অন্যান্য উপায়ে নিজেদের দুষ্ট অভিপ্রায় সবসময় সিদ্ধি করতে পারে না বলেই এই জগৎ-সংসার এখনও টিকে আছে। পৌরাণিক দৃষ্টান্ত টেনে এনে পঞ্চতন্ত্রকার স্বয়ং মহাদেবের সংসারের দৃষ্টান্ত দিয়েবলছেন—

অত্তুং বাঞ্ছতি শম্ভবো গণপতেরাখুং ক্ষুধার্তঃ ফণী
তং চ কৌঞ্চরিপোঃ শিখী গিরিসুতাসিংহোঽপি নাগাশনম্‌।
ইত্থং যত্র পরিগ্রহস্য ঘটনা শম্ভোরপি স্যাদ্‌ গৃহে
তত্রাপ্যস্য কথং ন ভাবি? জগতো যস্মাৎ স্বরূপং হি তৎ।।(ঐ, ১৭০)


পঞ্চতন্ত্রকার বলছেন, স্বয়ং মহাদেবের সংসারটা একবার খেয়াল করে দেখুন, সেখানে তাঁর গলার সাপটি চায় গণেশের বাহন ইঁদুরটিকে খেতে, আর সেই মহাদেবের সাপটিকেআবার খেতে উত্সাহী ক্রৌঞ্চরিপু কার্তিকেয়’র বাহন ময়ূর; সেই ময়ূরটিআবার খাদ্যহল স্বয়ং পর্বতকন্যা পার্বতীর বাহন সিংহের—মহাদেবের এই বিচিত্র সংসারে সকলের সঙ্গে সকলেই খাদ্যখাদকের শৃঙ্খলে আবব্ধ। সকলেই চায়সকলকে খেয়ে শারীরিক পুষ্টি সঞ্চয় করতে। তাই পঞ্চতন্ত্রকার বলছেন, যেখানে স্বয়ং মহাদেবের সংসারেরই এই দশা, সেখানে এই বিশাল জগৎ-সংসারের কথা আর কি বলবো? খাওয়া-খেয়ি লেগে আছে সর্বত্র। একে অপর শোষণ করেই জগৎ চলে।
আরও পড়ুন:

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-১৮: রাজকার্য ভুলে রাজা ধর্মের বাণী প্রচারে ব্যস্ত হলে তাঁর রাজ্যপাট আর কিছুই থাকে না

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৭২: রবীন্দ্রনাথ প্রয়োজনে কঠোর হতেও পারতেন

তাই সিংহ পিঙ্গলকের কৃপাদৃষ্টি থেকে বঞ্চিত করটক আর দমনক খিদের তাড়নায় পরস্পর আবার মন্ত্রণা করতে শুরু করল। দমনক বললে, হে আর্য করটক! এতো প্রচেষ্টা করেও আমরা আবার অপ্রধান হয়ে গেলাম। পিঙ্গলক তো সেই বৃষ-সঞ্জীবকে নিয়েই একেবারে মশগুল হয়ে আছেন; রাজকার্য সব একেবারেই পাটে তুলেছেন। এই জন্য একে একে পিঙ্গলকের সব আত্মীয়পরিজনই তাঁকে ছেড়েওচলে গিয়েছেন। এখন কি করা যেতে পারে সেটাই বল?

করটক বলল, এটা ঠিক যে এখন মহারাজ পিঙ্গলক আর তোমারকথা শুনছেন না, কিন্তু এটাও ঠিক যে তিনি যে ভুল করছেন এটা বোঝানোর জন্যেও আমাদের কিছু অন্তত তাঁকে বলা উচিত। কারণ আমরা ওঁনার মন্ত্রী—তাই এটা বলাটা আমাদের কর্তব্য। রাজনীতিশাস্ত্রে বলে, রাজা যদি মন্ত্রীদের কথা নাও বা শোনেন তবুও মন্ত্রীদের কর্তব্য রাজা যাতে নিজের দোষটুকু বুঝতে পারেন তার জন্য প্রচেষ্টা করা—তাঁকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো যে আপনি যেটাকরছেন সেটা সঠিক পথ নয়। যেমন মহারাজ ধৃতরাষ্ট্র অম্বিকাপুত্র বিদূরের সদুপদেশে কর্ণপাত না করলেও ধর্মরাজ বিদূর কিন্তু সুযোগ্য মন্ত্রীর মতো মহারাজ ধৃতরাষ্ট্রকে তিরস্কার করে বারে বারে আসন্ন বিপদের সম্ভাবনাকে সূচিত করতে ভোলেননি। আমাদেরও ঠিকসেইভাবেই সিংহ-পিঙ্গলককে সতর্ক করাটা প্রয়োজন। কারণ একটাই—

মত্তোন্মত্তস্য ভূপস্য কুঞ্জরস্য চ গচ্ছতঃ।
উন্মার্গং বাচ্যতাং যান্তি মহামাত্রা সমীপগাঃ।।(ঐ, ১৭৩)


হাতি যদি মদন্মত্ত হয়ে পাগলের মতন আচরণ করে তাহলে সে দোষ যেমন মাহুতের, মানে যে তাকে নিয়ন্ত্রণ করে তার উপরেই বর্তায়, তেমনই রাজা যদি খেয়ালের বশে যথেচ্ছচার শুরু করেন তাহলে সে দোষও মন্ত্রীদের উপরেই বর্তায়।

করটক আরও বলতে থাকে, ওহে করটক! তুমিই তো তৃণভোজী এই সঞ্জীবককে রাজার কাছে নিয়ে এসেছিলে। এতো হাতে করে জ্বলন্ত অঙ্গার ধরার মতন কাজ করেছো—এখন হাত তো পুড়বেই।
আরও পড়ুন:

অমর শিল্পী তুমি, পর্ব-৩: অভিনয় নয়, কিশোর মনে-প্রাণে একজন গায়ক হিসেবেই আত্মপ্রকাশ করতে চেয়েছিলেন

কলকাতার পথ-হেঁশেল: যদুকুল ও চপস্টিকস

দমনক তখন বেশ হতাশ হয়ে বলল, তুমি সত্যই বলেছো। সেদিক থেকে দেখলে রাজার কোনও দোষ নেই, এই সব দোষের মূলে আমিই।আসলের সব কিছুর কার্যকারণ যে সবটা আমাদের হাতে থাকে তা নয়। কিন্তু আমি অবশ্যই দোষের ভাগী এটা অস্বীকার করবার উপায় নেই। যেমন— দুটো ভেড়ার যুদ্ধের জন্য মাঝে থাকা শেয়ালের কিংবা আষাঢ়ভূতির প্রতারণারকারণে দেবশর্মার এবং দুষ্ট দূতীর অন্যের জন্য কাজ করার কারণে নিজের শাস্তি পাওয়ার পিছনে—এই তিন জনেরই যেমন নিজ-নিজ দোষ ছিল; তেমনই আমারও সঞ্জীবককে সঙ্গে এনে পিঙ্গলকের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়াটা দোষের হয়েছে।

করটক তখন বলল, এই দূতী, শেয়াল বা আষাঢ়ভূতি—এরা সব কারা?
দমনক তখন বলতে শুরু করল—

৪: দূতী, শেয়াল আর আষাঢ়ভূতির কাহিনি

কোন এক নির্জন স্থানে একটি মঠ ছিল। সেখানে দেবশর্মা নামে এক পরিব্রাজক বাস করতেন। সে মঠে দেশ-বিদেশ থেকে বহু ধনবান সাধু ব্যক্তিদের সমাগম হতো। তাঁরাসময়ে অসময়ে অনেক সূক্ষ্মবস্ত্র (সম্ভবতঃ সিল্কের কাপড়) সেই মঠে দান করতেন এবং সেই পরিব্রাজক দেবশর্মা সেই সব সূক্ষ্মবস্ত্র সব বিক্রি-বাট্টা করে প্রভূত ধনসম্পদ রোজগার করেছিলেন আরসেকারণেই সে পরিব্রাজক দেবশর্মা কখনও কাউকে বিশ্বাস করতেন না—দিনরাত বগলে করে সেইসব টাকাপয়সায় থলে আঁকড়ে রাখতেন– কখনও সেটাকে শরীর থেকে আলাদা করতেন না। সেই শাস্ত্রে বলে না?—

অর্থানামর্জনে দুঃখমর্জিতানাং চ রক্ষণে।
নাশে দুঃখং ব্যযে দুঃখং ধিগর্থাঃ কষ্টসংশ্রযাঃ।। (ঐ, ১৭৪)


অর্থাৎ ধনসম্পত্তি অর্জন করতে যেমন কষ্ট, তাকে রক্ষা করাটাও কিন্তু কম কষ্টের নয়; সে ধনের নাশ হলেও আবার মন কষ্ট। আবার সে ধন ব্যয় করতেও মন চায় না—তাতেও দুঃখ। তাই ধিক্কারজনক এই ধনসম্পত্তি! যা শুধু জীবনে দুঃখেরই কারণ হয় মাত্র।
আরও পড়ুন:

প্রথম আলো, পর্ব-১: বিশ্বের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় কোনটি জানেন?

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৩৩: কানে ব্যথা? তেল দেবেন কি?

সেখানে আষাঢ়ভূতি নামে এক চোর ছিল। লোকজনকে ঠকিয়ে অন্যের টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিতে সে ছিল সুদক্ষ। বেশ কিছুদিন ধরেই সেই আষাঢ়ভূতি সেই পরিব্রাজক দেবশর্মার বগলের তলার আঁকড়ে রাখা টাকার পুটুলিটাকে লক্ষ্য করেছিল। দিনরাত সে চিন্তা করতো কীভাবে এই দেবশর্মার কাছ থেকে সে ধন চুরি করা যেতে পারে। সমস্যাটা হল, যে মঠে সেই দেবশর্মা থাকেন, তার দেওয়াল এতো শক্ত পাষাণের তৈরি যে সিঁধ-কেটে ঢোকবার সুবিধা হবে না আর সে মঠের পাঁচিলগুলোও এতো উঁচু যে দরজা বাদে অন্য কোনও জায়গা দিয়েই প্রবেশ করাটা একেবারে সম্ভব নয়। সবদিক চিন্তা-ভাবনা করে সে স্থির করলো যে মিষ্টি-মিষ্টি মায়াভরা কথায় এই দেবশর্মাকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেতার বিশ্বাসভাজন হয়ে উঠতে হবে এবং ঠিক তারপর কোনও একদিন যেদিন সে আমাকে বিশ্বাস করে সেই পুটুলিটা দেবে সেদিনই সেটা নিয়ে চম্পট দিতে হবে—এটা ছাড়া আর দ্বিতীয় কোনও উপায় নেই। যেকোনও জিনিস লাভ করতে গেলেই প্রচেষ্টা থাকতে হয়; প্রচেষ্টা ছাড়া কিছুই করা যায় না। পণ্ডিতরা তাই যথার্থই বলেছেন—

নিস্পৃহো নাধিকারী স্যান্নাকামী মণ্ডনপ্রিযঃ।
নাবিদগ্ধঃ প্রিযং ব্রূযাৎ স্ফুটবক্তা ন বঞ্চকঃ।। (ঐ, ১৭৫)


সত্যি কথা বলতে, অর্থোপার্জনের প্রতি কারও যদি তৃষ্ণা না থাকে, তবে সে কখনও ধনবান হতে পারে না; ঠিক যেমন কামবাসনাহীন পুরুষ কখনও নিজের সাজগোজের প্রতি নজর দেয় না। মূর্খলোকে যেমন কখন ভালো কথা, সঠিক কথা বলতে পারে না বা স্পষ্টবাদী মানুষও তেমন ধূর্ত হয় না। তাই চেষ্টা না করলে দেবশর্মার কাছ থেকে এই বিপুল অর্থ কিছুতেই চুরি করা যাবে না, প্রচেষ্টা করতে হবে। মানেটা হল, সব সময় সুযোগের অপেক্ষায় বসে থাকলে হবে না, সুযোগ তৈরি করে নিতে হবে, না হলে সুযোগ যে সবসময় আসবেই এমনটা কিন্তু দৃঢ়ভাবে বলা যায় না।

এইসব কিছু বিবেচনা করে সেই আষাঢ়ভূতি হঠাৎ একদিন শিষ্ট-মানুষের মতন সাজপোশাক করে সেই দেবশর্মার কাছে গিয়ে “ওঁং নমঃ শিবায়” বলে একেবারে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করে, হৃদয়ে অতিভক্তি দেখিয়ে বলতে শুরু করলো, হে ভগবন্‌! অসার এই সংসার; তৃণাগ্নিসম যৌবনকাল—যা সামান্য কিছুকাল মাত্র স্থায়ী; শরৎকালের মেঘের ছায়ার সমান ক্ষণকাল মাত্র ভোগের সময়; আত্মীয়পরিজন, বন্ধু-বান্ধব বা স্ত্রী-পুত্র সকলেই যে স্বপ্নসদৃশ—সবই যে এ জন্মকাল মাত্র স্থায়ী সে সবকিছুই আমি অনুভব করেছি। হে ভগবন্‌! আপনি তাই আমাকে কৃপা করে উপদেশ দিন যে কীভাবে এই সংসার সমুদ্রের জড়াব্যাধী থেকে আমি উদ্ধার পাবো?—চলবে।
* পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি (Panchatantra politics diplomacy): ড. অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় (Anindya Bandyopadhyay) সংস্কৃতের অধ্যাপক, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়।

আপনার রায়

ইসরোর চন্দ্রযান-৩ কি তৃতীয় বারের এই অভিযানে সাফল্যের স্বাদ পাবে?

Skip to content