ইতিহাসে কিছু কিছু দিন থাকে যেখানে কিছু বিষয় চোখে পড়ে, মানে ফুটেজ খায়, কিছু কিছু চোখেই পড়ে না। এই যেমন জন্মাষ্টমী এলেই “এই দিন মহামায়াও জন্মেছিল, কিন্তু কেউ জানে না গো” বলে বালগোপালের থেকে লাইমলাইট কেড়ে নেওয়ার একটা চেষ্টা চলে। তবে এও সত্য। যেমন পয়লা জানুয়ারির দিনেই কল্পতরু দিবস কিংবা ভারতের স্বাধীনতার তারিখেই অন্য কোনও বছর কঙ্গো নামের আরেকটি দেশ স্বাধীন হয়েছিল; এরকম বহু ঘটনাই ঘটে। কিন্তু, দুটি বহুবিদিত দিবস যখন একই সঙ্গে মুখোমুখি হয়? ঠিক আপ আর ডাউন গাড়ির মুখোমুখি ঠেকে যাওয়া নাকি গলির মোড় ঘুরে হঠাৎ করেই তিরিশ বছর আগে শেষ দেখা হওয়া ‘তাকে’ দেখতে পাওয়ার মতো?
সরস্বতী পুজো কীভাবে যেন বঙ্গজনের প্রেমতিথিতে পরিণত হয়েছে বহুদিন। সম্ভবত তিথিটা বসন্ত পঞ্চমী বলেই। তিন হাজার বছর আগে হলে এই সময় মদনোত্সব হতো হয়তো। তার নানা অনুষঙ্গ তো প্রাচীন কাব্যে আছেই। এখন, সবস্বতী পুজো একটা যেমন তেমন হলেই হল, আনুষঙ্গিক বিষয় অর্থাৎ আগের রাতে গড়ে তোলা প্যান্ডেল, ফুল-মালা-ঠাকুর আনা, রাঁধতে গিয়ে ধরিয়ে ফেলা খিচুড়ি, বাসন্তী রঙের শাড়ি-পাঞ্জাবি, আড়াই মন্ত্রের পুজো, স্কুলে কলেজে পরীক্ষার মরশুমে অকালোত্সব, আকালের দুর্লভ দ্রব্যের লিস্টে পুরোহিতের ঢুকে পড়া, এক পলকে একটু দেখার মিথ ইত্যাদি ইত্যাদি হতেই হবে। এর সঙ্গে ভ্যালেন্টাইন ডে নামক মহাপর্বের “একদা কী করিয়া মিলন হল দোঁহে, কী ছিল বিধাতার মনে”?
সরস্বতী পুজো কীভাবে যেন বঙ্গজনের প্রেমতিথিতে পরিণত হয়েছে বহুদিন। সম্ভবত তিথিটা বসন্ত পঞ্চমী বলেই। তিন হাজার বছর আগে হলে এই সময় মদনোত্সব হতো হয়তো। তার নানা অনুষঙ্গ তো প্রাচীন কাব্যে আছেই। এখন, সবস্বতী পুজো একটা যেমন তেমন হলেই হল, আনুষঙ্গিক বিষয় অর্থাৎ আগের রাতে গড়ে তোলা প্যান্ডেল, ফুল-মালা-ঠাকুর আনা, রাঁধতে গিয়ে ধরিয়ে ফেলা খিচুড়ি, বাসন্তী রঙের শাড়ি-পাঞ্জাবি, আড়াই মন্ত্রের পুজো, স্কুলে কলেজে পরীক্ষার মরশুমে অকালোত্সব, আকালের দুর্লভ দ্রব্যের লিস্টে পুরোহিতের ঢুকে পড়া, এক পলকে একটু দেখার মিথ ইত্যাদি ইত্যাদি হতেই হবে। এর সঙ্গে ভ্যালেন্টাইন ডে নামক মহাপর্বের “একদা কী করিয়া মিলন হল দোঁহে, কী ছিল বিধাতার মনে”?
বৈষ্ণব পদাবলীর পূর্বরাগ, অনুরাগ, অভিসার, আক্ষেপানুরাগ ইত্যাদির মতো গোলাপ, চকলেট, বাধ্যতামূলক মান-অভিমান ইত্যাদি নব সহস্রাব্দের আমদানীকৃত পণ্যায়ন যে কিভাবে একদিন শ্বেতপদ্মাসনা মহাশ্বেতার রাতুল চরণে এসে বিমল হবে তা কি স্বয়ং দেব ভ্যালেন্টাইন-ও ভাবতে পেরেছিলেন? মিস্টার ও কে সেনের মতো বলতে ইচ্ছে করে ‘মাই ঘড’!!!
এমনিতেই, মাতা সরস্বতী কোপনস্বভাবা। সারা বছর না পড়ে কুল খেলে রক্ষে নেই। নিন্দুক আর দুর্জনে মজা করে বলে, সরস্বতীর হংসটি যথাসময়ের আগেই কুল-খাওয়া, সাপ্লি পাওয়া জীবদের তালিকা দেবীকে সাপ্লাই করে নিয়মিত। পরীক্ষার হলে অঙ্ক মেলানোর সময়েই একমাত্র যাদের ভক্তিভাব জেগে ওঠে তারাই পুজোর চাঁদা তোলে, কোন ‘স’ কখন যে একটা ‘ব’-এর ওপর পক্ষপাতিত্ব করে তার সঙ্গে জুড়ে যায়, কেনই বা যায়, জুড়তে যখন হবেই তখন আগে-ভাগে ‘স্বরসতী’ করলেই বা কী এমন পাপ হতো, বিশেষ করে যখন ‘স্ব’ যোগ করে দেবীকে নিজের করে নেওয়ার একটা সুযোগ আছেই!!
প্রাচীন কাব্যে কাব্যে বাকের অপার মহিমা, জিহ্বায় জিহ্বায় সরস্বতীর বাসের উত্তুঙ্গ মাহাত্ম্য ছত্রে ছত্রে। সুরের সঙ্গে অসুরে মিলে চমত্কার জন্ম নেয়, বাকের অতুল মহিমা পার হয়ে রাস্তায় বেরোলে কান পাতা দায় শব্দকল্পদ্রুমের ঘা-য়ে। হাজার হাজার বছরের পথচলায় একই ছবি। মেঘমল্লারের টানে একবার সরস্বতী মোহগ্রস্ত হয়ে বন্দিনী হয়েছিলেন এক দুষ্টু লোকের হাতে। তারপর সব সৃষ্টি গেল থেমে।
এমনিতেই, মাতা সরস্বতী কোপনস্বভাবা। সারা বছর না পড়ে কুল খেলে রক্ষে নেই। নিন্দুক আর দুর্জনে মজা করে বলে, সরস্বতীর হংসটি যথাসময়ের আগেই কুল-খাওয়া, সাপ্লি পাওয়া জীবদের তালিকা দেবীকে সাপ্লাই করে নিয়মিত। পরীক্ষার হলে অঙ্ক মেলানোর সময়েই একমাত্র যাদের ভক্তিভাব জেগে ওঠে তারাই পুজোর চাঁদা তোলে, কোন ‘স’ কখন যে একটা ‘ব’-এর ওপর পক্ষপাতিত্ব করে তার সঙ্গে জুড়ে যায়, কেনই বা যায়, জুড়তে যখন হবেই তখন আগে-ভাগে ‘স্বরসতী’ করলেই বা কী এমন পাপ হতো, বিশেষ করে যখন ‘স্ব’ যোগ করে দেবীকে নিজের করে নেওয়ার একটা সুযোগ আছেই!!
প্রাচীন কাব্যে কাব্যে বাকের অপার মহিমা, জিহ্বায় জিহ্বায় সরস্বতীর বাসের উত্তুঙ্গ মাহাত্ম্য ছত্রে ছত্রে। সুরের সঙ্গে অসুরে মিলে চমত্কার জন্ম নেয়, বাকের অতুল মহিমা পার হয়ে রাস্তায় বেরোলে কান পাতা দায় শব্দকল্পদ্রুমের ঘা-য়ে। হাজার হাজার বছরের পথচলায় একই ছবি। মেঘমল্লারের টানে একবার সরস্বতী মোহগ্রস্ত হয়ে বন্দিনী হয়েছিলেন এক দুষ্টু লোকের হাতে। তারপর সব সৃষ্টি গেল থেমে।
আরও পড়ুন:
হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-৩০: মুখে নেই রা, ওরা জেব্রা
এই দেশ এই মাটি, পর্ব-৩৫: সুন্দরবনের নদীবাঁধের অতীত
কিন্তু, থেমে থাকার দিন এ নয়। কবি কোনওদিন খেয়ালের বশে বলেছিলেন বটে, বিরস দিন বিরল কাজ!! অন্ততঃ, আজ হলে এই দিনটা তাঁর তালিকায় থাকতো না। কাব্যের নবরস ও আস্বাদনীয় ছয়টি রস এই দিনে ভিড় করে ঠেলাঠেলি করে। ডিজে উইথ দেবী, তারপর এগারো মিনিট বারো সেকেন্ডে খিচুড়ি-বেগুনি-তরকারি-পাঁপড়-চাটনি-মিষ্টি খেয়ে পরের দলকে সুযোগ করে দেওয়ার সদিচ্ছা এই দিনেই একমাত্র জেগে উঠবে, আকর্ষণীয় ছাড়ে। তাছাড়া, এই প্রোগ্রামের সবটাই ফর দ্য পিউপিল অফ দ্য পিউপিল বাই দ্য পিউপিল… ছাত্রদের দ্বারা জন্য ইত্যাদি।
আরেকটু খোলসা করলে, শিশুকিশোর পরিচালিত একটি সচেতন আধা-পরিণত উত্সব। অপটু হাতে ছেঁড়া কাটা কাগজ, বাঁধা প্যান্ডেল, রাঁধা ভোগ সকালের সোনার আলোর স্পর্শে ঝলমল করতে থাকে, বাজতে থাকে আনন্দলহরী। জেগে ওঠে ভাইভাই সংঘ, ফাটাফাটি ক্লাব, শিশু সংঘ, বালক সংঘ, স্কুল-কলেজ-পাঠশালায় লাল-নীল-সবুজ কাগজ, থার্মোকল, মাটি আর মায়ায় মিশে তৈরি হয়ে যায় একেকটা হুগলি সেতু, অট্টালিকা, পোড়ো বাড়ি কী স্বর্গোদ্যান। দোলনায় কিংবা ছাতার নিচে, অন্তরীক্ষে অথবা স্কুটিতে, দোয়াত-কলমে কিংবা ভাঙা মন্দিরে বিরাজমানা বাগীশ্বরী হংসারূঢ়া হয়ে অঞ্জলি নেন।
নিপুণ পারিপাট্য নেই, মহার্ঘ্য সৌন্দর্য্যের ভার নেই। তবু যার হাতেখড়ি হচ্ছে, কিংবা যার পাশের আশা ক্ষীণ, যে সামনের পরীক্ষায় একশো পেতে চায় অথবা যারা সারাবছর ধরেই পড়েছে—বই নয়, গাছ থেকে, খাট থেকে এমনকী আকাশ থেকেও, তাদের সকলের জন্যই তাঁকে আসতেই হয়। বইপত্তর, পাখের কলম, কালির দোয়াত, আমের মঞ্জরী মিলে মিশে শ্বেতপদ্মাসনা দেবী শ্বেতপুষ্পশোভিতা হয়ে কিছুক্ষণ করে থেকে যান মর্ত্যের বিদ্যাপীঠগুলিতে। সেখানে পেশাদার ও অ্যামেচারিস্ট পড়ুয়াদের ভিড়, বীণাপুস্তকরঞ্জিতহস্তে নাকি বীণারঞ্জিতপুস্তকহস্তের জাল কাটিয়ে আড়াই মন্ত্রে মাতৃবন্দনার শেষে সাইকেলবাহন ধাবমান পুরোহিত, প্রসাদ বিতরণ, লাল-নীল-হলুদের মেলায় পদ্মের বন থেকে গোলাপের উঁকিঝুঁকি।
আরেকটু খোলসা করলে, শিশুকিশোর পরিচালিত একটি সচেতন আধা-পরিণত উত্সব। অপটু হাতে ছেঁড়া কাটা কাগজ, বাঁধা প্যান্ডেল, রাঁধা ভোগ সকালের সোনার আলোর স্পর্শে ঝলমল করতে থাকে, বাজতে থাকে আনন্দলহরী। জেগে ওঠে ভাইভাই সংঘ, ফাটাফাটি ক্লাব, শিশু সংঘ, বালক সংঘ, স্কুল-কলেজ-পাঠশালায় লাল-নীল-সবুজ কাগজ, থার্মোকল, মাটি আর মায়ায় মিশে তৈরি হয়ে যায় একেকটা হুগলি সেতু, অট্টালিকা, পোড়ো বাড়ি কী স্বর্গোদ্যান। দোলনায় কিংবা ছাতার নিচে, অন্তরীক্ষে অথবা স্কুটিতে, দোয়াত-কলমে কিংবা ভাঙা মন্দিরে বিরাজমানা বাগীশ্বরী হংসারূঢ়া হয়ে অঞ্জলি নেন।
নিপুণ পারিপাট্য নেই, মহার্ঘ্য সৌন্দর্য্যের ভার নেই। তবু যার হাতেখড়ি হচ্ছে, কিংবা যার পাশের আশা ক্ষীণ, যে সামনের পরীক্ষায় একশো পেতে চায় অথবা যারা সারাবছর ধরেই পড়েছে—বই নয়, গাছ থেকে, খাট থেকে এমনকী আকাশ থেকেও, তাদের সকলের জন্যই তাঁকে আসতেই হয়। বইপত্তর, পাখের কলম, কালির দোয়াত, আমের মঞ্জরী মিলে মিশে শ্বেতপদ্মাসনা দেবী শ্বেতপুষ্পশোভিতা হয়ে কিছুক্ষণ করে থেকে যান মর্ত্যের বিদ্যাপীঠগুলিতে। সেখানে পেশাদার ও অ্যামেচারিস্ট পড়ুয়াদের ভিড়, বীণাপুস্তকরঞ্জিতহস্তে নাকি বীণারঞ্জিতপুস্তকহস্তের জাল কাটিয়ে আড়াই মন্ত্রে মাতৃবন্দনার শেষে সাইকেলবাহন ধাবমান পুরোহিত, প্রসাদ বিতরণ, লাল-নীল-হলুদের মেলায় পদ্মের বন থেকে গোলাপের উঁকিঝুঁকি।
আরও পড়ুন:
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৬১: ‘বন্ধু’ তোমার পথের সাথী
মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৪৯: মহাকাব্যের রাক্ষস ও মানুষের কাহিনিতে আধুনিক জীবনচিত্রের প্রতিফলন রয়েছে কি?
সরস্বতী পুজোর দিনেই ভ্যালেন্টাইনের দিন এ বার। রবীন্দ্রনাথ পূজার পাশেই প্রেম রেখেছেন। প্রেম মিশেছে পুজোয়। কী সেই প্রেম মহাসমারোহে বিদ্রোহের আলোড়ন তোলে, বসন্তের পুজোর প্রাঙ্গণে সেই প্রেমের গুণগুণ কেন কীসের লাগি, কেন, কেন এবং কেন প্রেমের এই উন্মাদনা এই নিয়ে বিতর্ক চলুক, ক্ষতি কীসের?
আজ প্রেমের গুঞ্জন হবে কি হবে না, তা একান্তই সরস্বতীর ডিপার্টমেন্টের নয়। তবুও কচি সংসদের কাঁচা মনের সবুজ উপবনে বসন্তের রামধনু। চারিদিকে বাসন্তী সমীরণ। একটা প্রজাপতির দল রাস্তার মোড় ঘুরল। একটি নাম না জানা ছেলে রুবি রায়ের জন্য দাঁড়িয়ে। মালতীবালা বালিকা বিদ্যালয়ের ক্লাস নাইন এখন রুবি। রুবির আসার কথা এখানেই, এই কদমতলিতে। সে কি পথের মাঝে পথ হারালো?
আর ছেলেটা থান্ডার ক্লাবের সরোসতি পুজোর পুরোহিত ট্যাঁপার জন্য দাঁড়িয়ে। ট্যাঁপাকে এ বার বুক করা যায়নি। তার পরিবর্তে শিবুর আসার কথা ছিল। শিবু সকাল সকাল ফাটাফাটি সংঘে ঢুকে পড়েছিল। জিনসের ওপর ধুতিটা জড়িয়ে “শরণং তে গচ্ছাম্যহম্” শুরু করেছিল। মোবাইল তার ঘনঘন বেজে চলেছে। মা স্বয়ং পুজোর জন্য নানা মণ্ডপ থেকে ডেকেই চলেছেন অবিরত। কাঁহাতক আর এমন ঠায় থাকা যায়! তারপর অঞ্জলি শেষ হতেই কারা যেন মুখোশ পরে শিবুর ধুতি দিয়েই তাকে বেঁধে নিয়ে চলে গিয়েছে ছিনতাই করে। শিবু পা ছুড়েছিল। কানের কাছে মুখ নিয়ে কী একটা বলতে শিবু চুপচাপ কোলে চড়েই চলে গেল!
আজ প্রেমের গুঞ্জন হবে কি হবে না, তা একান্তই সরস্বতীর ডিপার্টমেন্টের নয়। তবুও কচি সংসদের কাঁচা মনের সবুজ উপবনে বসন্তের রামধনু। চারিদিকে বাসন্তী সমীরণ। একটা প্রজাপতির দল রাস্তার মোড় ঘুরল। একটি নাম না জানা ছেলে রুবি রায়ের জন্য দাঁড়িয়ে। মালতীবালা বালিকা বিদ্যালয়ের ক্লাস নাইন এখন রুবি। রুবির আসার কথা এখানেই, এই কদমতলিতে। সে কি পথের মাঝে পথ হারালো?
আর ছেলেটা থান্ডার ক্লাবের সরোসতি পুজোর পুরোহিত ট্যাঁপার জন্য দাঁড়িয়ে। ট্যাঁপাকে এ বার বুক করা যায়নি। তার পরিবর্তে শিবুর আসার কথা ছিল। শিবু সকাল সকাল ফাটাফাটি সংঘে ঢুকে পড়েছিল। জিনসের ওপর ধুতিটা জড়িয়ে “শরণং তে গচ্ছাম্যহম্” শুরু করেছিল। মোবাইল তার ঘনঘন বেজে চলেছে। মা স্বয়ং পুজোর জন্য নানা মণ্ডপ থেকে ডেকেই চলেছেন অবিরত। কাঁহাতক আর এমন ঠায় থাকা যায়! তারপর অঞ্জলি শেষ হতেই কারা যেন মুখোশ পরে শিবুর ধুতি দিয়েই তাকে বেঁধে নিয়ে চলে গিয়েছে ছিনতাই করে। শিবু পা ছুড়েছিল। কানের কাছে মুখ নিয়ে কী একটা বলতে শিবু চুপচাপ কোলে চড়েই চলে গেল!
আরও পড়ুন:
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৭৯: কবির ভালোবাসার পশুপাখি
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৩২: সরকারবাড়ির ছেলেদের সঙ্গে শ্রীমার বুড়ি-বুড়ি খেলা
রুবি এখনও আসেনি। ছেলেটা উশখুশ করে। মণ্ডপে সকলে অপেক্ষা করছে। শিবু ফসকে গিয়েছে। ট্যাঁপা এই রাস্তাতেই যাবে সাইকেলে। গোপনসূত্রে খবর। তাকে যেমন তেমন করে ধরে নিয়ে যেতে হবে। ট্যাঁপা নাইনে দু’বার ফেল করেছে। তাতে কী! আজ যতটা বিদ্যেবতীর দিন, ততটাই ট্যাঁপার। এই একটাই দিন। সারাবছর ট্যাঁপা উতরোতে না পারলেও এই একটা দিনে ট্যাঁপারা না থাকলে উনি উতরোতে পারবেন না।
ট্যাঁপা কিন্তু আসে না। সময় বয়ে যায়। ক্লাবের ছেলেরা ধরেবেঁধে ভজহরি মুখুজ্যে ওরফে টেনিকেই বসিয়ে দেয় পুরোহিত করে।
ওদিকে ছেলেটা আর ফিরতে পারে না। পুরোহিত ছাড়া ফিরলে ঠ্যাং খোঁড়া করে দেবে বলেছে পাড়ার দাদারা। রুবির জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে তার কাছে। রুবি স্কুল থেকে কখন পৌঁছবে এসে? আসবে তো? নাকি এটাও ব্রেকাপ না ব্রেক ডাউন হয়ে গেল!! আচ্ছা, রুবির নম্বরটা কতো? নেওয়া হয়েছিল তো? এটাই কি… ২৪৪১১৩৯… এটা রুবির নাকি বেলার? বনলতার কি? কে জানে!! যাঃ, এটাতো ঠাকুরদাদার আমলের নম্বর… মোবাইল থেকে লাগবেই না যে!!!
ট্যাঁপা কিন্তু আসে না। সময় বয়ে যায়। ক্লাবের ছেলেরা ধরেবেঁধে ভজহরি মুখুজ্যে ওরফে টেনিকেই বসিয়ে দেয় পুরোহিত করে।
ওদিকে ছেলেটা আর ফিরতে পারে না। পুরোহিত ছাড়া ফিরলে ঠ্যাং খোঁড়া করে দেবে বলেছে পাড়ার দাদারা। রুবির জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে তার কাছে। রুবি স্কুল থেকে কখন পৌঁছবে এসে? আসবে তো? নাকি এটাও ব্রেকাপ না ব্রেক ডাউন হয়ে গেল!! আচ্ছা, রুবির নম্বরটা কতো? নেওয়া হয়েছিল তো? এটাই কি… ২৪৪১১৩৯… এটা রুবির নাকি বেলার? বনলতার কি? কে জানে!! যাঃ, এটাতো ঠাকুরদাদার আমলের নম্বর… মোবাইল থেকে লাগবেই না যে!!!
* হুঁকোমুখোর চিত্রকলা : লেখক: ড. অভিষেক ঘোষ (Abhishek Ghosh) সহকারী অধ্যাপক, বাগনান কলেজ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগ থেকে স্নাতকস্তরে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত। স্নাতকোত্তরের পর ইউজিসি নেট জুনিয়র এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ পেয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগে সাড়ে তিন বছর পূর্ণসময়ের গবেষক হিসাবে যুক্ত ছিলেন। সাম্বপুরাণের সূর্য-সৌরধর্ম নিয়ে গবেষণা করে পিএইচ. ডি ডিগ্রি লাভ করেন। আগ্রহের বিষয় ভারতবিদ্যা, পুরাণসাহিত্য, সৌরধর্ম, অভিলেখ, লিপিবিদ্যা, প্রাচ্যদর্শন, সাহিত্যতত্ত্ব, চিত্রকলা, বাংলার ধ্রুপদী ও আধুনিক সাহিত্যসম্ভার। মৌলিক রসসিক্ত লেখালেখি মূলত: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়ে চলেছে বিভিন্ন জার্নাল ও সম্পাদিত গ্রন্থে। সাম্প্রতিক অতীতে ডিজিটাল আর্ট প্রদর্শিত হয়েছে আর্ট গ্যালারিতে, বিদেশেও নির্বাচিত হয়েছেন অনলাইন চিত্রপ্রদর্শনীতে। ফেসবুক পেজ, ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে নিয়মিত দর্শকের কাছে পৌঁছে দেন নিজের চিত্রকলা। এখানে একসঙ্গে হাতে তুলে নিয়েছেন কলম ও তুলি। লিখছেন রম্যরচনা, অলংকরণ করছেন একইসঙ্গে।