শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


অলঙ্করণ: লেখক।

পৃথিবীজুড়ে যে সব দিনগুলি বিশেষ কারণে উদযাপন করা হয় তাদের বৈজ্ঞানিক কিংবা ভৌগোলিক অথবা সামাজিক কিছু তাৎপর্য থাকে। যেমন ভূমিক্ষয় রোধ অথবা জলের অপচয় বন্ধ করার জন্য একটা করে দিন ধার্য করা, সেরকমভাবেই নারীদের জন্য, শিশুদের জন্য, প্রবীণদের জন্য, নবীনদের জন্য আলাদা আলাদা দিন ঠিক রাখা হয়েছে।

ঈশ্বরের সব দিন সমান হলেও নাকি এই দিনগুলো তাদের। জানুয়ারি মাসে এমন দিন কম নেই। সিরিয়াস হয়ে নাকে চশমা এঁটে “আমরা গভীরভাবে চিন্তিত” এই শপথবাক্য পাঠ করে দিনটা ভালোয় মন্দতে কাটানোর নানা পন্থা আছে। শাস্ত্র বলে দিয়েছেন, মহাজনের পথ-ই তোমার পথ আর তোমার পথ সুগম হোক। শিবস্তে সন্তু পন্থানঃ। এরকম একটা সিরিয়াস কথাই আজ হবে।
জানুয়ারির গোড়ায় আট তারিখে পৃথিবী ঠিকঠাক যে চলছে তা বোঝার জন্য আর্থ রোটেশনস ডে নির্ধারিত হয়েছে। এর মূল ভিত্তি বৈজ্ঞানিক। যখন মানুষ ঠিক উল্টোটাই জানতো আর মানতো তখন তাকেই ঘুরিয়ে দিয়ে বৈপ্লবিক প্রমাণ নেমে এল। পৃথিবী নিজের অক্ষের চারদিকে ঘুরছে। শুধু ঘুরছে তাই নয়, একটু ঝুঁকে আনত হয়ে ঘুরছে।
আরও পড়ুন:

হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-২৭: কী করে তোকে বলব!

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৩৩: সুন্দরবনের এক অনন্য প্রাণীসম্পদ গাড়োল

পৃথিবীই ঘুরছে। অথচ কেউ বুঝছে না। বড়জোর নিজের চারপাশে নিজেই ঘুরলে মাথা বনবন করে। তখন সবকিছু ঘুরছে বলেই মনে হতে পারে। মাথা ঝুঁকে আসে। তবে এমনিতে, আমরা মাথা ঝোঁকাই না। পৃথিবী ঝোঁকায় ঝোঁকাক, ঘোরে ঘুরুক।
আরও পড়ুন:

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৬১: ‘বন্ধু’ তোমার পথের সাথী

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-১০: লীলা মজুমদার— নতুন রূপকথার হলদে পাখি

মেরুদণ্ড শরীরকে ধরে রাখে, তাকে সোজা না রাখলে শরীর ঝুঁকে পড়বে, তাতে ঝুঁকি থাকে। কিন্তু শিরদাঁড়া সোজা রাখতে রাখতে একেক সময় ঝোঁকাতে ইচ্ছা করে। ঝোঁকাতে হয়। কীসের প্রেরণা আর ঝোঁকে কীসের দিকে ঝুঁকবে কেউ কেউ কিংবা একটা গোটা দেশ অথবা জাতি, তা নিয়ে বিস্তর ভাবনা চিন্তা আয়াস প্রয়াস। বীরমাত্রেই চির উন্নত শির।
আরও পড়ুন:

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৩১: শ্রীমার পঞ্চতপা ব্রতানুষ্ঠান

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৪৭: পলায়নপর পঞ্চপাণ্ডব-ভীমসেনের গতিময়তায় কোন মহাভারতীয় দিগদর্শন?

শাস্ত্র শ্রদ্ধায় দিতে, বিনয়ী হতে বলে বটে, কখনও দিনের শেষে “তোমায় কেন দিইনি আমার সকল শূন্য করে” মনে হতেও পারে, তবে নত হওয়াই বুঝি দুর্বলতা, তাতে সব গাছ ছাড়িয়ে আকাশে উঁকি মারার পথে বুঝি বিপুল বাধা এসব ভেবেই যারা মাথাকে নিজের জায়গায় ধরে রাখার জন্য বদ্ধপরিকর, তারা ওই মাথা ঝোঁকানো পৃথিবীর মধ্যেই কোথাও না কোথাও আটকে আছে উত্তর থেকে দক্ষিণে কিংবা পুব থেকে পশ্চিমে। সুনামির মতো হঠাৎ কোনও ধাক্কা এলে পৃথিবী যদিও বা আরেকটু ঝুঁকে পড়ে তবুও, সে তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। দেখাশোনা ফ্রি। তবে ঘুরতে তো দেখাই যায় না! তার চেয়ে নিজের চারপাশে ঘোরা ভালো… আত্মকেন্দ্রিক না কী যেন! তাতে ভারি বয়েই গেল। তাহলে পৃথিবীও আত্মকেন্দ্রিক… গোওওওও রাউন্ড
* হুঁকোমুখোর চিত্রকলা : লেখক: ড. অভিষেক ঘোষ (Abhishek Ghosh) সহকারী অধ্যাপক, বাগনান কলেজ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগ থেকে স্নাতকস্তরে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত। স্নাতকোত্তরের পর ইউজিসি নেট জুনিয়র এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ পেয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগে সাড়ে তিন বছর পূর্ণসময়ের গবেষক হিসাবে যুক্ত ছিলেন। সাম্বপুরাণের সূর্য-সৌরধর্ম নিয়ে গবেষণা করে পিএইচ. ডি ডিগ্রি লাভ করেন। আগ্রহের বিষয় ভারতবিদ্যা, পুরাণসাহিত্য, সৌরধর্ম, অভিলেখ, লিপিবিদ্যা, প্রাচ্যদর্শন, সাহিত্যতত্ত্ব, চিত্রকলা, বাংলার ধ্রুপদী ও আধুনিক সাহিত্যসম্ভার। মৌলিক রসসিক্ত লেখালেখি মূলত: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়ে চলেছে বিভিন্ন জার্নাল ও সম্পাদিত গ্রন্থে। সাম্প্রতিক অতীতে ডিজিটাল আর্ট প্রদর্শিত হয়েছে আর্ট গ্যালারিতে, বিদেশেও নির্বাচিত হয়েছেন অনলাইন চিত্রপ্রদর্শনীতে। ফেসবুক পেজ, ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে নিয়মিত দর্শকের কাছে পৌঁছে দেন নিজের চিত্রকলা। এখানে একসঙ্গে হাতে তুলে নিয়েছেন কলম ও তুলি। লিখছেন রম্যরচনা, অলংকরণ করছেন একইসঙ্গে।

Skip to content