শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫


বন্ধ দরজার ওপারে।

।। নায়িকা সংবাদ।।

স্বর্ণময়ী ভাবে তার মনে কি চলছে সেটা সে এই ঘরে বলতে পারলে বোধহয় হালকা হতে পারত। কিন্তু তা তো এখন আর সম্ভব নয়। তার মনে এখন একটাই দুশ্চিন্তা। একটাই ঝড়। অমুকে রাজি করাবে কী করে? বসুন্ধরা তাড়া দেয়।
‘কিরে স্বর্ণ? কী হয়েছে তোর?’
‘না না’ —

নিজেকে সামলে কোন গতিকে স্বর্ণ ছবিটা নেয়। ছবিটা দেখা মাত্র জগদীশ্বরের প্রতি বিনম্র কৃতজ্ঞতায় চোখ বুজে ফেলে। আনন্দে চোখের কোণ ভিজে ওঠে। এতক্ষণ চুপ করে থাকা বিনয়কান্তি এবার কথা বলেন।
‘কি পছন্দ হয়েছে? আমাদের অমুর সঙ্গে ভালো মানাবে না?’
স্বর্ণময়ী বসুন্ধরাকে ছবিটা ফেরত দিতে দিতে বলে —
‘সুন্দর দেখতে। মানাবে। মেয়ে কী করে?’

বিনয় ভ্রু কুঁচকে বলে —
‘কী আবার করবে? প্রফেসর রণেন সেনগুপ্তর মেয়ে। গ্রাজুয়েট হয়ে গিয়েছে। এবার ভাল পাত্র খুঁজছে।’
‘ও!’

বিনয়ের কথায় সায় দেবার পর স্বর্ণময়ী ভাবতে থাকে আর কিছু কথা তোলার প্রয়োজন আছে কিনা। কিন্তু পরের প্রয়োজনীয় কথাটা বসুন্ধরাই বললেন—
‘মেয়ের নাম কী বিনু?’
বিনয় শূণ্যদৃষ্টিতে তাকায়।
‘নাম?’

বসুন্ধরা বেশ অবাক হয়ে বলে—
‘বিয়ের পাকাকথা মোটামুটি দিয়ে এলি আর পাত্রীর নামটা জেনে আসিসনি?’
‘না না তা নয়…. ছবিটা যেখানে ছিল সেখানে একটা কাগজে নামধাম রাশি লগ্ন গোত্র জন্ম তারিখ সব আছে। আমি একটা অন্য কথা ভাবছি। সন্ধেবেলায় সামনাসামনি দেখে মাথায় কথাটা আসেনি। ছবিটা তোমায় দেখতে দেবার সময় মনে হল।’

খামের ভেতর থেকে অন্য কাগজটা বের করতে করতে বসুন্ধরা বলল
‘রং কি একটু চাপা?’
বিনয়ের মাথার মধ্যে কিছু ঘটছে স্বর্ণ সেটা বুঝতে পেরেছে।
‘রংটং নয়। দেখতে-শুনতে তো ভালোই। ছবিটা দেখে মনে হল আগে কোথাও দেখেছি।’
‘সেতো সন্ধেবেলা তুই দেখে এসেছিস। আবার এখন ছবিতেও দেখছিস।’
‘না না তা নয়।’

বাড়ির মেজো বউ। মানে বিকাশকান্তির স্ত্রী ছন্দা। সেজ ঠাকুরপোর জন্য পাত্রীর ছবি আনা হয়েছে এই খবরটা পেয়ে ছুটে এসেছে। স্বর্ণময়ী বসুন্ধরার কাছে যে স্বাধীনতা পেয়ে এসেছে, বসুন্ধরা ভিলাতে সেই পরম্পরাই চলছে। বউমাদের কাছে বিনয় বা স্বর্ণময়ী তাদের নিজেদের মা বাবার থেকেও যেন বেশি সহজ। বাড়িতে যে বাধ্যবাধ্যকতার মধ্যে তারা বেড়ে উঠেছে। শ্বশুরবাড়িতে তার লেশ মাত্র নেই। ত্রিশের দশকে স্বর্ণময়ী যে অধিকার অর্জন করেছিল সে তার পুত্রবধূদের হাতে তার চেয়েও বেশি অধিকার তুলে দিয়েছে। তাই পরের প্রজন্মের মধ্যে গভীর শ্রদ্ধা আছে, অটুট ভালবাসা আছে। কিন্তু অকারণ অপ্রয়োজনীয় সম্মান সম্ভ্রমের দেখনদারি ঘেরাটোপ নেই।

বিছানা থেকে ছবিটা তুলে নিয়েই অজান্তেই বোমা ফাটাল ছন্দা।
‘ওমা একি! এ তো সুরঙ্গমা সেনগুপ্ত।’
স্বর্ণ প্রায় দম আটকে দাঁড়িয়ে আছে। বিনয়কান্তি চোখের চশমাটা খুলে তাঁর পুত্রবধুর দিকে তাকালেন। আর খামের ভেতরের কাগজে নামধাম রাশি লগ্ন গোত্র দেখতে থাকা বসুন্ধরা থমকে গিয়ে নাতবউকে জিজ্ঞেস করলেন
‘তুই কি করে চিনলি।’
‘ঠাম্মি তোমরা সিনেমা দেখো না তাই চেন না!’
বিনয় খাবি খাওয়ার মত প্রশ্ন করল
‘সিনেমা?’
ছন্দার সহজ ব্যাখ্যা ।
‘হ্যাঁ সিনেমা! ওতো ফিল্মস্টার। হ্যাঁ খুব বেশি ছবি করেনি। তাই একবার দেখলেই হয়ত সবাই চিনতে পারবে না। কিন্তু খুব ভালো অভিনেত্রী। মাল্যদানে ‘কুড়ানি’—তার আগে মণিহারা আর কি আরেকটা ছবিতেও নায়িকা। আমাদের বাড়িতে ওসব বই আসত না। কিন্তু বন্ধুদের বাড়িতে উল্টোরথ প্রসাদ এসব বইতে ওর ছবিও বের হতো। এর সঙ্গে সম্বন্ধ হচ্ছে সেজদার? বাঃ দারুণ হবে, দিদিকে গিয়ে দেখাই ছবিটা?’

ছন্দার মনটা খুব ভালো তবে একটু বেশি কথা বলে। তার দিদি মানে স্বর্ণ’র বড় পুত্রবধূ আরতি। সে মৃদুভাষী। চুপচাপ থাকে। বিনয়ের চোখমুখ থমথম করছে দেখে স্বর্ণ বসুন্ধরার দিকে তাকালো। বসুন্ধরার চোখের ইশারা বুঝে স্বর্ণ ছন্দাকে বলল—
‘এখন থাক। ছবি তো বাড়িতেই রইল।’
এই জন্য বসুন্ধরা স্বর্ণের উপর এত নির্ভর করে। ছোট্ট একটা কথা। কিন্তু বলার এত সুন্দর ভঙ্গি, ছন্দা বুঝতে পারল। ছন্দা ঘর ছেড়ে যাওয়ার পরও কারও মুখে কথা নেই।

বিনয়ের আগ বাড়িয়ে আজকেই কথা দিয়ে আসা উচিত হয়নি। স্বর্ণ কিছু বলছে না দেখে বসুন্ধরা বলল
‘আচ্ছা ঠিক আছে। ছবিতে তো আমার দেখে বেশ লক্ষ্মীমন্ত মেয়ে বলেই মনে হচ্ছে। আমরা সিনেমা বায়োস্কোপ অতো দেখি না। বিনুরও কাজের বাইরে মাথা দেবার সময় নেই। আর বায়োস্কোপ বেশি করেনি দুটো একটা । তাও রবিঠাকুরের গপ্প।’

বিনয় চেয়ার ছেড়ে উঠে পায়চারি করতে করতে বলে—
‘আমি কাগজের আঁকা ছবিতে দেখেছি সিনেমার বিজ্ঞাপনে। এই ছবিটা দেখে খটকা লাগছিল। কিন্তু স্পট করতে পারছিলাম না। সামনাসামনি তো ঘরোয়া সুন্দর মেয়ে। কথাবার্তা নম্র ভদ্র।’
স্বর্ণ আজ একটু বেশি চুপচাপ। সেটা বসুন্ধরা নজর এড়ায় না ।
‘আজ তুইতো একদম চুপচাপ স্বর্ণ? কী হয়েছে? কী এত ভাবছিস?’
‘না, মানে তোমার ছেলে একজনদের বাড়ি বয়ে কথা দিয়ে এসেছে। সেখানে না বললে সেটা তোমার ছেলের মান-সম্মানের প্রশ্ন। আবার সিনেমায় অভিনয় করে সেটাও আমাদের পরিবারের পক্ষে…’
আরও পড়ুন:

দুই বাংলার উপন্যাস: বসুন্ধরা এবং, পর্ব-৪৯: বসুন্ধরা এবং…

বিশ্বসেরাদের প্রথম গোল, পর্ব-১: চায়ের দোকান থেকে বিশ্বজয়

ডায়েট ফটাফট: নিয়ম করে খান আমন্ড? ভালো থাকবে হার্ট, এড়ানো যাবে রিঙ্কল! এর বহুমুখী পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানা আছে কি?

বিনয় খানিকটা দোটানায় পড়ে গিয়েছে, আর সেটা সে প্রকাশ করে ফেলে।
‘না আমি এখনও বলছি না। আমার মেয়েটিকে খুব ভাল লেগেছে। খুব ভালো। তাছাড়া প্রফেসর সেনগুপ্ত একজন আপাদমস্তক ভদ্রলোক। বনেদি বাড়ি। শিক্ষার ছাপ আছে। শুধু এই সিনেমার ব্যাপারটাই সব গন্ডগোল করে দিল। সিনেমার ব্যাপারটা না থাকলে আমি এক্ষুনি ঠাকুরমশাইকে ডেকে বিয়ের দিনক্ষণ দেখতে বলতাম। ওহ স্বর্ণ! অমু কি লেকচারারের চাকরিতে জয়েন করেছে?

স্বর্ণ এবার প্রকৃত সত্যটা বলে
‘না মানে, অমু লিখতে চায়।তার বেশ কয়েকটা গল্প-উপন্যাস ছাপা হয়েছে। দুটো উপন্যাস বই হয়ে বেরিয়েছে এবং বিক্রিবাটা হচ্ছে। অমুর লেখা উপন্যাস নিয়ে…সিনেমা হবার কথা’
বিনয় কান্তি আবার চেয়ারে বসে পড়ে।

‘আবার সিনেমা? আর লেখালেখি করে কি ওর চলবে ?’
স্বর্ণময়ী এ প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তার চোখ তুলে একবার বিনয়কে দেখে। বিনয় তৎক্ষণাৎ বুঝতে পারে, কথাটা এভাবে বলা তার উচিত হয়নি। সাহিত্য লেখালিখি স্বর্ণময়ীর খুব প্রিয় বিষয়। স্বর্ণময়ীর কাছে তাই লেখক সাহিত্যিকদের গুরুত্ব অনেক। বিনয় নিজেকে শুধরে নিয়ে বলার চেষ্টা করে
‘না আমি বলতে চাইছি সবাই তো আর তারাশঙ্কর শরৎবাবু হবেন না।’
বসুন্ধরা বলে ওঠে

‘আচ্ছা এসব থাক না বাপু। এমন তো নয় যে সে চাকরি-বাকরি না করলে তার বা তার বউয়ের খাওয়া-দাওয়া জুটবে না। মাথার উপর ছাদ আছে। বাবার পরিশ্রমের এত বড় ব্যবসা আছে। সে যদি একটু লেখালেখি নিয়ে সুখে থাকে থাক না। বলা তো যায় না কাল হয়তো অমুর নামেই আমাদের নতুন করে পরিচয় হবে।’
অনেক পরে স্বর্ণময়ী যখন এই বসুন্ধরা ভিলার কর্ত্রী, যখন তার ছেলে-বউমারাও শ্বশুর-শাশুড়ি হয়ে গিয়েছে, তখন একটা কথা স্বর্ণময়ী বারবার বলত।
আরও পড়ুন:

ছোটদের যত্নে: সন্তান জ্বরে ভুগছে? কী ভাবে সামলাবেন? রইল ঘরোয়া চিকিৎসার খুঁটিনাটি

খাই খাই: জিভে জল আনা এমন ফুলকপির পরোটাতেই জমে যাক শীতের পাত!

‘ঠাকুমা নিভাননী, মানে আমার বুড়িমা একটা বাঙলা প্রবাদ খুব বলতেন, “সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে” আমি বুড়িমার সঙ্গে তর্ক জুড়তাম। ‘একথা ভুল। সংসার গড়ার সংসারকে সুখী করার সব দায়িত্ব বুঝি মেয়েদের একার? আর পুরুষরা কি করবে? খাবে আর ঘুমবে।’ বুড়িমা হাসতেন। বলতেন ‘এখন বুঝতে পারবি না। বিয়ের পরেও হয়তো বুঝতে পারবি না। কিন্তু ছেলের বিয়ে হবার পর তুই যখন শাশুড়ি হবি তখন হয়তো বুঝতে পারবি।’… আমার এই বাড়িতে বিয়ে হবার পরে আমার শাশুড়ি মাকে দেখে আমি বুঝতে পেরেছিলাম বুড়িমার কথাটা এবং এই বাংলা প্রবাদ কতখানি সত্যি। সংসার সুখে রাখা মানে সংসারকে সামলে রাখা শান্ত রাখা। আর অশান্তিকে সামলে রাখার সইতে পারার ক্ষমতা দিয়ে ঈশ্বর মেয়েদের তৈরি করেছেন। আর এই সংসারের সুখের দায়িত্ব রমণীর মানে শুধু স্ত্রী না, রমণী মানে মা, স্ত্রী, বউ-মা, মেয়ে, শাশুড়ি-মা সক্কলে।’

সেদিন ওই পরিস্থিতিতে নতুন করে ছেলে-বউমার মধ্যে কোন অস্থিরতাকে জায়গা দিতে চাননি বসুন্ধরা। এটা তাঁর বুদ্ধিমত্তা। এটা তাঁর সামলে নেবার সংসারকে সুখে রাখার রমণীয় বৈশিষ্ট্য। বিনয়কে সেদিন বুঝিয়ে-সুজিয়ে ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন বসুন্ধরা।
‘যা দেখি জামা কাপড় ছেড়ে হাত পা ধুয়ে খেতে বস’গে যা, স্বর্ণ আসছে।’
বিনয় ঘর থেকে চলে যাবার পর স্বর্ণকে কাছে ডেকে পাশে বসালেন বসুন্ধরা।
‘এবার বল দেখি কী হয়েছে?’

বসুন্ধরার কাছে স্বর্ণময়ী সবকিছু খুলে বলে হালকা হল। বিয়ে না হলে ছেলেকে নিয়ে তার ভয়। আর বিয়ে হলে বিনয়কান্তির সামাজিক সম্মান নিয়ে দুশ্চিন্তা। আত্মীয়স্বজনের কাছে তার প্রতিক্রিয়া। সবটুকু সংশয় সে বসুন্ধরার কাছে উজাড় করে দিল। স্বর্ণ’র মাথায় হাত রেখে বসুন্ধরা বললেন
‘আমি একটু ভেবে দেখি! তুই চিন্তা করিস না। ঠাকুর আমাদের সঠিক পথ দেখাবে। তবে অমুকে সাবধান করে দিস সে যেন কোথাও এ নিয়ে কোন কথা না বলে।’
আরও পড়ুন:

বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-৩৬: পাতে নিয়মিত মাছ থাকলে রোগ থাকবে দূরে, শরীর হবে তরতাজা, কীভাবে খেলে পুষ্টিগুণ বজায় থাকবে?

দশভুজা: যে গান যায়নি ভোলা— প্রাক জন্মদিনে তাঁর প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধার্ঘ্য…/১

বসুন্ধরা বড় একটা বাড়ি ছেড়ে বের হননি। কিন্তু এবার বের হলেন। স্বর্ণকে নিয়ে গাড়ি করে গেলেন দেশপ্রিয় পার্কে অধ্যাপক সেনগুপ্তর বাড়িতে।

টেলিফোন ডাইরেক্টরি দেখে রণেন সেনগুপ্তর বাড়ির নম্বর বের করাটা খুব একটা কঠিন কাজ ছিল না। অমু-কে বললে হয়ত হত। কিন্তু বসুন্ধরা আবার স্বর্ণময়ী কেউই সেটা চায়নি। বসুন্ধরার ঘরে একটা ডাইরেক্ট লাইন থাকত। সেখান থেকেই স্বর্ণময়ী নিজের পরিচয় দিয়ে প্রথমে রণেন সেনগুপ্ত’র স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলল, তারপর কথা বলল বসুন্ধরা নিজে। বসুন্ধরা জানাল তারা আজই একবার সুরঙ্গমার সঙ্গে আলাপ করতে চায়।

সুরঙ্গমাকে সামনাসামনি দেখে মন ভরে গেল স্বর্ণময়ী ও বসুন্ধরার। বসুন্ধরা একটু সময় সুরঙ্গমার সঙ্গে একা কথা বলল। জানাল, তার ছেলে বিনয়কান্তি ব্যবসাপত্র নিয়ে ব্যস্ত থাকে সিনেমা-বায়োস্কোপ দেখার সময়-সুযোগ তার নেই। তাই সুরঙ্গমা যে সিনেমায় অভিনয় করে সেটা বিনয়কান্তি জানতই না। আবার বসুন্ধরার নাতি অমলকান্তি যে মনে মনে সুরঙ্গমাকেই বিয়ে করতে চায় সেটা শুধু অমলকান্তির মা আর ঠাকুমা জানে বিনয়কান্তি নেহাত কাকতালীয় ভাবেই সুরঙ্গমাকে দেখতে এসে পছন্দ করে গেছে ।

বুদ্ধিমতী সুরঙ্গমার বুঝতে অসুবিধা হলো না তার ছবিতে অভিনয় করার ব্যাপারটা তার শ্বশুরমশাইকে দোটানায় ফেলে দিয়েছে। সুরঙ্গমা বসুন্ধরাকে জানাল নেহাৎ পারিবারিক অনুরোধ রাখতে গিয়ে সে ১৬ বছর বয়সে প্রথম ছবি রবীন্দ্রনাথের ‘শুভা’ করেছিল। বোবা মেয়ে সংলাপ ছিল না। কিন্তু তার নির্বাক অভিব্যক্তি যে লোকের পছন্দ হবে সেটা সুরঙ্গমা ভাবতেই পারেনি। পরের দুটো ছবি পরপর হয়ে গেল। ছবিতে অভিনয়ের ফাঁকে ফাঁকে সে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে। সে বসুন্ধরাকে ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা করল কোনও সমস্যা থাকবে না। সেই মূহুর্তে দু-দুটো ছবির কথা চলছে। সৌভাগ্যক্রমে শুটিং শুরু হয়নি। এখনও রদবদল সম্ভব।—চলবে

দ্য বেঙ্গল ক্লাব। (ছবিঃ সংগৃহীত)

চিত্র সৌজন্য: সত্রাগ্নি
 

পরের পর্ব আগামী রবিবার

ন’কাকা খুব শান্ত স্বভাবের মানুষ। শিবপুর বিই কলেজ থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন…হবি ছবি আঁকা। জল বা তেল রং দুটোতেই স্বচ্ছন্দ।…তরুণকান্তি বছর পাঁচেক আগে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন। ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক… এখনও নিজের দুই পায়ে দাঁড়াতে পারেন না। নার্স ছাড়াও তরুণকান্তির পুত্রবধূ বাবলি সর্বক্ষণ তাঁর খেয়াল রাখে। তরুণকান্তি এখন হুইল চেয়ারে বসেই ইজেলে ছবি আঁকেন। …তবু ন’কাকা ভালো নেই। ভালো নেই স্ত্রী সুজাতা আর সন্তান প্রণয়কান্তির জন্য। সুজাতা আমার ন’কাকিমা আর প্রণয় আমার খুড়তুতো ভাই। কিন্তু তাদের প্রসঙ্গ তো এড়াতে পারব না। এড়াতে পারবো না এমন অনেক ইতিহাস যা সর্বসমক্ষে না এলেই হয়তো ভালো হতো।
 

গল্প ও উপন্যাস পাঠানোর নিয়ম

‘সময় আপডেটস’-এর এই বিভাগে যাঁরা গল্প ও উপন্যাস পাঠাতে চান তাঁরা ছোটদের ও বড়দের আলাদা আলাদা গল্প পাঠাতে পারেন৷ বুঝতে সুবিধার জন্য ইমেলের ‘সাবজেক্ট’-এ বিভাগের উল্লেখ করবেন৷ ছোটদের গল্পের জন্য ১০০০ শব্দ ও বড়দের গল্পের জন্য ১০০০-১৫০০ শব্দের মধ্যে পাঠাতে হবে ইউনিকোড ফরম্যাটে। সঙ্গে ঠিকানা ও যোগাযোগ নম্বর দিতে ভুলবেন না৷ গল্প বা উপন্যাস নির্বাচিত হলে যোগাযোগ করা হবে৷ ইমেল: samayupdatesin.writeus@gmail.com

* বসুন্ধরা এবং (Basundhara Ebong-Novel) : জিৎ সত্রাগ্নি (Jeet Satragni) বাংলা শিল্প-সংস্কৃতি জগতে এক পরিচিত নাম। দূরদর্শন সংবাদপাঠক, ভাষ্যকার, কাহিনিকার, টেলিভিশন ধারাবাহিক, টেলিছবি ও ফিচার ফিল্মের চিত্রনাট্যকার, নাট্যকার। উপন্যাস লেখার আগে জিৎ রেডিয়ো নাটক এবং মঞ্চনাটক লিখেছেন। প্রকাশিত হয়েছে ‘জিৎ সত্রাগ্নি’র নাট্য সংকলন’, উপন্যাস ‘পূর্বা আসছে’ ও ‘বসুন্ধরা এবং…(১ম খণ্ড)’।

Skip to content