মঙ্গলবার ৯ জুলাই, ২০২৪


কলকাতায় জানুয়ারির শেষে উধাও কনকনে ঠান্ডার আমেজ। একটু বেলা বাড়লেই গায়ে থাকা গরম জামায় কষ্ট হচ্ছে। শীতের এই খেয়ালিপনায় দেখা দিচ্ছে জ্বর-জ্বর ভাব, হাঁচি-কাশি, গা-হাত ম্যাজম্যাজ ইত্যাদি উপসর্গ। চিকিৎসক এবং পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের কথায়, সমস্যার মূলে রয়েছে দূষণ। শীতের শুষ্কতা এবং দূষণ— এই দুইয়ের ভুগছেন কলকাতাবাসী। তবে তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী হলে এ ধরনের অসুখ-বিসুখ কিছুটা কমবে।
দেশের উল্লেখযোগ্য দূষিত শহরগুলির রয়েছে কলকাতাও। বায়ুদূষণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে পরিবেশ মন্ত্রক। এর মধ্যে মূল উদ্দেশ্য হল বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা। কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনা, বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ ২০২৪ সালের মধ্যে (পিএম ২.৫) জাতীয় স্তরে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে ফেলা। যদিও বায়ুসূচকের স্বাভাবিক মাত্রা কলকাতা-সহ বিভিন্ন শহরে বছরের পর বছর লঙ্ঘিত হচ্ছে।

মঙ্গলবারের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিধাননগর এলাকায় বাতাসে ২৭৬ ছিল ধূলিকণার গড়। পিএম ১০-এর গড় মাত্রা ১৭০। রবীন্দ্র সরোবরে ১৩৫। কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম এলাকায় ভাসমান ধূলিকণার গড় ১৪৫-এর আশপাশে থাকছে। মহানগরের সর্বোচ্চ দূষিত জায়গাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ভিক্টোরিয়ার আশপাশের এলাকা। এখাকার ধূলিকণার গড় পরিমাণ (পিএম ২.৫) ৩১২!
আরও পড়ুন:

রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা, পর্ব-৩: বিমানবন্দর থেকে বেরিয়েই উইসকনসিনের সঙ্গে পার্থক্যটা টের পেলাম, মুহূর্তে ঠোঁট, গাল জমে যেতে লাগল

অনন্ত এক পথ পরিক্রমা, পর্ব-৪: যেখানে অর্জিত ভক্তি ও বিশ্বাস আছে, সেখানেই ভগবান আছেন

২.৫ মাইক্রন ঘনত্বের সূক্ষ্ম ধূলিকণা থেকে ১০ মাইক্রন ঘনত্বের ধূলিকণা অর্থ হল পিএম ২.৫ এবং পিএম ১০। শীতে কলকাতার বাতাস ভরে গিয়েছে এই দু’ধরনের ধূলিকণায়। আর এর জেরে দেখা দিচ্ছে অসুখ-বিসুখ। সাধারণত ভাবে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানির মতো অসুখে যাঁরা ভুগছেন, এ বছর তাঁরাই বেশি সমস্যায় পড়েছেন।

বিশেষজ্ঞদের কথায়, এর থেকে মুক্তি পেতে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে বায়ুদূষণকে। বাতাসে বাড়তে থাকে কার্বন কণা, পিএম ২.৫ প্রভৃতি। এ ছাড়াও যানবাহনের দূষণ তো রয়েইছে। তিলোত্তমা কলকাতায় দূষণের মূল উৎস হল যানচলাচল।
আরও পড়ুন:

স্বাদে-গন্ধে: সামনেই জন্মদিন? বিশেষ দিনের ভূরিভোজে বানিয়ে ফেলুন কাশ্মীরি পদ মটন রোগান জোস!

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৪৯: গুরুদেবের দেওয়া গুরুদায়িত্ব

তা এর থেকে বেরনোর উপায় কী? এক্ষেত্রে নিজেদের সুস্থ রাখতে প্রয়োজন পরিচ্ছন্ন থাকা। দরকারে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। তবে তাপমাত্রার পারদ বাড়লে এই দূষণমাত্রাও ধীরে ধীরে কমবে।
রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন এবং পরিবেশ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার কথায়, ‘‘ঘন কুয়াশায় কিছুটা হলেও কষ্ট হয়ে থাকে। আকাশ পরিষ্কার হলে আবার সেই সমস্যা থাকে না। দূষণ মোকাবিলায় সমাধানে রাজ্যের পরিবেশ দফতর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ১২৬টি মিউনিসিপ্যাল শহরে দূষণ সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণে দিল্লি আইআইটি গবেষকদের সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম, বীরভূম-সহ একাধিক জায়গায় গাছ লাগানোর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’’

Skip to content