সোমবার ২৫ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী

বিয়ে বিষয়টি একটি মধুর সম্পর্কের সূত্রপাত। কিন্তু আধুনিকতার নামে বিবাহ বিষয়টি পারস্পরিক মর্যাদা ও দায়িত্ববোধের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। এখন ক্রমশ বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা বেড়েই চলেছে। কথায় আছে ঘর ভাঙা খুব সহজ কিন্তু গড়ে তোলা কঠিন। এরকম এক সময়ে ফাটল ধরা দাম্পত্য সম্পর্কের মিলমিশ করিয়ে দিতে মানবিক চেহারা দেখাল আদালত। সাড়ে আট বছরের পুরনো সম্পর্ককে এক সুতোয় বাঁধতে দাম্পতিকে প্রকৃতির মাঝে একান্তে সময় কাটানোর পরামর্শ কলকাতা হাই কোর্টের। এখানেই তিনি থেমে থাকেননি বিচারপতি কৌশিক চন্দের ওই দাম্পতির জন্য নিউটাউনের ইকো পার্ক লাগোয়া একটি বাড়ি বুকিংয়ের ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুগলের একজন উত্তর কলকাতার বেলেঘাটার বাসিন্দা অর্জুন, অন্যজন বেহালার বাসিন্দা অপর্ণা। বিশ্ববিদ্যালয়েই তাঁদের প্রেমের সূত্রপাত। ছয় বছর প্রেমের সম্পর্কের পর তাঁরা পাকাপাকি ভাবে গাঁটছড়া বাঁধে। অর্জুন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারী এবং অপর্ণা সল্টলেক সেক্টর ফাইভের নামি আইটি কোম্পানির কর্মী। বেশ ভালোই চলছিল তাঁদের বিবাহিত জীবন। কিন্তু বিয়ের তিন মাস যেতে না যেতেই ভুল বোঝাবুঝির কারণে তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরে। বিয়ের তিন মাসের মাথায় অপর্ণা বাপের বাড়িতে চলে যান। সেই থেকেই সাড়ে আট বছরের বৈবাহিক জীবনে দূরত্ব শুধু বেড়েই চলেছে। এত বছর বাদে অপর্ণা অয়নের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার মামলা করেন। তাঁর অভিযোগ বিয়ের গয়না-সহ বেশ কিছু সামগ্রী আটকে রেখেছেন অর্জুন। এই খবর পেয়েই অর্জুন হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই মামলাতে বিচারপতি কৌশিক চন্দ দু’জনকে নিজের চেম্বারে ডাকেন। এরপর বিচারপতি অর্জুনের কাছে জানতে চান, স্ত্রীয়ের জিনিসপত্র আপনি ফেরত দেননি কেন? অর্জুন উত্তরে জানান, অপর্ণার অভিযোগ পুরোপুরী সত্যি নয়।
ওই দাম্পতির উদ্দেশে বিচারপতির আর্জি দু’জনে আবারও একসঙ্গে ঘর বাঁধার চেষ্টা করুন না। আপনারা শিক্ষিত, রুচিশীল, রোজগেরে। আপনারা চাইলে আমি একটু সাহায্য করতেই পারি। এই কথা শুনে অর্জুন জানান, আমি তো চাই আবার একসঙ্গে জমিয়ে সংসার করতে। এই কথা শুনে লাজুক হেসে অপর্ণাও সম্মতি জানান। দুজনের সম্মতি দেখে বিচারপতি তাঁদেরকে প্রকৃতির মাঝে নিরিবিলি সময় কাটানোর পরামর্শ দেন।
বিচারপতির পরামর্শ মেনে নিতে রাজি হন দম্পতী। তৎক্ষণাৎ তাঁদের উপর ভরসা না করে নিজেই নিউটাউনের ইকো পার্কের বুকে একটি সুন্দর বাড়ি বুকিংয়ের ব্যবস্থাও করে দেন। আদালতকে ওই যুগল জানিয়েছেন, নিজেদের খরচে দু’রাত ওখানে সময় কাটাবেন। চেষ্টা করবেন দাম্পত্যের হৃত মাধুর্য পুনরুদ্ধারের।

Skip to content