শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫


এই পর্বে আমরা চলে এসেছি উত্তর কলকাতার হেদুয়ায়। না, এ বার সেরকম আক্ষরিক অর্থে স্নাক্স বা রেস্তরাঁর খাবার খেতে নয়। মিষ্টিমুখ করতে। চলে এলাম ১৭৯ বছর পুরনো, ‘গিরীশ চন্দ্র দে অ্যান্ড নকুড় চন্দ্র নন্দী’তে।
নকুড়ের নাম বহু চর্চিত। বিখ্যাত বললেও খুব কম বলা হবে। অভিষেক বচ্চন থেকে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মার্কিন দেশের হিলারি ক্লিনটন থেকে আইপিএল বিজয়ী ‘কলকাতা নাইট রাইডার্স’, এমনকি দেশের বিভিন্ন সময়ের প্রধানমন্ত্রীরাও নকুড়ের গুণগান করেন।
আরও পড়ুন:

কলকাতার পথ-হেঁশেল, পর্ব-১৯: The ভাটুরা Co.

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৭৭: আস্তাবলে সহিসদের রাখি পরাতে রবীন্দ্রনাথ ছুটে গিয়েছিলেন

এদের এক বিশিষ্টতা হল, মিষ্টিতে এদের নেই কোনও প্রিজারভেটিভ। এদের মিষ্টির বিক্রি এতই যে, দোকানে কোনও ফ্রিজ পর্যন্ত নেই। মিষ্টির ট্রে ঘড়ির কাঁটা ঘুরতে না ঘুরতেই খতম। কিছু মিষ্টি অবশ্য স্পেশাল—শুধু গরমকাল বা শীতকাল, বা কোনও বিশেষ ফলের সিজন ছাড়া পাবেন না। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কাঁঠাল সন্দেশ আর মনোহরা।
আরও পড়ুন:

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-২৫: উদ্যানবাটিতে সারদা মায়ের ঠাকুরের শুশ্রূষা

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৫৭: হারায়ে খুঁজি চন্দ্রনাথ

এছাড়াও রোববার করে পাবেন চপ। আর শনিবার থাকে ‘আবার খাবো’। রয়েছে নরমপাক আর কড়াপাক—দু’ রকম ভ্যারাইটির সন্দেশ। গুড়ের সন্দেশের বিশাল তালিকা—জলভরা, মনপুলি, মনোহরা, মৌসুমি—আরও কত কি! রয়েছে বিভিন্ন ফলের রস দিয়ে তৈরি সন্দেশ ব্ল্যাক কারেন্ট, কমলা, আম, বাটারস্কচ ইত্যাদি। আর একদম সুগার ফ্রি মিষ্টিও রয়েছে। এছাড়াও চকলেটের মধ্যেও রয়েছে নানানরকম সন্দেশ। রয়েছে হরেক রকম শুকনো ফলের কুচি দেওয়া ক্ষীরের সিঙ্গাড়া আর সরের পুলি। ও হ্যাঁ, শীতভর নলেনগুড়ও পাবেন এখানে।
আরও পড়ুন:

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৫: ঠাকুরবাড়ির দখিনা বাতাস— জ্ঞানদানন্দিনী দেবী

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-২৮: সুন্দরবনের তিন গাজী—রক্তান গাজী, তাতাল গাজী ও শতর্ষা গাজী

মিষ্টির গড়পড়তা দাম ওই পঁচিশ থেকে তিরিশের মধ্যে। দুই একটি বিশেষ আইটেমের দাম অবশ্য পঁয়তাল্লিশ পড়বে। একটা কথা মনে রাখা ভালো—বাঙালির যে কোনও অনুষ্ঠানের দিন বা তার আগের সন্ধ্যায় গেলে বেশ ভীড় থাকবে। অর্থাৎ মিষ্টি খাওয়ার প্ল্যান ভণ্ডুল। এগুলো শুধু একটু মাথায় রাখবেন।

তাহলে? নতুন বছরে সবার মিষ্টিমুখ পাওনা রইল!

ছবি: গিরিশ চন্দ্র দে ও নকুড় চন্দ্র নন্দী-র ফেসবুক পেজের সৌজন্যে।
* কলকাতার পথ-হেঁশেল (kolkata-street-foods): শ্রুতিদীপ মজুমদার, (Shrutideep Majumder) ভোজনরসিক।

Skip to content