কলকাতার অফিস পাড়ায় ঘুর ঘুর করতে করতে পেট চুঁইচুঁই করতে লাগল। তো কোথায় যাই? ঠিক ধরেছেন। কলকাতার নিজের ফুড স্ট্রিট—ডেকার্স লেন। একটু ‘স্ন্যাক্স-স্ন্যাক্স’ মন করছিল বটে। কী করি? হাঁটতে হাঁটতে এসে পৌঁছলাম চিত্তবাবুর দোকানে। দেখি, দোকানের উল্টোদিকের দেওয়ালের গা ঘেঁষে লোকজন বসে আছেন। কারও হাতে চিকেন স্ট্যু, আবার কারও হাতে কবিরাজি।
চিত্তবাবুর দোকানে স্ট্যুটা মাস্ট ট্রাই হলেও, বিকেল বিকেল ছিল বলে এই পদটা পরের বারের জন্য রেখে দিলাম। তা ছাড়া সঙ্গে বন্ধুরাও তো ছিল। চিকেন স্ট্যু খেতে বললে আবার একটু কেমন কেমন কথা শোনাতে পারে। এই ভেবে তুলে নিলাম ফিশ ফ্রাই আর একটা ফিশ বাটার ফ্রাই। উফ্, কী স্বাদ, ভেটকির ভলক্যানো পুরো! বেশ সাপটে খাওয়া হল।
আরও পড়ুন:
উত্তর কলকাতার বেলগাছিয়া: প্রাণের আশ-প্যান্থেরাস
অমর শিল্পী তুমি, পর্ব-8: চলতি কা নাম কিশোর
এ বার চা-এর পালা। প্রতি ১০ মিনিট প্রায় ৫০ কাপ চা বিক্রি হয়ে চলেছে—তার সাক্ষী হলাম আমরা। দুধ আর চায়ের লিকার দু’ রকম দু’ হাতে চুমুক দিতে দিতে দেদার আড্ডা চলেছে। সেই ফাঁকে কত উকিল, বেয়ারা, ক্লার্ক পাশাপাশি বসে ভোজনে রত, তার কোনও হিসেব নেই।
আরও পড়ুন:
পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-২৬: অবশেষে চার হাত এক হল, পঞ্চম-আশা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে শুরু করলেন দ্বিতীয় ইনিংস
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৩৪: গলায় মাছের কাঁটা ফুটলে ওষুধ খেলে গলে যায়?
এরপর তো আছে টিফিনওয়ালাদের ভিড়। প্যাক করা খাবার নিয়ে চলল তারা অফিসের পথে। ৭৫ বছরের এই দোকানে অফিস টাইম শেষ না হওয়া অবধি উনুন নেভে না। ভোরবেলা থেকে শুরু হয়ে যায় খাওন-দাওন। চিকেন স্ট্যু থেকে শুরু করে ভাত-মাংস, মাটন, মেটের স্ট্যু, ফিশ রোল, পকোড়া টোস্ট, চা সব কিছুর ব্যবস্থা করে রাখা চিত্তবাবুর দোকানে।
আরও পড়ুন:
মন্দিরময় উত্তরবঙ্গ, পর্ব-৪: ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে কোচস্থাপত্যের অন্যতম কীর্তি দেওতাপাড়া শিব মন্দির
বিধানে বেদ-আয়ুর্বেদ, যৌন সমস্যায় জেরবার? মিলনের প্রতি আসক্তি কমেছে? এর পিছনে কোন কারণ লুকিয়ে? প্রতিকার আছে আয়ুর্বেদে
দামেতেও বেশ লোভনীয়। ভাজা-ভুজি ৫০ থেকে শুরু। স্ট্যু ১০০। আর চা খেতে হলে ১৫ টাকাই যথেষ্ট। ধর্মতলার আশেপাশে থাকলে খাদ্যরসিকদের জন্যে এই স্পটটা মিস করা জাস্ট চলে না!
* কলকাতার পথ-হেঁশেল (kolkata-street-foods): শ্রুতিদীপ মজুমদার, (Shrutideep Majumder) ভোজনরসিক।