চা ওজনের কাজ চলছে।
১৮৫৫ সালে বরাক উপত্যকায় অর্থাৎ তৎকালীন কাছাড়ের ‘বজরং টি এস্টেট’ এ প্রথম চা উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু হয়। অসমের দক্ষিণ প্রান্তে বরাক নদীর বিধৌত জেলা কাছাড়, করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দিতে কমবেশি একশোটিরও বেশি চা বাগান আছে। সবুজের এই সব বাগানে লুকিয়ে রয়েছে অতীতের অসংখ্য লোমহর্ষক গল্প, যে সব শুনলে আজও আমরা শিউরে উঠি।
চরগোলা এক্সোডাস সে রকমই এক ঐতিহাসিক ঘটনা, যা গল্পের থেকে কোনওও অংশে কম নয়। চা উৎপাদনের জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে শ্রমিক জোগাড় করতে ইংরেজ উদ্যোগপতিরা কিছু লোক নিযুক্ত করে। এদের বলা হত ‘আড় কাটি’। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অতি সাধারণ মানুষদের ভুলিয়ে-ভালিয়ে কিংবা বল প্রয়োগ করে ধরে নিয়ে আসা হত অসমে। অভাবী এই শ্রমিকদের কোনও রকম সুবিধে না দিয়ে প্রথমে কলকাতার বন্দরে একটি গুদামে রাখা হত। যাদের বরাক উপত্যকায় নিয়ে আসা হত তাদেরকে শিলচরের কাছে একটি জায়গায় রাখা হত। জায়গাটির নাম ছিল আর্কটিপুর। এই নামে জায়গাটি এখনও আছে। চা শ্রমিকদের সঙ্গে একটি চুক্তি করে তাদেরকে আইনের বেড়াজালে ফাঁসিয়ে রাখত ইংরেজ চা উদ্যোগ পতিরা।
চরগোলা এক্সোডাস সে রকমই এক ঐতিহাসিক ঘটনা, যা গল্পের থেকে কোনওও অংশে কম নয়। চা উৎপাদনের জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে শ্রমিক জোগাড় করতে ইংরেজ উদ্যোগপতিরা কিছু লোক নিযুক্ত করে। এদের বলা হত ‘আড় কাটি’। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অতি সাধারণ মানুষদের ভুলিয়ে-ভালিয়ে কিংবা বল প্রয়োগ করে ধরে নিয়ে আসা হত অসমে। অভাবী এই শ্রমিকদের কোনও রকম সুবিধে না দিয়ে প্রথমে কলকাতার বন্দরে একটি গুদামে রাখা হত। যাদের বরাক উপত্যকায় নিয়ে আসা হত তাদেরকে শিলচরের কাছে একটি জায়গায় রাখা হত। জায়গাটির নাম ছিল আর্কটিপুর। এই নামে জায়গাটি এখনও আছে। চা শ্রমিকদের সঙ্গে একটি চুক্তি করে তাদেরকে আইনের বেড়াজালে ফাঁসিয়ে রাখত ইংরেজ চা উদ্যোগ পতিরা।
১৮৫৯ সালের ওয়ার্কম্যান’স ব্র্যাচ অফ কনট্রাক্ট-এর (অ্যাক্ট ৩) মাধ্যমে চা শ্রমিকদের জীবনের উপর সম্পূর্ণ অধিকার নিয়ে নেয় বাগান কর্তৃপক্ষ। এমনকি, প্রয়োজনে তাদেরকে শাস্তিও বাগান কর্তৃপক্ষ দিতে পারত। অকথ্য পরিশ্রম করা এই শ্রমিকদেরকে কোনও সম্মান তো দেওয়া হত না। শ্রমিকদের কুলি বলে ‘সম্বোধন’ করা হত।
একটু স্বাভাবিক জীবন, ভাত-কাপড়ের আশায় যারা নিজেদের বাস্তুভিটে ছেড়ে অসমে এসেছিলেন তাদের দুর্দশার অন্ত ছিল না। দাস প্রথা ততদিনে উঠে গেলেও তাদের জীবন কৃতদাসদের থেকে কম কষ্টকর ছিল না। বাইরের জগতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন অসহায় এই শ্রমিকদের ইংরেজ বাগান পরিচালকরা সম্পূর্ণভাবে শোষণ করেছে। ফলে বিভিন্ন সময়ে বহু চা শ্রমিক বাগান ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেছে। অবশ্য বেশিরভাগ লোকই ধরা পড়ে গিয়েছে। পালানোর অপরাধে তাদের কঠোর শাস্তিও হয়েছে। তবুও তারা হাল ছাড়েনি। শাসকের হাত থেকে রেহাই পেতে তাই শুরু হল ‘মুলুক চলো অভিযান’।
চা বাগানগুলিতে বাইরের কোনও ব্যক্তির প্রবেশ অধিকার ছিল না। তবে পূজারী ব্রাহ্মণ দেওশরন ত্রিপাঠি, কাপড় ব্যবসায়ী গঙ্গাদওয়াল দীক্ষিত, রাম প্রসাদ চৌবে এঁদের জন্য সীমিত অনুমতি ছিল। তাঁরাই চা শ্রমিকদের বাইরের খবর দিতেন। করিমগঞ্জ জেলার দক্ষিণ দিকে লুসাই পাহাড়ের নিচের দিকে চরগোলা উপত্যকা অবস্থিত। এই চরগোলা উপত্যকার আনিপুর বাগান থেকে প্রায় সাতশোর বেশি শ্রমিক এই পূজারী আর ব্যবসায়ীদের সাহায্যে স্বপরিবারে নিজের দেশে ফেরার জন্য ‘গান্ধী মহারাজ কি জয়’ শ্লোগান দিয়ে পথে নামেন। শুরু হল মুকুল চল আন্দোলন।
একটু স্বাভাবিক জীবন, ভাত-কাপড়ের আশায় যারা নিজেদের বাস্তুভিটে ছেড়ে অসমে এসেছিলেন তাদের দুর্দশার অন্ত ছিল না। দাস প্রথা ততদিনে উঠে গেলেও তাদের জীবন কৃতদাসদের থেকে কম কষ্টকর ছিল না। বাইরের জগতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন অসহায় এই শ্রমিকদের ইংরেজ বাগান পরিচালকরা সম্পূর্ণভাবে শোষণ করেছে। ফলে বিভিন্ন সময়ে বহু চা শ্রমিক বাগান ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেছে। অবশ্য বেশিরভাগ লোকই ধরা পড়ে গিয়েছে। পালানোর অপরাধে তাদের কঠোর শাস্তিও হয়েছে। তবুও তারা হাল ছাড়েনি। শাসকের হাত থেকে রেহাই পেতে তাই শুরু হল ‘মুলুক চলো অভিযান’।
চা বাগানগুলিতে বাইরের কোনও ব্যক্তির প্রবেশ অধিকার ছিল না। তবে পূজারী ব্রাহ্মণ দেওশরন ত্রিপাঠি, কাপড় ব্যবসায়ী গঙ্গাদওয়াল দীক্ষিত, রাম প্রসাদ চৌবে এঁদের জন্য সীমিত অনুমতি ছিল। তাঁরাই চা শ্রমিকদের বাইরের খবর দিতেন। করিমগঞ্জ জেলার দক্ষিণ দিকে লুসাই পাহাড়ের নিচের দিকে চরগোলা উপত্যকা অবস্থিত। এই চরগোলা উপত্যকার আনিপুর বাগান থেকে প্রায় সাতশোর বেশি শ্রমিক এই পূজারী আর ব্যবসায়ীদের সাহায্যে স্বপরিবারে নিজের দেশে ফেরার জন্য ‘গান্ধী মহারাজ কি জয়’ শ্লোগান দিয়ে পথে নামেন। শুরু হল মুকুল চল আন্দোলন।
আরও পড়ুন:
এই দেশ এই মাটি, অসমের আলো-অন্ধকার, পর্ব-৬: ইতিহাসে চা
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৩১: সুন্দরবনের ঐতিহ্য গঙ্গাসাগরমেলা ও কপিল মুনির আশ্রম
খুব তাড়াতাড়ি এই আন্দোলনের আগুনের মতো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল। তবে তাদের এই আন্দোলনের যাত্রাপথটা খুব একটা সহজ ছিল না। তাছাড়া কোনওদিন বাইরে না যাওয়ার জন্য বাইরের জগৎ সম্পর্কে খুব স্পষ্ট ধারণাও ছিল না। যাইহোক, এক দু’ দিনের মধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় হাজার হাজার শ্রমিক করিমগঞ্জে জমা হয় স্বভূমিতে ফেরার জন্য। কিছু লোক এতে সফল হলেও চা বাগান কর্তৃপক্ষের নির্দেশে স্টেশন মাস্টার শ্রমিকদের ট্রেনে চরতে দেননি। অবশেষে করিমগঞ্জ শহরের প্রভাবশালী কিছু সৎ ব্যক্তিরা সাহায্যের হাত নিয়ে এগিয়ে আসেন। এঁদের মধ্যে শচন্দ্র দত্তের নাম উল্লেখ যোগ্য।
করিমগঞ্জ, সিলেটের এবং বরাকের বিভিন্ন জায়গার চা শ্রমিকরা বর্তমান বাংলাদেশের চাঁদপুরে নদী বন্দরে জমায়েত হলেন। এ বার পদ্মা নদী পেরিয়ে কলকাতা, আবার কলকাতা থেকে নিজেদের মুলুক পৌঁছনোর পালা। কিন্তু এত সহজে তো আর কিছুই হয় না। মানুষ ভাবে এক আর হয় আর অন্য কিছু। চাঁদপুরে সদরের এসডিও সুশীলকুমার সিনহা শ্রমিকদের সাহায্য করলেও ইন্ডিয়ান টি এসোসিয়েশনের এক প্রতিনিধি মিস্টার ম্যাক ফারসন সশস্ত্র গোর্খা সৈন্য নিয়ে হাজির হন। ১৯ মে ১৯২১ সাল, পদ্মা নদী পার করার জন্য অনেক শ্রমিক জাহাজে উঠেছিলেন। আর কিছু লোকজন ছিল বন্দরেই। কিন্তু ম্যাক সাহেবের নির্দেশে সেই জাহাজের পাটাতন খুলে দেওয়া হয়। পদ্মানদীর জলে মুহূর্তে বহু শ্রমিকের জীবন শেষ হয়ে যায়। চোখের সামনে কাছের মানুষদের হারিয়ে অসহায়, বিধ্বস্ত মানুষগুলির অবস্থা কল্পনা করা যায় না। এর পরে অনেকে নিজের কর্মস্থলে ফিরে যান।
করিমগঞ্জ, সিলেটের এবং বরাকের বিভিন্ন জায়গার চা শ্রমিকরা বর্তমান বাংলাদেশের চাঁদপুরে নদী বন্দরে জমায়েত হলেন। এ বার পদ্মা নদী পেরিয়ে কলকাতা, আবার কলকাতা থেকে নিজেদের মুলুক পৌঁছনোর পালা। কিন্তু এত সহজে তো আর কিছুই হয় না। মানুষ ভাবে এক আর হয় আর অন্য কিছু। চাঁদপুরে সদরের এসডিও সুশীলকুমার সিনহা শ্রমিকদের সাহায্য করলেও ইন্ডিয়ান টি এসোসিয়েশনের এক প্রতিনিধি মিস্টার ম্যাক ফারসন সশস্ত্র গোর্খা সৈন্য নিয়ে হাজির হন। ১৯ মে ১৯২১ সাল, পদ্মা নদী পার করার জন্য অনেক শ্রমিক জাহাজে উঠেছিলেন। আর কিছু লোকজন ছিল বন্দরেই। কিন্তু ম্যাক সাহেবের নির্দেশে সেই জাহাজের পাটাতন খুলে দেওয়া হয়। পদ্মানদীর জলে মুহূর্তে বহু শ্রমিকের জীবন শেষ হয়ে যায়। চোখের সামনে কাছের মানুষদের হারিয়ে অসহায়, বিধ্বস্ত মানুষগুলির অবস্থা কল্পনা করা যায় না। এর পরে অনেকে নিজের কর্মস্থলে ফিরে যান।
আরও পড়ুন:
পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-৪৬: সমুন্দর ম্যায় নাহাকে আউর ভি নমকিন…
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-২৯: আবার পুরী ভ্রমণ
ঘটনা এখানেই শেষ নয়, চট্টগ্রাম ডিভিশনের কমিশনার কিরণচন্দ্র দে কয়েকজন ইংরেজ পাট ব্যবসায়ী এবং সশস্ত্র গোর্খা সৈন্য নিয়ে ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়। গোর্খা সৈন্যরা স্বজন হারানো অসহায় শ্রমিকদের উপর লাঠি চার্চ করে। ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত, অবসন্ন মানুষগুলির প্রতিবাদ করার পর্যন্ত ক্ষমতা ছিল না। ঘটনাটির খবর পাওয়া মাত্র চাঁদপুরের কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট অখিলচন্দ্র দত্ত, ভাইস প্রেসিডেন্ট হরদয়াল নাগ-সহ অনেকে দ্রুত শ্রমিকদের পাশে এসে দাঁড়ান।
এ লড়াই শুধু শ্রমিক আর মালিক পক্ষের ছিল না। লড়াই ছিল মূলত লোভী ইংরেজ উদ্যোগপতিদের সঙ্গে সাধারণ খেটে খাওয়া ভারতীয়দের। স্থানীয় নেতারা সেই রাতেই চাঁদপুরের বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিকদের থাকা, খাওয়া দাওয়া এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই সারা শহরে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠে। পরদিন সারা শহরে হরতাল ডাকা হয়। একটানা অনেক দিন পর্যন্ত বন্ধ চলে। করিমগঞ্জ থেকে শচন্দ্র দত্ত, ক্ষীরোদচন্দ্র দেব, কয়েকজন চিকিৎসক এবং বহু মানুষ শ্রমিকদেরর দুঃখ ভাগ করে নিতে চাঁদপুরে পৌছে গেলেন।
প্রতিবাদের এই আগুন শুধু বরাক উপত্যকা বা অসমে নয়, ঢাকা ও চট্টগ্রামেও ছড়িয়ে পড়ল। গুয়াহাটির আইনজীবীরা তিনদিন ধর্মঘট করেন। চট্টগ্রাম থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামী যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত চাঁদপুর পৌঁছে রেল এবং স্টিমার ধর্মঘট ঘোষণা করেন। তিনি সেই সময় রেল কর্মচারীদের ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সে সময় অনেক রেলকর্মচারীদের চাকরিও চলে যায়। মুলুক চল আন্দোলন এক অন্য রূপ নিল। উল্লেখ্য, তৎকালীন ত্রিপুরার রাজ পরিবারের প্রস্তাবে অনেক শ্রমিক ত্রিপুরা চলে গেল স্থায়ী ভাবে।
এ লড়াই শুধু শ্রমিক আর মালিক পক্ষের ছিল না। লড়াই ছিল মূলত লোভী ইংরেজ উদ্যোগপতিদের সঙ্গে সাধারণ খেটে খাওয়া ভারতীয়দের। স্থানীয় নেতারা সেই রাতেই চাঁদপুরের বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিকদের থাকা, খাওয়া দাওয়া এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই সারা শহরে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠে। পরদিন সারা শহরে হরতাল ডাকা হয়। একটানা অনেক দিন পর্যন্ত বন্ধ চলে। করিমগঞ্জ থেকে শচন্দ্র দত্ত, ক্ষীরোদচন্দ্র দেব, কয়েকজন চিকিৎসক এবং বহু মানুষ শ্রমিকদেরর দুঃখ ভাগ করে নিতে চাঁদপুরে পৌছে গেলেন।
প্রতিবাদের এই আগুন শুধু বরাক উপত্যকা বা অসমে নয়, ঢাকা ও চট্টগ্রামেও ছড়িয়ে পড়ল। গুয়াহাটির আইনজীবীরা তিনদিন ধর্মঘট করেন। চট্টগ্রাম থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামী যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত চাঁদপুর পৌঁছে রেল এবং স্টিমার ধর্মঘট ঘোষণা করেন। তিনি সেই সময় রেল কর্মচারীদের ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সে সময় অনেক রেলকর্মচারীদের চাকরিও চলে যায়। মুলুক চল আন্দোলন এক অন্য রূপ নিল। উল্লেখ্য, তৎকালীন ত্রিপুরার রাজ পরিবারের প্রস্তাবে অনেক শ্রমিক ত্রিপুরা চলে গেল স্থায়ী ভাবে।
আরও পড়ুন:
মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৪৬: যুগান্তরেও সম্মানিতা হন সীতা, তাঁর বনবাস গমনের সিদ্ধান্তে কী তার কোনও প্রভাব আছে?
শাশ্বতী রামায়ণী, পর্ব-৩৮: ভরত কি ফিরবে শূন্য হাতে?
চট্টগ্রামের হাজি সাহেব, মহম্মদ হারুন এবং আরও অনেক দেশ প্রেমিক লোক যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তের পাশে এসে দাঁড়ান। চাঁদপুরের সংবাদ পেয়ে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ ৫ জুন চাঁদপুরে এসে পৌঁছন। শ্রমিকদের অবস্থা দেখে মর্মাহত হয়েছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন। চরগোলা এক্সোডস তখন স্বাধীনতা আন্দোলনের মূলস্রোতে মিশে গিয়েছে। শ্রমিকদের হৃদয় বিদারক অবস্থার কথা দেশের নেতাদের দৃষ্টিগোচর হল। কেউ কেউ বিভিন্ন প্রতিকূলতা পেরিয়ে দেশে ফিরে যেতে সফল হলেও, সবার পক্ষে তা আর সম্ভব হয়ে উঠল না।
আসলে প্রদীপ জ্বালানোর আগে যেমন সলতে পাকানোতে হয়, ঠিক তেমনি একটি বড় আন্দোলন কিংবা রাজনৈতিক পরিবর্তনের পেছনেও থাকে অনেক ছোট-বড় ঘটনা। সেই সব ঘটনার কোনওটারই কম গুরুত্ব ছিল না। কিন্তু বিভিন্ন কারণে কোনও কোনও ঘটনা ইতিহাসে বিশেষ জায়গা করে নেয়, আবার কোনও ঘটনা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের স্মৃতি থেকে চলে যায়। মুলুক চলার শ্লোগান নিয়ে ‘গান্ধীজি কি জয়’ বলে দু’ চোখভরা স্বপ্ন ও বুকে বল নিয়ে চা শ্রমিকরা যে অভিযানে সে দিন নেমে ছিল, তার পরিণতি যাই হোক না কেন, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য।—চলবে।
আসলে প্রদীপ জ্বালানোর আগে যেমন সলতে পাকানোতে হয়, ঠিক তেমনি একটি বড় আন্দোলন কিংবা রাজনৈতিক পরিবর্তনের পেছনেও থাকে অনেক ছোট-বড় ঘটনা। সেই সব ঘটনার কোনওটারই কম গুরুত্ব ছিল না। কিন্তু বিভিন্ন কারণে কোনও কোনও ঘটনা ইতিহাসে বিশেষ জায়গা করে নেয়, আবার কোনও ঘটনা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের স্মৃতি থেকে চলে যায়। মুলুক চলার শ্লোগান নিয়ে ‘গান্ধীজি কি জয়’ বলে দু’ চোখভরা স্বপ্ন ও বুকে বল নিয়ে চা শ্রমিকরা যে অভিযানে সে দিন নেমে ছিল, তার পরিণতি যাই হোক না কেন, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য।—চলবে।
* ড. শ্রাবণী দেবরায় গঙ্গোপাধ্যায় লেখক ও গবেষক।