শনিবার ৯ নভেম্বর, ২০২৪


নয়ডায় সেই যমজ অট্টালিকা।

আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। নয়ডার সেই বিতর্কিত ৪০ তলার গগনচুম্বী যমজ অট্টালিকাকে ভেঙে ফেলার চূড়ান্ত প্রস্তুতি প্রায় সারা। কুতুব মিনারের থেকেও উঁচু দুই অট্টালিকাকে মাটিতে মিশিয়ে দিতে ৩৭০০ কেজি বিস্ফোরক আনা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নয়ডার ২৮ অগস্ট রবিবার দুপুর আড়াইটের সময় এই যমজ অট্টালিকা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। এ নিয়ে নয়ডা প্রশাসন একটি অ্যাডভাইজরি জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ভাঙার সময় ওই যমজ অট্টালিকার এক নটিক্যাল মাইলের (১.৮ কিলোমিটার) মধ্যে যাতে কোনও বিমান যাতাযাত না করে। যমজ টাওয়ারে মোট ৯০০টি ফ্ল্যাট আছে। গগনচুম্বী যমজ অট্টালিকাকে ভেঙে ফেলার কাজ যৌথ ভাবে করছে মুম্বই এবং দক্ষিণ আফ্রিকার দু’টি সংস্থা।
অট্টালিকা দুটিকে ভেঙে ফেলতে মোট ৩৭০০ কেজি বিস্ফোরক আনা হয়েছে। জানা গিয়েছে, প্রবল শব্দ করে পর পর ফাটবে ডিটোনেটর ও শক টিউবের মতো বিস্ফোরক। পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হতে সময় লাগবে মাত্র ৯ থেকে ১০ সেকেন্ড। এই বিস্ফোরণের ফলে প্রায় ৮০ হাজার টন ধ্বংসাবশেষ তৈরি হবে। ধ্বংসাবশেষের মধ্যে ৫০ হাজার টন ওই ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে। আর অবশিষ্ট ৩০ হাজার টন সেক্টর ৮০-তে ডিমোলিশন ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান্টে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নষ্ট করা হবে।
বিমান পরিবহণ মন্ত্রক সূত্রে খবর, নয়ডার সেক্টর ৯৩এ-তে ওই অট্টালিকা ভাঙার জন্য আকাশে ধুলোর আস্তরণ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই দৃশ্যমানতার সমস্যা দেখা দিতে পারে। তা বাড়তি নিরাপত্তার জন্য যমজ অট্টালিকার দু’কিলোমিটারের মধ্যে অল্প সময়ের জন্য বিমান চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দু’টি অট্টালিকার একটির নাম অ্যাপেক্স, অন্যটি সিয়েন। ৩২ তলার অ্যাপেক্সের উচ্চতা ১০৩ মিটার। সিয়েনের উচ্চতা ৯৭ মিটার। ২৯ তলা। গগনচুম্বী যমজ অট্টালিকাটিকে ভাঙতে প্রতি বর্গফুট খরচ পড়ছে ২৬৭ টাকা করে। অর্থাৎ প্রায় ২০ কোটি টাকা খরচ হবে। এই ২০ কোটি টাকার মধ্যে পাঁচ কোটি টাকা দেবে নির্মাণকারী সংস্থা সুপারটেক। অবশিষ্ট ১৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে ‘ওয়াটারফল ইমপ্লোসন’ পদ্ধতিতে ভাঙা অট্টালিকার ধ্বংসাবশেষ বিক্রি করে।
পাশাপাশি গত ২৬ অগস্ট থেকে আগামী ৩১ অগস্ট পর্যন্ত অট্টালিকার ৫০০ মিটারের মধ্যে ড্রোনও ওড়ানো যাবে না। নয়ডার ডেপুটি পুলিশ কমিশনার বলেন, যমজ অট্টালিকা ভাঙার পর যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ রাখা হবে এক ঘণ্টার জন্য। তবে যদি দেখা যায় ধুলোর আস্তরণ অনেক ক্ষণ ধরে থাকছে, তা হলে এক্সপ্রেসওয়ে আরও বেশিক্ষণ বন্ধ রাখা হতে পারে।
তবে শুধু বিমান বা যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে নয়, বন্ধ আধ ঘণ্টার জন্য মেট্রোও বন্ধ রাখা হবে। অ্যাম্বুল্যান্স, দমকল এবং আপৎকালীন পরিষেবা ওই বিতর্কিত যমজ অট্টালিকার পিছনের রাখা থাকবে। অট্টালিকা থেকে দু’কিলোমিটারের মধ্যে আপৎকালীন পরিষেবা ছাড়া অন্য সব পরিষেবা বন্ধ থাকবে। নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করতে জন্য ৪০০ পুলিশকর্মী ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী তৈরি রাখা হয়েছে। এখানেই শেষ নয় পার্শ্ববর্তী তিনটি হাসপাতালে শয্যার সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়েছে।
নয়ডা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তেমন প্রয়োজনে হলে গ্রিন করিডর তৈরি করা হতে পারে।এ ছাড়াও যমজ অট্টালিকার কাছাকাছি যে সব বিল্ডিং রয়েছে তার বাসিন্দাদের রবিবার সকালের মধ্যে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট অবৈধ নির্মাণের অভিযোগে এই যমজ অট্টালিকাকে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে


Skip to content