বিস্ফোরণের পর দূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এর জন্য ১১টি স্মগ গান আনা হয়েছিল এমারেল্ড কোর্ট চত্বরে । অট্টালিকা দুটির সামনে সেগুলি রাখা হয়। বাকি ন’টি স্মগ গান এলাকার আশপাশে প্রয়োজন অনুযায়ী রাখা হয়। অট্টালিকা দুটি ভাঙার জন্য ৩,৭০০ কেজি বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়।
দু’টি অট্টালিকার একটির নাম অ্যাপেক্স, অন্যটি সিয়েন। ৩২ তলার অ্যাপেক্সের উচ্চতা ১০৩ মিটার। সিয়েনের উচ্চতা ৯৭ মিটার। ২৯ তলা। গগনচুম্বী যমজ অট্টালিকাটিকে ভাঙতে প্রতি বর্গফুট খরচ পড়েছে ২৬৭ টাকা করে। অর্থাৎ প্রায় ২০ কোটি টাকা খরচ হবে। এই ২০ কোটি টাকার মধ্যে পাঁচ কোটি টাকা দেবে নির্মাণকারী সংস্থা সুপারটেক। অবশিষ্ট ১৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে ‘ওয়াটারফল ইমপ্লোসন’ পদ্ধতিতে ভাঙা অট্টালিকার ধ্বংসাবশেষ বিক্রি করে।
— ANI (@ANI) August 28, 2022
এই বেনিয়মের বিরুদ্ধে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে মামলা করে এমারল্ড কোর্ট ওনার্স রেসিডেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। তাদের অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশ অ্যাপার্ট ওনার্স অ্যাক্ট-২০১০ মেনে কাজ করেনি নির্মাণকারী সংস্থা। পাশাপাশি দলিলে যেখানে বাগান তৈরির কথা বলা হয়েছিল সেখানেই যমজ অট্টালিকা মাথা তুলে দাঁড়ায়। নির্মাণ আইন মোতাবেক, দু’টি অট্টালিকার মধ্যে ৩৭ মিটার দূরত্ব থাকা উচিত। কিন্তু অ্যাপেক্স এবং সিয়েনের মধ্যে ১৬ মিটার দূরত্ব রাখা হয়েছিল। আইনি লড়াই শুরু ২০১২-র ডিসেম্বরে। প্রথমে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে মামলা হয়। তারপর সেই মামলা পৌঁছয় সুপ্রিম কোর্টে। শেষ পর্যন্ত শীর্ষ আদালত সেই যমজ অট্টালিকা ভাঙার নির্দেশ দেয়।
নয়ডা পুলিশ আগামী ৩১ অগস্ট পর্যন্ত ড্রোন ওড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। নয়ডা-গ্রেটার নয়ডা এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় দুপুর সোয়া দুটোর সময়, খোলা হবে দুপুর পৌনে ৩টের পর। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ পার্শ্ববর্তী আবাসনের বাসিন্দাদের ফ্ল্যাটে ফেরানো হবে। যমজ অট্টালিকা ভাঙার আগে বাসিন্দাদের দরজা-জানলা বন্ধ রাখতে বলা হয়। সেই সঙ্গে বাড়ির ছাদে যেতে নিষেধ করা হয়েছিল।
বিমান পরিবহণ মন্ত্রক সূত্রে খবর, নয়ডার সেক্টর ৯৩এ-তে ওই অট্টালিকা ভাঙার জন্য আকাশে ধুলোর আস্তরণ তৈরি হবে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই দৃশ্যমানতার সমস্যা দেখা দিতে পারে। তা বাড়তি নিরাপত্তার জন্য যমজ অট্টালিকার দু’কিলোমিটারের মধ্যে অল্প সময়ের জন্য বিমান চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই বিস্ফোরণের ফলে প্রায় ৮০ হাজার টন ধ্বংসাবশেষ তৈরি হবে। ধ্বংসাবশেষের মধ্যে ৫০ হাজার টন ওই ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে। আর অবশিষ্ট ৩০ হাজার টন সেক্টর ৮০-তে ‘ডিমোলিশন ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান্ট’-এ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নষ্ট করা হবে।