শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


গতকাল বিকেলে অমরনাথ গুহার আশেপাশে প্রবল বৃষ্টির পরে বালতালের বেস ক্যাম্পেও হড়পা বান আছড়ে পড়ে। প্রথমে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছিলেন, মেঘ ভেঙে বৃষ্টির ফলেই ওই ঘটনা ঘটেছে। পরে অবশ্য জম্মু-কাশ্মীর আবহাওয়া দফতরের সোনম লোটাস জানান, সম্ভবত খুব ছোট এলাকায় একনাগাড়ে প্রবল বৃষ্টির জেরে এরকম পরিস্থিতি হয়েছে।
আজ ভারতীয় আবহাওয়া দফতর আবার জানিয়েছে, অমরনাথে মেঘভাঙা বৃষ্টি না-ও হয়ে থাকতে পারে। কারণ, যদি মেঘ ভাঙা বৃষ্টির হতো তাহলে অনেক বেশি বৃষ্টি হওয়ার কথা। এক্ষেত্রে তা হয়নি, খুব ছোট এলাকায় প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলেই গতকাল অমরনাথের পথে বিপর্যয় ঘটেছে বলে মনে করছে আবহাওয়া দফতর।
অমরনাথে এই বিপর্যয়ের জেরে এখনও নিখোঁজ অন্তত ৪০ জন তীর্থযাত্রী। এখনও পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার তীর্থযাত্রীকে। তীর্থযাত্রীদের উদ্ধারে জোরদার অভিযানে নেমেছে সেনা। উদ্ধারকাজ পরিদর্শন করতে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের আইজি বিজয় কুমার ও কাশ্মীরের ডিভিশনাল কমিশনার এবং সেনার চিনার কোরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এডিএস আউজলা।
বিজয় কুমার বলেন, বালতাল থেকে উদ্ধার করা অধিকাংশ তীর্থযাত্রীকে পঞ্চতরণী এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ডিজি অতুল কারওয়ালের মতে, ধস না নামলেও বৃষ্টি পড়ছে। তবে তাতে উদ্ধারকার্য বাঁধাপ্রাপ্ত হচ্ছে না। সেনাবাহিনী আশঙ্কা করছে, এখনও অনেকেই শিবিরের ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে থাকতে পারেন। নিখোঁজদের সন্ধানে আধুনিক উপকরণ ও স্নিফার ডগ ব্যবহার করা হচ্ছে।
অমরনাথ বোর্ড কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবারই ৩৫ জন তীর্থযাত্রী চিকিৎসার পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। এখনও ১৭ জন তীর্থযাত্রী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে আজ জম্মু-কাশ্মীরের উপরাজ্যপাল মনোজ সিন্‌হা উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। ওই এলাকার জলাশয়গুলির পরিস্থিতি জানতে আকাশপথে নজরদারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
তবে এত বড় বিপর্যয়েও অমরনাথ যাত্রীদের মনোবলে ভাঙন ধরেনি। আজও অমরনাথে যেতে জম্মুতে হাজির হয়েছেন প্রায় ৬ হাজার তীর্থযাত্রী। তাঁদের বক্তব্য, যা ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। কিন্তু তাঁদের মনে কোনও শঙ্কা বা ভয় নেই। ত্রিপুরার এক তীর্থযাত্রীর বক্তব্য, শিবের নাম করে এসেছি। তাঁর দর্শন কোনওভাবেই কেউ আটকাতে পারবে না।’ এ দিনও জম্মুতে যাত্রার নথিবদ্ধকরণের জন্য তৈরি কাউন্টারে দেখা গিয়েছে অসংখ্য মানুষের ভিড়। বেস ক্যাম্পেশের দেখা গিয়েছে তৎপরতা।


Skip to content