শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


‘চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী সেনা’ নিয়োগ নিয়ে ক্রমশ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। বিহারের পর রাজস্থানে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। বুধবার পটনা, বক্সার, মুজফফ্‌রপুর, গয়া-সহ একাধিক জায়গায় চাকরিপ্রার্থীরা রেল অবরোধ করেছিলেন। বৃহস্পতিবার ছপরায়ও পথ অবরোধ করা হয়। এর পাশাপাশি আজ বক্সার, নওয়াদা, ছপরা, বেগুসরাই, আরা, মুঙ্গের, জেহানাবাদেও ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ। রেলের, জাতীয় সড়ক দুই-ই অবরোধ করা হয়। রেললাইনের ওপর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। গাড়ি ও ট্রেন ভাঙচুর, পাথর ছোড়া, টায়ার জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো ঘোটনাও ঘটেছে। পুলিশ বাধা দিতে গেলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বেধে যায় সংঘর্ষ। আরা এবং জেহানাবাদে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পুলিশ লাঠি ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করলে কয়েক জন বিক্ষোভকারীর আহত হন। এই পরিস্থিতিতে রেল কর্তৃপক্ষ ২২টি ট্রেন বাতিল করেছে। এর সঙ্গে ছ’টি ট্রেনের রুট বদল করা হয়েছে। এদিকে, বৃহস্পতিবার অগ্নিপথ প্রকল্প বাতিলের দাবিতে জয়পুরেও চলছে বিক্ষোভ। এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রেও। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পে নিয়োগ করা ‘অগ্নিবীর’দের চার বছরের মেয়াদ ফুরলে তাঁদের নতুন চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ মঙ্গলবার অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন। চাকরির শর্ত হল: যে সব তরুণ-তরুণীদের বয়স সাড়ে ১৭ থেকে ২১ বছরের মধ্যে তারা অগ্নিপথ প্রকল্পে আবেদন করতে পারবে। চাকরির মেয়াদ চার বছর। চুক্তির ভিত্তিতে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখা অর্থাৎ স্থল, নৌ এবং বায়ুসেনাতে তাদের নিয়োগ করা হবে। মাসিক ৩০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা বেতন। চতুর্থ বছরে শেষে প্রার্থীর যোগ্যতা ও সেনায় শূন্যপদের সংখ্যা অনুযায়ী সেই নির্দিষ্ট ব্যাচের সর্বাধিক ২৫ শতাংশ অগ্নিবীরকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে ভারতীয় সেনায়। যাঁরা এই সুযোগ পাবেন না তাঁদের এককালীন ১১ থেকে ১২ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে অবসরের সময়। এঁদের পেনশনও থাকবে না।
এ নিয়ে আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, চাকরির জন্য ভারতীয় সেনাই হল তরুণদের জন্য সবথেকে বড় ও নির্ভরশীল জায়গা। সাধারণ বাড়ির তরুণরা মূলত চাকরির স্থায়িত্বের কারণে ভারতীয় সেনার চাকরিকে বেছে নেন। অগ্নিপথ প্রকল্পের চাকরি চুক্তিভিত্তিক হওয়ায় চার বছরের মেয়াদ শেষ হলেই অবসর নিতে হবে। পাশাপাশি অবসরের সময় এককালীন টাকা পাওয়া গেলেও, এতে পেনশনের কোনও ব্যবস্থা নেই। ফলে রুজি রজগারের জন্য ফের চাকরির সন্ধান করতে হবে তাঁদের। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলিও। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার কোষাগারের অর্থ বাঁচাতে এই চুক্তিভিত্তি সেনা নিয়োগের সদ্ধান্ত নিয়েছে।


Skip to content