শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী

আঞ্জনি বা স্টাই বা হর্ডিওলাম নিয়ে বছরের বিভিন্ন সময়ে অনেকেই ভুগে থাকেন। সাধারণত চোখে নোংরা জমা বা পরিষ্কার করে চোখ না ধোয়া আঞ্জনির কারণ হিসাবে মনে করা হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় ‘স্টাই বা হরডিওলাম’। চোখের বহু ক্ষুদ্র তেল গ্রন্থি রয়েছে। বিশেষ করে চোখের পাতার উপর। ওই গ্রন্থির মুখগুলি ময়লা, মৃত কোষ, তেল জমে বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাক্টেরিয়ার জন্ম নেয় ওই গ্রন্থির ভিতরে। এর ফলে চোখে আঞ্জনির মতো সমস্যা দেখা দেয়। আঞ্জনি তেমন কোনও বড় সমস্যা না। তবে দীর্ঘ দিন একে ফেলে রাখলে এটি বড় আকার ধারণ করতে পারে। এতে চোখের বড়সড় ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। আঞ্জনি চোখের ভিতরে ও বাইরে দু’ জায়গায় হতে পারে। তবে আঞ্জনি হলেই যে অনেক প্রচুর ওষুধ খেতে হবে এমন নয়। হোমিওপ্যাথিতে এর ভালো চিকিৎসা রয়েছে।
 

আঞ্জনির প্রাথমিক লক্ষণ কী কী?

আঞ্জনি খুব কমই একসঙ্গে উভয় চোখকে প্রভাবিত করে। একজন ব্যক্তির সাধারণত এক চোখে একটি আঞ্জনি হয়। তবে, এক বা একাধিক বার আঞ্জনি হতে পারে।
চোখের পাতার প্রান্তে ব্যথা অনুভব।
চোখের পাতার প্রান্তে জ্বালাভাব
চোখে চুলকানি
ঝাপসা দৃষ্টি।
শ্লেষ্মা নিঃসৃত হওয়া
চোখে আলোর পড়লে কষ্ট হয়।
চোখের পলক ফেললে অস্বস্তি
মনে হয় যে চোখের কোণে কিছু লেগে আছে।

 

চোখের বাইরে আঞ্জনি

চোখের পাতার বাইরের প্রান্ত বরাবর বহিরাগত আঞ্জনি আবির্ভূত হয়। চোখ হলুদ হয়ে যেতে পারে। পুঁজে ভরে থাকে। স্পর্শ করলে বেদনাদায়ক হতে পারে।
● চোখের পাতার ফলিকল: ত্বকের যে সব জায়গায় ছোট ছিদ্র থাকে সেখান থেকে আইলেশ গজায়।
●> সেবাসিয়াস গ্রন্থি: এই গ্রন্থি চোখের পাতার ফলিকলের সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং সিবাম তৈরি করে। সবাম চোখকে লুব্রিকেট করতে সাহায্য করে। শুকিয়ে যাওয়া বন্ধ করে।
● অ্যাপোক্রাইন গ্রন্থি:এই গ্রন্থি চোখ শুকিয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে। এটি একটি ঘর্মগ্রন্থি, যা চোখের পাতার ফলিকলে হয়।

আরও পড়ুন:

আপনি কি নাক ডাকার সমস্যায় জেরবার? রেহাই পেতে এই বিষয়গুলি অবশ্যই জেনে রাখুন

হেলদি ডায়েট: আপেল খেতে ভালোবাসেন? পুষ্টিগুণ বেশি পেতে দিনের কোন সময়ে খেতে হবে জানেন?

 

চোখের ভিতরে আঞ্জনি

চোখের পাতার ভিতরে ফোলাভাব তৈরি হয়। সাধারণত, খুবই বেদনাদায়ক। এগুলি সাধারণত মেইবোমিয়ান গ্রন্থিতে সংক্রমণের কারণে হয়। এই গ্রন্থিগুলিতে এক প্রকার ক্ষরণ হয়, যা চোখের আবরণের অংশ তৈরি কর। রোগীদের চোখে জ্বালা ভাব, চোখের পাপড়িতে অস্বস্তি, চুলকানি, আলোর দিকে তাকাতে না পারা, ছড়ে যাওয়া, চোখে কোণে যেন কিছু লেগে আছেএমন অনুভূতি হয়। পলক ফেলার সময় অস্বস্তি অনুভব হতে পারে।

আরও পড়ুন:

আপনার সন্তান কি পড়া মনে রাখতে পারে না? তাহলে সকাল শুরু হোক গুড় দিয়ে, সঙ্গে থাকুক এই উপাদানটিও

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-২০: মেলা থেকে ফিরে ‘অন্নপূর্ণার মন্দির’

 

কেন এমনটা হয়

কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে সাধারণত স্টাই হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। তবে যে কোনও বয়সেই তা হতে পারে। নিম্নলিখিতগুলি স্টাইল হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে:
মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া প্রসাধনী ব্যবহার করা।
ঘুমানোর আগে চোখের মেকআপ না পরিষ্কার করা।
কনট্যাক্ট লেন্স জীবাণুমুক্ত না করা বা পরিবর্তন করার আগে হাত না ধোয়া।
পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব।
ঘুমের অভাব।

যদিও স্টাইগুলি ছোঁয়াচে নয়। তবে পরিবারের যে কারওই হতে পারে। তাই অন্যের ব্যবহৃত জিনিসপত্র ব্যবহার করা উচিত নয়।

আরও পড়ুন:

স্বাদে-গন্ধে: মুরগির ঝোল কিংবা ঝাল নয়, এবার বানিয়ে ফেলুন দই মুরগি

জ্যোতির্লিঙ্গ যাত্রাপথে, পর্ব-২: বারাণসীকুলপতি বিশ্বনাথ

 

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা

হোমিওপ্যাথি ওষধ আঞ্জনি বা স্টাই নিরাময়ে খুবই কার্যকর। বিশেষ করে বার বার স্টাই হওয়ার প্রবণতা দূর করতে খুব উপকারী। হোমিওপ্যাথি ওষধ লক্ষণ সাদৃশ্যের উপর নির্ভর করে রোগীর উপর প্রয়োগ করা হয়। তাই এক একটি ওষধ এক এক জন রোগীর উপর ভালো কাজ করে। তবে কিছু ওষধ এই রোগে খুব কার্যকর, যা রোগের লক্ষণ কমাতে ও দ্রুত রোগ মুক্ত হতে সাহায্য করে। আঞ্জনির চিকিৎসায় কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ওষুধ হল:
এপিস মেলিফিকা,
পালসাটিলা,
স্টেফিসেগ্রিয়া,
হিপার সালফিউরিকাম,
নেট্রাম মিউরিটিকাম
থুজা ইত্যাদি।

তবে হোমিওপ্যাথি ওষধের কত পটেন্সি কী পরিমাণে খেতে হবে তার জন্য একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে রোগী প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন করলে আঞ্জনি বা স্টাই নিরাময়ে খুবই কার্যকর।

যোগাযোগ: ৭০০৫৩৫৮৯১৬

* হোমিওপ্যাথি (Homeopathy – Health Tips): ডাঃ দেবজ্যোতি সাহা (Debajyoti Saha), বিশিষ্ট হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক।

Skip to content