সুনীতি দেবী।
হিন্দু আইনে বর কনে দু’জনেই বয়সে নাবালক। তাতে কি! এটা ঘুরিয়ে দেওয়া হল ইংরেজ বুদ্ধিতেই। ”accompanied with a ceremony” আর ”BETROTHAL”-এ। সুনীতি দেবী বহুদিন পর বিবাহকালীন বয়স সমস্যা কীভাবে কেটে গেল তা এ ভাবে লিখেছেন, “The marriage was to be ‘merely a Solemn betrothal’ and ley Presto! The age difficulty vanished”.
ইংরেজ সম্পর্কে প্রচলিত একখানা প্রবাদ আছে। ওঁরা ‘law maker’, কখনও ‘law breaker’ নন। আইনকে ঠিকঠাক রাখতে তার ফাঁক ফোকরের সন্ধান ওঁদের মতো আর কে জানে!
যাইহোক, সুনীতি দেবী এ সব ব্যারিস্টারি বুদ্ধির ধার কাছ দিয়েও যাননি। তিনি লিখেছেন—
“The Maharajah could not be married under this Act as he had his own law in his State, beside he was an independent ruler and a British marriage was of no value in Cooch Behar. Our marriage was recognised by the government as a Hindu Marriage. The Maharajah himself was a BRAHMO, but he was the ruler of a Hindu Raj. As we were not married under Act-III, the age limit did not affect us.”
এখানে দেখার বিষয়, কেশবচন্দ্র সেন চেয়েছেন বিয়েটা ব্রাহ্ম মতে হোক। অথচ ব্রাহ্ম মতে বিবাহের কোনও সরকারী আইন বা স্বীকৃতি সে সময়ে ছিল না। অতএব সরকারী দলিলে হিন্দু বিবাহ বলে উল্লেখ থাকলেও আসলে ব্রাহ্ম রাজার (সুনীতি দেবীর কথায়) সঙ্গে ব্রাহ্ম বালিকা সুনীতি দেবীর বিবাহ ব্রাহ্ম মুহূর্তেই হয়েছিল।
ইংরেজ সম্পর্কে প্রচলিত একখানা প্রবাদ আছে। ওঁরা ‘law maker’, কখনও ‘law breaker’ নন। আইনকে ঠিকঠাক রাখতে তার ফাঁক ফোকরের সন্ধান ওঁদের মতো আর কে জানে!
যাইহোক, সুনীতি দেবী এ সব ব্যারিস্টারি বুদ্ধির ধার কাছ দিয়েও যাননি। তিনি লিখেছেন—
“The Maharajah could not be married under this Act as he had his own law in his State, beside he was an independent ruler and a British marriage was of no value in Cooch Behar. Our marriage was recognised by the government as a Hindu Marriage. The Maharajah himself was a BRAHMO, but he was the ruler of a Hindu Raj. As we were not married under Act-III, the age limit did not affect us.”
এখানে দেখার বিষয়, কেশবচন্দ্র সেন চেয়েছেন বিয়েটা ব্রাহ্ম মতে হোক। অথচ ব্রাহ্ম মতে বিবাহের কোনও সরকারী আইন বা স্বীকৃতি সে সময়ে ছিল না। অতএব সরকারী দলিলে হিন্দু বিবাহ বলে উল্লেখ থাকলেও আসলে ব্রাহ্ম রাজার (সুনীতি দেবীর কথায়) সঙ্গে ব্রাহ্ম বালিকা সুনীতি দেবীর বিবাহ ব্রাহ্ম মুহূর্তেই হয়েছিল।
এটুকু বলে নেওয়া যায়, এর মধ্যেই কনে দেখা পর্ব শেষ হয়েছে। প্রথমবারে কোচবিহারের উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারীদের নিয়ে মি. ডাল্টন এবং দ্বিতীয়বারে স্বয়ং পাত্র নৃপেন্দ্রনারায়ণ পাত্রী পছন্দ করে গিয়েছেন। বাঙালি পরিবারের কনে দেখার মতোই জলখাবার থেকে কনের কণ্ঠের গানটিও বাদ যায়নি। শুধু একটি ব্যতিক্রম। নৃপেন্দ্রনারায়ণ কনে দেখতে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়ে একটা উপহার দিয়েই বসলেন। রীতি-অচল এই ব্যাপারকে এইরকম ভাবে ব্যাখ্যা দেয়া যায়, নৃপেন্দ্রনারায়ণ তো শুধু সাধারণ এক পাত্র নন, মহারাজাও বটে। খালি হাতে মহারাজা কারও বাড়িতে যাবেন এও নিশ্চয়ই বেমানান। তবে মহারাজার এই কনে দেখার ব্যাপারটাকে জুলিয়াস সিজারের ভাষায় বলতে হয়, ‘ভিনি, ভিডি ভিসি’—’এলাম, দেখলাম, জয় করলাম।’
সুনীতি দেবীর কথায়, “After a few minutes my father said: Suniti, this is a present from the Maharajah to you. ‘I looked up, and as I did so I met the Maharajha’s eyes fixed on me full of love and I blushed. From that moment my future husband and I loved each other. He was so handsome and so charming.”
সুনীতি দেবীর কথায়, “After a few minutes my father said: Suniti, this is a present from the Maharajah to you. ‘I looked up, and as I did so I met the Maharajha’s eyes fixed on me full of love and I blushed. From that moment my future husband and I loved each other. He was so handsome and so charming.”
আরও পড়ুন:
কোচবিহারের রাজকাহিনি, পর্ব-৪: রাজ পরিবারের সঙ্গে বিবাহ সম্পর্ক ও ব্রাহ্মবাদ
হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-৯: তা বলে কি প্রেম দেব না!
এরপর আর নিশ্চয়ই কনের পিতা বা ব্রিটিশ সরকার কারও কিছুই করার থাকে না। শুধু বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন করা ছাড়া। কেশবচন্দ্র সেন, তাঁর পরিবারের লোকজন, ব্রাহ্মধর্মের আচার্য এবং আরও বহু মানুষকে নিয়ে কলকাতা থেকে রওনা হন ১৮৭৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি।
সুনীতি দেবীর এই বিয়েতে শুরু থেকেই কেমন প্রতি ক্ষেত্রেই গোলমাল। ব্রিটিশ সরকারের ভয় ছিল ব্রাহ্মধর্মের আনুষ্ঠানিক বাড়াবাড়ি বোধ হয় হিন্দু প্রজারা বরদাস্ত করবে না। রাজ্যের দেওয়ান বাবু কালিকাদাস দত্ত বিয়ের পুরো ব্যাপারেই তাঁর নিজের কোনও গুরুত্ব নেই মনে করেছিলেন। কারণ রাজকীয় গুরুত্বপূর্ণ এই ঘটনাটির সঙ্গে কোনও স্তরেই দেওয়ানের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল না। দেওয়ানের অধস্তন কর্মচারী বাবু যাদব চক্রবর্তীর ওপরই কনে নির্বাচন ইত্যাদির ভার দেওয়ায় তিনি মনে মনে খুব রেগে যান। এক ঠান্ডা লড়াই চলছিল নেপথ্যে। সুনীতি দেবী লিখেছেন, “There was one Person who was very subtle in his opposition and more powerful than any English official. This was the Dewan, the hate Calica Das Dutt. Prime Minister. He was not to faver of the marriage, because he thought he had been ignored.”
সুনীতি দেবীর এই বিয়েতে শুরু থেকেই কেমন প্রতি ক্ষেত্রেই গোলমাল। ব্রিটিশ সরকারের ভয় ছিল ব্রাহ্মধর্মের আনুষ্ঠানিক বাড়াবাড়ি বোধ হয় হিন্দু প্রজারা বরদাস্ত করবে না। রাজ্যের দেওয়ান বাবু কালিকাদাস দত্ত বিয়ের পুরো ব্যাপারেই তাঁর নিজের কোনও গুরুত্ব নেই মনে করেছিলেন। কারণ রাজকীয় গুরুত্বপূর্ণ এই ঘটনাটির সঙ্গে কোনও স্তরেই দেওয়ানের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল না। দেওয়ানের অধস্তন কর্মচারী বাবু যাদব চক্রবর্তীর ওপরই কনে নির্বাচন ইত্যাদির ভার দেওয়ায় তিনি মনে মনে খুব রেগে যান। এক ঠান্ডা লড়াই চলছিল নেপথ্যে। সুনীতি দেবী লিখেছেন, “There was one Person who was very subtle in his opposition and more powerful than any English official. This was the Dewan, the hate Calica Das Dutt. Prime Minister. He was not to faver of the marriage, because he thought he had been ignored.”
আরও পড়ুন:
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৭০: অন্য বাইশে শ্রাবণ
অমর শিল্পী তুমি, পর্ব-১: একটু শুরুর কথা হলে ক্ষতি কী…
কালিকাদাস বাবুর পরামর্শে মি. ডাল্টন যাদব বাবুকে দিয়ে কেশব সেনকে জানান তাঁদের এবং আনুষঙ্গিক মানুষজনকে এই বিয়েতে সংশ্রব এবং কোনও মতাদর্শের কথা বলা যাবে না… “In fact, we can not permit any Brahmo demostration what ever, and those who come must bear in mind that a single speech in any way whatever relating to Theism versus Idolatory will not be permitted.”
অথচ, এ কথা আমরা জেনেছি, রাজা নিজেই কেশবচন্দ্র সেনকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন তিনি Theist এবং একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী।
সুনীতি দেবীর কথাতেই আমরা জেনেছি মহারাজ ব্রাহ্ম ছিলেন। আসলে, হিন্দু প্রজাদের অসন্তোষের ভয়েই ইংরেজ লোক দেখানো হিন্দু-বিবাহ অনুষ্ঠানের ঢাক ঢোল পেটাতে চেয়েছিলেন। হয়তো বা ডাল্টন সাহেব ভেবেছিলেন বিয়ের পিঁড়িতে কোনওভাবে একবার সুনীতি দেবীকে বসাতে পারলেই হল। তারপর কোন প্রথায় বিয়ে হল তা নিয়ে মাথা ঘামাবার সময় কেশবচন্দ্র বা সুনীতি দেবী কারোই থাকবে না। কিন্তু ওঁরা বোধহয় ভুলে গিয়েছিলেন সুনীতি দেবী কেশবচন্দ্রের কন্যা।
সুনীতি দেবী তো হাজির হলেন কোচবিহারে। রাজকীয় অভ্যর্থনার উষ্ণ উত্তাপ কতটা তা আমরা উপলব্ধি করতেই পারি। সুনীতি দেবী তাঁর স্বপ্নের রাজকুমারের দেশে এসেছেন বরমাল্য হাতে। রাজপুত্র অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছেন সেই পরম মুহূর্তের জন্য। আলো ঝলমল কোচবিহার শহর মেতে উঠেছে উৎসবের সাজে। রাজ পণ্ডিত আর দেওয়ান এলেন কেশব চন্দ্র সেনের সঙ্গে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পর্কে চূড়ান্ত ব্যবস্থা অনুমোদন করে নিতে। এখানেও শেষ চেষ্টা।
সুনীতি দেবীর ভাষায়, “The day before the wedding theDewan and a few Raj Pandits came to see my father and talked over the ceremony. They told him that parts of it would be according to the Hindu rites. To this my father refused to consent.”
অথচ, এ কথা আমরা জেনেছি, রাজা নিজেই কেশবচন্দ্র সেনকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন তিনি Theist এবং একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী।
সুনীতি দেবীর কথাতেই আমরা জেনেছি মহারাজ ব্রাহ্ম ছিলেন। আসলে, হিন্দু প্রজাদের অসন্তোষের ভয়েই ইংরেজ লোক দেখানো হিন্দু-বিবাহ অনুষ্ঠানের ঢাক ঢোল পেটাতে চেয়েছিলেন। হয়তো বা ডাল্টন সাহেব ভেবেছিলেন বিয়ের পিঁড়িতে কোনওভাবে একবার সুনীতি দেবীকে বসাতে পারলেই হল। তারপর কোন প্রথায় বিয়ে হল তা নিয়ে মাথা ঘামাবার সময় কেশবচন্দ্র বা সুনীতি দেবী কারোই থাকবে না। কিন্তু ওঁরা বোধহয় ভুলে গিয়েছিলেন সুনীতি দেবী কেশবচন্দ্রের কন্যা।
সুনীতি দেবী তো হাজির হলেন কোচবিহারে। রাজকীয় অভ্যর্থনার উষ্ণ উত্তাপ কতটা তা আমরা উপলব্ধি করতেই পারি। সুনীতি দেবী তাঁর স্বপ্নের রাজকুমারের দেশে এসেছেন বরমাল্য হাতে। রাজপুত্র অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছেন সেই পরম মুহূর্তের জন্য। আলো ঝলমল কোচবিহার শহর মেতে উঠেছে উৎসবের সাজে। রাজ পণ্ডিত আর দেওয়ান এলেন কেশব চন্দ্র সেনের সঙ্গে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পর্কে চূড়ান্ত ব্যবস্থা অনুমোদন করে নিতে। এখানেও শেষ চেষ্টা।
সুনীতি দেবীর ভাষায়, “The day before the wedding theDewan and a few Raj Pandits came to see my father and talked over the ceremony. They told him that parts of it would be according to the Hindu rites. To this my father refused to consent.”
আরও পড়ুন:
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৫: চন্দ্রমণির বধূবরণ
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৮: সুন্দরবনের নিশ্চিহ্ন প্রাণী
বিয়ের মূল অনুষ্ঠানের একদিন আগেই সুনীতি দেবীকে রাজ প্রাসাদে নিয়ে যেতে পালকি এলো। সাশ্রু নয়নে সুনীতি দেবী বাবা, মা, বান্ধবী, আত্মীয় আচার্য সকলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে পালকিতে উঠে বসলেন দুরু দুরু বক্ষে। পালকি চলেছে দুলতে দুলতে। তাঁর একমাত্র সাথী ছোটবোন বিনু। ভাবী রাজ বধূর রাজকীয় বরণে, স্ত্রী আচারে হিন্দুয়ানীর গন্ধ পেয়ে বেঁকে বসলেন সুনীতি দেবী। ব্রাহ্মণের মন্ত্রোচ্চারণ এবং স্বর্ণমুদ্রায় ব্রাহ্মণ দক্ষিণা দিতে হয় ভাবী রাজবধূকে। কিছুতেই সুনীতি দেবীর হাতে স্বর্ণমুদ্রা তুলে দেওয়া সম্ভব হল না।
কি দুঃসাহস এই বালিকার! সুনীতি দেবী হাত থেকে স্বর্ণমুদ্রা ছুঁড়ে ফেলে দিলেন মেঝেতে। স্ত্রী আচারে ব্যস্ত সমবেত পুর নারী বৃন্দ ভয়ে জড়সড়। রাজমাতা ক্রুদ্ধ। পুরোহিতের দুই চোখ বিস্ফারিত। এমন অঘটন রাজপ্রাসাদে ঘটেনি কোনওদিন। এ বার রাজমাতা বনাম রাজ বধূর বাকযুদ্ধ।
সুনীতি দেবী কী বলছেন দেখি, “In the evening Maharajah’s mother came and I spoke to my mother most harshly. One of her remarks I still remember. “Do you mean to say you love your daughter? How can you when you do not wish her marry a Maharajah? If she does not marry any son according to Hindu rites, she will not be the Maharani.”
সুনীতি দেবীর মা উত্তর দিলেন—
“I shall be sorry if my daughter does not marry your son. And I shall take her away from Cooch Behar, but my daughter shall never marry any one according to Hindu rites.”
কি দুঃসাহস এই বালিকার! সুনীতি দেবী হাত থেকে স্বর্ণমুদ্রা ছুঁড়ে ফেলে দিলেন মেঝেতে। স্ত্রী আচারে ব্যস্ত সমবেত পুর নারী বৃন্দ ভয়ে জড়সড়। রাজমাতা ক্রুদ্ধ। পুরোহিতের দুই চোখ বিস্ফারিত। এমন অঘটন রাজপ্রাসাদে ঘটেনি কোনওদিন। এ বার রাজমাতা বনাম রাজ বধূর বাকযুদ্ধ।
সুনীতি দেবী কী বলছেন দেখি, “In the evening Maharajah’s mother came and I spoke to my mother most harshly. One of her remarks I still remember. “Do you mean to say you love your daughter? How can you when you do not wish her marry a Maharajah? If she does not marry any son according to Hindu rites, she will not be the Maharani.”
সুনীতি দেবীর মা উত্তর দিলেন—
“I shall be sorry if my daughter does not marry your son. And I shall take her away from Cooch Behar, but my daughter shall never marry any one according to Hindu rites.”
নৃপেন্দ্রনারায়ণ।
একেই বোধহয় বলে নাটকের ক্লাইম্যাক্স পর্ব। অথচ নাটক নয়। বাস্তব। রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা সকলের ই। কোনও পক্ষই পরাজয় বরণ করবেন না। অথচ বধূবরণের পরম মুহূর্তটির জন্য সারা কোচবিহার উৎসবে সেজে উঠেছে। লোকজনের ভিড় উপচে পড়ছে। আর একদিকে আড়ালে অন্তরালে রাজপ্রাসাদের ভিতরে ঘটে চলেছে একের পর এক নাটকীয় মুহূর্ত।
রাজমাতা ক্রোধে দিশাহারা। কন্যাপক্ষ নতুন পরিবেশে নির্বাক। বধূবেশে সুনীতি দেবীর অবস্থাও আমরা কল্পনা করতে পারি। আর রাজপুত্র! যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধ করাটা রাজার পক্ষে সোজা। কিন্তু জাতপাতের লড়াই জেতা এত কঠিন রাজপুত্রের তা অজানা ছিল। একদিকে গর্ভধারিণী মা, অন্যদিকে ভাবী শ্বশ্রুমাতা। রাজা কার পক্ষ নেবেন?
সুনীতি দেবী আত্মজীবনীতে লিখলেন—
“Looking at those near him, with determination of his set young face, the Maharajah said, ‘Now give good heed to my words. I am going to bed. If I am to marry this girl, wake me up. Other wise have my horse in rediness, forI shall ride away from Cooch Behar for good and all tomorrow morning. If I can not marry this girl, I will marry no one.”
বালক রাজার পক্ষে এ ছাড়া অন্য পথ খোলা ছিল না। সুনীতি কে প্রথম দেখার দিনই মন দেওয়া নেওয়া পর্ব মিটেছিল। বোধহয় একথা রাজমাতা জানতেন না, অথবা ছেলের বাবা-মা ছেলের বিয়ে দিতে গিয়ে কন্যা পক্ষের উপর কর্তৃত্ব যেভাবে প্রকাশ করেন, এখানেও তেমন হতে পারে।
যেটাই হোক, রাজকীয় বিবাহের প্রথম পর্বের শুভ সূচনা হয়নি। দু’পক্ষেরই ছিল ধনুর্ভঙ্গ পণ। রাজমাতা হিন্দুমতে না হলে বিয়ের পিঁড়ি থেকে ছেলে তুলে নেবেন অর্থাৎ বিয়ে ভেঙে যাবে। কন্যা পক্ষের ও শেষ কথা ঠিক আছে। বিয়ে ভাঙে তো ভাঙবে, পরোয়া করি না। মহাত্মা কেশবচন্দ্র সেনের মেয়ের হিন্দু মতে বিয়ে হবে, এ অকল্পনীয় ব্যাপার। রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, প্রাণ যায় কার! হিন্দুধর্ম ও ব্রাহ্ম ধর্মের এ লড়াইতে কিশোর কিশোরী বর বধূর মানসিক প্রতিক্রিয়ার খবর কে রেখেছে! এই পরম লগ্নটি মুহূর্তেই করুণ হয়ে উঠেছিল। এরপর নাবালক রাজা কিংবা পরিবেশ, পরিপার্শ্ব কি করেছিল ,অধীরতা জাগছিল ক্রমে কোচবিহারবাসীরও।
ঋণ স্বীকার:
● কোচবিহার পরিক্রমা:সম্পাদনা, কৃষ্ণেন্দু দে, নীরজ বিশ্বাস ও দিগ্বিজয় দে সরকার।
● কোচবিহার কথা ইতিহাস ও সংস্কৃতি
রাজমাতা ক্রোধে দিশাহারা। কন্যাপক্ষ নতুন পরিবেশে নির্বাক। বধূবেশে সুনীতি দেবীর অবস্থাও আমরা কল্পনা করতে পারি। আর রাজপুত্র! যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধ করাটা রাজার পক্ষে সোজা। কিন্তু জাতপাতের লড়াই জেতা এত কঠিন রাজপুত্রের তা অজানা ছিল। একদিকে গর্ভধারিণী মা, অন্যদিকে ভাবী শ্বশ্রুমাতা। রাজা কার পক্ষ নেবেন?
সুনীতি দেবী আত্মজীবনীতে লিখলেন—
“Looking at those near him, with determination of his set young face, the Maharajah said, ‘Now give good heed to my words. I am going to bed. If I am to marry this girl, wake me up. Other wise have my horse in rediness, forI shall ride away from Cooch Behar for good and all tomorrow morning. If I can not marry this girl, I will marry no one.”
বালক রাজার পক্ষে এ ছাড়া অন্য পথ খোলা ছিল না। সুনীতি কে প্রথম দেখার দিনই মন দেওয়া নেওয়া পর্ব মিটেছিল। বোধহয় একথা রাজমাতা জানতেন না, অথবা ছেলের বাবা-মা ছেলের বিয়ে দিতে গিয়ে কন্যা পক্ষের উপর কর্তৃত্ব যেভাবে প্রকাশ করেন, এখানেও তেমন হতে পারে।
যেটাই হোক, রাজকীয় বিবাহের প্রথম পর্বের শুভ সূচনা হয়নি। দু’পক্ষেরই ছিল ধনুর্ভঙ্গ পণ। রাজমাতা হিন্দুমতে না হলে বিয়ের পিঁড়ি থেকে ছেলে তুলে নেবেন অর্থাৎ বিয়ে ভেঙে যাবে। কন্যা পক্ষের ও শেষ কথা ঠিক আছে। বিয়ে ভাঙে তো ভাঙবে, পরোয়া করি না। মহাত্মা কেশবচন্দ্র সেনের মেয়ের হিন্দু মতে বিয়ে হবে, এ অকল্পনীয় ব্যাপার। রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, প্রাণ যায় কার! হিন্দুধর্ম ও ব্রাহ্ম ধর্মের এ লড়াইতে কিশোর কিশোরী বর বধূর মানসিক প্রতিক্রিয়ার খবর কে রেখেছে! এই পরম লগ্নটি মুহূর্তেই করুণ হয়ে উঠেছিল। এরপর নাবালক রাজা কিংবা পরিবেশ, পরিপার্শ্ব কি করেছিল ,অধীরতা জাগছিল ক্রমে কোচবিহারবাসীরও।
ঋণ স্বীকার:
* মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস। সাহিত্যিক ও কবি। কোচবিহার সুনীতি অ্যাকাডেমির প্রধান শিক্ষিকা। www.samayupdates.in -এ লিখছেন ‘কোচবিহারের রাজকাহিনি’। একাধিক উপন্যাস, ছোটগল্প সংকলন, প্রবন্ধ সংগ্রহ ও কাব্যগ্রন্থ রয়েছে লেখিকার।