ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।
আপনাদের অনেকেরই জানা আছে যে কোনও পুজোর সময় পূণ্য কুম্ভঘট স্থাপন করা হয় যা জলপূর্ণ থাকে। এই ঘরটি হল ধরিত্রীমাতার প্রতীক যার মধ্যে জল হল ‘জীবনদাত্রী’, ডাব হল পবিত্র ‘জ্ঞানচেতনা’ এবং আম্রপল্লব হল ‘জীবনে প্রতীক’। এই ভবেই বহুবচন ধরে ভারতীয়দের সংস্কার ও সংস্কৃতিতে আম গাছের নানা অংশ মিলেমিশে রয়েছে।
হাত বাড়ালেই বনৌষধি: ‘লঙ্কা কাণ্ড’
গা ছমছমে ভৌতিক উপন্যাস: মিস মোহিনীর মায়া, পর্ব-২: কপালে জমেছে ঘাম, শুকিয়ে গিয়েছে জিভ, পেছন থেকে ভেসে আসছে গা ছমছমে শব্দ
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৩৪: স্বপ্ন ও দুঃস্বপ্নের ‘রাত-ভোর
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৬২: প্রথম রবীন্দ্রজীবনী
এক নজরে
কী কী উপাদানে ভরপুর?
প্রতি ১০০গ্রাম পাকা আমের কার্বোহাইড্রেট অর্থাৎ শর্করার পরিমাণ থাকে ১১.৬ গ্রাম, প্রোটিন থাকে ০.৯ গ্রাম এবং ফ্যাট থাকে ০.২ গ্রাম। এছাড়াও পাঁকা আমে থাকে প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ এবং সাইট্রিক অ্যাসিড, মালিক অ্যাসিড, টার্টারিক অ্যাসিড নামক জৈব অ্যাসিড। ১০০ গ্রাম পাকা আমের শক্তির পরিমাণ ২৩০ কিলোজুল। আমে রয়েছে ফাইবার ১.১৭ থেকে ২.৬ শতাংশ, সিলিকা থাকে ০.৪১ শতাংশ, আয়রন থাকে ০.০৩ শতাংশ, এবং আঁশ থাকে ১.৭২-৩.৬৬ শতাংশ।
পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-১০: কিশোর কণ্ঠের উপর যেন এক অলিখিত দাবি ছিল পঞ্চমের
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-১৯: পাকা আম খাবেন, নাকি কাঁচা আম?
গল্প: ফিরে পাওয়া পঁচিশ
চিকিৎসাশাস্ত্রে এর ব্যবহার
পাথুরি রোগ নিরাময়ে
কয়েকটি কচি আমের পাতা হালকা রোদে শুকিয়ে নিয়ে গুড়ো করে নিতে হবে। তারপর সেই গুরুর সঙ্গে জল মিশিয়ে সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরের দিন সকালে খালি পেটে সেই জল খেলে তা শরীরের অঙ্গ থেকে পাথরকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে অপসারণ করবে। শুধু কিডনি বা পিত্তথলির পাথর নয় এই জল থেকে আমাদের দেহের বিভিন্ন টক্সিন দূর হয়ে যাবে।
আমাশয়
কচি আমপাতার রস দুই থেকে তিন চা চামচ একটু গরম জলে খেলে আমাশয় সেরে যায়।
আবার আম গাছের ছালের রস এক থেকে দুই চাচা চামচ প্রায় ১০০ থেকে দেড়শ মিলি লিটার ছাগলে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে রক্ত আমাশয় অনেকটাই নিরাময় হয়। প্রয়োজনে এর সঙ্গে মধুও মেশাতে পারেন।
সিফিলিস নিরাময় করতে
আম গাছের ছালে প্রচুর পরিমাণে ট্যানিং উপস্থিত থাকে। আম গাছের বল্কল নিঃসৃত আঠা সিফিলিস রোগ সারাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়।
পেটের সমস্যায় ও বমি বমি ভাব
অনেক সময় পেট খারাপ হলে আম গাছের ছালের ভেতরে অংশ বেটে টক দই দিয়ে খেলে পেট খারাপ সেরে যায়। যাদের প্রায়ই বমি বমি ভাব হয়ে থাকে তারা তিন থেকে চারটি কচি আম পাতা জলের সিদ্ধ করে নিন এবং সেই জলটাকে ছেঁকে সমস্ত দিন ধরে একটু একটু করে পান করলে শরীরের দাহ এবং বমি বমি ভাব অনেকটাই কেটে যায়।
শরীর ঠান্ডা রাখতে
গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে শরীরকে ভেতর থেকে ঠান্ডা করতে আম পোড়ার শরবত খুবই উপকারী। কাঁচা আমকে কাঠের আগুনে পুড়িয়ে শরবত তৈরি করা হয়।
রক্ত তৈরিতে
আমের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড থাকে যা রক্ত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। এছাড়াও এই ফলের মধ্যে ম্যাঙ্গিফেরলিক অ্যাসিড, লিউকোসায়ানিডিন, এম্বলিক অ্যাসিড এবং পারমেটিক অ্যাসিড ও পাওয়া যায়।
শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আম পাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। টাইপ ওয়ান ডাইবেটিস নিয়ন্ত্রণে আম পাতায় উপস্থিত যৌগ অন্থোসায়াানিডিন কার্যকারী ভূমিকা নেয়। এছাড়াও তিন-বিটা টেরাক্সেরল এবং ইথাইল অ্যাসিটেট রক্তের শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
স্বাদে-আহ্লাদে: আম দিয়ে তৈরি এই লোভনীয় স্বাদের আচার খেয়েছেন?
চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-১৮: কোষার ভান্ডার ছররি থেকে কুঠাঘাট হয়ে কুরদার
পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৪: একজন জ্ঞানী পণ্ডিত এবং ব্যবসায়ীর মধ্যে রাজা কাকে বেশি গুরুত্ব দেবেন?
ভিটামিন ও খনিজ লবণের চাহিদা মেটাতে
কাঁচা এবং পাকা উভয় আমিই একদিকে প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ যেমন ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিসিয়াম, দস্তা সোডিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ উপস্থিত থাকে অন্যদিকে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এবং ভিটামিন সি থাকে যা আমাদের দেহ গঠনে সাহায্য করে।
হেঁচকির সমস্যায়
আম পাতা পুড়িয়ে যদি তার ধোয়া নিঃশ্বাসের সঙ্গে নেওয়া যায় তবে তা বিস্ময়কর ভাবে হেঁচকি দূর করে।
পৌরষ্য বৃদ্ধিতে
দুধের সঙ্গে যদি পাকা আমের রস মেশানো হয় তখন তাকে ‘সোমধারা’ বলা হয়। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে এই সোমধারাপুরুষদের বলদান করে এবং শুক্রবহ স্রোতকে শুদ্ধ করে।
দাঁত এবং চুলের সুরক্ষায়
কচি আম পাতা রস দিয়ে দাঁত মাজলে অকালে দাঁত পড়া বন্ধ হয়। হয়তো এই কারণবশতই ওড়িশার বাসি বিয়ের দিন আম পাতা দিয়ে বরের দাঁত মাজার একটা প্রথা আজও চালু আছে।
কচি আমের আঠা ও শাঁস থেঁতো করে জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে এবং সেই জল ছেঁকে চুলের গোড়ায় লাগালে চুল পড়া বন্ধ হয়ে যায়।
কাষ্ঠবদ্ধতা দূরীকরণ
পক্ক আমি ফাইবারের মাত্রা প্রচুর পরিমাণে থাকায় তা অনেকটা কাষ্ঠবদ্ধতা দূর করে। জলখাবারের সঙ্গে আম অথবা আম ও দুধ বা দই সহযোগে শরবত তৈরি করে খেতে পারলে তা কাষ্ঠবদ্ধতা দূরীকরণে সাহায্য করে।
এছাড়াও চড়কের বিধান অনুযায়ী, কচি আম হল রক্তপিত্তকর, মধ্য কাঁচা আম পিত্তকর এবং পাকা আম বর্ণ মাংস ও শুক্র দান করে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে আমের বীজ কৃমিনাশক , রক্তের অর্শ বন্ধ করে এবং মেনরাহিয়া নিরাময়ে উপকারী ভূমিকা নেয়।