মঙ্গলবার ৯ জুলাই, ২০২৪


সর্বমঙ্গলের প্রতীক ‘হরিতকী’ নাম বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় যে এটি, আদিতে নারায়ণ বা হরির প্রিয় ফল। সমস্ত শাস্ত্রীয় কাজে ফলটির উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। শুধু পূজা অর্চনাতেই নয় শরীর নীরোগ এবং সুস্থ রাখতেও হরিতকীর গুণ অপরিসীম।

প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্র থেকে বর্তমান চিকিৎসাবিজ্ঞান, সবার মতেই এই ফল ‘মাদার অফ হার্বস’। উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, টিউমার, লিভারের অসুখ, হাঁপানি, রক্তাল্পতা কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম, দাঁত ও চোখের অসুখ সর্দিকাশি নার্ভের অসুখ, অ্যানিমিয়া, পাইলস, কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাজমা প্রভৃতি সমস্যার সমাধানে হরিতকী দারুণ কার্যকরী শুধু ঔষধ হিসাবেই নয়, পত্র হিসাবেও হরিতকী সামান ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আবার পথ্য হিসাবেও হরিতকী শ্রেষ্ঠতম।
 

বিস্তৃতি

ভারতের তামিলনাড়ু, কর্ণাটক প্রভৃতি দক্ষিণের রাজ্যগুলির পাহাড়িয়া অঞ্চলে হরিতকী বৃক্ষ লক্ষ্য করা যায়। ভারতের বাইরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, চীন, তিব্বত, মিশর প্রভৃতি স্থানেও হরিতকী গাছ পাওয়া যায়।

এটি বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ, যা অসংখ্য শাখা-প্রশাখা যুক্ত এবং লম্বায় প্রায় ৩০মিটার বা তারও বেশি হয়। সাধারণত বছরের মে ও জুন মাসে এই গাছে ফুল আসে। আর জুলাই মাস থেকে ফল ধরে। নভেম্বর মাস থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়।
 

বীজ

কষায় স্বাদবিশিষ্ট। শাঁস মিষ্টি বা মধুর। ফলত্বক ঝাল বা কটু। শিরা টক বা অম্ল। ফলবৃন্ত তেতো।
 

বিজ্ঞানসম্মত নাম

টার্মিনেলিয়া চেবুলা।
 

ফল হিসেবে হরিতকী

সাধারণত হরিতকী ফল দৈর্ঘ্যে তিন থেকে পাঁচ সেমি, ডিম্বাকৃতি হয়। এটি হলুদ বা গাঢ় বাদামী বর্ণ বিশিষ্ট। ফলের গাত্র কুঞ্চিত ও শিরাযুক্ত হয়। হরিতকী তে মিষ্টি, টক, ঝাল, কষায় এবং তিক্ত এই পাঁচ স্বাদ বর্তমান।
 

ফলের প্রকারভেদ

আয়ুর্বেদ গ্রন্থ অনুযায়ী হরিতকী সাত প্রকারের এদের মধ্যে বিজয়া শ্রেষ্ঠ।
 

হরিতকী-র নাম ও আকৃতি

বিজয়া: অধিবৃত্ত আকৃতি
রোহিণী: গোলাকার
পুতনা: বীজ অপেক্ষাকৃত বড় হয়।
অমৃতা: এটি স্থূল শ্বাসযুক্ত হয়।
অভয়া: ফলের গায়ে পঞ্চশিরা থাকে।
জীবন্তী: এটি সোনালী রঙের।
চেতকী: ফলের গায়ে তিনটি শিরা থাকে।

 

কী কী উপাদান রয়েছে

হরিতকী ট্যনিন ২০-৪০ শতাংশ, চেবুলেজিক অ্যাসিড ৫.০ শতাংশ, চেবুলেনিক অ্যাসিড ১২.৫ শতাংশ গ্যালিক অ্যাসিড ১.২১ শতাংশ, ফ্যাট ৪৯ শতাংশ রয়েছে। এগুলি ছাড়াও নিম্নলিখিত উপাদানগুলি হরিতকীতে পাওয়া যায়। এলাজিক অ্যাসিড, সিরিজিক অ্যাসিড, মিউসিলেজ, কোয়ের সেটিংস, ইথাইল গেলেট, পুনিকেলাজিন, টার ফ্লাভিন, টার চেভিন, রুটিন, লুটি ও লিন, চেবুলোসাইড ১ ও ২ সেনোসাইড-এ প্রভৃতি।
 

রোগ নিরাময়ে হরিতকী

হজমে গোলমাল

হরিতকীর গ্যাস্ট্রোকাইনেটিক এফেক্ট থাকায় হজমশক্তি বাড়ায়, বদ হজমের সমস্যা কমায়। সকালে খালি পেটে হরিতকী ভেজানো জল খেতে পারলে একদিকে যেমন খিদে বাড়বে, অন্যদিকে হজম শক্তিও বাড়বে।
 

কোষ্ঠকাঠিন্য

হরিতকীর মৃদু লাক্সাটিউ এফেক্ট থাকায় ক্রনিক কনস্টিপেশানের রোগীরা নিয়মিত হরিতকী খেতে পারলে লাভবান হবেন। বহু প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদিক বিভিন্ন ওষুধের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হরিতকী। হরিতকী হজম শোষণমাত্রা বাড়ায় এবং কোলন ফাংশন রেগুলেট করায় এ ক্ষেত্রে হিতকর।
 

কোলাইটিস

কোলাইটিসেও শুকনো হরিতকীর ফলত্বক ভেজানো জল বেশ ভালো।
 

হেপাটাইটিস

হেপাটাইটিস ছাড়াও লিভারের যে কোনও সমস্যার মোকাবিলায় হরিতকী খুব ভালো কাজ দেয়।
 

স্থূলত্ব

প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সব রকমভাবেই হরিতকী, অতিরিক্ত দেহভার লাঘব করতে সাহায্য করে। হরিতকী কোলনকে সাফাই করে হজম শোষণ ও বিপাক ঠিকঠাক রাখে, মেটাবলিক রেট বাড়ার ফলে এনার্জি খরচের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় ফ্যাট জমার প্রবণতা কমে। বাইল সিক্রিয়েশন বাড়িয়ে সঞ্চিত ফ্যাটের মোবিলাইজেশনে সাহায্য করে খিদে কন্ট্রোল করায় অতিরিক্ত খেয়ে ফেলার প্রবণতা কমে, যা সর্বতোভাবেই স্থুলত্ব কমাতে সাহায্য করে। যাঁরা নিয়মিত শরীরচর্চা ও লো-ক্যালোরি ব্যালেন্স ডায়েট অনুসরণ করে ওজন কমিয়েছেন তাঁরা অবশ্যই আদর্শ ওজন ধরে রাখার জন্য নিয়মিত খাওয়ার আগে হরিতকী খান।

আরও পড়ুন:

হাত বাড়ালেই বনৌষধি: চৈত্রের বন্ধু বেল

বিধানে বেদ-আয়ুর্বেদ, বাতরক্ত বা গাউটে ভুগছেন? ঘরে বসেই মুক্তির উপায় জানুন

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-১২: ঘাম কমাতে পাউডার ব্যবহার করেন?

 

দেহকে বিষমুক্ত করতে

দেহকে বিষমুক্ত করে নীরোগ, সুন্দর কর্মক্ষম রাখতে হলে ডিটক্সিফিকেশান মাস্ট। আর ডি টক্সিফাইং এজেন্ট হিসাবে হরিতকীর ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পায় ত্রিফলার সঙ্গে খেলে।
 

আলসার

মাউথ ও স্টমাক আলসারের নিরাময়ের ক্ষেত্রেও হরিতকী দারুণ উপকারী। এক্ষেত্রে হরিতকী ভেজানো জলে নিয়মিত কুলকুচি করতে হবে। এবং হরিতকি ভেজানো জল খেতে হবে খাওয়ার আগে।
 

ইউরিনারি স্টোন

হরিতকী মূত্র উৎপাদন ও নিষ্ক্রমণ সহজ করে। ফলে মূত্রথলিতে মূত্র জমে সংক্রমণের প্রবণতা যেমন কমে তেমনি ইউরিনারি স্টোনের আশঙ্কাও কম থাকে।
 

অ্যানিমিয়া

বহু প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা অ্যানিমিয়ার চিকিৎসায় হরিতকির চূর্ণের সঙ্গে মধু ও ঘি মিশিয়ে খাওয়ার নিদান দিতেন রক্তের হিমোগ্লোবিন মাত্রা বাড়াবার জন্য।
 

টিউমার

আধুনিক ক্লিনিক্যাল রিসার্চ থেকে জানা গিয়েছে হরিতকীর বিশেষ অ্যান্টিটিউমার প্রপার্টি আছে। টিউমারের বৃদ্ধি প্রতিহত করতে নিয়মিত হরিতকী সেবন করা উচিত। টার্মিনালিয়া চেবুলার উপর আধুনিক ক্লিনিক্যাল রিসার্চ থেকে এও জানা গিয়েছে কারসিনোজেনিক টিউমারের আক্রমণ ও বৃদ্ধি রোধে হরিতকী দারুণ সক্রিয়।
 

অ্যাসাইটিস

হরিতকী বিশেষ অ্যাষ্ট্রিনজেন্ট ও ড্রাইং প্রপার্টি থাকায় দেহে জল জমা রোগ বা অ্যাসাইটিস প্রতিরোধ করে। বিশেষত, বাতের রোগীদের হাত পা পেট ইত্যাদি স্থানে অকারণ জল জমতে বাধা দেয় হরিতকী।
 

কনজাংটিভাইটিস

চোখের পাতার সংক্রমণজনিত অসুস্থতায় হরিতকি ফলত্বক জলে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে সেই জল দিয়ে সেঁক দিলে আরাম পাওয়া যাবে। এমনকি বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, নিয়মিত ছোট বয়স থেকে হরিতকি খাওয়া গেলে বুড়ো বয়সেও দৃষ্টি শক্তি যুবকের মতো থাকে।
 

পাইলস

নিয়মিত হরিতকী সেবনে মল নির্গমণ সহজ হয় ফলে পাইলসের মতো সমস্যা কাছে ঘেষতে পারে না। তবে সেই সঙ্গে ডায়েটে ফাইবার প্রধান খাবারের আধিক্য রাখতে হবে।

আরও পড়ুন:

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৩: আর্ষ মহাকাব্যদ্বয়ের আদি প্রচারমাধ্যম

পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-৩: ‘তিসরি মঞ্জিল’ ছিল পঞ্চমের প্রথম অগ্নিপরীক্ষা

বৈষম্যের বিরোধ-জবানি, পর্ব-১২: দক্ষ কর্মী নির্বাচন বনাম নারী সহকর্মী

 

লিভার বড় হয়ে যাওয়া

এনলার্জড লিভার মানেই জন্ডিস বা হেপাটাইটিসের মতো সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যায়। এ ধরনের এনলার্জড লিভার বা স্প্লনার সমস্যা থাকলে হরিতকি অথবা ত্রিফলা চূর্ণ নিয়মিত খেতে পারলে সংক্রমণের আশঙ্কা অনেকটাই কম থাকে।
 

কৃমি সংক্রমণ

হরিতকী কোষ্ঠ পরিষ্কারক হওয়ায় কৃমি সংক্রমণের আশঙ্কা কমায়। বিশেষত, শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য হরিতকী দারুণ উপকারী।
 

অ্যাঙ্গুলার স্টোমাটাইটিস, গলা ও মুখগহ্ববরে ঘা

ঠোঁটের কোণে ঘা, জিভে ঘা বা গলায় ঘা এর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে দিনে কয়েকবার হরিতকীর ফল ত্বক সেদ্ধ জলে গার্গেল বা কুলকুচি করতে হবে।
 

দাঁত ও মাড়ির অসুখ

দাঁতের গোড়া ফুলে ওঠা, মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, দাঁতের গোড়ায় ব্যথা ইত্যাদি সমস্যার একটাই দাওয়াই হরিতকী। খাওয়া-দাওয়ার পর শুকনো হরিতকি মুখে রাখতে পারলে মুখ গহ্বরে ও মাড়িতে সংক্রমণের প্রবণতা কমে। কমে নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ। হরিতকীর অ্যাষ্ট্রিনজেন্ট প্রপার্টি এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য।
 

গাউট

যারা গাউট বা গেঁটে বাতের সমস্যায় ভুগছেন হরিতকী চূর্ণের সঙ্গে আখের গুড় মিশিয়ে গুলি বানিয়ে বেশ কিছুদের নিয়মিত খেয়ে যান। পাশাপাশি পিউরিন বেশযুক্ত প্রোটিন খাবার বর্জন করে চলুন। দেহের ওজন বেশি থাকলে অবশ্যই তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করুন।
 

বন্ধ্যত্ব ও সন্তানধারণ

এক্ষেত্রেও হরিতকী বেশ কার্যকরী। তবে সেই সঙ্গে সমস্যার কারণ নির্ণয় করে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা করানো জরুরি।
 

দীর্ঘস্থায়ী জ্বর

উপযুক্ত হাই ক্যালোরি পথ্যের সঙ্গে হরিতকী খাওয়ানো গেলে টিউবারকিউলোসিস, ইচআইভি, ক্যানসার ইত্যাদি দীর্ঘমেয়াদী রোগে যে জ্বর তার উপশম ঘটে।
 

হৃদরোগ প্রতিরোধ

হরিতকী রক্তপ্রবাহের মধ্য দিয়ে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখায় ব্লাডপ্রেসার স্বাভাবিক থাকে এবং হৃদরোগের আশঙ্কা কমায়। অ্যাথেরোক্লেরোসিস রক্তের খারাপ কোলেস্টরেল ও টাইগ্লিসারাইড মাত্রা কমাতে সাহায্য করে হরিতকী। পাশাপাশি রক্ত প্রবাহের অভ্যন্তরে অ্যাথেরোক্লোরাইটিক জমতে দেয় না।
 

উচ্চ রক্তচাপ

এসেনশিয়াল ভিটামিনস, মিনারেলস ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস সমৃদ্ধ হরিতকী রক্তের উচ্চচাপ মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। হাই ব্লাডপ্রেসারের রোগীরা নিয়মিত খালিপেটে হরিতকী ভেজানো জল খান উপকার পাবেন।

 

মূত্রকৃচ্ছতা

হরিতকী একদিকে যেমন মূত্র উৎপাদনে সাহায্য করে, অন্যদিকে তেমনি মাংসপেশির সংকোচনে সাহায্য করায় মূত্র নির্গমন সহজসাধ্য হয়।
 

অ্যাজমা

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিনস ও মিনারেলস সমৃদ্ধ হরিতকী বিশেষ অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ধর্ম থাকায় সর্দি, কাশি, হাঁপানি, ব্রংকাইটিস ইত্যাদি সংক্রমণ প্রতিহত করে। অ্যাজমার কষ্টে যাঁরা ভুগছেন তাঁরা অল্প হরিতকীর সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেয়ে গরম দুধ খেয়ে দেখতে পারেন উপকার হতে পারে।
 

স্মৃতিশক্তি বর্ধক

হরিতকী মস্তিষ্ক স্নায়ুকোষের সক্রিয়তা বাড়ায়। ফলে শৈশব থেকে নিয়মিত হরিতকী খাওয়ানো গেলে মেধা বৃদ্ধি পায় এবং ভবিষ্যতে অ্যালজাইমার্স রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা কমে।

স্নায়বিক সমস্যা স্নায়ুতন্ত্রকে সজীব ও সক্রিয় রাখতে হরিতকী দারুণ কার্যকরী। পারকিনসন্স, অ্যালজাইমার্স-সহ অন্যান্য স্নায়বিক অসুখে হরিতকি খেয়ে দেখতে পারেন। উপরন্তু হরিতকী চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা ও ত্বক এই পঞ্চ ইন্দ্রিযয়ের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে। যদি এ ব্যাপারে বিস্তর পরীক্ষা নিরীক্ষার অবকাশ আছে।
 

ফুসফুস ও নাকের সংক্রমণ

ফুসফুস ও নাসা পথের সংক্রমণ হরিতকী সেদ্ধ জলের বাষ্প নাসপথে টেনে নিলে এক্ষেত্রে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
 

ত্বকের সমস্যা

ত্বকের অধিকাংশ সমস্যার একটাই সমাধান হরিতকী। জ্বালা-পোড়া, চুলকানি, সানবার্ন, ফোড়া, ফুসকুড়ি, ঘামাচি ইত্যাদি সমস্যাতে হরিতকী চূর্ণের প্রলেপ বেশ ভালো ফল দেয়। নিয়মিত হরিতকী খেতে পারলে ত্বকের সমস্যা বিশেষ কাছে ঘেঁষে না।
 

ক্ষতস্থান নিরাময়

অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও আন্টিফাঙ্গাল প্রপার্টি থাকায় হরিতকীর বিশেষ ক্ষত নিরাময়ী ক্ষমতা আছে। এক্ষেত্রে হরিতকী সেদ্ধ জলে নিয়মিত বার কয়েক ক্ষতস্থান ধৌত করতে হবে। হরিতকীর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ধর্মের গুণে ক্ষতস্থানে পুঁজ জমতে পারে না। ক্ষত শুকোয় তাড়াতাড়ি।
 

হেয়ারওয়াশ

আগেকার দিনে যখন শ্যাম্পুর বিশেষ প্রচলন ছিল না তখন প্রাকৃতিক বা হারবাল হেয়ার ওয়াস হিসেবে হরিতকী ভেজানো জল চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় ব্যবহৃত হয়।

আরও পড়ুন:

রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা, পর্ব-১০: ব্যস্ত পৃথিবী ছাড়িয়ে কোথায় যেন চলে এলাম উত্তরমেরুর জনমানবহীন এই জঙ্গলে, যেখানে এখন শুধুই রাত

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৬: দুয়ারে অপচ্ছায়া

দশভুজা: দু’শো বছর আগে হলে তিনি ইঞ্জিনিয়ারের বদলে সতী হতেন

 

এনার্জি বুস্টার

হরিতকী র ফলত্বক নিয়মিত ঘিয়ে ভেজে খেলে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
 

ডায়াবেটিস

ডায়াবেটিকরা চিকিৎসকের পরামর্শ সাপেক্ষে ডায়াবেটিক ডায়েটের পাশাপাশি এক চা চামচ হরিতকী চূর্ণ খেয়ে দেখতে পারেন।
 

জন্ডিস

জন্ডিস আক্রান্ত হলে দুধসহ হরিতকী খাওয়ান। অন্তত দশ দিন।
 

নাক থেকে রক্তপাত

নাক থেকে রক্ত পড়া রোধ করতে হলে তাৎক্ষণিক ঘরোয়া দাওয়াই হিসেবে লেবুর রসের সঙ্গে হরিতকী চূর্ণ খান। তবে রোগের কারণ জেনে নেওয়া আবশ্যক এক্ষেত্রে।
 

ফ্যাটি লিভার

ফ্যাটি লিভারের সমস্যাতে হরিতকী বেশ হিতকর।
 

দীর্ঘজীবন

সর্বগুণসম্পন্ন হরিতকী সুস্থ সুন্দর নীরোগ জীবন উপহার দিতে পারে যদি ডায়েট ও জীবনযাত্রায় কিছুটা পরিবর্তন এনে নিয়মিত কিছুটা হরিতকি খাওয়া যায়।
 

কীভাবে খাবেন

তাজা সবুজ হরিতকীকে খাওয়া যায় স্যলাড হিসেবে। সুপক্ব পরিপুষ্ট ফলকে আচার বা মোরব্বা হিসেবে খাওয়া যায়। দুধ বা মধু সহ খেলে বিভিন্ন রোগের দাওয়াই।
 

সাবধানতা

হরিতকীতে যাদের অ্যালার্জি আছে তারা খাবেন না।

ডায়াবেটিকরা দীর্ঘদিন হরিতকী খেতে থাকলে হঠাৎ ব্লাড সুগার লেভেল ভীষণ কমে গিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এক্ষেত্রে কীভাবে খাবেন কতদিন খাবেন কতটা খাবেন তা জানার জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

খুব দুর্বল ক্ষীণকায় ব্যক্তিরা হরিতকী খাবেন না।

হরিতকীতে খুব ‘ড্রাইং প্রপার্টি’ থাকায় ত্বক ও শরীরের জৌলুস ধরে রাখতে হলে সঙ্গে প্রচুর জল খেতে হবে।

* হাত বাড়ালেই বনৌষধি (Herbs-and-seeds): স্বাতীলেখা বাগ (Swatilekha Bag), উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞ।

Skip to content