ছবি: সংগৃহীত।
ভারতের ইতিহাসে বৈদিক সংস্কৃতির পরপরই আসে বৌদ্ধ সংস্কৃতি এবং বৌদ্ধ সংস্কৃতির হাত ধরে আসে স্মার্ত বা পৌরাণিক যুগ। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে অশ্বত্থ গাছ হল অতি পবিত্র একটি গাছ অর্থাৎ ‘বোধিবৃক্ষ’। বৌদ্ধমতে রাজপুত্র সিদ্ধার্থের বোধিগয়াতে এই বৃক্ষের তলায় জ্ঞানচক্ষুর উন্মোচন ঘটেছিল অর্থাৎ তিনি সিদ্ধিলাভ করে গৌতম বুদ্ধে পরিণত হয়েছিলেন। তাই এই গাছকে জ্ঞানবৃক্ষও বলা হয়।
চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ এর বর্ণনায় এই বৃক্ষের উল্লেখ পাওয়া যায়। স্মার্ত সংস্কার অনুযায়ী অশ্বত্থগাছকে পুজোর বিধান দেওয়া হয়েছে পুরোহিত তন্ত্রে। অশ্বত্থস্তোত্র অনুযায়ী, এই গাছের মূলে ব্রহ্মার অধিষ্ঠান, গুঁড়িতে থাকেন পালনকর্তা বিষ্ণু এবং গাছের পাতায় অধিষ্ঠান করছেন দেবাদিদেব মহাদেব। গুজরাত রাজ্যে অশ্বত্থগাছকে ব্রাহ্মণ রূপে কল্পনা করা হয় এবং মনে করা হয় এই বৃক্ষ হত্যা, ব্রাহ্মণ হত্যার ন্যায় পাপের কাজ। লৌকিক বিশ্বাস অনুযায়ী ব্রহ্মা পলাশ বৃক্ষ রূপে, রুদ্র ডুমুর বৃক্ষ রূপে এবং বিষ্ণু অশ্বত্থবৃক্ষরূপে মর্ত্যে জন্মগ্রহণ করেন। তাই অশ্বত্থ বৃক্ষের নীচে বসে ব্রাহ্মণরা প্রার্থনা করেন।
তবে মতান্তরে অশ্বত্থ বৃক্ষের স্পর্শ নাকি অমঙ্গলের প্রতীক। পদ্মপুরাণের ১৬১ নম্বর অধ্যায়ে বলা হয়েছে যে এই গাছে অলক্ষ্মীর আভাস আছে। চিল ,শকুন ও কাক জাতীয় পাখিরা রাত্রে এই গাছে আশ্রয় নেয় এবং এই গাছের তলায় রাতে থাকলে নাকি প্রাণহানি হতে পারে। কোন কোন সম্প্রদায়ের মধ্যে এমনও বিশ্বাস আছে যে সকল মৃত আত্মা পরলোকে জল পায় না, এই অশ্বত্থ গাছ সেই জলদানের একটি পথ হিসেবে কাজ করে। এই কারণে শ্রাবণ, কার্তিক এবং চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষের চতুর্দশ তিথিতে এই গাছের মূলে জল দান করার রীতি আজও গ্রামাঞ্চলে চলে আসছে। মৃত ব্যক্তির আত্মীয় পরিজনরা এই বিশ্বাসেই অশ্বত্থ গাছের মূলে জল দানের মধ্যে দিয়ে মৃত আত্মার মধ্যে জল সঞ্চারিত করেন। তবে বিজ্ঞানসম্মতভাবে বিচার করলে দেখা যায়, অশ্বত্থ গাছে শ্বসনের ফলে প্রচুর কার্বন-ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয়। এটি ভারী গ্যাস বলে অক্সিজেনের মতো অন্যান্য প্রয়োজনীয় গ্যাসকে সরিয়ে দিয়ে এই গ্যাস নিচের দিকে অত্যাধিক পরিমাণে জমা হতে থাকে। এই কারণবশত রাত্রে এই গাছের নিচে শুয়ে থাকা মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
পরীক্ষা শেষে ভীম হিমগিরি পর্বতে এসে মহাপ্রভুকে জানালেন যে তেঁতুল গাছকে রাজা, বটগাছকে মন্ত্রী এবং অশ্বত্থ গাছকে রক্ষী হিসাবে নিযুক্ত করতে হবে। মহাপ্রভুর নির্দেশ মতো তাই হল। মহাপ্রভু অশ্বত্থ গাছকে জানালেন, ঝড় এলে তার আগেই যেন তিনি সকলকে সাবধান করে দেন। এই কারণবশতই হয়তো, অশ্বত্থ গাছের পাতা সামান্য বাতাস দিলেও সব সময় তির তির করে বিচরণ করে।
হাত বাড়ালেই বনৌষধি: জাতির কল্যাণে ‘জাতীয় বৃক্ষ’
প্রসঙ্গ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান: ফুসফুসের ক্যানসারের প্রাথমিক সনাক্তকরণের জন্য শ্বাস বায়োপসি পরীক্ষার নতুন দিশা
এক নজরে
কী কী উপাদানে ভরপুর?
ভৌতিক উপন্যাস: মিস মোহিনীর মায়া, পর্ব-৮: মাথার চুলটা পেছন থেকে এসে মুখটাকে ঢাকা দিয়ে দিয়েছে, মেয়েটি কি লাইনে ঝাঁপাতে চাইছে?
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৬৫: গায়ের জামা হাওয়ায় উড়বে বলে দেহের সঙ্গে ফিতে দিয়ে বেঁধে রাখতেন
চিকিৎসাশাস্ত্রে বটগাছের ব্যবহার
ক্ষত নিরাময়ে
কান এবং দাঁতের সমস্যা দূরীকরণে
কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে
অণুজীবি ধ্বংস করতে
স্ত্রীরোগ নিরাময়ে
পুরুষের নানা রোগব্যাধি নিরাময়ে
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-১: সুন্দরবনের শেকড়ের খোঁজে
চলো যাই ঘুরে আসি: অযোধ্যা— ইতিহাস ও জনশ্রুতি /২
শিশুদের মুখের ক্ষত সারাতে
হাঁপানি নিরাময়ে
শরীর ঠান্ডা রাখতে
নানারকম অসুখ প্রতিরোধে