স্কেচ: গৌতম চট্টোপাধ্যায়।
TONIC। পাঁচ অক্ষরের এই নির্দোষ শব্দগুলোর মধ্যে কী জাদু আছে কে জানে! পুষ্টিকর সুষম খাবার না খেয়ে অনেকেরই নজর এই বোতলবন্দি টনিকের দিকে। অনেকে আবার দুর্বলতা কাটানোর জন্য কোনও ভিটামিন ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল নিজের বুদ্ধিতেই দোকান থেকে কিনে খান। কিন্তু সত্যিই কি এগুলো দেহের কোনও কাজে লাগে! ভিটামিন টনিক, লিভার টনিক, আয়রন টনিক, ব্রেন টনিক সেক্স টনিক—কত বাহারি সব নাম।
ভিটামিন টনিক
তথাকথিত বাজারি ভিটামিন টনিকগুলোতে থাকে নানা ধরনের ভিটামিনের জগাখিচুড়ি, সঙ্গে কোথাও ক্যালশিয়াম-সহ নানা মিনারেলস, অ্যালকোহল, কোথাও বা স্নায়ু উত্তেজক নিউরো ফসফেট, ক্যাফিন, স্টিকনিন ইত্যাদি। আর থাকে বিশুদ্ধ জল। একজন সুস্থ মানুষের এই বাড়তি ভিটামিন গুলোর কোনও প্রয়োজনই নেই। এদের অধিকাংশই মূত্রের সঙ্গে দেহ থেকে বার হয়ে যায়। অকারণে দীর্ঘদিন ধরে খেলে নানা খারাপ প্রতিক্রিয়াও দেখা দিতে পারে।
অনেকেরই অভ্যাস দুপুরে এবং রাতে দু’বেলা খাওয়ার পর দুটো ভিটামিন ক্যাপসুল মুখে ফেলা। কিংবা বিজ্ঞাপনের চটকে প্রভাবিত হয়ে এটা সেটা দুধে বা জলে গুলে খাওয়া। এতে খামোখা অর্থদণ্ড ছাড়া আর কিছুই হয় না। পেট ভরে ভাত, ডাল, শাক-সব্জি, সপ্তাহে দিন তিনেক মাছ-ডিম-দুধ খেলেই যথেষ্ট ভিটামিন পাওয়া যায়।
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৩৪: গলায় মাছের কাঁটা ফুটলে ওষুধ খেলে গলে যায়?
কলকাতার পথ-হেঁশেল: অফিসপাড়ার ক্যান্টিন ডেকার্স লেনে কোলাহল
লিভার টনিক
লিভার আমাদের দেহের কোনও এলেবেলে হজম অঙ্গ নয়। অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতো লিভার যখন তখন অসুস্থও হয় না। বরং আমরা যা খাই তাকে গ্লাইকোজেনে পরিণত করে নিজের মধ্যে জমিয়ে রেখে বিপদে-আপদে সে দেহকে রক্ষা করে। লিভারে থাকে অসংখ্য কোষ, যার দশ ভাগের এক ভাগ সুস্থ থাকলেই লিভার দিব্যি তার কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারে। তবে হ্যাঁ, লিভারও মাঝেমধ্যে অসুস্থ হতে পারে। অ্যামিবিক হেপাটাইটিস যেখানে আমাশার জীবাণু লিভারে বাসা বাঁধে, ম্যালেরিয়ায়, কালাজ্বরে, রক্তের অসুখে, জন্ডিসে, ডায়াবেটিসে, ক্যানসারে, গলব্লাডারের অসুখে এবং সিরোসিসে লিভার আক্রান্ত হয়। এমনকি ফোঁড়া ও সিস্ট-সহ ছোটখাট রোগও লিভারে হতে পারে। এদের প্রত্যেকেরই চিকিৎসা পদ্ধতি ভিন্ন। এখানে লিভার টনিকের কোনও ভূমিকা নেই।
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৯: ঠাকুরের ঘরণী সারদার গার্হস্থ্য জীবন
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৪৬: বহু জনমের মায়া, ধরিল যে কায়া, ওগো ‘শিল্পী’ সে তো শুধু তোমারই ছায়া
লিভার টনিকের অন্যতম উপাদান হল সরবিটল নামক এক ধরনের কার্বোহাইড্রেট, মুখে খেলে যেটি লিভারে পৌঁছনোর আগেই অন্ত্রনালীতে শোষিত হয়ে যায়। কাজেই উপকার বা অপকারের প্রশ্নই আসে না। আর আয়ুর্বেদিক যেসব ওষুধ লিভার টনিকে থাকে, সেগুলো নিয়ে সেভাবে কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা কোনও কালেই হয়নি, যা হয়েছে তার ফলাফলও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ স্বীকৃত নয়। কীভাবে তারা দেহের কোনও কোনও অঙ্গে কাজ করে, কোন মাত্রায় করে, কেন করে—কেউ জানে না। অবশ্য প্রাজ্ঞজনেরা তো বলতেই পারেন, গাছ-গাছড়ারা মিছে কথা কয় না, উপকার ঠিকই করে, কিন্তু জানতি পারো না।
প্রথম আলো, পর্ব-৩: পৃথিবীর প্রথম কবি কে, জানেন?
হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-১২: আমাকে আমার মতো থাকতে দাও
শেষ অনুরোধ
যোগাযোগ: ৯৮৩০২১৭৯২৮