রবিবার ২৪ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে।

প্যারাসিটামল একটানা খেলে বাড়ে উচ্চ রক্তচাপ। সম্প্রতি স্কটল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ১১০ জন ব্লাড প্রেশারের রুগির উপর প্যারাসিটামল নিয়ে একটি ট্যায়াল চালান। টানা ১৪ দিন ১ গ্রাম করে দৈনিক চারবার প্যারাসিটামল দেওয়া হয়। দেখা যায় চার দিনের মধ্যেই প্যারাসিটামল খাওয়া রুগিদের রক্তচাপ লক্ষণীয়ভাবে বেড়ে গিয়েছে। যা প্রায় ২০ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে হার্ট অ্যাটাক ও সেরিব্রাল অ্যাটাকের সম্ভাবনা। ব্রিটেনে একশো জনের মধ্যে দশ জন দৈনিক প্যারাসিটামলে অভ্যস্ত। তিনজনের মধ্যে একজন রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন। এইরূপ পরিস্থিতি দেখেই এডিনবরার অধ্যাপকদের মাথায় আসে এরূপ গবেষণার কথা।
প্যারাসিটামল অনেক নিরাপদ হওয়ার কারণে ডাক্তারবাবুরা প্রেসক্রাইব করেন এই ওষুধ। জ্বর থেকে শুরু করে গা হাতের যন্ত্রণা, মাথার যন্ত্রণা একটা ওষুধই ভরসা যার নাম প্যারাসিটামল। বাজারে সবথেকে বেশি বিক্রি এই ওষুধ। আমাদের রাজ্যের বহু চিকিৎসক এই প্যারাসিটামল খাওয়ার কথা বলেন। যদিও এডিনবরার গবেষকরা বারবার করে বারণ করছেন চোখ বন্ধ করে এই প্যারাসিটামলে ভরসা না রাখা। কারণ এই ওষুধে রক্তচাপ বাড়িয়ে দেওয়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে।

এডিনবার্গের অধ্যাপক ডেভিড ওয়েভ বলেছেন, ‘আইবুপ্রোফেন রক্তচাপ বাড়ায়। এই ধারণার উপর ভিত্তি করেই ডাক্তারবাবুরা ব্যথা বা জ্বর উপশমে যে কোনও রুগিকে প্যারাসিটামল দেন। এটাই অলিখিত প্রটোকল হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এবার এই নিরাপদ ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়েও ভাবার সময় এসেছে। এই ওষুধই কিন্তু হার্ট আ্যটাক এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।’ এডিনবার্গের গবেষণাপত্রটি উদ্ধৃতি করে কলকাতার মেডিসিন ডাক্তার অরিন্দম বিশ্বাস জানান, ‘এতদিন লিভারের উপর প্যারাসিটামলের নেতিবাচক প্রভাবটি জানা ছিল। লিভারের ক্ষতি এড়াতে তাই দৈনিক চার গ্রামের বেশি প্যারাসিটামল সাধারণত দেওয়া হয় না। লিভারের সঙ্গে এবার রক্তচাপ বৃদ্ধি হওয়ার সমস্যাও যুক্ত হল। সুতরাং বাড়তি সাবধানতা নিতে হবে আমাদের।’
এসএসকেএম হাসপাতালের ডাক্তার দীপ্তেন্দ্র সরকার বলেছেন, ‘১১০ জনের স্যাম্পেল সাইজ খুবই ছোট। প্যারাসিটামল প্রটোকলে বদল আনতে আরও বড় আকারে ট্রায়াল হওয়া উচিত।’ চিকিৎসকের একটা বৃহৎ অংশের মত, দৈনিক চার গ্রামের বেশি প্যারাসিটামল সাধারণত ডাক্তারবাবুরা প্রেসক্রাইব করেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ৬৫০ মিলিগ্রাম করে চার বার দেওয়া হয়, যেটি চার গ্রামের কম। ১০০০ মিলিগ্রাম বা এক গ্রামের ডোজ দেওয়া হয় খুব কম লোককেই। ফলত রুগিদের চিন্তার কিছু নেই বলে আশ্বাস প্রদান করেছেন অনেক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারবাবু।


Skip to content