ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।
দাঁত খাবার চিবিয়ে খেতে সাহায্য করে। খাবার চিবিয়ে না খেলে পাচক রস নিঃসৃত না হলে সেই খাদ্যের পরিপাক ঠিকমতো হয় না, আর পরিপাক না হলে সেই খাদ্য থেকে নিঃসৃত পুষ্টিগুণ শরীর গঠনে কোনও ভূমিকা গ্রহণ করে না। তাই খুব ছোট বয়স থেকেই দাঁতের যত্ন নেওয়া একান্ত জরুরি।
আয়ুর্বেদশাস্ত্রে দাঁতের যত্নের চাবিকাঠি বহুকাল আগে থেকেই লুকিয়ে আছে। আমাদের হাতের কাছের খুব চেনা গাছপালা দিয়েই খুব সহজে প্রতিদিন আমরা আমাদের দাঁত ও মাড়ির যত্ন করতে পারি।
দাঁতকে ভালো রাখতে গেলে দন্তকাষ্ঠ বা দাঁতনের ব্যবহার প্রভূত সুফল এনে দেয়। আয়ুর্বেদে মূলত পাঁচ-রকমের গাছ-গাছড়া দিয়ে দন্তকাষ্ঠ বা দাঁতনের ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে যেগুলো হল বট, বাবলা, খদির বা খয়ের, নিম ও অশ্বত্থ।
দাঁতকে ভালো রাখতে গেলে দন্তকাষ্ঠ বা দাঁতনের ব্যবহার প্রভূত সুফল এনে দেয়। আয়ুর্বেদে মূলত পাঁচ-রকমের গাছ-গাছড়া দিয়ে দন্তকাষ্ঠ বা দাঁতনের ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে যেগুলো হল বট, বাবলা, খদির বা খয়ের, নিম ও অশ্বত্থ।
আরও পড়ুন:
বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-৬৮: উন্নতমানের প্রোটিনের উৎস বলেই মাছ এত জনপ্রিয়
লাইট সাউন্ড ক্যামেরা অ্যাকশন, পর্ব-৮: ইতালিয়ান নিওরিয়ালিজম এবং ডি সিকার বাইসাইকেল থিভস
কেউ যদি মাড়ির সমস্যায় কষ্ট পান, তাহলে কয়েকটা পেয়ারাপাতা বা জামপাতা থেঁতো করে বা মিক্সার গ্রাইন্ডারে বেটে তার সঙ্গে অল্প নুন ও সরষের তেল মিশিয়ে দাঁত ও মাড়িতে ওই মিশ্রণ অন্তত দিনে দুবার প্রলেপ দিয়ে পাঁচ-দশ মিনিট মালিশ করলে মাড়ির সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। মূলত খাবার পরেই এই মিশ্রণের প্রলেপ ব্যবহার করলে বেশি ভালো ফল মেলে। কারণ খাবার পরে এটি ব্যবহার করলে দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাবার পরিষ্কার হয়ে যায়। রাতে ওই অবস্থায় ঘুমোতে গেলে দাঁতের ফাঁকে খাবার আটকে থাকতে পারে না ফলে দাঁতের কোনও ক্ষতিও হয় না। এতে মাড়ি শক্ত হয় আর তার ফলস্বরূপ দাঁত সহজে পড়ে না।
আরও পড়ুন:
ইতিহাস কথা কও, কোচবিহারের রাজকাহিনি, পর্ব-৬: ঐতিহাসিক বিরল বিবাহ ও পরবর্তী প্রতিক্রিয়া
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৩৩: কানে ব্যথা? তেল দেবেন কি?
এছাড়া রোজ দাঁত মাজার জন্য পেস্টের বদলে বাড়িতেই খুব সহজে হাতের কাছে থাকা জিনিসপত্র দিয়েই ফলদায়ী মাজন বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এই ঘরোয়া মাজন তৈরির জন্য লাগবে নিমপাতা, আমলকী, হরীতকী, বহেড়া, লবঙ্গ, দারচিনি, তেজপাতা, বকুল গাছের ছাল এবং সুপারি গাছের মূলের সঙ্গে ফিটকিরি মিশিয়ে গুঁড়ো করে একটি কৌটোয় রেখে দিয়ে রোজ সেই মিশ্রণ দিয়ে দুবেলা দাঁত মাজলে দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত নির্গত হওয়া বা ফুলে যাওয়া, পুঁজ হওয়া বা মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার গুরুতর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এই চূর্ণকে মাজনের মতো ব্যবহার বড়দের সঙ্গে ছোটরাও করতে পারে।
আরও পড়ুন:
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৭: গৃহিণী সারদার প্রথম দক্ষিণেশ্বর আগমন
সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৯: সুন্দরবনের লুপ্ত নদী আদিগঙ্গা
মুখ থেকে দুর্গন্ধ বেরোনো বা মাড়ি ফুলে যাওয়া থেকে মুক্তি পেতে কয়েকটা পেয়ারাপাতা বা জামপাতা, লবঙ্গ, দারচিনি, হরীতকী, আমলকী, বহেড়া ও তেজপাতার সঙ্গে বট, বাবলা, খদির, নিম, অশ্বত্থ, বকুল গাছের ছাল ও সুপারি গাছের মূলকে কুচিকুচি করে কেটে সব কিছুকে একসঙ্গে বেশি করে জল দিয়ে সিদ্ধ করে সেই জল বোতলে পুরে রেখে দিতে হবে। আর সেই জল দিয়ে মুখ কুলকুচি করতে হবে। এটি দাঁতের সমস্যা দূর করার এক অব্যর্থ ঔষধি৷
বিশেষ করে শিশুদের দুধের দাঁত পড়ে গেলে সাত-আট বছরের পর থেকে শক্ত খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস করাতে হবে। পেয়ারা, ছোলা, বাদাম জাতীয় খাবার দিতে হবে কারণ এগুলো চিবিয়ে খাওয়ার সময় দাঁতের ব্যায়াম হয়।
বিশেষ করে শিশুদের দুধের দাঁত পড়ে গেলে সাত-আট বছরের পর থেকে শক্ত খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস করাতে হবে। পেয়ারা, ছোলা, বাদাম জাতীয় খাবার দিতে হবে কারণ এগুলো চিবিয়ে খাওয়ার সময় দাঁতের ব্যায়াম হয়।
* ডাঃ গোপালচন্দ্র সেনগুপ্ত, আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ।