ছবি প্রতীকী
মাঙ্কিপক্স কীভাবে এল?
মাঙ্কিপক্স রোগটা আসলে নতুন নয়৷ ১৯৫৮ সালে গবেষণার জন্য কিছু বাঁদর পোষা হয়েছিল। প্রথম সেই বাঁদরদের মধ্যেই মাঙ্কিপক্স উপসর্গ দেখা যায়। আর ১৯৭০ সালে এই সংক্রমণ ছড়ায় মানুষদের মধ্যে। মূলত বাঁদর বা অন্যান্য জন্তু-জানোয়ার থেকেই এই রোগ মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়৷ আমাদের দেশে আগে কখনও মাঙ্কিপক্স হয়নি৷ তবে ভারত মাঙ্কিপক্সের ‘এনডেমিক জোন’ না হলেও আমাদের খুব সতর্ক থাকতে হবে৷ আবার অযথা আতঙ্কিত হওয়ারও কিছু নেই৷ কেননা মাঙ্কিপক্স রোগটা আমাদের দেশে অনেকটা জলবসন্ত বা স্মল পক্সের মতো৷ যেটা ইতিমধ্যে শুধু আমাদের দেশ কেন, পৃথিবী থেকে নির্মূল হয়ে গিয়েছে৷ এখন আর হয় না৷
এর উপসর্গ কী?
অনেকটা জলবসন্ত বা স্মল পক্সের মতোই উপসর্গ৷ প্রথমদিকে খুব জ্বর হয়, গা-হাত-পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা করে, কিছুটা আবার ডেঙ্গির মতো৷ ঘাড়ের গ্ল্যান্ডগুলো ফুলে যায়৷ ফুলতে পারে শরীরের অন্যান্য গ্ল্যান্ডও। জলবসন্তের মতো শরীরে পদ্মপাতায় জলের বিন্দুর মতো র্যাশ বেরোয়৷ এইগুলো শুকিয়ে যাওয়ার পর সেখান থেকে অন্য কারও সংক্রমিত হতে পারে৷ কারও কারও আবার কাঁপুনি আসতে পারে। অনেকে খুব ক্লান্তিও অনুভব করতে পারেন।
কীভাবে সংক্রমিত হতে পারে?
সাধারণত আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে অন্যের শরীরে প্রবেশ করতে পারে৷ আমরা যদি কোনও রোগীর ঘরে শোওয়াবসা করি বা একই বিছানা, বালিশ, চাদর ব্যবহার করি, তার থেকেও সংক্রমিত হতে পারে৷ হাঁচি-কাশির মাধ্যমেও সংক্রমিত হতে পারে৷ অতএব আমাদের খুব সাবধানে থাকতে হবে৷ রোগীর থেকে যতটা দূরে থাকা সম্ভব থাকতে হবে৷ ড্রপলেট-এর পাশাপাশি ক্ষতস্থান, শ্বাসনালি, নাক, চোখ কিংবা মুখের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। বাড়িতে পোষ্য থাকলে সতর্ক হতে হবে। বাড়তি সতর্কতার জন্য অন্য কোনও প্রাণির সংস্পর্শেও না আসা ভালো।
বয়স্ক ও শিশুদের সাবধানে রাখতে হবে
আপনাদের জানিয়ে রাখা ভালো, এই রোগ কিন্তু মারণরোগ নয়৷ শতকরা তিন থেকে চারজনের ক্ষেত্রে এই রোগ খারাপ পর্যায়ে পৌঁছয়৷ সেখান থেকে মৃত্যুও হতে পারে৷ তবে ছোট ও বয়স্কদের এবং যাঁরা ডায়াবেটিস, কিডনি বা হার্টের সমস্যায় ভুগছেন বা ক্যানসারের জন্য কেমোথেরাপি নিচ্ছেন, স্টেরয়েড খাচ্ছেন তাঁদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে৷ যেমন করানোর সময় যেভাবে আমরা সাবধানে থেকেছি, সেভাবেই থাকতে হবে৷ সাবান দিয়ে বারবার হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, মাস্ক পরা৷ দূরত্ব বিধি মেনে চলা ইত্যাদি৷
সেই সঙ্গে মনে রাখতে হবে, যেহেতু অন্য প্রাণীদের মধ্যেও এই রোগের উপসর্গ দেখা যায়, তাই এই বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন৷
বাড়িতে কারও যদি জ্বর বা তার সঙ্গে সর্দিকাশি হয় তার থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকাই ভালো৷ বাড়ির অন্য সদস্যের অবশ্যই মাস্ক পরে থাকতে হবে৷ যদি আপনারা এই নিয়মগুলো মেনে চলেন তাহলে মাঙ্কিপক্স অবশ্যই এড়ানো সম্ভব। মনে রাখবেন, এই রোগের এখনও পর্যন্ত কোনও ভ্যাকসিন বা ওষুধ বাজারে বের হয়নি৷ যদিও আমেরিকা ও ইউরোপে এই রোগের ভ্যাকসিন বা দু-একটা ওষুধ বেরিয়েছে এবং ট্রায়ালের পর্যায়ে আছে৷
ছবি: সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
যোগাযোগ: ৯৮৩১৬৭১৫২৫