রবিবার ২৪ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে

অর্শ রোগের সাধারণ লক্ষণ কী কী
আয়ুর্বেদ দৃষ্টিকোণে অর্শরোগ বেশ যন্ত্রণাদায়ক কঠিন ব্যাধি যার লক্ষণগুলোর মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য হল অন্যতম প্রধান লক্ষণ। এছাড়াও অজীর্ণ, কঠিন মলত্যাগকালে যন্ত্রণা অনুভব এবং ক্ষেত্রবিশেষে মলত্যাগের সময় রক্তপাত, নাভি, তলপেটে যন্ত্রণা, শারীরিক দুর্বলতা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়৷

অর্শ রোগের কারণ কী কী?
মূলত বিরুদ্ধ আহার, অজীর্ণ কারক দ্রব্য সেবন, নিয়মিত রূপে অতিরিক্ত পরিমাণে আমিষ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ, গুরুপাক খাদ্যদ্রব্য সেবন, নিয়মিত কঠিন জায়গায় দীর্ঘক্ষণ বসলে, মলত্যাগের বেগ আটকে রাখলে ইত্যাদি বহুবিধ কারণে অর্শ রোগ হয়ে থাকে।

অর্শ রোগ প্রতিরোধে বিবিধ মুষ্টিযোগ
চরক সংহিতা মতে অর্শ নাশক যোগে গুরুত্বপূর্ণ হল:
হরীতকী চূর্ণ দইয়ের ঘোলের সঙ্গে সেবন করলে উপকার হয় অথবা ত্রিফলা চূর্ণ দইয়ের ঘোলের সঙ্গে সেব্য।

পঞ্চকোল চূর্ণ ৩ গ্রাম পরিমাণ টক দইয়ের ঘোলের সঙ্গে সেবনীয়।

চিত্রকাদি চূর্ণ ৩ গ্রাম পরিমাণ টক দইয়ের ঘোল অনুপানে গ্রহণ করা উচিত।

অর্শে রক্তপাতের চিকিৎসা
প্রথমত চিকিৎসকের কাছে রক্তপাতের সঠিক কারণ নির্ণয় এবং রক্তবন্ধের পরামর্শ জরুরি। তবে অর্শজনিত কারণে রক্তপাতের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে পিত্ত প্রধান খাদ্য বর্জনের পাশাপাশি কালো তিলের চাটনিতে মাখন মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার সেবন করা যেতে পারে।

পেয়াজ ভক্ষণ এক্ষেত্রে উপযোগী যোগ।

নিয়মিত ঘোল সেবন রক্তজ অর্শের ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ।

শতধৌত ঘৃতের বাহ্যিক প্রয়োগেও রক্তপাত বন্ধ হয়।

অর্শ রোগে সিজবাথ
অর্শ সমস্যায় ব্যথা, বেদনা ও বিবিধ উপসর্গ থাকলে স্নানের পূর্বে নিয়মিত নিমপাতা সেদ্ধ জলে মিনিট পনেরো সিজবাথ নিন। জলটি ঈষদুষ্ণ হওয়া উচিত।
এটি উক্ত সমস্যায় বেশ ফলপ্রসূ।

অর্শ রোগের পথ্য ও অপথ্য
অর্শ রোগে হিতকর খাদ্যদ্রব্যসমূহ হল:
পুরাতন শালি চাল, মুগ, কুলত্থ কলাইয়ের ডাল, ডুমুর, ওল, পটোল, সজনে ডাঁটা, মোচা, কাঁচা পেঁপে ইত্যাদি৷ এছাড়াও দুধ, ঘি, মাখন, কিসমিস, মিছরি, আঙুর, পাকা পেঁপে, ঘোল ইত্যাদিও পথ্য।

অপথ্য
ভাজা ও পোড়া খাদ্যদ্রব্য, গুরুপাক খাদ্যদ্রব্য, দই, শিম, লাউ, পিঠে, অত্যধিক আমিষ খাদ্য ইত্যাদি বর্জনীয়।

ক্ষারসূত্র চিকিৎসা
অর্শ রোগ সারাতে আয়ুর্বেদের ক্ষারসূত্র চিকিৎসা বর্তমানে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রশংসনীয়, নিরাপদ ও সাশ্রয়কর।
যা রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি আয়ুর্বেদ কলেজে হয়ে থাকে।
বি:দ্র: প্রথমত অর্শ রোগ নির্ণয়ে ও চিকিৎসায় অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন কারণ অনেকক্ষেত্রেই অর্শ, ফিসার, ফিশ্চুলা নিয়ে রোগীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকে এবং সেক্ষেত্রে স্বচিকিৎসা হানিকারক হতে পারে।

লেখক: আয়ুর্বেদ মেডিকেল অফিসার (উত্তর চণ্ডীপুর সদর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, মানিকচক, মালদা)

Skip to content