ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে।
আয়ুর্বেদ মতে বাতব্যাধি মূলত আশি প্রকার এবং রোগের নিদান (কারণ) ও অবস্থার উপর নির্ভর করে চিকিৎসাও ভিন্ন ভিন্ন।
তবে বাতজনিত কারণে সাধারণ ব্যথা যন্ত্রণায় মহামাষ তেল নিয়মিত একটু গরম করে আক্রান্ত স্থানে দিনে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করলে ও পাশাপাশি উষ্ণ স্বেদন (সেক) প্রয়োগ করলে ব্যথা যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
যাঁরা দীর্ঘদিন নানাবিধ কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের শিকার তাঁরা প্রাথমিক পর্যায়ে এরন্ড তেল কিছুদিন ১৫-২০ মিলি পরিমাণে
সেবন করলে উপকার পাবেন।
তবে এক্ষেত্রে রাত্রিজাগরণ, অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাদ্যদ্রব্য সেবন ইত্যাদি একেবারেই বর্জনীয়।
অজীর্ণ ও অগ্নিমান্দ্যে মূলত পাচকাগ্নির বিষম অবস্থার দরুন হয়ে থাকে এবং দীর্ঘদিন এই সমস্যায় ভুক্তভোগীরা বহুবিধ অবাঞ্ছিত রোগের শিকার হন।
এক্ষেত্রে খিদে পাওয়ার আগে খাওয়া বা খিদেকে উপেক্ষা করা দুটোই বর্জনীয়।
পাশাপাশি সুপথ্য খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ ও বাইরের ফাস্টফুড ও জাঙ্কফুড সেবন করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
অজীর্ণ ও অগ্নিমান্দ্যের প্রাথমিক অবস্থায় লবণভাস্কর চূর্ণ ১ চামচ পরিমাণ উষ্ণ জলের সঙ্গে নিয়মিত সেবন করলে উপকার দর্শে তবে ওষুধটিতে লবণ থাকায় উচ্চরক্তচাপ রোগীদের ক্ষেত্রে এটির সেবন নিষিদ্ধ।
জ্বরের সঙ্গে কাশি ও অরুচির উপদ্রব রয়েছে বা শুধুই কাশি বেশ ভোগাচ্ছে সেক্ষেত্রে তালিসাদি চূর্ণ ১ চামচ পরিমাণ মধু মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার নিয়মিত সেবনে উক্ত সমস্যা দূরীভূত হয়।
তবে সুগার আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে এই ওষুধটি ব্যবহার করা বারণ।
আয়ুর্বেদ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জ্বর বহুবিধ কারণে হয়ে থাকে এবং জ্বরের চিকিৎসাও ভিন্ন ভিন্ন তবে জ্বরের প্রাথমিক অবস্থায় যেখানে আলস্য ভাব, মাথা ব্যথা ও অরুচি ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায় সেক্ষেত্রে সুদর্শন চূর্ণ ১ চামচ পরিমাণ/ সুদর্শন ঘন বটি ২টি করে উষ্ণ জলের সঙ্গে দিনে দুই থেকে তিনবার নিয়মিত সেবন করলে জ্বরে আরোগ্য লাভ হয়।
হঠাৎ হাত পা মচকে গিয়ে ব্যথা ও ফোলা ভাব দেখা দিলে নালুকা চূর্ণ পরিমাণমতো জলে মিশিয়ে একটু গরম করে পেস্টের মতো বানিয়ে নিন।
আক্রান্ত স্থানে দিনে দুই বার পুরু লেপে দিয়ে শুকনো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন তারপর উষ্ণ জলে ধুয়ে ফেলুন এতে খুব তাড়াতাড়ি ব্যথা ও ফোলা কমে। এছাড়াও ঠান্ডা গরম জলের সেকও বেশ কার্যকরী।
তবে আঘাত জোরালো হলে বা উক্ত লেপে ব্যথা না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
ঋতু হরীতকী আয়ুর্বেদ চিকিৎসাবিজ্ঞানের এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হরীতকী সেবন পদ্ধতি যা মাসানুমাসিক স্বাস্থ্য রক্ষার নির্বাচিত ও ফলপ্রসূ যোগ যা এককথায় রসায়ন গুণযুক্ত।
এককথায় প্রত্যেক ঋতুতে পরিমাণমতো হরীতকী বিশেষ অনুপানে সেবন করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় থাকার পাশাপাশি ঋতু সম্পর্কিত রোগসমূহ থেকে দেহকে সুস্থ রাখা যায়। যেমন—
উল্লেখ্য, আয়ুর্বেদ চিকিৎসকের পরামর্শমতোই ঋতু হরীতকী সেবন করা উচিত।
দশম সংস্কার চূর্ণ এক অতি পরিচিত দাঁতের পরিচর্যায় ব্যবহৃত প্রাকৃতিক ওষুধ যা দিয়ে নিয়মিতরূপে দাঁত মাজলে দাঁতের বিবিধ সমস্যা থেকে অচিরেই রেহাই পাওয়া যায়।
লেখক: আয়ুর্বেদ মেডিকেল অফিসার (উত্তর চণ্ডীপুর সদর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, মানিকচক, মালদা)