![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/09/Amarendranath-Dutta-Girishchandra-ghosh.jpg)
অমরেন্দ্রনাথ দত্ত ও গিরিশচন্দ্র ঘোষ।
অমরেন্দ্রনাথ দত্ত প্রতিষ্ঠিত ক্লাসিক থিয়েটারে গিরিশচন্দ্র ঘোষ যোগদান করেন। আশৈশব অমরেন্দ্রনাথ নাট্যানুরাগী ছিলেন। অমরেন্দ্রনাথ নিয়মিত গিরিশচন্দ্রের কাছে যেতেন। তিনি দূর সম্পর্কে গিরিশচন্দ্রের ভাগ্নে ছিলেন। অমরেন্দ্রনাথের ভদ্রতা বিনয়, মিষ্ঠ ভাষণ গিরিশচন্দ্রকে মুগ্ধ করত। অমরেন্দ্রনাথ তাঁর স্বভাবজাত উন্মেষণায় চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে সম্পূর্ণভাবে নাটকে মনোনিবেশ করলেন। ১৩০৩ সালের শেষ দিকে অমরেন্দ্রনাথ এমারেল্ড থিয়েটার ভাড়া নিয়ে ক্লাসিক থিয়েটার প্রতিষ্ঠিত করেন।
ক্লাসিক থিয়েটারেও গিরিশচন্দ্র স্টার থিয়েটারের মতো ম্যানেজারের পদ গ্রহণে অসম্মতি প্রকাশ করলেন। তখন ক্লাসিক থিয়েটারে গিরিশচন্দ্রের নাম নাট্যাচার্য বলে বিজ্ঞাপিত করা হল। ক্লাসিক থেকে গিরিশ চন্দ্রের প্রথম যে নাটকটি মঞ্চস্থ করা হল সেটি গীতিনাট্য। নাম ‘দেলদার’। ক্লাসিকে প্রথমে এই নাটক মঞ্চস্থ হল ১৮৯৯ সালের ১০ জুন।
প্রথম রজনীতে যেসব শিল্পী অভিনয় করেছিলেন তাদের মধ্যে ছিলেন অমরেন্দ্রনাথ দত্ত (গহন), নূপেন্দ্রনাথ বসু (দেলদার) পূর্ণচন্দ্র ঘোষ (নেশা), সুরেন্দ্রনাথ ঘোষ (সরল), অঘোরনাথ পাঠক (কুহকী), কুসুমকুমারী পিয়াসা, ভূষণ কুমারী (ধারা) প্রমদাসুন্দরী (রেখা), পান্নারানী (কুহকিনি)। এই নাটকের গীতিকার গিরিশ চন্দ্র। সুর রচনা করলেন পূর্ণচন্দ্র ঘোষ। নৃত্য শিক্ষক ছিলেন নৃপেন্দ্রনাথ বসু। মেকআপম্যানের কাজটি করেছিলেন আশুতোষ পালিত।
প্রথম রজনীতে যেসব শিল্পী অভিনয় করেছিলেন তাদের মধ্যে ছিলেন অমরেন্দ্রনাথ দত্ত (গহন), নূপেন্দ্রনাথ বসু (দেলদার) পূর্ণচন্দ্র ঘোষ (নেশা), সুরেন্দ্রনাথ ঘোষ (সরল), অঘোরনাথ পাঠক (কুহকী), কুসুমকুমারী পিয়াসা, ভূষণ কুমারী (ধারা) প্রমদাসুন্দরী (রেখা), পান্নারানী (কুহকিনি)। এই নাটকের গীতিকার গিরিশ চন্দ্র। সুর রচনা করলেন পূর্ণচন্দ্র ঘোষ। নৃত্য শিক্ষক ছিলেন নৃপেন্দ্রনাথ বসু। মেকআপম্যানের কাজটি করেছিলেন আশুতোষ পালিত।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/09/Girish-Chandra-Ghosh-4.jpg)
নাট্যকার গিরিশচন্দ্রের সন্ধানে, পর্ব-৪৪: কালীকিঙ্কর বসুর চরিত্রটি গিরিশচন্দ্রের অন্যন্য সৃষ্টি
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/09/Sundarban-1-1.jpg)
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-১৪: সুন্দরবনের মৎস্যদেবতা মাকাল
ইতিপূর্বে গিরিশচন্দ্র লিখেছিলেন স্বপ্নের ফুল। ঠিক তেমনি হল দেলদার। (এক রূপক নাটক)। নাট্যকার তাঁর ৩৭ বছর বয়সে মোহিনী প্রতিমা নাটক লিখেছিলেন। সেই নাটকের সঙ্গে দেলদার নাটকের একটা সাদৃশ্য আছে। অভিমানশূন্য নিঃস্বার্থ ভালোবাসা প্রসঙ্গ প্রতিমাকেও সজীব করে তুলতে পারে। মোহিনী প্রতিমা নাটকের সেই বিষয়টি দেলদার নাটকে পরিস্ফুট হয়েছে।
দেলদার গীতিনাট্যের প্রস্তাবনায় গিরিশচন্দ্র বলেছেন, “এই দুনিয়া বিপরীতধর্মী অর্থাৎ ভালোমন্দ মিশ্রিত। ইহাতে ভালো দেখিলে সবাই ভালো, মন্দ দেখিলে সবাই মন্দ। নাট্যকারের এই যে ভাব সেটি স্পষ্ট বুঝবার জন্য নাটকের শুরুতে যে প্রস্তাবনা সংগীত রয়েছে তার উল্লেখ করা যাক” চল চল দুনিয়া দেখে আসিয়া আয়। শুনেছি সখের বাজার সখ করে পায় যে যা চায়”। দেলদার নাটকের সংলাপও মনে রাখার মত। “জেনেশুনে দেলদারি হয় না। ভালো মন্দ জেনে যে দেলদারি করে তা দেলদারী নয়…ঝক মারি।” এই দেলদারির অর্থ হল ভালো মন্দ নির্বিচারে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া।
দেলদার গীতিনাট্যের প্রস্তাবনায় গিরিশচন্দ্র বলেছেন, “এই দুনিয়া বিপরীতধর্মী অর্থাৎ ভালোমন্দ মিশ্রিত। ইহাতে ভালো দেখিলে সবাই ভালো, মন্দ দেখিলে সবাই মন্দ। নাট্যকারের এই যে ভাব সেটি স্পষ্ট বুঝবার জন্য নাটকের শুরুতে যে প্রস্তাবনা সংগীত রয়েছে তার উল্লেখ করা যাক” চল চল দুনিয়া দেখে আসিয়া আয়। শুনেছি সখের বাজার সখ করে পায় যে যা চায়”। দেলদার নাটকের সংলাপও মনে রাখার মত। “জেনেশুনে দেলদারি হয় না। ভালো মন্দ জেনে যে দেলদারি করে তা দেলদারী নয়…ঝক মারি।” এই দেলদারির অর্থ হল ভালো মন্দ নির্বিচারে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/09/Health.jpeg)
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৩৮: চল্লিশ পার হলেই নিরামিষ?
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/09/Uttam-Kumar23.jpg)
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৪৮: খেলার ছলে এসেছিনু যেথা ‘হারজিৎ’-র পর্ব রাখিনু সেথা
এ নাটকে কখনও কখনও বৈষ্ণব পদাবলীর পদ ব্যবহার করেছেন গিরিশচন্দ্র “সদাই থাকো রূপ নেহারে”। এই ইঙ্গিত এর উপর মোহিনী প্রতিমা নাটকের সাহানা এবং দেলদার নাটকের দেলদার চরিত্র দুটি গঠিত। এতে গৌড়ীয় বৈষ্ণবগণ প্রবর্তিত সখী ভাব এবং সখী ব্যতীত প্রেম চিত্র সম্পন্ন হয় না। এই গীতিনাট্যে গিরিশচন্দ্র দুটি নতুন সমবেত শিল্পী সৃষ্টি করেছিলেন। তারা হলেন ভাব-সঙ্গিনী এবং স্বরসঙ্গিনী। মনের ভাব ও কথা যেন মূর্তি পরিগ্রহ করে সংগীতের মধ্যে দিয়ে প্রকাশ লাভ করেছে নাটকে। এই ভাব সঙ্গিনী ও স্বরসঙ্গিনীদের কাজ অনেকটা সেইরকম। এই গীতিনাট্যের সংগীত রচনা গিরিশ চন্দ্রের অসামান্য প্রতিভার পরিচয় পাই।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/09/cartoon-1.jpg)
হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-১৫: আর যাহা খায় লোকে স্বদেশে ও বিদেশে / খুঁজে পেতে আনি খেতে-নয় বড় সিধে সে!…
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/07/sarada-maa.jpg)
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-১২: জয়রামবাটিতে প্রত্যাবর্তন
দৃষ্টান্ত স্বরূপ একাধিক গানের দুই একটি করে লাইন উল্লেখ করা যায়: “কেমন ফুল পড়েছে মেদিনী। তারার হাতে তাইতো সেজে দেখতে এলো যামিনী”। আরেকটি গান “অভিমান তার সাজে যে রাখতে জানে মান। তাপে নয় যায় শুকিয়ে ফুল ধরা বাগান।”
গিরিশচন্দ্র সম্পর্কে অমরেন্দ্রনাথ দত্ত বলছেন, “গিরিশচন্দ্রের হৃদয় যেরূপ উদার, সেই রূপ স্নেহপ্রবণ ছিল। বন্ধু পুত্রজ্ঞানে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমাকে অকপট পুত্রস্নেহে প্রতিপালিত করিয়াছিলেন।”—চলবে।
গিরিশচন্দ্র সম্পর্কে অমরেন্দ্রনাথ দত্ত বলছেন, “গিরিশচন্দ্রের হৃদয় যেরূপ উদার, সেই রূপ স্নেহপ্রবণ ছিল। বন্ধু পুত্রজ্ঞানে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমাকে অকপট পুত্রস্নেহে প্রতিপালিত করিয়াছিলেন।”—চলবে।
* নাট্যকার গিরিশচন্দ্রের সন্ধানে (Girish Chandra Ghosh – Actor – Theatre) : ড. শঙ্কর ঘোষ (Shankar Ghosh) বিশিষ্ট অধ্যাপক ও অভিনেতা।