শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে।

ল্যাপটপের জনপ্রিয়তা সব সময় ঊর্ধ্বমুখী। আট থেকে আশি সবার পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে এই গ্যাজেটসটি। এটি খুব কাজেরও। তাই নিত্যনতুন ডিজাইন ও ফিচারে সাজানো ঝকঝকে ল্যাপটপের আপডেট নিয়ে সবারই নজর থাকে। ল্যাপটপের বড়গুণ, এটি একটি চলমান কম্পিউটার। হালকা ওজন। যেকোনও জায়গায় বয়ে নিয়ে যাওয়া যায় কাজের জন্য। এটি আবার বিনোদনেরও অন্যতম একটি মাধ্যম। কাজের পাশাপাশি সিনেমা দেখা, স্কাইপ করা, ইন্টারনেট, ফেসবুক করা, গান শোনা সবই করা যায়। এমনকী, এখন তো ল্যাপটপকে আপনি চাইলে একটি চলমান টিভিতেও বদলে নিতে পারেন। ভারত-পাকিস্তান খেলা, হকি, অলিম্পিক্স সবই দেখতে পারবেন।

এরকম একটি কাজের ও অত্যাধুনিক বৈদ্যুতিন সামগ্রীটি নিয়ে আমাদের অনেক ভুল ধরণা রয়েছে। অনেকে যেমন মনে করেন ল্যাপটপ কেনার পর সারারাত ধরে টানা চার্জ দিতে হয়। এমনও শোনা যায়, ল্যাপটপের মনিটর নামিয়ে রাখলে নাকি শাট-ডাউন হয়ে যায়। এইচ ডি ভিডিও বা সিনেমা দেখার জন্য আলাদা করে গ্রাফিক্সকার্ড লাগানো হয়—এরকম ধারণা বেশ প্রচলিত। ল্যোপটপ নিয়ে এরকম আরও অনেক ভুল ধারণা আছে যেগুলি সঠিক নয়। সেরকমই কয়েকটি ভুল ধারণা নিয়ে এই প্রতিবেদনে রইল অনেক অজানা তথ্য।

নতুন ল্যাপটপ টানা ২৪ ঘণ্টা চার্জ দিতে হবে
এখনকার ল্যাপটপে যে ব্যাটারি ব্যবহার করা হয় তা খুবই উন্নতমানের। আগে ল্যাপটপে Li-on ব্যাটারি ব্যবহার করা। তাই নতুন অবস্থায় টানা আটঘণ্টা বা সারারাত ব্যাটারি চার্জ দিতে হত। এখন আর ল্যাপটপে Li-on ব্যাটারি ব্যবহার করা হয় না। এখন Lithium ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। এই ব্যাটারি নতুন হোক বা পুরানো একশো শতাংশ চার্জ কমপ্লিট হয়ে গেলেই হল। টানা চার্জে বসিয়ে রাখতে হয় না।

কাজ করার সময় চাজিং দেওয়া উচিত নয়
চার্জ দিতে দিতে ল্যাপটপে কাজ করলে কোনও অসুবিধা হয় না। কারণ, ল্যাপটপ যখন চার্জিং অবস্থায় থাকে তখন সরাসরি বিদ্যুৎ থেকে সেটি চলে। আর চার্জ চলাকালীন কাজ করার জন্যই ল্যাপটপ গরম হয়ে যায় এই ধারণা সঠিক নয়। এমনকী, হ্যাংও হয় না।

যেখানে খুশি রেখে কাজ করা যায়
এটা সত্যি যে ল্যাপটকে যেখানে খুশি রেখে বসে বা দাঁড়িয়ে কাজ করা যায়। কিন্তু অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে, এমন জায়গায় ল্যাপটপকে রাখতে হবে যাতে, সঠিক মতো ‘এয়ার পাস’ হয়। যেমন ধরুন বিছানায় কখনও ল্যাপটপ রেখে কাজ করা উচিত নয়। কেন? কারণ, বিছানায় ল্যাপটপ রাখার জন্য নীচ দিয়ে বলতে গেলে একদমই ‘এয়ার পাস’ হয় না। ফলে ল্যাপটপ একটু চলার পর তীব্র গরম হয়ে যায়। হ্যাংও হয় যখন তখন।

এইচডি ভিডিও-র জন্য আলাদা গ্রাফিক্স কার্ড চাই
ল্যাপটপে শুধু প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করা যায় না, এটি একটি অন্যতম বিনোদনের মাধ্যমও। এতে গান শোনা, সিনেমা দেখা, গেম খেলা সবই করা যায়। তাই এসব যাতে ঠিক মতো চলে এবং গুণমানের যাতে ঘটাতি না হয় সেই মতো গ্রাফিক্সকার্ড ইনস্টল করা থাকে। ফলে কিছু ব্যতিক্রমী ক্ষেত্র ছাড়া আলাদা করে গ্রাফিক্স কার্ড ইনস্টল করার কোনও দরকার নেই।

খুব বেশি হলে বছর তিনেক
ল্যাপটপ দীর্ঘস্থায়ী হবে কি না সেটা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে আপনি কীভাবে ব্যবহার করছেন। নিয়মিত যত্ন নিলে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখলে, সার্ভিস করালে, সময় মতো সফটওয়্যার আপডেট করলে ল্যাপটপ অবশ্য দীর্ঘদিন চলবে। আরেকটি বিষয় হল, অপ্রয়োজনীয় কোনও সফটওয়্যার ইনস্টল করা যাবে না। অরিজিনাল সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে। অহেতুক ল্যাপটকে ভারী করে দেওয়া চলবে না। এক সঙ্গে একাধিক সফটওয়্যার না ওপেন করে, যেকটা প্রয়োজন তাতেই কাজ করুন। আর অবশ্যই নির্ভযোগ্য অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন। এতেও স্থায়ীত্ব বাড়বে।

মনিটর নামিয়ে দিলেই শাট-ডাউন
অনেক সময়ই কাজ করা শেষ হয়ে গেল কেউ কেউ ল্যাপটপের মনিটর নামিয়ে রেখে দেন। তাদের ধারণা, এতে ল্যাপটপ শাট-ডাউন হয়ে যাবে। এই ধারণা ঠিক নয়। এতে ল্যাপটপ খারাপ হতে যেতে পারে। কারণ, মনিটর নামিয়ে রাখলেও, শুধু সফটওয়্যার নয়, পুরো সিস্টেম চালু থাকে আপনার অজান্তে।

যেকোনওভাবে শাট-ডাউন করলেই হল
হ্যাঁ এতে ল্যাপটপ বন্ধ হয়ে যায় ঠিকই, কিন্তু সেই সঙ্গে হার্ড ডিস্কেরও চূড়ান্ত ক্ষতি হয়। ল্যাপটপ ঠিক মতো শাট-ডাউনের নিয়ম, কাজ শেষে যে সফটওয়্যারগুলি ওপেন করে কাজ করছিলেন ফাইল সেভ-এর পর সেগুলি ঠিক মতো বন্ধ করতে হবে। তারপর অব-অন সুইচ টিপে নয়, স্টার্ট অপশনে গিয়ে শাট-ডাউন বাটনে ক্লিক করে শাট-ডাউন করুন। এতে হার্ড ডিস্কের ক্ষতি হবে না, দীর্ঘদিন চলবে।

Skip to content