সোমবার ২৫ নভেম্বর, ২০২৪


বেকেনবাওয়ার প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন ১৯৬৬ সালে।

পৃথিবীর দেশে দেশে যাঁরা ফুটবলকে ভালবাসেন, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, পর্তুগাল, উরুগুয়ে, ইতালির পাশাপাশি পশ্চিম জার্মানিকেও এক ডাকে ফুটবলের দেশ হিসেবে জানেন। তাঁদের কাছে ফ্রানজ বেকেনবাওয়ার পশ্চিম জার্মানির একজন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ফুটবলার হিসেবেই পরিগণিত।

অধিনায়ক এবং ফুটবলার হিসেবে তিনি বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন। শুধু কী তাই? পরবর্তী সময়ে একজন সফল ম্যানেজার হিসেবে তিনি দিশা দেখিয়েছেন। ১৯৪৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জার্মানির মিউনিখে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা স্যর বেকেনবাওয়ার ছিলেন ডাক বিভাগের কর্মী। মা অ্যান্টনি দেখভাল করতেন সন্তানদের।
১৯৬০ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে জুনিয়র ব্রায়ান মিউনিখের হয়ে খেলতে নেমে বিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে জীবনের প্রথম গোল করেন লিগ ফুটবলে। বেকেনবাওয়ার প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন ১৯৬৬ সালে। এ যেন তিনি এলেন দেখলেন এবং জয় করলেন। কোয়ার্টার আর সেমিফাইনালে তাঁর একটি করে গোল এখনও অনেকের মনের ফ্রেমে বাঁধানো আছে। সে বছর বিশকাপের পুরো টুর্নামেন্টে মোট ৪টি গোল করে ব্রোঞ্জ বল জিতে নিয়েছিলেন। ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে গেলেও তরুণ ফুটবলার হিসেবে সেরা পুরস্কারটি জিতে নেন।
আরও পড়ুন:

বিশ্বসেরাদের প্রথম গোল, পর্ব-৭: ফুটবলের শিল্পী: বিশ্বের দশজনের একজন

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৫৪: ঠাকুরবাড়িতে দোলে আসত নাচিয়ে, নাচের তালে তালে হত আবিরের আলপনা

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-২৬: যিনি নিরূপমা তিনিই ‘অনুপমা’

১৯৭০ এর বিশ্বকাপে দলকে সেমিফাইনাল অবধি তুলে ইতালির কাছে হেরে যান জার্মানি। পরপর দুই বিশ্বকাপের ব্যর্থতা তাঁকে বিষণ্ণ করে দিয়েছিল। কিন্তু কালীপ্রসন্ন ঘোষের লেখা সেই কবিতাটা মনে আছে?

‘পারিব না এ কথাটি বলিও না আর
কেন পারিব না তাহা ভাব এবার।’
আরও পড়ুন:

অনন্ত এক পথ পরিক্রমা, পর্ব-১০: সাধনা যে সত্যের আশ্রয় পাওয়ার তরে…

হেলদি ডায়েট: রোজ টক দই খাচ্ছেন? খাওয়ার আগে কোন বিষয়গুলি অবশ্যই মাথায় রাখবেন

চলো যাই ঘুরে আসি: অমরনাথের পথে, পর্ব-৪: বরফমোড়া পথে অতি সাবধানে ধীরে এগিয়ে চলি মহাগুনাস পাসের দিকে

বেকেনবাওয়ার এই কবিতা পড়েননি ঠিকই, কিন্তু কবিতার প্রতিটি ছত্র তাঁর জীবনের সঙ্গে মিলে গিয়েছে। পর পর দুই বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর ১৯৭৪ এর বিশ্বকাপে ফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে তাঁর নেতৃত্বে বিশ্বকাপ জিতে নেয় পশ্চিম জার্মানি। সে বছর একই সঙ্গে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ এবং বিশ্বকাপ জিতে এক ঐতিহাসিক রেকর্ড গড়েছিলেন বেকেনবাওয়ারের নেতৃত্বে পশ্চিম জার্মানি। তাঁর ব্যক্তিগত কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন চারবার জার্মান ‘ফুটবলার অফ দ্য ইয়ার’ এবং দু’ বার ‘ইউরোপিয়ান ফুটবলার অফ দ্য ইয়ার’ সম্মাননার জন্য।
আরও পড়ুন:

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-১০: পেটের গ্যাস সারা দেহেই ঘুরে বেড়ায়!

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-১: আর্ষ মহাকাব্যের স্রষ্টাদ্বয়ের কথা

বিধানে বেদ-আয়ুর্বেদ, আর্থারাইটিসের ব্যথায় দীর্ঘ দিন কষ্ট পাচ্ছেন? স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে ভরসা রাখুন আয়ুর্বেদে

আজ পর্যন্ত ইতিহাসের পাতায় দু’জন মানুষ অধিনায়ক এবং কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম একজন ফ্রানজ বেকেনবাওয়ার। অন্য জন কে? সে না হয় অন্য এক কাহিনিতে বলা যাবে।

অশীতিপর এই বিশ্ব ফুটবলার প্রায় অন্ধত্ব নিয়ে নিজের দেশের জনগণের ভালোবাসায় আপাতত অন্যান্য দিক দিয়ে সুস্থ আছেন। তিনি সুস্থ থাকুন। মহাকাল তাঁকে মনে রাখবে।
* বিশ্বসেরাদের প্রথম গোল (Football – Top players first goals): শমীন্দ্র ভৌমিক (Samindra Bhowmick), শিল্পী ও ছড়াকার।

Skip to content