শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


অপ্রতিরোধ্য ফেরেন্তস পুসকাস।

এই কিংবদন্তি ফুটবলারের নাম ফেরেন্তস পুসকাস। হাঙ্গেরির বুদাপেস্ট শহরে ১৯২৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি অদম্য উৎসাহ তাঁকে কিসপেস্ট নামের একটি দল মাত্র ১৬ বছর বয়সেই জুনিয়র সাইড থেকে সিনিয়র সাইডে খেলাতে শুরু করেন। তারপর ১৯৪৮ সালে হাঙ্গেরির সেনাবাহিনী যখন কিসপেস্ট দলটাকে দখল করে নেয়, পুসকাসের তখন জাতীয় দলে অভিষেক হয়। বয়স মাত্র ১৮।
সেনাবাহিনীর দল হওয়ায় তাঁর নাম হয় গ্যালোপিং মেজর। গ্যালোপের অর্থ দ্রুত ছোটা। বল পায়ে তাঁর দ্রুত ছোটা সতীর্থরা তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করতেন আর খেলতে খেলতেই হাঁক মারতেন, ‘সাবাস গ্যালোপ, সাবাস মেজর’।
আরও পড়ুন:

বিশ্বসেরাদের প্রথম গোল, পর্ব-৮: ফ্রানজ বেকেনবাওয়ার: মহাকাল তাঁকে মনে রাখবে

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৫৫: নৌকো উল্টে সত্যেন্দ্রনাথের আইসিএস পড়তে যাওয়া বানচাল হতে বসেছিল

বাঙালির মৎস্যপুরাণ, ,পর্ব-৪৬: প্রাণী জগতের অন্যতম দায়িত্বশীল বাবা হল ড্রাগন ফিশ

১৯৫৩। হাঙ্গেরির জাতীয় দলের সঙ্গে ইংল্যান্ডের খেলা। ব্রিটিশরা ঠিকই করেছিল হাঙ্গেরি দলটাকে মেরে পাট পাট করে দেবে। কিন্তু হায়! কালের চাকা অন্যদিকে ঘুরলো। ৬-৩ গোলে হাঙ্গেরির জাতীয় দল ‘ম্যাজিক্যাল ম্যাগিয়ার্স’ ইংলিশদের হারিয়ে দিল। যার অন্যতম কারিগর পুসকাস। এবং ক্লাব ফুটবলে সে বছর রেকর্ড গোল করে সংবাদের শিরোনামে চলে আসেন। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে চোখ ধাঁধানো প্রথম ২টি গোল তাঁকে বিশ্বখ্যাত করে তোলে।
আরও পড়ুন:

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-৫: কালাদেওর কিস্‌সা

জিলিপি খেতে ভালোবাসেন? তাহলে আর দেরি কেন? ঝটপট বানিয়ে ফেলুন গরম গরম আনারসের জিলিপি

রহস্য রোমাঞ্চের আলাস্কা, পর্ব-১০: ব্যস্ত পৃথিবী ছাড়িয়ে কোথায় যেন চলে এলাম উত্তরমেরুর জনমানবহীন এই জঙ্গলে, যেখানে এখন শুধুই রাত

পরের বছর ১৯৫৪-র বিশ্বকাপে হাঙ্গেরি এক এক করে উরুগুয়ে, ব্রাজিল ও অন্যান্য দলকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে পশ্চিম জার্মানির কাছে ৩-২ গোলে হেরে যায়। এই ম্যাচে পুসকাসের গোলটি স্মরণীয়। সে বছর গোল্ডেন গোল জেতেন ফেরেন্তস পুসকাস।
আরও পড়ুন:

পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-১: শচীন ও মীরা দেব বর্মনের ঘর আলো করে এল এক ‘দেব শিশু’

প্রসঙ্গ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান: উচ্চ রক্তচাপ কিন্তু ডেকে আনে স্ট্রোক-হার্ট অ্যাটাক, অসুখ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী কী করবেন?

হাত বাড়ালেই বনৌষধি: চৈত্রের বন্ধু বেল

১৯৫৬ সালে সোভিয়েত আগ্রাসনের ফলে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। আশ্রয়দাতা দেশ স্পেনের হয়ে ১৯৬২ সালে আরও একবার বিশ্বকাপ খেলেছিলেন দাপটের সঙ্গে। তিনিই একমাত্র ফুটবলার যিনি দুই দেশের জার্সি গায়ে দিয়ে বিশ্বকাপ খেলেছেন। আন্তর্জাতিক ফুটবলে অতীতের হাঙ্গেরি আর আজকের হাঙ্গেরির আশমান-জমিন ফারাক। বহু বছর তারা এই মুহূর্তে বিশ্বকাপে নেই। কিন্তু পুসকাস অজেয়, অমর হয়ে আছেন।

ফিফা এই ফুটবলারকে ভোলেনি বলেই ২০০৯ সাল থেকে সবচাইতে সুন্দর গোলের জন্য চালু করেছে ‘ফিফা পুসকাস অ্যাওয়ার্ড’।

এই আন্তর্জাতিক বিশ্বমানের ফুটবলারের প্রয়াণ হয়, ১৭ নভেম্বর ২০০৬।
* বিশ্বসেরাদের প্রথম গোল (Football – Top players first goals): শমীন্দ্র ভৌমিক (Samindra Bhowmick), শিল্পী ও ছড়াকার।

Skip to content