শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


১৯৮০ সালে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগে রসি তিন বছরের জন্য নির্বাসিত হন।

ইতালির সর্বকালের একজন আক্রমণাত্মক ফুটবলারের নাম পাওলো রসি। তাঁর ভক্তদের কাছে তিনি পাবলিতো এবং তোরেরো নামে বেশি পরিচিত ছিলেন। ১৯৫৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ইতালির প্রাতো শহরে জন্মেছিলেন। পিতা ভিত্তরিয়ো রসি এবং মা আমেলিয়া ইভানা কারাদরি।
আশির দশকে এই বিশ্বকাঁপানো ফুটবলারকে নিয়ে কিছু গল্পও আছে। মাত্র ছ’বছর বয়স থেকেই পড়াশোনা ভুলে বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল নিয়ে মাঠেই পড়ে থাকতেন এই খুদে ফুটবলার। বাড়িতে তা নিয়ে ঝামেলার অন্ত ছিল না। কিন্তু জেদি ছেলের কাছে হার মানলেন তার বাবা-মা।
বিখ্যাত ক্লাব সান্টা লুসিয়ার হয়ে বালক বয়সেই খেলা শুরু করেন। তারপর ১৬ বছর বয়সে তখনকার প্রথম শ্রেণির ক্লাব ক্যাটোলিকার হয়ে খেলার সময় জুভেন্টাস দলের ম্যানেজার ইতালো এলোডি-র দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তারপরে ক্রমান্বয়ে বেশ কিছু ক্লাবে খেলার পর ১৯৭৬-৭৭ বর্ষে লোনে ক্লাব ডিসেঞ্জায় খেলতে শুরু করেন। এখানেই তিনি নিজের দক্ষতা মেলে ধরে পাবলিতো থেকে রসিতে পরিণত হন।
আরও পড়ুন:

বিশ্বসেরাদের প্রথম গোল, পর্ব-৫: বলবয় থেকে বিশ্বসেরা

অনন্ত এক পথ পরিক্রমা, পর্ব-৮: হৃদয়মন্দিরে মন শুদ্ধ করে দেবতা প্রতিষ্ঠা করলে তবেই তো দেবতার পুজো হবে

আগে ছিলেন রাইট ব্যাক। ডিসেঞ্জার কোচ জিওভান বাতিস্তা তাঁকে স্ট্রাইকার পজিশনে খেলাতে শুরু করেন। মাত্র কুড়ি বছর বয়সে ডিসেঞ্জারের হয়ে প্রথম গোল পান। সে বছর ২১টি গোল করে জিতে নেন সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার।

পরের বছর তাঁর দল গ্রুপ ‘এ’ তে উঠে যাওয়ার পর সর্বোচ্চ ২৪টি গোল করে সোনার ভোট জিতে নেন পাওলো রসি। ব্যাস, আর ফিরে তাকাতে হয়নি।
আরও পড়ুন:

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৫২: বইয়ের সব কপি কবির নির্দেশে বাজার থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল

বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-৪৩: সুন্দরবনের সুন্দর মাছ

১৯৭৮ এ বিশ্বকাপে অভিষেক। প্রথম ম্যাচেই ফ্রান্সকে ২-১ গোলে হারিয়ে দেন। এই সময়ে সতীর্থ ফুটবলার ফ্রাঙ্কো কসিও এবং রবার্ত বেতেগার সঙ্গে এক দুর্লভ ত্রয়ীর সমীকরণ আজও বিশ্ববাসীর মনে উজ্জ্বল।

১৯৮০ সালে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগে রসি তিন বছরের জন্য নির্বাসিত হন। যদিও নিজেকে নিষ্পাপ বলেই রসির দাবি ছিল। তবুও এই দুঃসময়ে তাঁর পুরনো দল জুভেন্টাস রসির পাশে দাঁড়িয়ে ১৯৮২-র বিশ্বকাপের আগে রসিকে মাঠে নামান।
আরও পড়ুন:

চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-৭: কুডার ছুঁয়ে শিরপুর

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৮: জ্বরে ভাত খাবেন?

ইতালির কোচ এনজো বেয়ারটেজ সাংবাদিক, সমর্থক, প্রাক্তনীদের কথার তোয়াক্কা না করে তাঁকে মাঠে নামান। এবং ফল পান হাতে-নাতে। একের পর এক জয়ে রসির পারদর্শিতা এতটাই ছিল যে, তিনি অপরিহার্য হয়ে ওঠেন।

সে বছরে ব্রাজিলকে ৩-২, পোল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে পশ্চিম জার্মানিকে ৩-১ হারায় ইতালি। একটি অনবদ্য গোল করলেন রসি। জিতে নেন গোল্ডেন বুট। হয়ে ওঠেন ইতালির সর্বকালের সেরা।

৯ ডিসেম্বর ২০২০ সালে মাত্র ৬৪ বছর বয়সে প্রয়াত হন। রসিকে কোনওদিন ভোলা যাবে না।
* বিশ্বসেরাদের প্রথম গোল (Football – Top players first goals): শমীন্দ্র ভৌমিক (Samindra Bhowmick), শিল্পী ও ছড়াকার।

Skip to content