রবিবার ২৪ নভেম্বর, ২০২৪


১৯৮৬ সালে মেক্সিকোয় বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে পশ্চিম জার্মানিকে ৩-২ গোলে পরাজয়ের পর ট্রফি হাতে মারাদোনা ।

বিশ্ববিখ্যাত ফুটবলার মারাদোনা জন্মেছিলেন ৩০ অক্টোবর ১৯৬০ সালে আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে। পিতা দিয়াগো মারাদোনা চিতরো, মা দালমা সালভাদর ফ্রাঙ্কো দোনিয়া তোতা।
চার বোনের পর মারাদোনার জন্ম। পরে তাঁর আরও দুই ভাই আর্জেন্টিনার পেশাদার ফুটবলে সুনাম অর্জন করেছিলেন। ১২ বছর বয়সে মারাদোনা ছিলেন বুয়েনস আইরেসের ক্লাব ফুটবল দল আর্জেন্টিনোস বোকা জুনিয়র্সের বল বয়। সেই সময় খেলার হাফ টাইমে বল নিয়ে নিখুঁত কসরতে সবাই বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকতো তাঁর ফুটবল জাদুর অসাধারণ দক্ষতার দিকে। ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার রিভলিনো ছিলেন এই সময় তার আদর্শ ফুটবলার।
আরও পড়ুন:

বিশ্বসেরাদের প্রথম গোল, পর্ব-৪: সত্তরের হীরের টুকরো

সোনার বাংলার চিঠি, পর্ব-৯: অমর একুশে গ্রন্থমেলা: বাংলাভাষী লেখকদের আবেগ ও স্বপ্নের বইমেলা

মাত্র ১৬ বছর বয়সে আর্জেন্টিনার বোকা জুনিয়র্সের জুনিয়ারদের হয়ে তায়রাফ দে কর্দবার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামেন। সেই খেলা এতই মুগ্ধতা ছড়িয়েছিল যে, আর্জেন্টিনার ক্লাব ফুটবলে আজও ১০ অক্টোবর ১৯৭৬ ইতিহাস হয়ে আছে। ঠিক তার কয়েকদিন পরেই মারপ্লাতেসের বিরুদ্ধে গোল করার মধ্য দিয়ে মারাদোনা আর্জেন্টিনার প্রিমিয়ার লিগে প্রথম গোলটি করেন।

তিনি ১৯৭৯ এবং ১৯৮০ সালে আর্জেন্টিনার বোকা জুনিয়র্সের হয়ে খেলে মহানগর এবং জাতীয় স্তরে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন। অতঃপর একে একে রিভার প্লেত, বোকা জুনিয়ারর্সে-সহ বিভিন্ন ক্লাব ফুটবল নিয়ে খেলার পর ১৯৮২ তে ২২ বছর বয়সে ফিফা বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে মাঠে নামেন। সে বছর মোট পাঁচটি ম্যাচে হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে দুটি অসাধারণ গোল করেছিলেন।
আরও পড়ুন:

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৫১: বিয়েশাদির ঠাকুরবাড়ি

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৮: মুখে হাসি ফোটানোর দায়িত্বে ‘বসু পরিবার’

১৯৮৬ সালে ফিফা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনা ২-১ গোলে জিতেছিল। দুটির মধ্যে একটি গোল ছিল বিতর্কিত সম্পর্কে স্বয়ং মারাদোনা বলেছিলেন, ‘ভগবানের হাত’। সে বছরই তিনি পেয়েছিলেন গোল্ডেন বল। মেক্সিকোয় অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপে ফাইনালে আর্জেন্টিনা পশ্চিম জার্মানিকে ৩-২ গোলে পরাজিত করে। অধিনায়ক মারাদোনা সেদিন বিশ্বকাপ হাতে সারা মাঠ জুড়ে প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববাসীর কাছে সর্বকালের একজন অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে নিজেকে প্রতিপন্ন করেছিলেন।
আরও পড়ুন:

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৭: যত কাশি, তত কাফ সিরাপ?

চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-৬: প্রকৃতি নিয়ে পর্যটন

অতঃপর ১৯৯০ সালে ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনালে পশ্চিম জার্মানির কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হন মারাদোনার আর্জেন্টিনা। কিন্তু বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে মাইলস্টোন হিসাবে থেকে যান।

বিতর্ক তার পিছু ছাড়েনি। আজীবন বামপন্থী মারাদোনা ছিলেন চে গুয়েভারা প্রেমী। কিউবার সাবেক প্রেসিডেন্ট কাস্ত্রোর বন্ধু। কলকাতায় এসেছিলেন দু’বার। জয় করে নিয়েছিলেন বাঙালির মন, প্রাণ আর আবেগ।

অতীতের নিজসৃষ্ট তীব্র শারীরিক অত্যাচার তিনি আর নিতে পারলেন না। ২৫ নভেম্বর ২০২০ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পাড়ি দিলেন চিরঘুমের দেশে।
*বিশ্বসেরাদের প্রথম গোল (Football – Top players first goals): শমীন্দ্র ভৌমিক (Samindra Bhowmick), শিল্পী ও ছড়াকার।

Skip to content