গত সপ্তাহে লিখেছিলাম মাছের তেলে যে কিছু দীর্ঘশৃঙ্খল এন-থ্রি বা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়, তা নানাভাবে আমাদের স্বাস্থ্যের উপকারে আসে। এই সপ্তাহের একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদনে জানাতে চাই কীভাবে এগুলি কাজ করে আমাদের উপকারে আসে।
আমাদের দৈনন্দিন খাবারের সঙ্গে ভোজ্যতেল কিছুটা তো সকলেই খাই, কারণ রান্নায় এই তেল যেমন, সরষে, সূর্যমুখী, সয়াবীন, পাম, তিল, বাদাম ইত্যাদি ব্যবহার করতেই হয় সব বাড়িতেই। এইসব তেলে প্রচুর লিনোলেয়িক অ্যাসিড (এন-সিক্স গ্রুপের আঠারোটি কার্বনযুক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড) থাকে। এখন এই ফ্যাটি অ্যাসিডটি আমাদের শরীরে দরকারও হয়, অর্থাৎ না পেলে আমাদের চলবেও না। এগুলি মূলত বিভিন্ন আইকোসানয়েডস জাতীয় যৌগ তৈরিতে খুবই কাজের।
আরও পড়ুন:
বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-৬৮: উন্নতমানের প্রোটিনের উৎস বলেই মাছ এত জনপ্রিয়
সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-১০: সুন্দরবনের রক্ষয়িত্রী বনবিবি
সমস্যা হয় তখনই যখন এই আইকোসানয়েকসগুলি প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি তৈরি হয়। আইকোসানয়েকস অতিরিক্ত পরিমাণে তৈরি হলে তা আমাদের ধমনীতে রক্ত চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় ও সমস্যা সৃষ্টি করে। এখানে মাছের তেলে উপস্থিত লিনোলেনিক অ্যাসিড, ইপিএ এবং ডিএইচএ উদ্ভিদ বা ভোজ্যতেলের লিনোলেইক অ্যাসিড থেকে অ্যারাজিডোনিক অ্যাসিড ও পরে আইকোসানয়েডস তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে আইকোসানয়েডসের পরিমাণ বাড়তে দেয় না। ফলে রক্তনালীতে রক্তচলাচল স্বাভাবিক থাকে। একটি ড্রয়িংয়ের সাহায্যে দেখনো হল কীভাবে এই এন-থ্রি বা ডব্লিউ-থ্রি গ্রুপের ফ্যাটি অ্যাসিড (যা মাছে ভালো পরিমাণেই থাকে) সুশৃঙ্খলভাবে ভোজ্যতেলের এন-সিক্স বা ওমেগা-সিক্স থেকে প্রস্তুত হওয়া আইকোসানয়েডসকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।
* বাঙালির মৎস্যপুরাণ (Bangalir Matsya Purana – Fish) : ড. প্রতাপ মুখোপাধ্যায় (Pratap Mukhopadhyay) অবসরপ্রাপ্ত প্রধান মৎস্যবিজ্ঞানী, ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ, ভারত সরকার।