শনিবার ৯ নভেম্বর, ২০২৪


পাঁকাল মাছ। ছবি: সংগৃহীত।

আমাদের দেশীয় মাছগুলির মধ্যে যে কয়েকটি, অতি সুস্বাদু, চর্বি কম, প্রোটিনের গুণমাণে ভালো (মায়োফাইব্রিলার প্রোটিনের অংশ অনেক বেশি), এগুলির মধ্যে এক অন্যতম হল পাঁকাল মাছ। দীর্ঘদিন ধরেই এই মাছটিকে বাজারে নিয়মিত পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ চাহিদা যথেষ্ট পরিমাণে আছে মনে হয়। রুই কাতলা জাতীয় মাছের চাষ করতে গিয়ে যখন পুকুরে পোকা বা অবাঞ্ছিত মাছকে সরিয়ে ফেলা হয় মহুয়া খোল প্রয়োগ করে, সেই সময়ে হয়তো এই মাছগুলিও যদিও দু’চারটে থেকে থাকে পুকুরে, সেগুলিও মরে যায়। ফলে এই মাছগুলিকে, এখন যেটুকু পাওয়া যায়, সবটুকুই প্রকৃতিজাত।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ বিকাশ দপ্তরের অধীনে সিএডিসি বা কম্প্রিহেন্সিভ এরিয়া ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশনের বা সামগ্রিক অঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের তমলুক প্রোজেক্টের আধিকারিক ড. উত্তম লাহার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই মাছটির কৃত্রিম প্রজনন ঘটানো সম্ভব হয়েছে এবং যথেষ্ট পরিমাণে ছোট পাঁকাল পাওয়া যাচ্ছে। এদের শুরুতে আরটিমিয়া এবং কিছু প্রাণীকণা (বিশেষত রোটিফার) খাইয়ে বেশ ভালোভাবে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে, চৌবাচ্চাতে।
আরও পড়ুন:

বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-৮২: কীভাবে একসঙ্গে ক্লোরেলা এবং রোটিফারের চাষ করবেন?

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৫৩: ‘সুরের পরশে’ তুমি-ই যে শুকতারা

গ্রামবাংলায় খুব সহজে বেড়ে ওঠা বিলুপ্ত প্রায় এই মাছটিকে আবার যাতে বাজারে পাওয়া যায় সেই জন্যে এই প্রচেষ্টাটি বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে। আমাদের রাজ্যে তো বটেই সারাদেশে পাঁকাল মাছের প্রজনন এবং শিশু পাঁকাল মাছগুলিকে বাড়িয়ে তোলার কাজ সম্ভবত এটি প্রথম। এই মাছটির প্রোটিনের গুণমাণ এতটাই ভালো, ফ্যাটের পরিমাণ যৎসামান্য বললেই চলে। এই সুস্বাদু মাছটি আবার আমরা পেতে পারবো এবং এদের চাষের প্রসার হবে এটি একটি অতি আশার কথা। ড. উত্তম লাহা এবং সিএডিসিও পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ মন্ত্রালয়, এইজন্য বিশেষ ধন্যবাদার্হ।
* বাঙালির মৎস্যপুরাণ (Bangalir Matsya Purana – Fish) : ড. প্রতাপ মুখোপাধ্যায় (Pratap Mukhopadhyay) অবসরপ্রাপ্ত প্রধান মৎস্যবিজ্ঞানী, ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ, ভারত সরকার।

Skip to content