বুধবার ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪


সময় চলে যায় সময়ের আবর্তে৷ জন্ম নেয় নতুন কিছু সৃষ্টি করার তাগিদ৷ সে সৃষ্টি যে ক্ষেত্রেরই হোক না কেন সেই ক্ষেত্রের ইতিহাস জানা আবশ্যক। কারণ ইতিহাস অতীত হলেও সে বর্তমান ও ভবিষ্যতের প্রেরণকর্তা।

বর্তমানে আমরা কমবেশি সকলেই সচেতন বিজ্ঞানের উন্নতির বিষয়ে। ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে বিজ্ঞান যে আধুনিকতার সাক্ষ বহন করছে তা আমাদের নজর এড়ায়নি। মৎস্য প্রতিপালনের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের যে অবদান সেই অবদানের উপর দাঁড়িয়ে এর চাষের যে উন্নতি তা আমাদের সত্যি ভাবায় এবং তা আমাদের কাছে কাঙ্ক্ষিতও বটে।

কিন্তু প্রশ্ন হতে পারে বিজ্ঞানের এই উন্নতি বা বিজ্ঞানের অবদানের ফলই কি ভারতবর্ষের মত্স্য প্রতিপালনের প্রধান সাক্ষবহন করছে।না,তা বোধহয় নয়।

বারো শতকের প্রথম দিকের একটি সংস্কৃত পাঠ্য যা কল্যাণী চালুক্য রাজা তৃতীয় সোমেশ্বর দ্বারা রচিত। যিনি দক্ষিণ ভারত শাসন করতেন।সেই পাঠ্য মানসোল্লাস বা অভিলাষিতার্থচিন্তামনি নামেও পরিচিত। সেই পাঠ্য অধ্যয়ন করলে দেখা যাবে প্রাচীন কালেও যে মাছ চাষ সুনির্দিষ্ট নিয়মের মধ্য দিয়ে, দক্ষতার সঙ্গে করা হতো তা বোঝা যায়। কোন মাছের কোন খাবার উপযুক্ত এবং কোন মাছ কোন জলে সাবলীল সেই জ্ঞান যে তাঁদের ছিল এই গ্রন্থ তার প্রমান দেয়।মাছের প্রতিপালন এবং মাছ শিকার সহ উপাদেয় বিভিন্ন পদের বিবরণ লিপিবদ্ধ আছে এই গ্রন্থে। আপনারা চাইলেই এই গ্রন্থ নিজেদের স্মার্ট ফোনে দেখতে পারেন,জানতে পারেন মৎস্য প্রতিপালনের পুরা কথা।

তাই এটা বলা আবশ্যক যে আধুনিক এই বর্তমান সময়ে মৎস্য প্রতিপালনের যে প্রগতি সাধিত হয়েছে বিজ্ঞানের উন্নতির জন্য তার মূল স্তম্ভ কিন্তু প্রাচীন মৎস্য প্রতিপালনের সুপন্থা। বিজ্ঞান,প্রযুক্তি,সাহিত্য যেকোনো দিক থেকে দাঁড়িয়েই আমরা যখন অগ্রগতির কথা চিন্তা করি তখন অতীতের সাহায্য আমাদের নিতেই হয়,অতীতের সাহায্যই আমাদের দেখায় অগ্রগতির দিশা।

* বাঙালির মৎস্যপুরাণ (Bangalir Matsya Purana – Fish) : ড. প্রতাপ মুখোপাধ্যায় (Pratap Mukhopadhyay) অবসরপ্রাপ্ত প্রধান মৎস্যবিজ্ঞানী, ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ, ভারত সরকার।
 

অনুলিখন: সুমন্ত দাস


Skip to content