মাছ কি শুধু রসনার তৃপ্তির জন্য বা প্রোটিন-ফ্যাট-ভিটামিন জোগানের জন্যই আমাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। বোধহয় নয়! আজকে আমরা আলোচনা করব মাছের ফেলে দেওয়া অঙ্গও হয়ে উঠতে পারে যে আয়ের মাধ্যম, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতেও আছে যে মাছের কার্যকারিতা, মানবের সৌন্দর্যায়নে ও গৃহসজ্জাতেও আছে যার ভূমিকা সেই বিষয়ক কথা৷
নারীর সৌন্দর্যায়ন ও গৃহসজ্জা
মাছের ফেলে দেওয়া একটি অঙ্গ অর্থাৎ আঁশ হতে পারে যে একটি আয়ের পথ তা দেখিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার ধনিয়াখালী ব্লকের এক মহিলা গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠী মাছের আঁশ দিয়ে নানান রকম শৌখিন জিনিস তৈরি করেন। যে শৌখিন জিনিসগুলি শোভা পায় নারীর শরীরে। মাছের আঁশ দিয়ে তৈরি কানের দুলে বাড়ে তার মাধুর্য।
এছাড়াও গৃহসজ্জার নানান বস্তু দেখা যায় যা তৈরি মাছের আঁশ দিয়ে। মহিলা গোষ্ঠী এগিয়ে এসে মাছের আঁশ নিয়ে ভাবনাচিন্তা করেছেন এবং তাঁদের দ্বারা পরিচালিত এই শিল্প ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় এগুলি বিক্রিও করছেন এবং সাধারণ মানুষ তা ক্রয় করছেন। কলকাতার নামজাদা পাঁচতারা হোটেলে এই মাছের আঁশ দিয়ে বানানো কানের দুল শোভা পেতে দেখা গেছে। পাঁচতারা হোটেল কর্তৃপক্ষ যখন তাঁদের হোটেলে এটি রেখেছেন তখন বলা যেতেই পারে তাঁরা বুঝেছেন এর কদর ও মাধুর্য।
ফিন স্যুপ
মাছের এই পাখনার স্যুপ কিন্তু খুবই উপাদেয়। এতে পৌষ্টিক গুণ যথেষ্ট ভালো। এর মধ্যে এত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ রয়েছে যেগুলি শরীরের পক্ষে অত্যাবশ্যক। এর পাখনাগুলি চিবিয়ে যদি এর নির্যাসটি খাওয়া যায় তা খুবই ভালো হবে।ফিশ স্পা
যে সমস্ত মহিলা এই সমস্যায় ভোগেন এবং এর থেকে বেরোনোর জন্য নানারকম রাসায়নিক ও ওষুধের সাহায্য নিয়ে থাকেন তাঁরা এটি করতে পারেন। কারণ ওগুলি করা ব্যয়সাপেক্ষ এবং শরীরের জন্য সুখকরও নয়। কিন্তু এই ফিশ স্পা হল এমন একটি থেরাপি যেখানে বেশ কিছু ছোট ছোট মাছ একটি পাত্রে ছাড়া থাকে এবং যে অঙ্গে আপনার সমস্যা হয়েছে সেই অঙ্গটি ওই জলপূর্ণ পাত্রে মাত্র এক ঘণ্টা ডুবিয়ে রাখলে মাছগুলি কড়া পড়ে যাওয়া জায়গা বা ফেটে যাওয়া জায়গাগুলির বাড়তি মাংসালো অংশগুলি কুরে কুরে খেয়ে নেয়। যার ফলে আপনার হাতের কনুই বা ফাটা গোড়ালি দেখায় অতীব উজ্জ্বল ও মোলায়েম। এই মাছগুলি হয় মূলত সাইপ্রিনিড ও ক্ল্যারিডি গ্রুপের৷* বাঙালির মৎস্যপুরাণ (Bangalir Matsya Purana – Fish) : ড. প্রতাপ মুখোপাধ্যায় (Pratap Mukhopadhyay) অবসরপ্রাপ্ত প্রধান মৎস্যবিজ্ঞানী, ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ, ভারত সরকার।