শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী। সংগৃহীত।

শরীরকে নীরোগ রাখতে আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বা বডি ইমিউন সিস্টেমের ব্যাপারে বিশেষ যত্ন নিতে হবে। কিন্তু কীভাবে? জানেন কি রোজকার যোগাসনের মাধ্যমেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা যায়? কেমন সেই যোগাসন? জেনে নেওয়া যাক—
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলা দরকার। রোজ অন্তত একরকম ব্রিদিং এক্সারসাইজ করা জরুরি। ব্রিদিং এক্সারসাইজ বিভিন্ন রকম হতে পারে। যেমন চেস্ট এক্সপ্যানশন, নেসাল ব্রিদিং, অ্যাবডমিনাল ব্রিদিং ইত্যাদি। প্রতিটিই সমান উপকারী। ফলে যে কোনও একটা অভ্যাস করলেই চলে। ব্রিদিং এক্সারসাইজের মাধ্যমে শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ে যার ফলে আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বেড়ে যায়।

ব্রিদিং এক্সারসাইজের পাশাপাশি খাওয়াদাওয়ার ওপরেও নজর দেওয়া দরকার। প্রচুর পরিমাণে ফল, প্রোটিনযুক্ত খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া দরকার। রোজকার ডায়েটে অন্তত এক ধরনের ১৫০ গ্রাম আমিষ রাখা দরকার। ফলের মধ্যে মরশুমি ফল সব সময়ই উপকারী। তারও মধ্যে আবার পেয়ারা, মোসাম্বি, কমলালেবু, কলা ইত্যাদি ফল বিশেষ উপকারী।

এছাড়া হাঁটাচলা এবং অ্যাক্টিভ লাইফস্টাইল দরকার। শুয়ে বসে থাকলেই বিপদ। শরীর চালনার মাধ্যমেও ইমিউনিটি বাড়ে। রোজ যদি বাড়ির ভেতরেও কয়েক পাক ঘোরা যায় তাহলে তাই যথেষ্ট। কিন্তু রোজ সময় বার করে হাঁটাচলা করা উচিত। তাই বলে রোজ যে একই সময়ে হাঁটতে হবে এমনও নয়। যেদিন যেমন সময় পাবেন তেমনই হাঁটবেন। জীবনযাপনের নিয়ম ছাড়াও ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য তিনটি যোগাসনের পদ্ধতি হল৷
 

উজ্জয়ী প্রাণায়াম

এই আসন করার ফলে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং তাতে আমাদের শরীরে ইমিউনিটি বাড়ে।

পদ্ধতি: মেরুদণ্ড সোজা রেখে ধ্যানাসনে বসুন। এবার চোখ দুটো বন্ধ করে দুই নাক দিয়ে বুক ভরে দীর্ঘ শ্বাস টানুন। এই পদ্ধতিকে যোগাসনের ভাষায় বলা হয় পূরক। এরপর শ্বাস কিছুক্ষণ ধরে রেখে আস্তে আস্তে, থেমে থেমে তা ছাড়ুন। এই পদ্ধতিকে যোগাসনের ভাষায় বলা হয় রেচক। যতটা সময় ধরে শ্বাস গ্রহণ করবেন চেষ্টা করুন তার দ্বিগুণ সময় ধরে শ্বাস ছাড়ার। যতক্ষণ শ্বাস নেবেন ও ছাড়বেন ততক্ষণ মনে অন্য কোনও চিন্তা আনবেন না। সম্পূর্ণ মনঃসংযোগ করবেন শ্বাস গ্রহণ ও ত্যাগ করায়। এতে মানসিক শান্তি অনুভব করবেন। শ্বাস গ্রহণ ও ত্যাগের পদ্ধতি মিলিয়ে অন্তত তিরিশবার অভ্যাস করুন।

আরও পড়ুন:

কিছুতেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছেন না? সকালে এই সব কাজ করছেন না তো?

পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-২৬: অবশেষে চার হাত এক হল, পঞ্চম-আশা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে শুরু করলেন দ্বিতীয় ইনিংস

 

অর্ধকূর্মাসন

এই আসনে শরীরের নিম্নভাগ শক্ত হয়। এতে পায়ের পেশি ও শিরা উন্নত হয়। পায়ের জোর বাড়ে।

পদ্ধতি: বজ্রাসনে বসুন। হাঁটু দুটো যেন জোড়া থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। এবার হাত দুটো সোজা করে ওপরে তুলে জোড় করুন নমস্কারের ভঙ্গিতে। হাত যেন কানের সঙ্গে ঠেকে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। পেট ও বুকের সঙ্গে ঊরু লেগে থাকবে। নিতম্ব যেন গোড়ালিতে লেগে থাকে। এইভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে দশ থেকে ক্রমশ বাড়িয়ে তিরিশ পর্যন্ত গুনুন। তারপর ওই অবস্থাতেই আবার সোজা হয়ে বসুন। এইভাবে তিনবার পরপর অভ্যাস করুন।

আরও পড়ুন:

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-১১: সুন্দরবনের ব্যাঘ্রদেবতা দক্ষিণ রায়

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৩৪: গলায় মাছের কাঁটা ফুটলে ওষুধ খেলে গলে যায়?

 

উত্থানপদাসন

এই আসনটি হজমশক্তি বাড়ায়, রেক্টাস অ্যাবডমেনের শক্তি বাড়িয়ে তোলে এবং শরীরের ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে।

পদ্ধতি: চিৎ হয়ে শুয়ে হাত দুটো শরীরের দু’পাশে রাখতে হবে। পা দুটো সোজা করে মাটি থেকে ৪৫ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে তুলে ধরতে হবে। স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসে মনে মনে দশ ও ক্রমশ বাড়িয়ে তিরিশ গুনতে হবে। পা মাটিতে নামিয়ে শবাসনে বিশ্রাম নিতে হবে।


Skip to content