বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪


ডেস্কওয়ার্ক করেন এমন মানুষের সংখ্যা প্রচুর। এছাড়া অনেকেই আছেন যাদের ঘাড় বা কোমরের সমস্যা আছে। আবার কেউ কেউ বেশিক্ষণ পা ঝুলিয়ে বসতে পারেন না। এঁদের অনেকক্ষণ বসে লেখালেখির কাজ করতে বেশ কষ্ট হয়। যদি বাড়িতে বসেই কাজ করার সুযোগ থাকে তা হলে উপুড় হয়ে শুয়ে কনুইয়ের ওপর ভর দিয়ে লেখালেখি করলে কষ্ট লাঘব হয়। এছাড়া যাদের ত্বক খুব শুষ্ক, শীতকালে সেই শুষ্কতা আরও বাড়ে। সব মিলিয়ে কনুইয়ের ওপর বেশ চাপ পড়ে। দীর্ঘদিন কাজ করার পর আস্তে আস্তে কনুইয়ের চামড়া মোটা ও খসখসে হয়ে যায়। যাদের শুষ্ক ত্বক, শীতের শেষের দিকে সেটা বাড়তে বাড়তে এমন অবস্থায় পৌঁছায় যে জ্বালা ব্যথা তো বটেই সঙ্গে ছাল উঠতে শুরু করে। এমনকি ইনফেকশনও হয়ে যায়। সাধারণত এমন অবস্থায় হ্যান্ডলোশন, বডি ময়েশ্চারাইজার বা ক্রিম নিয়মিত লাগিয়ে সমাধান করার চেষ্টা করা হয়। যাদের অল্পসল্প সমস্যা থাকে তাদের খানিকটা উপকারও হয়। কিন্তু অবস্থাটা শেষ পর্যায় (ইনফেকশন) পৌঁছাতে দেওয়ার অনেক আগে থেকেই এর ব্যবস্থা না নিলে ফলাফল কতদূর যেতে পারে যাঁরা ভুক্তভোগী তাঁরা খুব ভালো ভাবেই জানেন। ইনফেকশন হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হয়। নিজের বুদ্ধিতে এটা সেটা যত করা হবে সমস্যার গভীরতা ততই বাড়বে।

পরিচর্যা
যে কোনও তেল যেমন সরষে, নারকেল, তিল, আমন্ড, সানফ্লাওয়ার ইত্যাদি এক চায়ের চামচ নিয়ে কনুইতে লাগিয়ে ক্লক ও অ্যান্টি-ক্লক মুভমেন্টে চাপ না দিয়ে আস্তে আস্তে ১০ মিনিট মাসাজ করে কমপক্ষে এক ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। যদি সম্ভব হয় আরও বেশিক্ষণ অর্থাৎ যতটা সময় বাড়ানো যায় ততটাই উপকার পাওয়া যাবে।
একটা পাত্রে চৌকো করে কাটা মোটা মোটা তুলোর টুকরো ৪/৫ টা পরপর রেখে ৪ চামচ শ্যাম্পু ও ৪ চামচ তেল ভাল করে ফেটিয়ে ইমালোশন তৈরি করে তুলোগুলো ভিজিয়ে দিতে হবে।
একটা ছোটো গামছার মাঝখানে তুলোগুলো রেখে গামছার চারদিকটা বেঁধে একটা পুঁটলি মতো তৈরি করতে হবে।
এবার কনুইতে একইরকম মুভমেন্টে অন্তত ৮-১০ মিনিট মাসাজ করতে হবে।
ম্যাসাজ করার সময় কনুইটা এমনভাবে পাত্রের ওপর রাখতে হবে যাতে কাজ করাকালীন টপটপ করে ইমালোশন পাত্রের ওপরই পড়ে।
মাসাজ করার সময় হাতটা ভাঁজ করে শক্ত করে রাখতে হবে যাতে কনুইয়ের হাড়ের (ক্ষত জায়গা) অংশটা বেড়িয়ে আসে ও ত্বক টানটান থাকে। কারণ কনুই এর নীচের ত্বক একটু কোঁচকানোই হয়ে থাকে। এতে প্রতিটা জায়গায় ইমালোশন পৌঁছাবে। কোনওভাবেই চাপ দিয়ে বা ঘষে ঘষে মাসাজ করা যাবে না এতে উল্টো বিপত্তি হতে পারে। এক্ষেত্রে গামছা স্ক্রাবারের কাজ করবে তাই এই সাবধানতা।
এরপর ‘রিপেয়ার পাউডার’ (এটা বিশেষ ধরনের প্রোডাক্ট যা এই ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় ব্যবহার করা হয়) ২ চামচ গোলাপজলে মিশিয়ে পেস্টের মতো করে লাগিয়ে ১২ থেকে ১৫ মিনিট একই মুভমেন্টে সামান্য ঘষে ঘষে ভাল করে ধুয়ে নিয়ে পুরু করে ক্রিম লাগিয়ে দিতে হবে।
প্রতিদিন যে কোনও সময়ে করা যেতে পারে। সময়ের অভাব থাকলে একদিন অন্তর এটা করতেই হবে।
এভাবে ২৫-২৬ বার করা দরকার হয়। যদিও কত বার করতে হবে তা নির্ভর করে সমস্যার গভীরতার ওপর। ক্ষতিগ্রগ্রস্ত জায়গাটা ঠিক হয়ে গেলে সপ্তাহে একদিন করে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা দরকার।

সাবধানতা
যখনই এরকম সমস্যা দেখা দেবে অর্থাৎ ত্বক অল্প অল্প খসখসে হতে শুরু করবে তখন থেকেই যত্ন শুরু করলে সমস্যা জটিল হবে না।
সমস্যা না থাকলেও কনুইয়ের ত্বককে মসৃণ রাখার জন্য সকলেই সপ্তাহে অন্তত একবার এই পদ্ধতিতে যত্ন করতে পারেন।
ম্যানিকিওর যেমন হাত ও নখ সুন্দর রাখার জন্য করা হয় ঠিক তেমনই কনুই এর রক্ষনাবেক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। কনুই যেহেতু পেছনে থাকে তাই চোখ না পড়ায় এটা বড় অবহেলিত। কিন্তু মনে রাখতেই হবে পেছন থেকে কনুইয়ের ভালো খারাপ সবারই চোখে পড়ে। তাই সর্বদা কনুইয়ের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।

ছবি : লেখিকা

লেখিকা শাকম্ভরী বডি অ্যান্ড বিউটি ক্লিনিক-এর প্রধান, যোগাযোগ : ঠিকানা: ২০৩, এপিসি রোড, শ্যামবাজার ফাইভ পয়েন্ট, কলকাতা-৪, মোবাইল: ৯১৬৩৪-১৪৪৪৩, হোয়াটসঅ্যাপ: ৭০০৩৮৯৩৮৮৩

Skip to content