মঙ্গলবার ৯ জুলাই, ২০২৪


পায়ের গোড়ালিতে এভাবে ম্যাসাজ করতে হবে।

শীতকালে অনেকেরই পা ফাটে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এত বেশি পা ফাটে যে শুকনো চামড়াগুলো খোঁচা খোঁচা হয়ে উঠে আসে। প্রচণ্ড ব্যথা হয়। এছাড়াও পা ছড়ে যায়, শাড়ি বা গায়ের চাপাতে আটকায়। এক্ষেত্রে অনেকে নখ দিয়ে ওই চামড়া ছিঁড়ে দেন। এটা খুবই বিপজ্জনক। কারণ, রক্ত বের হয়ে ইনফেকশনের সম্ভাবনা থাকে। এরকম যাঁদের হয় তাঁরা অবশ্যই অভিজ্ঞ ও দক্ষ পেডিকিওরিস্টের পরামর্শ নিয়ে ‘ক্র্যাক হিল পেডিকিওর’ ট্রিটমেন্ট করাবেন। সাধারণত দু’-তিনটি ধাপে এটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এর সঙ্গে নিয়মিত ‘অ্যান্টি ক্র্যাক হিল’ ক্রিম লাগাতে হবে, না হলে আবার আগের অবস্থায় চলে যাবে।

যাঁরা ‘ক্লিনিক্যাল ট্রিটমেন্ট’ করাতে পারছেন না, তাঁরা গরম জলে সাত থেকে দশ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখার পর খুব ভালো করে মুছে নিতে হবে। বিশেষ করে আঙ্গুলের ফাঁকগুলো। এটা সব সময় সবারই করা দরকার, না হলে ‘ফাংগাল ইনফেকশন’-এর সম্ভাবনা থাকে। হাতের তালুর ক্ষেত্রে যে ক্রিমের কথা বলা হয়েছে, তা গোড়ালিতে মাখিয়ে ‘ক্লক’ ও ‘অ্যান্টিক্লক’ পদ্ধতিতে ম্যাসাজ করতে হবে। এক একটা পা চার-পাঁচ মিনিট ধরে ম্যাসাজ করতে হবে, যাতে ওই ক্রিম ত্বকের মধ্যে ভালো করে মিশে যায়। এরপর পায়ের দু’পাশ ও আঙ্গুলের প্রতিটি ফাঁকে ঘষে ঘষে ক্রিম লাগাতে হবে, যাতে ফাটা অংশগুলোর ভিতর ক্রিম পৌঁছাতে পারে। কমপক্ষে তিন থেকে চার মিনিট ম্যাসাজ করলে ভালো।

আর একটা বিষয় হল, গরম সহ্য করা যায় এমন জলে ‘বডি শ্যাম্পু’ বা চুলের শ্যাম্পু দিয়ে সাবান জল তৈরি করে তাতে পা ডুবিয়ে অন্তত ১৫ মিনিট রাখার পর কোমল ‘পিউমিস স্টোন’ (খুব খড়খড়ে হলে সমস্যা হতে পারে) দিয়ে গোড়ালি ও পায়ের পুরো অংশটা হালকা হাতে ঘষতে হবে, যাতে মৃত কোষ বেরিয়ে যায়। আঙ্গুলের ফাঁকগুলোর জন্য সফট নেল ব্রাশ ব্যবহার করা উচিত। এরপর পা ভালো করে ধুতে হবে। এবার ‘কিউটিক্যাল সফটনার’ বা ক্রিম প্রতিটি আঙ্গুলের নখের উপর লাগিয়ে দশ মিনিট অপেক্ষা করার পর ‘কিউটিক্যাল পুশার’ দিয়ে আস্তে আস্তে নখের পেছন দিকে যেখান থেকে নখের শুরু অর্থাৎ আঙ্গুলের চামড়ার দিকে ঠেলতে হবে। সফটনার ব্যবহার করলে তা তুলোতে করে বার বার লাগাতে হবে, যাতে ‘কিউটিক্যাল’ ভিজে নরম থাকে। ক্রিম ব্যবহার করলে কাজটা একটু সহজ হয়ে যায়। প্রথম দশ থেকে বারো দিন করার পর পায়ের অবস্থা যদি ভালো হয়, তবে একদিন অন্তর করা যায়। ‘হটবাথ’ বন্ধ হলেও ক্রিমের ব্যবহার প্রতিদিন করতে হবে। সকালে স্নানের পর, সন্ধ্যে বা রাতে শোবার আগে যে কোন সময়ে এটা করা যেতে পারে। কিন্তু পায়ে জল লাগানো যাবে না। তাতে ক্রিম ধুয়ে যাবে। তাই টয়লেটে যাবার সময় পা ঢাকা জুতো পরতে হবে। রাতে শোবার আগে ক্রিম ব্যবহার করলে এই ঝামেলা এড়ানো যায়। যাঁদের বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া সম্ভব নয়, তাঁরা বাড়িতে এই পদ্ধতিতে যত্ন করলে অনেক উপকার পাবেন। এছাড়াও প্রত্যেকেরই নিয়ম করে পায়ে ‘ফুট ক্রিম’ (যদিও সব থেকে উপকার পাওয়া যায় ‘বডি বাটার’ থেকে) ব্যবহার করা দরকার। এটা পাকে নরম, মসৃণ ও সমস্যামুক্ত রাখে।

ছবি: লেখিকা

লেখিকা শাকম্ভরী বডি অ্যান্ড বিউটি ক্লিনিক-এর প্রধান, যোগাযোগ : ঠিকানা: ২০৩, এপিসি রোড, শ্যামবাজার ফাইভ পয়েন্ট, কলকাতা-৪, মোবাইল: ৯১৬৩৪-১৪৪৪৩, হোয়াটসঅ্যাপ: ৭০০৩৮৯৩৮৮৩

Skip to content