বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী

এখন শরীর সতেজ ও তরতাজা রাখতে আমরা প্রায়শই ডায়াটিশিয়ানদের পরামর্শ নিয়ে থাকি। তাঁরা ওজন কমানোর জন্য প্রথমেই ‘লো কার্ব’ ডায়েট করার পরামর্শ দেন। কিন্তু এই ‘লো কার্ব’ ডায়েট আসলে ঠিক কী, অধিকাংশই তা ঠিক করে বলে দেন না। ‘লো কার্ব’ মানে আসলে খাদ্যতালিকা থেকে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম করা। যে খাবারে কার্বোহাইড্রেট বেশি— যেমন রুটি, ভাত, পরোটা, পাঁউরুটি, পাস্তা বা যে কোনও ময়দার খাবারদাবার। এই সব খাবার পরিমাণে কম খেতে হবে। কিন্তু এই সব খাবারের কথা শুনলেই আম বাঙালির মাথায় হাত। এত কিছু না খেলে তাহলে খাবোটা কী?

কিন্তু জানলে অবাক হবেন, এই ‘লো কার্ব’ ডায়েট মেনে চলা কিন্তু খুব একটা কঠিন নয়। তবে কী খাবেন, কী খাবেন না, সেই ধারণাটা একটু পরিষ্কার হয়ে গেলে আরও সহজে রোজকার মেনু সাজানো সম্ভব। বাজার থেকে সেই মতো শাক-সব্জি-ফলও কিনে ফেলা যাবে। একটু আগে থেকে যদি পরিকল্পনা করে রাখতে পারেন যে সারা সপ্তাহে কী খাবেন, তা হলে খুব একটা সমস্যা হবে না। তবে কার্ব কম খাচ্ছেন মানে যে খিদে বেশি পাবে এমন নয়। অনেক ধরনের ডায়েট রয়েছে যেখানে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম করলেও পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে। জেনে নিন কী কী খাওয়া যেতে পারে।
 

কী কী খাবার খাওয়া যেতে পারে

 

মাংস

চিকেন, মটন, ল্যাম্ব, পর্ক, ডাক সবই খেতে পারেন। যে কোনও ধরনের প্রোটিন খাওয়া যায়। তবে রেড মিট বেশি না খাওয়াই ভালো। তখন স্বাস্থ্যের অন্য সমস্যা হতে পারে। তার বদলে চিকেনের মতো লিন প্রোটিন বেশি খান।
 

মাছ ও অন্য সামুদ্রিক খাবার

মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। তাই প্রোটিনের পাশাপাশি মাছে অন্য পুষ্টিগুণও পাবেন। মাছে ভাতে বাঙালি। তাই রোজকার খাবারে মাছ খাওয়ার অভ্যাস এমনিই বাঙালির রয়েছে। শুধু মাছের ঝোলে খুব বেশি আলু দেবেন না। আলুর মতো সব্জি কম খাওয়াই ভালো। মাছের পাশাপাশি চিংড়ি, কাঁকড়া স্কুয়িডের মতো অন্য সামুদ্রিক খাবারও খেয়ে দেখতে পারেন।
 

ডিম

ওমলেট, স্ক্র্যাম্বল্ড, পোচ— যে ভাবে ইচ্ছা ডিম খেতে পারেন। কুসুম বাদ দেওয়ারও প্রয়োজন নেই। তবে ভালো করে সিদ্ধ করে ডিম খাওয়া সবচেয়ে উপকারি। এখন বেশির ভাগ চিকিৎসক রোজ একটি করে ডিম সিদ্ধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
 

শাক-সব্জি

মাটির উপরে যে সব্জি হয়, সেগুলি অনায়াসে খেতে পারেন। টোম্যাটো, সবুজ শাক, শসা, মাশরুম, ঝিঙে, করলা, বেগুন, লাউ, কপি, কুমড়ো— সব রকম সব্জিই খেতে পারেন সহজেই।
 

দুগ্ধজাত খাবার

দই রোজ খেতে পারেন। দুগ্ধজাত খাবারে কোনও রকম হজমের সমস্যা না হলে আপনি মাখন, দুধ, চিজ, ঘি— সবই খেতে পারেন।
 

ফলমূল

যে ফলে কার্বোহাইড্রেট কম তেমন ফল সহজেই খেতে পারেন। যেমন আপেল, কমলালেবু, জাম, স্ট্রবেরি, পেয়ারা, পেঁপে ইত্যাদি। কলার জাতীয় ফল একটু এড়িয়ে চলাই ভালো। তবে মনে রাখবেন, কলায় অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে কার্ব ছাড়াও। তাই মাঝে মাঝে আপনি স্মুদি খেতে পারেন।
 

বাদাম-বীজ

নানা ধরনের বাদম, ড্রাই ফ্রুট, বীজ রোজকার খাদ্যতালিকায় রাখা স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারি। কাজু, কাঠবাদাম, চিনে বাদামের মতো বাদামে প্রচুর পরিমাণে ‘গুড’ ফ্যাট রয়েছে।
 

তেল

নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলের রান্না করলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাবেন। তবে খাঁটি সরষের তেল দিয়ে রান্না করলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো হয়।

আরও পড়ুন:

শম্ভু, শম্ভু, শিব মহাদেব শম্ভু, খুদার ইবাদত যাঁর গলায় তাঁর আর কাকে ভয়?

গৃহিণীদের মধ্যে বইয়ের নেশা বাড়াতে কাঁধে ঝোলা নিয়ে ঘুরে বেড়ান রাধা, ‘চলমান পাঠাগার’ তাঁর পরিচয়!

 

কী কী খাবার এড়িয়ে চলবেন

 

চিনি

আইসক্রিম, চকোলেট, ক্যান্ডি, প্যাকেটের সিরিয়াল, ডোনাট, কেক, পেস্ট্রি সব খাদ্যতালিকা থেকে একেবারে বাদ দিয়ে দিন। যে কোনও খাবারের প্যাকেটে যদি পিছনে লেখা থাকে বাড়তি চিনি রয়েছে, সেগুলি দেখে সতর্কতার সাথেই কিনবেন না।
 

ফলমুল

আম, আনারস এবং কলার মতো ফল যাতে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট আর চিনি রয়েছে, সেগুলি খাবেন না।
 

সব্জি

মাটির নীচে যে সব্জি হয়, তাতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি হয়। তাই আলু বা ওল জাতীয় সব্জি কম খাবেন না।
 

স্টার্চ

ময়দার কোনও রকম খাবার খাওয়া যাবে না। পাস্তা, নুডল, সিরিয়াল, বানরুটির মতো খাবার চলবে না।
 

ট্রান্স ফ্যাট

তেলেভাজা, ভেজিটেবিল অয়েল, ফাস্ট ফুড, কিছু পপকর্ন খাওয়া যাবে না।
 

প্রসেসড ফুড

লো ফ্যাট লেখা যে কোনও খাবার জানবেন প্রচুর প্রসেস করা হয়েছে। তাতে কার্বোহাইড্রেট এবং চিনির পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। তাই এগুলি খাবেন না।


Skip to content