অলঙ্করণ: লেখক।
মানুষের জগতে যত অদ্ভুতুড়ে ঘটনা ঘটে, এই যেমন হেড অফিসের বড়বাবুর গোঁফ চুরি যায় অথবা প্রতিবেশীর সাদা নধর পাঁঠা চুরি করে তার গায়ে কালো রং করে দিব্যি তার ভোজে প্রতিবেশীকেই নেমন্তন্ন করা যায় অথবা সামনে গাজর ঝুলিয়ে খুড়োর কলের পিছনে সোত্সাহে ছোটা যায় কিংবা আঙুর ক্ষেতে ঢুকে আঙুর না পেলে বৈরাগ্য জন্মায়… ইত্যাদি সচেতন-অচেতন ক্যাবলামির পাশাপাশি, অদ্ভুতুড়ের পাশাপাশি ভূতুড়ে ক্যাবলামি হয়?
প্যালার সঙ্গে বল্টুদার দেখা হলে “বলটুদা আমায় জিজ্ঞেস করলে, আচ্ছা প্যালা, ভূত সম্বন্ধে তোর আইডিয়া কী”?
মুশকিল হল, এটা নিয়ে অনেক আইডিয়া বা থিওরি আছে বটে, তারিণীখুড়োই যেমন ভূত থেকে আইনস্টাইন স-ব মানেন বলেই ঘোষণা করেন, তবে ভৌতিক গল্পের হ্যাপি এন্ডিংয়ে দেখা যায় ভূত সত্য, আর বৈজ্ঞানিক গল্পের হ্যাপি এন্ডিংয়ে দেখা যায় ভূত নয়, গোয়েন্দা সত্য। সত্য যাই হোক না কেন, ভীতু যারা তারা দুরকম গল্পেই নাচার হয়। এই যেমন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি গল্পে (মেডাল) যাতায়াতের পথে একটি মরা গাছ দেখে কিছু একটা দেখার মতো ভয়ের উদ্রেকের উপস্থাপনা।
এই যে ভৌতিক রহস্যময়তা, সেখানে কেন্দ্রীয় চরিত্রটির যে আচরণ, তা উচ্চকিত বা অনুচ্চকিত হলেও শেষে তা যে ভুল ছিল, অতয়েব শুধু শুধু ভয় পাওয়াটায় একরকম ক্যাবলামিই বুঝি আছে, মনে হতে থাকে। আমরা পুরোদস্তুর হাড়হিম প্রেতযোনি অথবা রক্তপিশাচের গল্প বলছি না, বলছি তেমনতর গল্প যেখানে ভয় আপাত মনস্তাত্ত্বিক, ওই ‘কোনও কিছু’ র অস্তিত্ব সেখানে প্রচ্ছন্ন থেকে গিয়ে ভয় এবং ভয়-ই প্রধান হয়ে ওঠে। এই ভয় শেষমেশ নিষ্কারণ মনে হতে থাকে এবং বক্তারা শর্তাবলী প্রযোজ্যের সুরে জনান্তিকে বলতে থাকেন, এই গল্প কেউ বিশ্বাস করবে না, পাগল বা রোগগ্রস্ত ভাববে, তাই কখনওই কাউকে বলা হয়নি, তোমাদের-ই বললাম, তোমরাই বিচার করো।
এই যে হঠাৎ করে অপাঙক্তেয় হয়ে ওঠার মতো অস্বস্তি, তার পিছনে যে ভাব কাজ করে তা হল যাকে বলে গিয়ে ‘পলিটিক্যালি কারেক্ট’ থাকা। আমি এমন ভাবি, এমন জানি, এমন বুঝি অথচ তুমি এমন ভাবো না, বোঝো না বলেই আমি তা বলতে সঙ্কোচবোধ করি, কারণ, আমার ভাবনার মূলের অজ্ঞতা, ভ্রান্তি প্রকাশ হলে আমার বিড়ম্বনা এমনকি আমার ভাবনা বা ভয়, সিদ্ধান্ত বা অস্বস্তি অসার না হলেও অনেকের মাঝে একা হয়ে যাওয়ার একটা লজ্জা, ভয়, আতঙ্ক এবং ক্যাবলামি কাজ করতে থাকে।
প্যালার সঙ্গে বল্টুদার দেখা হলে “বলটুদা আমায় জিজ্ঞেস করলে, আচ্ছা প্যালা, ভূত সম্বন্ধে তোর আইডিয়া কী”?
মুশকিল হল, এটা নিয়ে অনেক আইডিয়া বা থিওরি আছে বটে, তারিণীখুড়োই যেমন ভূত থেকে আইনস্টাইন স-ব মানেন বলেই ঘোষণা করেন, তবে ভৌতিক গল্পের হ্যাপি এন্ডিংয়ে দেখা যায় ভূত সত্য, আর বৈজ্ঞানিক গল্পের হ্যাপি এন্ডিংয়ে দেখা যায় ভূত নয়, গোয়েন্দা সত্য। সত্য যাই হোক না কেন, ভীতু যারা তারা দুরকম গল্পেই নাচার হয়। এই যেমন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি গল্পে (মেডাল) যাতায়াতের পথে একটি মরা গাছ দেখে কিছু একটা দেখার মতো ভয়ের উদ্রেকের উপস্থাপনা।
এই যে ভৌতিক রহস্যময়তা, সেখানে কেন্দ্রীয় চরিত্রটির যে আচরণ, তা উচ্চকিত বা অনুচ্চকিত হলেও শেষে তা যে ভুল ছিল, অতয়েব শুধু শুধু ভয় পাওয়াটায় একরকম ক্যাবলামিই বুঝি আছে, মনে হতে থাকে। আমরা পুরোদস্তুর হাড়হিম প্রেতযোনি অথবা রক্তপিশাচের গল্প বলছি না, বলছি তেমনতর গল্প যেখানে ভয় আপাত মনস্তাত্ত্বিক, ওই ‘কোনও কিছু’ র অস্তিত্ব সেখানে প্রচ্ছন্ন থেকে গিয়ে ভয় এবং ভয়-ই প্রধান হয়ে ওঠে। এই ভয় শেষমেশ নিষ্কারণ মনে হতে থাকে এবং বক্তারা শর্তাবলী প্রযোজ্যের সুরে জনান্তিকে বলতে থাকেন, এই গল্প কেউ বিশ্বাস করবে না, পাগল বা রোগগ্রস্ত ভাববে, তাই কখনওই কাউকে বলা হয়নি, তোমাদের-ই বললাম, তোমরাই বিচার করো।
এই যে হঠাৎ করে অপাঙক্তেয় হয়ে ওঠার মতো অস্বস্তি, তার পিছনে যে ভাব কাজ করে তা হল যাকে বলে গিয়ে ‘পলিটিক্যালি কারেক্ট’ থাকা। আমি এমন ভাবি, এমন জানি, এমন বুঝি অথচ তুমি এমন ভাবো না, বোঝো না বলেই আমি তা বলতে সঙ্কোচবোধ করি, কারণ, আমার ভাবনার মূলের অজ্ঞতা, ভ্রান্তি প্রকাশ হলে আমার বিড়ম্বনা এমনকি আমার ভাবনা বা ভয়, সিদ্ধান্ত বা অস্বস্তি অসার না হলেও অনেকের মাঝে একা হয়ে যাওয়ার একটা লজ্জা, ভয়, আতঙ্ক এবং ক্যাবলামি কাজ করতে থাকে।
যারা এগিয়ে আসে অথবা এগিয়ে আসে না, পরিস্থিতির সাপেক্ষে সকলেই নিমেষে এই কৈবল্য লাভ করতে পারে। তারা ছোট হয়ে যায় দলে। ছোট হয় নিজের কাছেও বুঝি খানিক।
ক্যাবলাদের এই ছোটবেলা আমার-আপনার, আমাদের-আপনাদের জীবনে কি উঁকি দিয়ে যায়?
যদি এই ক্যাবলামি আর শৈশব একসঙ্গে মেশে, তবে আমবাগানে ভূতের দেখা মেলে। কাহিনি লীলা মজুমদারের। একটি ছেলে সন্ধ্যাবেলায় ভালোরকম ভোজের নেমন্তন্ন পায়। সারাদিন প্রস্তুতি চলতে থাকে। জামাকাপড় ধোপদুরস্ত করে জুতো পালিশ করে মাথায় পাগড়ি বেঁধে যখন সে বেরোয় তখন সন্ধ্যা সমাসন্ন। বদনাম থাকা আমবাগানটা আলো থাকতে থাকতে পার হওয়া উচিত ছিল বলে তখন মনে হতে থাকে। তারপর ঘোর সন্ধ্যাবেলায় বড় বড় আমগাছের ফাঁকে যেন কীসের লম্বা লম্বা পা ফেলে চলাচল দেখতে থাকে সে। ভয় চেপে ধরে। অতঃপর…
নিমন্ত্রণ খাওয়া আর হয় না।
বল্টুদা প্যালারামকে এমন এটা গল্প শোনাতে থাকে।
“কেউ বলে, খামকা একটা কাটামুণ্ডু ঘ্যাঁচাৎ করে কামড়াতে এল, কেউ বলে সাদা কাপড় পরে রাত দুপুরে হাতের ওপর হেঁটে যাচ্ছে, কেউ বলে আমগাছে এক পা আর জামগাছে আর এক পা দিয়ে—
বলটুদা বললে, বাজে বকিসনি। ধর, এই নিমগাছটায় একটা ভূত আছে—
এই দিন-দুপুরেই দারুণ চমকে আমি একবার নিমগাছটার দিকে চেয়ে দেখলুম”।
মাত্স্যন্যায়ের তত্ত্ব অনুসারেই বল্টুদা প্যালাকে জানায়—
“কিন্তু মনে কর, ভূত যদি তোকেই ধরে? মানে, তোকেই ধরতে পছন্দ করে যদি?
আমি দস্তুরমতো ঘাবড়ে গিয়ে বললুম, বলটুদা, এবার আমি বাড়ি চলে যাব”।
এরপর বল্টুদা জানায় তার কাহিনী সত্যঘটনা। টেনিদার মতো ভুজুং ভাজুং নয়। সে জানায়—
“আমার বড়দির বড় মেয়ে-দিল্লিতে জন্মেছে বলে যার নাম রাজধানী, ছোটবেলায় যাকে আমি ভুল করে ‘দাদখানি’ বলে ডাকতুম, আর বড়দি যাকে বলত ‘ধানী লঙ্কা’, তার বিয়ে হয়েছে এক কোলিয়ারির ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে। এবার পুজোর ছুটিতে আমি সেখানে বেড়াতে গিয়েছিলুম”।
ফেরার পথে আকণ্ঠ চর্ব্য-চোষ্য খেয়ে সে ট্রেনে উঠে পড়ে। এবং ঘুমিয়ে পড়ে।
“রাত তখন কত হয়েছে জানি না, হঠাৎ আমার চটকা ভাঙল। ভীষণ মশা কামড়াচ্ছে আর কী রকম একটা অদ্ভুত গন্ধ নাকে লাগছে। চমকে চেয়ে দেখি, গাড়িটা দাঁড়িয়ে রয়েছে। কামরায় নিতল অন্ধকার–গোটা চারেক আলো জ্বলছিল, পাখা ঘুরছিল, কিন্তু এখন আলো নেই, পাখাও চলছে না।”
ক্যাবলাদের এই ছোটবেলা আমার-আপনার, আমাদের-আপনাদের জীবনে কি উঁকি দিয়ে যায়?
যদি এই ক্যাবলামি আর শৈশব একসঙ্গে মেশে, তবে আমবাগানে ভূতের দেখা মেলে। কাহিনি লীলা মজুমদারের। একটি ছেলে সন্ধ্যাবেলায় ভালোরকম ভোজের নেমন্তন্ন পায়। সারাদিন প্রস্তুতি চলতে থাকে। জামাকাপড় ধোপদুরস্ত করে জুতো পালিশ করে মাথায় পাগড়ি বেঁধে যখন সে বেরোয় তখন সন্ধ্যা সমাসন্ন। বদনাম থাকা আমবাগানটা আলো থাকতে থাকতে পার হওয়া উচিত ছিল বলে তখন মনে হতে থাকে। তারপর ঘোর সন্ধ্যাবেলায় বড় বড় আমগাছের ফাঁকে যেন কীসের লম্বা লম্বা পা ফেলে চলাচল দেখতে থাকে সে। ভয় চেপে ধরে। অতঃপর…
নিমন্ত্রণ খাওয়া আর হয় না।
বল্টুদা প্যালারামকে এমন এটা গল্প শোনাতে থাকে।
“কেউ বলে, খামকা একটা কাটামুণ্ডু ঘ্যাঁচাৎ করে কামড়াতে এল, কেউ বলে সাদা কাপড় পরে রাত দুপুরে হাতের ওপর হেঁটে যাচ্ছে, কেউ বলে আমগাছে এক পা আর জামগাছে আর এক পা দিয়ে—
বলটুদা বললে, বাজে বকিসনি। ধর, এই নিমগাছটায় একটা ভূত আছে—
এই দিন-দুপুরেই দারুণ চমকে আমি একবার নিমগাছটার দিকে চেয়ে দেখলুম”।
মাত্স্যন্যায়ের তত্ত্ব অনুসারেই বল্টুদা প্যালাকে জানায়—
“কিন্তু মনে কর, ভূত যদি তোকেই ধরে? মানে, তোকেই ধরতে পছন্দ করে যদি?
আমি দস্তুরমতো ঘাবড়ে গিয়ে বললুম, বলটুদা, এবার আমি বাড়ি চলে যাব”।
এরপর বল্টুদা জানায় তার কাহিনী সত্যঘটনা। টেনিদার মতো ভুজুং ভাজুং নয়। সে জানায়—
“আমার বড়দির বড় মেয়ে-দিল্লিতে জন্মেছে বলে যার নাম রাজধানী, ছোটবেলায় যাকে আমি ভুল করে ‘দাদখানি’ বলে ডাকতুম, আর বড়দি যাকে বলত ‘ধানী লঙ্কা’, তার বিয়ে হয়েছে এক কোলিয়ারির ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে। এবার পুজোর ছুটিতে আমি সেখানে বেড়াতে গিয়েছিলুম”।
ফেরার পথে আকণ্ঠ চর্ব্য-চোষ্য খেয়ে সে ট্রেনে উঠে পড়ে। এবং ঘুমিয়ে পড়ে।
“রাত তখন কত হয়েছে জানি না, হঠাৎ আমার চটকা ভাঙল। ভীষণ মশা কামড়াচ্ছে আর কী রকম একটা অদ্ভুত গন্ধ নাকে লাগছে। চমকে চেয়ে দেখি, গাড়িটা দাঁড়িয়ে রয়েছে। কামরায় নিতল অন্ধকার–গোটা চারেক আলো জ্বলছিল, পাখা ঘুরছিল, কিন্তু এখন আলো নেই, পাখাও চলছে না।”
আরও পড়ুন:
ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-৭: তোমরা যে সব বুড়ো খোকা
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-২৯: ডায়াবেটিসে কি আলু একদম বন্ধ?
যারা এগিয়ে আসে অথবা এগিয়ে আসে না, পরিস্থিতির সাপেক্ষে সকলেই নিমেষে এই কৈবল্য লাভ করতে পারে। তারা ছোট হয়ে যায় দলে। ছোট হয় নিজের কাছেও বুঝি খানিক।
ক্যাবলাদের এই ছোটবেলা আমার-আপনার, আমাদের-আপনাদের জীবনে কি উঁকি দিয়ে যায়?
যদি এই ক্যাবলামি আর শৈশব একসঙ্গে মেশে, তবে আমবাগানে ভূতের দেখা মেলে। কাহিনি লীলা মজুমদারের। একটি ছেলে সন্ধ্যাবেলায় ভালোরকম ভোজের নেমন্তন্ন পায়। সারাদিন প্রস্তুতি চলতে থাকে। জামাকাপড় ধোপদুরস্ত করে জুতো পালিশ করে মাথায় পাগড়ি বেঁধে যখন সে বেরোয় তখন সন্ধ্যা সমাসন্ন। বদনাম থাকা আমবাগানটা আলো থাকতে থাকতে পার হওয়া উচিত ছিল বলে তখন মনে হতে থাকে। তারপর ঘোর সন্ধ্যাবেলায় বড় বড় আমগাছের ফাঁকে যেন কীসের লম্বা লম্বা পা ফেলে চলাচল দেখতে থাকে সে। ভয় চেপে ধরে। অতঃপর…
নিমন্ত্রণ খাওয়া আর হয় না।
বল্টুদা প্যালারামকে এমন এটা গল্প শোনাতে থাকে।
“কেউ বলে, খামকা একটা কাটামুণ্ডু ঘ্যাঁচাৎ করে কামড়াতে এল, কেউ বলে সাদা কাপড় পরে রাত দুপুরে হাতের ওপর হেঁটে যাচ্ছে, কেউ বলে আমগাছে এক পা আর জামগাছে আর এক পা দিয়ে—
বলটুদা বললে, বাজে বকিসনি। ধর, এই নিমগাছটায় একটা ভূত আছে—
এই দিন-দুপুরেই দারুণ চমকে আমি একবার নিমগাছটার দিকে চেয়ে দেখলুম”।
মাত্স্যন্যায়ের তত্ত্ব অনুসারেই বল্টুদা প্যালাকে জানায়—
“কিন্তু মনে কর, ভূত যদি তোকেই ধরে? মানে, তোকেই ধরতে পছন্দ করে যদি?
আমি দস্তুরমতো ঘাবড়ে গিয়ে বললুম, বলটুদা, এবার আমি বাড়ি চলে যাব”।
এরপর বল্টুদা জানায় তার কাহিনী সত্যঘটনা। টেনিদার মতো ভুজুং ভাজুং নয়। সে জানায়—
“আমার বড়দির বড় মেয়ে-দিল্লিতে জন্মেছে বলে যার নাম রাজধানী, ছোটবেলায় যাকে আমি ভুল করে ‘দাদখানি’ বলে ডাকতুম, আর বড়দি যাকে বলত ‘ধানী লঙ্কা’, তার বিয়ে হয়েছে এক কোলিয়ারির ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে। এবার পুজোর ছুটিতে আমি সেখানে বেড়াতে গিয়েছিলুম”।
ফেরার পথে আকণ্ঠ চর্ব্য-চোষ্য খেয়ে সে ট্রেনে উঠে পড়ে। এবং ঘুমিয়ে পড়ে।
“রাত তখন কত হয়েছে জানি না, হঠাৎ আমার চটকা ভাঙল। ভীষণ মশা কামড়াচ্ছে আর কী রকম একটা অদ্ভুত গন্ধ নাকে লাগছে। চমকে চেয়ে দেখি, গাড়িটা দাঁড়িয়ে রয়েছে। কামরায় নিতল অন্ধকার–গোটা চারেক আলো জ্বলছিল, পাখা ঘুরছিল, কিন্তু এখন আলো নেই, পাখাও চলছে না।”
ক্যাবলাদের এই ছোটবেলা আমার-আপনার, আমাদের-আপনাদের জীবনে কি উঁকি দিয়ে যায়?
যদি এই ক্যাবলামি আর শৈশব একসঙ্গে মেশে, তবে আমবাগানে ভূতের দেখা মেলে। কাহিনি লীলা মজুমদারের। একটি ছেলে সন্ধ্যাবেলায় ভালোরকম ভোজের নেমন্তন্ন পায়। সারাদিন প্রস্তুতি চলতে থাকে। জামাকাপড় ধোপদুরস্ত করে জুতো পালিশ করে মাথায় পাগড়ি বেঁধে যখন সে বেরোয় তখন সন্ধ্যা সমাসন্ন। বদনাম থাকা আমবাগানটা আলো থাকতে থাকতে পার হওয়া উচিত ছিল বলে তখন মনে হতে থাকে। তারপর ঘোর সন্ধ্যাবেলায় বড় বড় আমগাছের ফাঁকে যেন কীসের লম্বা লম্বা পা ফেলে চলাচল দেখতে থাকে সে। ভয় চেপে ধরে। অতঃপর…
নিমন্ত্রণ খাওয়া আর হয় না।
বল্টুদা প্যালারামকে এমন এটা গল্প শোনাতে থাকে।
“কেউ বলে, খামকা একটা কাটামুণ্ডু ঘ্যাঁচাৎ করে কামড়াতে এল, কেউ বলে সাদা কাপড় পরে রাত দুপুরে হাতের ওপর হেঁটে যাচ্ছে, কেউ বলে আমগাছে এক পা আর জামগাছে আর এক পা দিয়ে—
বলটুদা বললে, বাজে বকিসনি। ধর, এই নিমগাছটায় একটা ভূত আছে—
এই দিন-দুপুরেই দারুণ চমকে আমি একবার নিমগাছটার দিকে চেয়ে দেখলুম”।
মাত্স্যন্যায়ের তত্ত্ব অনুসারেই বল্টুদা প্যালাকে জানায়—
“কিন্তু মনে কর, ভূত যদি তোকেই ধরে? মানে, তোকেই ধরতে পছন্দ করে যদি?
আমি দস্তুরমতো ঘাবড়ে গিয়ে বললুম, বলটুদা, এবার আমি বাড়ি চলে যাব”।
এরপর বল্টুদা জানায় তার কাহিনী সত্যঘটনা। টেনিদার মতো ভুজুং ভাজুং নয়। সে জানায়—
“আমার বড়দির বড় মেয়ে-দিল্লিতে জন্মেছে বলে যার নাম রাজধানী, ছোটবেলায় যাকে আমি ভুল করে ‘দাদখানি’ বলে ডাকতুম, আর বড়দি যাকে বলত ‘ধানী লঙ্কা’, তার বিয়ে হয়েছে এক কোলিয়ারির ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে। এবার পুজোর ছুটিতে আমি সেখানে বেড়াতে গিয়েছিলুম”।
ফেরার পথে আকণ্ঠ চর্ব্য-চোষ্য খেয়ে সে ট্রেনে উঠে পড়ে। এবং ঘুমিয়ে পড়ে।
“রাত তখন কত হয়েছে জানি না, হঠাৎ আমার চটকা ভাঙল। ভীষণ মশা কামড়াচ্ছে আর কী রকম একটা অদ্ভুত গন্ধ নাকে লাগছে। চমকে চেয়ে দেখি, গাড়িটা দাঁড়িয়ে রয়েছে। কামরায় নিতল অন্ধকার–গোটা চারেক আলো জ্বলছিল, পাখা ঘুরছিল, কিন্তু এখন আলো নেই, পাখাও চলছে না।”
আরও পড়ুন:
লাইট সাউন্ড ক্যামেরা অ্যাকশন, পর্ব-৭: গোদারের ব্রেথলেস ও প্যারিসের শঁসেলিজে
হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-৬: মজল আঁখি মজেছে মন, ইমোজি তোদের ডাকল যখন
বলটুদা বললে, হ্যাঁ-হ্যাঁ। আমি তোদের টেনিদার মতো বানিয়ে বানিয়ে গল্প বলি না, এ হল রিয়্যাল ভূতের ব্যাপার। আচ্ছা, এবারে বাড়ি যেতে পারিস”…
দর্শন অনেক দিন ধরেই রজ্জুতে সর্পভ্রমের তত্ত্ব ও ভ্রান্তিময় অধ্যাসকে বুঝিয়েছে। কিন্তু প্রকৃত-ই ক্যাবলা যারা তারা এসব তত্ত্বের ধার ধারে না। তাদের কৈবল্য ঘটেছে। অতয়েব কখন যে তারা কোন রূপে আত্মপ্রকাশ করবে, তা আগে থেকে অনুমান করা দর্শনের-ও অসাধ্য বটে।
তবে, ক্যাবলারা কি কেবলই ভয় পায়? আর ভূত কি সত্যি ই আছে না নেই? এই যে ভয়নামক এতবড় একটি অস্ত্র, তার মূলগত অজ্ঞেয় উত্সটি কি আদৌ বর্তমান? আরেকটি গল্প থেকেই আমরা উত্তর পেতে পারি। নাম ‘ভূত মানে ভূত’। লেখক পূর্বেরটির মতোই, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়।
“আয়, একটা ভীষণ ভূতের গল্প বলি।
আমি ভূত মানি না।
তবে যা-তোর শুনে কাজ নেই।
না-না বল, শুনি, কত বাজে গপ্পো বানাতে পারিস তুই।
আমি গল্প বানাই না। সদা সত্য কথা বলে থাকি। অবিশ্বাস হলে উঠে যা না, কে তোকে ঘাপটি মেরে বসে থাকতে বলেছে?”
এরপর, এক পোড়োবাড়ি আর কৃপণ উপোসমামার গল্প। উপোসমামা উপোস করে করে মারা গেলে ভূতের গল্প রটল। আর সেই রটনা পরখ করতে শক্তিমান বক্তা রাত বারোটার পরে গিয়ে নানারকম আওয়াজ, ডাল খসা, বাদুড়, বিড়াল, শেয়াল ইত্যাদির মুখোমুখি হতে থাকে এভাবে…
“তারপর?
ঘরের বারান্দায় শুনি কে যেন আসে। পা টিপে টিপে-সাবধানে। বুক চমকে উঠল। কে-কে আসে অমন করে? কার পদধ্বনি? এত রাতে–এই অন্ধকারে এই পোড়োবাড়িতে–কে আসে এত সাবধানে? সে কি ভূত? সে কি হত্যাকারী? কে?
কে?
একটা শেয়াল আসছিল। যেই বলেছি ভাগ্-দৌড়ে হাওয়া।
যাঃ।
ঘাবড়াসনি। আরও আছে। তারপর
তারপর?
ঘুরঘুট্টি অন্ধকার।
তারপর?
ঘুরঘুট্টি অন্ধকার।
তারপর—
ঘুরঘুট্টি…”
দর্শন অনেক দিন ধরেই রজ্জুতে সর্পভ্রমের তত্ত্ব ও ভ্রান্তিময় অধ্যাসকে বুঝিয়েছে। কিন্তু প্রকৃত-ই ক্যাবলা যারা তারা এসব তত্ত্বের ধার ধারে না। তাদের কৈবল্য ঘটেছে। অতয়েব কখন যে তারা কোন রূপে আত্মপ্রকাশ করবে, তা আগে থেকে অনুমান করা দর্শনের-ও অসাধ্য বটে।
তবে, ক্যাবলারা কি কেবলই ভয় পায়? আর ভূত কি সত্যি ই আছে না নেই? এই যে ভয়নামক এতবড় একটি অস্ত্র, তার মূলগত অজ্ঞেয় উত্সটি কি আদৌ বর্তমান? আরেকটি গল্প থেকেই আমরা উত্তর পেতে পারি। নাম ‘ভূত মানে ভূত’। লেখক পূর্বেরটির মতোই, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়।
“আয়, একটা ভীষণ ভূতের গল্প বলি।
আমি ভূত মানি না।
তবে যা-তোর শুনে কাজ নেই।
না-না বল, শুনি, কত বাজে গপ্পো বানাতে পারিস তুই।
আমি গল্প বানাই না। সদা সত্য কথা বলে থাকি। অবিশ্বাস হলে উঠে যা না, কে তোকে ঘাপটি মেরে বসে থাকতে বলেছে?”
এরপর, এক পোড়োবাড়ি আর কৃপণ উপোসমামার গল্প। উপোসমামা উপোস করে করে মারা গেলে ভূতের গল্প রটল। আর সেই রটনা পরখ করতে শক্তিমান বক্তা রাত বারোটার পরে গিয়ে নানারকম আওয়াজ, ডাল খসা, বাদুড়, বিড়াল, শেয়াল ইত্যাদির মুখোমুখি হতে থাকে এভাবে…
“তারপর?
ঘরের বারান্দায় শুনি কে যেন আসে। পা টিপে টিপে-সাবধানে। বুক চমকে উঠল। কে-কে আসে অমন করে? কার পদধ্বনি? এত রাতে–এই অন্ধকারে এই পোড়োবাড়িতে–কে আসে এত সাবধানে? সে কি ভূত? সে কি হত্যাকারী? কে?
কে?
একটা শেয়াল আসছিল। যেই বলেছি ভাগ্-দৌড়ে হাওয়া।
যাঃ।
ঘাবড়াসনি। আরও আছে। তারপর
তারপর?
ঘুরঘুট্টি অন্ধকার।
তারপর?
ঘুরঘুট্টি অন্ধকার।
তারপর—
ঘুরঘুট্টি…”
আরও পড়ুন:
ইতিহাস কথা কও, কোচবিহারের রাজকাহিনি, পর্ব-২: রাজাদের স্থাপত্য-কীর্তি ও রাজধানী
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৪৩: কোন কাননের ফুল ‘শ্যামলী’
বল্টুদা সত্য বলে না টেনিদা, ভূত সত্য না নিছক ক্যাবলামি, বল্টু বা টেনি সাহসী না ক্যাবলা, প্যালার মতো শ্রোতার দল সত্যিই ক্যাবলা নাকি তা নয় এসব ভাবতে ভাবতেই আমরা জানতে পারি, ওই মূলের কারণটি যা ভয়ের বা ক্যাবলামির মূলে সেটি…
“কী আর হবে? হয়রান হয়ে বাড়ি চলে এলুম।
আর ভূত?
ভূতই তো। ভূত মানে ভূত। মানে অতীত। মানে উপোসমামা অতীত হয়ে গিয়েছেন তিনি আর বর্তমান নেই। তাই তাঁর বাড়িতে আর তাঁকে দেখতে পেলুম না।
এই তোর ভূতের গপ্পো?
এই তো আসল ভূতের গল্প। ভূত মানে ভূত-মানে অতীত। মানে উপোসমামা আর বর্তমান নেই।”
দর্শন বলে কারণ থেকে কার্যোত্পত্তি, এখন কারণ যদি না থাকে অথবা নিষ্কারণ হয়ে যায়, তবে কার্য ভয় কি থাকে? থাকতে পারে ক্যাবলামি?
ক্যাবলামির তত্ত্ব এতো যুক্তির পথ ধরে হাঁটে না বলেই মনে হয়। যা কিছু ইন্দ্রিয়বেদ্য, তা অন্তিমে নিতান্তই আপাত ও আপেক্ষিক। তাই সকল ক্যাবলামি একই তত্ত্বসিদ্ধ নয়। সকল ক্যাবলামি যেমন বোকামি নয়, ভয়জনিত কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা নয়, দমন বা অবদমন নয়, তেমনই সকল ক্যাবলামিই যুক্তিনিষ্ঠ কারণসিদ্ধ স্বাভাবিক নয় মোটেই। এক মনস্তাত্ত্বিক দুর্জ্ঞেয় কার্যকারণহীনতা সেখানে থাকেই। রবীন্দ্রনাথ সেদিকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে ক্ষান্তবুড়ির দিদিশাশুড়িদের পাঁচবোনের কথা জানিয়েছেন যাদের উদ্ভট কাণ্ডকারখানা কোনওমতেই সামাজিক মানুষের স্বাভাবিক কাজ বলে মনে হবে না।
যারা নিজেরা নিন্দুকের ভয়ে লোহাসিন্দুকে থাকে, আর টাকাকড়িগুলো হাওয়া খাবে বলে খোলা জানলায় রেখে দেয়, তাদের সামাজিক বোধ ও সমাজের প্রকৃত মনোভাব নিয়ে নিমেষেই সন্দেহ জেগে ওঠে। এতক্ষণ যে সামাজিক লজ্জা থেকে অনুশাসনমুখী ক্যাবলামির উত্সারের তত্ত্ব গড়ে উঠছিল, তা যেন অকস্মাৎ বিপরীত হয়ে ওঠে। দিদিশাশুড়ীদের এই অদ্ভুত ক্যাবলামির মূলেও নিন্দার ভয়জনিত লজ্জা পুরোদমে, তবে তা সামাজিক আচারের বিপরীত কেন? নিন্দার ভয়ে অস্বস্তি থেকে প্রকাশ্যমান যে ক্যাবলামি তা সমাজ-অনুশাসন মেনে, অথচ দিদিশাশুড়ীদের যা করা উচিত বলেই মনে হয়, তার থেকে অন্যতর কাজ বা ক্যাবলামি করেই তারা নিন্দাবাদের ভয় এড়ায় কেন?
“তারে ধরি ধরি মনে করি ধরতে গেলেম আর পেলেম না”…। —চলবে।
ঋণ স্বীকার:
● ভুতুড়ে কামরা, ভূত মানে ভূত: নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
● আমবাগানের ভূত: লীলা মজুমদার
“কী আর হবে? হয়রান হয়ে বাড়ি চলে এলুম।
আর ভূত?
ভূতই তো। ভূত মানে ভূত। মানে অতীত। মানে উপোসমামা অতীত হয়ে গিয়েছেন তিনি আর বর্তমান নেই। তাই তাঁর বাড়িতে আর তাঁকে দেখতে পেলুম না।
এই তোর ভূতের গপ্পো?
এই তো আসল ভূতের গল্প। ভূত মানে ভূত-মানে অতীত। মানে উপোসমামা আর বর্তমান নেই।”
দর্শন বলে কারণ থেকে কার্যোত্পত্তি, এখন কারণ যদি না থাকে অথবা নিষ্কারণ হয়ে যায়, তবে কার্য ভয় কি থাকে? থাকতে পারে ক্যাবলামি?
ক্যাবলামির তত্ত্ব এতো যুক্তির পথ ধরে হাঁটে না বলেই মনে হয়। যা কিছু ইন্দ্রিয়বেদ্য, তা অন্তিমে নিতান্তই আপাত ও আপেক্ষিক। তাই সকল ক্যাবলামি একই তত্ত্বসিদ্ধ নয়। সকল ক্যাবলামি যেমন বোকামি নয়, ভয়জনিত কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা নয়, দমন বা অবদমন নয়, তেমনই সকল ক্যাবলামিই যুক্তিনিষ্ঠ কারণসিদ্ধ স্বাভাবিক নয় মোটেই। এক মনস্তাত্ত্বিক দুর্জ্ঞেয় কার্যকারণহীনতা সেখানে থাকেই। রবীন্দ্রনাথ সেদিকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে ক্ষান্তবুড়ির দিদিশাশুড়িদের পাঁচবোনের কথা জানিয়েছেন যাদের উদ্ভট কাণ্ডকারখানা কোনওমতেই সামাজিক মানুষের স্বাভাবিক কাজ বলে মনে হবে না।
যারা নিজেরা নিন্দুকের ভয়ে লোহাসিন্দুকে থাকে, আর টাকাকড়িগুলো হাওয়া খাবে বলে খোলা জানলায় রেখে দেয়, তাদের সামাজিক বোধ ও সমাজের প্রকৃত মনোভাব নিয়ে নিমেষেই সন্দেহ জেগে ওঠে। এতক্ষণ যে সামাজিক লজ্জা থেকে অনুশাসনমুখী ক্যাবলামির উত্সারের তত্ত্ব গড়ে উঠছিল, তা যেন অকস্মাৎ বিপরীত হয়ে ওঠে। দিদিশাশুড়ীদের এই অদ্ভুত ক্যাবলামির মূলেও নিন্দার ভয়জনিত লজ্জা পুরোদমে, তবে তা সামাজিক আচারের বিপরীত কেন? নিন্দার ভয়ে অস্বস্তি থেকে প্রকাশ্যমান যে ক্যাবলামি তা সমাজ-অনুশাসন মেনে, অথচ দিদিশাশুড়ীদের যা করা উচিত বলেই মনে হয়, তার থেকে অন্যতর কাজ বা ক্যাবলামি করেই তারা নিন্দাবাদের ভয় এড়ায় কেন?
“তারে ধরি ধরি মনে করি ধরতে গেলেম আর পেলেম না”…। —চলবে।
ঋণ স্বীকার:
* ক্যাবলাদের ছোটবেলা (kyablader-chotobela): লেখক: ড. অভিষেক ঘোষ (Abhishek Ghosh) সহকারী অধ্যাপক, বাগনান কলেজ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগ থেকে স্নাতকস্তরে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত। স্নাতকোত্তরের পর ইউজিসি নেট জুনিয়র এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ পেয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগে সাড়ে তিন বছর পূর্ণসময়ের গবেষক হিসাবে যুক্ত ছিলেন। সাম্বপুরাণের সূর্য-সৌরধর্ম নিয়ে গবেষণা করে পিএইচ. ডি ডিগ্রি লাভ করেন। আগ্রহের বিষয় ভারতবিদ্যা, পুরাণসাহিত্য, সৌরধর্ম, অভিলেখ, লিপিবিদ্যা, প্রাচ্যদর্শন, সাহিত্যতত্ত্ব, চিত্রকলা, বাংলার ধ্রুপদী ও আধুনিক সাহিত্যসম্ভার। মৌলিক রসসিক্ত লেখালেখি মূলত: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়ে চলেছে বিভিন্ন জার্নাল ও সম্পাদিত গ্রন্থে। সাম্প্রতিক অতীতে ডিজিটাল আর্ট প্রদর্শিত হয়েছে আর্ট গ্যালারিতে, বিদেশেও নির্বাচিত হয়েছেন অনলাইন চিত্রপ্রদর্শনীতে। ফেসবুক পেজ, ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে নিয়মিত দর্শকের কাছে পৌঁছে দেন নিজের চিত্রকলা। এখানে একসঙ্গে হাতে তুলে নিয়েছেন কলম ও তুলি। লিখছেন রম্যরচনা, অলংকরণ করছেন একইসঙ্গে।