অলঙ্করণ: লেখক।
কথা হচ্ছিল হাতি নিয়ে। কথা হচ্ছিল ক্যাবলাদের নিয়েও। আসলে, কথাটা ক্যাবলাদের নিয়েই।
মানুষ নিজেকে ক্যাবলা ভাবতে চায়? মানুষ কাদের ক্যাবলা ভাবতে চায়? মানুষ নিজের জান্তব প্রবৃত্তিকে স্বীকার করে?
উত্তরটা যদি এরকম হয় যে, মানুষ কদাপি নিজেকে ক্যাবলা ভাবতে চায় না। নিজের ত্রুটিকে ক্যাবলামি ভেবে সে বিব্রত হয়। চেষ্টা করে, নিজের সেই ছোট ছোট আশ্চর্য বিচলনগুলোকে আড়াল ও অস্বীকার করতে, যদি স্বীকার করতেও হয় বা, মেনে নেওয়া যায় কি? বাইরে যা ভুল, মনের গভীরে তাকেই “তাতে ক্ষতি কি” ভেবে আত্মপ্রসাদ।
আবার, অন্য মানুষকেই সে ক্যাবলা ভেবে বড় সুখ পায়, খানিক উপদেশে দাবড়ে দিয়ে যারপরনাই জর্জরিত করে, রসাতলে যাওয়ার সদুপদেশে মণ্ডিত করে ও “তোমাকে ছাড়াও আমার দিব্যি চলে যাবে”র মার্গদর্শন ঘটিয়ে, সমষ্টি বিনষ্টির তত্ত্ব কপচিয়ে, খানিক বিরক্তিমিশ্রিত হতাশা ব্যক্ত করে, সামান্য ভুলে অসামান্য ক্ষতির বিপর্যয়-বার্তা শুনিয়ে কখনও বিব্রত হয়, বিচলিত হয় অন্যের ক্যাবলামিতে, যতটা বাহ্যতঃ হয়, সত্যিই কি ততটা হয় মনে মনে?
মনের মধ্যে যে দামাল হাতিগুলো লাফায়-ঝাঁপায়, শিকল কেটে বেরিয়ে যেতে চায়, দলিত-মথিত করে দিতে চায় সবকিছু; তাদের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে যে সংক্ষোভ, যে উন্মাদনা আর কলরবগুলো নেহাত ক্যাবলামি হয়ে উঠে অসম্ভবের প্রেরণায় স্বতোত্সার হিসাবহীন পাগলামি হয়ে আবোল-তাবোল ক্ষ্যাপার গান শোনায়। সমাজ একে ‘নন-সেন্স’ বলতে পারে, বলতে পারে বেতালা খেয়াল-খুশি, বেয়াড়া সৃষ্টিছাড়া নিয়মহারা যাচ্ছেতাই কিছু ; তবুও সুদূরে মনভাসানো সেই অসম্ভবের সচ্ছন্দ সম্ভাবনার আজগুবি চাল আর ক্ষ্যাপার গানগুলো যদি কখনও দিনের শেষে সত্য হয়ে উঠে মাপা-চাপা চেনা জগতের খবরদারির জানা-শোনা ছকে একটা সাইক্লোন অথবা সুনামি আনে?
সুদাম দাসের হাতিখোঁজার পাগলামিতে তেমন কিছুই কি ছিল নাকি? নির্বিষ চোখ-নখ-শিং-দাঁতহীন দুধভাত খাওয়া সাপকে ডাণ্ডা মেরে ঠাণ্ডা করার বদলে এমন ক্যাবলামি কেন জেগে ওঠে?
হস্তিনাপুরের একচ্ছত্র মহীপতি দুষ্যন্ত যখন একটা ধাবমান হরিণের পিছু পিছু প্রবেশ করলেন কণ্বের শকুন্তলার তপোবনে, ক্রমে ক্রমে জানা গেল, এক মত্তহস্তীর তাণ্ডব আরম্ভ হয়েছে তপোবনে, ততক্ষণে শকুন্তলার মনে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর ছায়া ফেলছেন রাজা, রাজার মানসলোকে সকল অপার্থিব রূপ আর সৌন্দর্য-সম্ভোগের ডালি নিয়ে মেদ-মাংস-মজ্জা-শোণিতে মাখা শরীরী শকুন্তলা প্রকট হয়ে উঠছেন, ক্রমেই যেন মনে হচ্ছে রাজভোগের চেনা স্বাদের থেকে বন্য তিন্তিড়ি এক অপরিমেয় সুস্বাদ বহন করে আনছে। একটা মত্ত হস্তী যেন রামগিরি পর্বতের সানুদেশে উন্মাদ হয়েছে নববর্ষার জলের গন্ধে।
মানুষ নিজেকে ক্যাবলা ভাবতে চায়? মানুষ কাদের ক্যাবলা ভাবতে চায়? মানুষ নিজের জান্তব প্রবৃত্তিকে স্বীকার করে?
উত্তরটা যদি এরকম হয় যে, মানুষ কদাপি নিজেকে ক্যাবলা ভাবতে চায় না। নিজের ত্রুটিকে ক্যাবলামি ভেবে সে বিব্রত হয়। চেষ্টা করে, নিজের সেই ছোট ছোট আশ্চর্য বিচলনগুলোকে আড়াল ও অস্বীকার করতে, যদি স্বীকার করতেও হয় বা, মেনে নেওয়া যায় কি? বাইরে যা ভুল, মনের গভীরে তাকেই “তাতে ক্ষতি কি” ভেবে আত্মপ্রসাদ।
আবার, অন্য মানুষকেই সে ক্যাবলা ভেবে বড় সুখ পায়, খানিক উপদেশে দাবড়ে দিয়ে যারপরনাই জর্জরিত করে, রসাতলে যাওয়ার সদুপদেশে মণ্ডিত করে ও “তোমাকে ছাড়াও আমার দিব্যি চলে যাবে”র মার্গদর্শন ঘটিয়ে, সমষ্টি বিনষ্টির তত্ত্ব কপচিয়ে, খানিক বিরক্তিমিশ্রিত হতাশা ব্যক্ত করে, সামান্য ভুলে অসামান্য ক্ষতির বিপর্যয়-বার্তা শুনিয়ে কখনও বিব্রত হয়, বিচলিত হয় অন্যের ক্যাবলামিতে, যতটা বাহ্যতঃ হয়, সত্যিই কি ততটা হয় মনে মনে?
মনের মধ্যে যে দামাল হাতিগুলো লাফায়-ঝাঁপায়, শিকল কেটে বেরিয়ে যেতে চায়, দলিত-মথিত করে দিতে চায় সবকিছু; তাদের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে যে সংক্ষোভ, যে উন্মাদনা আর কলরবগুলো নেহাত ক্যাবলামি হয়ে উঠে অসম্ভবের প্রেরণায় স্বতোত্সার হিসাবহীন পাগলামি হয়ে আবোল-তাবোল ক্ষ্যাপার গান শোনায়। সমাজ একে ‘নন-সেন্স’ বলতে পারে, বলতে পারে বেতালা খেয়াল-খুশি, বেয়াড়া সৃষ্টিছাড়া নিয়মহারা যাচ্ছেতাই কিছু ; তবুও সুদূরে মনভাসানো সেই অসম্ভবের সচ্ছন্দ সম্ভাবনার আজগুবি চাল আর ক্ষ্যাপার গানগুলো যদি কখনও দিনের শেষে সত্য হয়ে উঠে মাপা-চাপা চেনা জগতের খবরদারির জানা-শোনা ছকে একটা সাইক্লোন অথবা সুনামি আনে?
সুদাম দাসের হাতিখোঁজার পাগলামিতে তেমন কিছুই কি ছিল নাকি? নির্বিষ চোখ-নখ-শিং-দাঁতহীন দুধভাত খাওয়া সাপকে ডাণ্ডা মেরে ঠাণ্ডা করার বদলে এমন ক্যাবলামি কেন জেগে ওঠে?
হস্তিনাপুরের একচ্ছত্র মহীপতি দুষ্যন্ত যখন একটা ধাবমান হরিণের পিছু পিছু প্রবেশ করলেন কণ্বের শকুন্তলার তপোবনে, ক্রমে ক্রমে জানা গেল, এক মত্তহস্তীর তাণ্ডব আরম্ভ হয়েছে তপোবনে, ততক্ষণে শকুন্তলার মনে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর ছায়া ফেলছেন রাজা, রাজার মানসলোকে সকল অপার্থিব রূপ আর সৌন্দর্য-সম্ভোগের ডালি নিয়ে মেদ-মাংস-মজ্জা-শোণিতে মাখা শরীরী শকুন্তলা প্রকট হয়ে উঠছেন, ক্রমেই যেন মনে হচ্ছে রাজভোগের চেনা স্বাদের থেকে বন্য তিন্তিড়ি এক অপরিমেয় সুস্বাদ বহন করে আনছে। একটা মত্ত হস্তী যেন রামগিরি পর্বতের সানুদেশে উন্মাদ হয়েছে নববর্ষার জলের গন্ধে।
সেই “ভুলের ভবে” অসম্ভবের ছন্দ বন্ধনমোচনের মহাসঙ্গীতে মেশে। হয়তো একই কথা বলতে চায় অন্য ভাবে আর ভাষায়, অথবা কথাগুলো আর কথামাত্র থাকে না, গান হয়ে ওঠে। সেই ভুল করে ভুল করে ফেলার অচেতন আবেগ অথবা সচেতন মহাবিচ্যুতির ক্যাবলামিগুলোর বুনিয়াদী ভিত্তি হয়তো বা জমাট হতে থাকে মানুষের আন্তরসত্তায় আর চরিত্রের গভীর থেকে গভীরতর লোকে।
“আরে–কে এটা!
আমি দামু এজ্ঞে–জ্যান্ত তালগাছ কান পর্যন্ত দাঁত ছড়িয়ে দিয়ে হাসল : আমায় চিনতে পারলেন না? আপনার দামু–সুদাম দাস। চিনব কী করে–যা জগদ্দল পাগড়ি চাপিয়েছিস মাথায়! তার ওপরে ওই ঠ্যাঙা। হিঁ-হিঁ–দামু আরও খুশি হল: এজ্ঞে পাইক হয়ে যাচ্ছি যে আপনার। একটু সাজগোজ করে যাব না?
সে তো বুঝতেই পারছি–পঞ্চানন ব্যাজার হয়ে গেলেন: তোকে সঙ্গে করে নিয়ে যাব? তুই যে এক নম্বরের ভণ্ডুলরামকী করতে কী করে বসবি তার ঠিক নেই।”
এই দামু তার “রুনকু দিদি”কে জানাবে যে তার জন্য একটা আস্ত হাতি দরজার বাইরেই বুঝি খাড়া আছে, তাতে চড়েই তার আদরের “রুনকু দিদি”, মা-মরা বাপের আদুরে জেদি মেয়ে তার দাদুর বাড়ি যাবে।
জেদ করে বাস্তবকে অস্বীকার করা আর নিখাদ ক্যাবলামির বলে তাকে না বোঝার যে বাস্তবতা, এদের মধ্যে দূরত্ব বুঝি ওই উনিশ-বিশ, যাহা বাহান্ন তাহাই তিপ্পান্ন, তাই ওই জেদের জন্য বাহবা বাহবা বেশ বেশ আর ক্যাবলাদের জন্য?
“তবু ভুরু কুঁচকে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলেন পঞ্চানন। সন্দেহ নেই, দামু মানুষ ভালো। কিন্তু মুস্কিল হচ্ছে, একটু বেশি রকমেরই ভালো। তারও মা-বাপ নেই, আছে কেবল এক মাসি। সে মাসি লোকের বাড়ির কাজকর্ম করে, ধান-টান ভেনে দিয়ে কোনওমতে দিন চালায়। দামু সেই মাসির আদরেই আছে, নইলে এতদিনে তার যে কী হাল হত জোর করে সেকথা বলা শক্ত।
ছেলেটা দারুণ হাবা। একবার কে যেন বলেছিল, দেখে এলাম, আমড়া গাছতলায় তোর ডান কানটা পড়ে আছে–তাই শুনে, নিজের কান পরখ না করেই, আধ মাইল দূরের আমড়াতলায় কান কুড়োতে ছুটেছিল দামু। আর-একবার, তার নিজের বাড়ি থেকে পঞ্চাশ গজ দূরে, কে যেন তার মাথায় একটা চাঁটি মেরে বলেছিল–তুই তো আর বাড়ি যেতে পারবি না, তুই হারিয়ে গেছিস–আর তাই শুনে পাক্কা দেড় ঘন্টা দামু সেখানে দাঁড়িয়ে ঘ্যানঘ্যান করে কেঁদেছিল: ওগো-আমি কেমন করে বাড়ি যাব গো–আমি যে হারিয়ে গেছি-মাসি গো…”
কিন্তু ক্যাবলাদেরও বুদ্ধিতে পাক ধরে, পাকাপোক্ত ব্যাপারে তারা হাতির নিচে নামে না, গরীবের ঘোড়ারোগ বলে যে কথাটা হাওয়ায় ওড়ে, ক্যাবলারা সে সবের থেকে অনেক উচ্চমার্গে বিরাজ করে…
“আরে–কে এটা!
আমি দামু এজ্ঞে–জ্যান্ত তালগাছ কান পর্যন্ত দাঁত ছড়িয়ে দিয়ে হাসল : আমায় চিনতে পারলেন না? আপনার দামু–সুদাম দাস। চিনব কী করে–যা জগদ্দল পাগড়ি চাপিয়েছিস মাথায়! তার ওপরে ওই ঠ্যাঙা। হিঁ-হিঁ–দামু আরও খুশি হল: এজ্ঞে পাইক হয়ে যাচ্ছি যে আপনার। একটু সাজগোজ করে যাব না?
সে তো বুঝতেই পারছি–পঞ্চানন ব্যাজার হয়ে গেলেন: তোকে সঙ্গে করে নিয়ে যাব? তুই যে এক নম্বরের ভণ্ডুলরামকী করতে কী করে বসবি তার ঠিক নেই।”
এই দামু তার “রুনকু দিদি”কে জানাবে যে তার জন্য একটা আস্ত হাতি দরজার বাইরেই বুঝি খাড়া আছে, তাতে চড়েই তার আদরের “রুনকু দিদি”, মা-মরা বাপের আদুরে জেদি মেয়ে তার দাদুর বাড়ি যাবে।
জেদ করে বাস্তবকে অস্বীকার করা আর নিখাদ ক্যাবলামির বলে তাকে না বোঝার যে বাস্তবতা, এদের মধ্যে দূরত্ব বুঝি ওই উনিশ-বিশ, যাহা বাহান্ন তাহাই তিপ্পান্ন, তাই ওই জেদের জন্য বাহবা বাহবা বেশ বেশ আর ক্যাবলাদের জন্য?
“তবু ভুরু কুঁচকে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলেন পঞ্চানন। সন্দেহ নেই, দামু মানুষ ভালো। কিন্তু মুস্কিল হচ্ছে, একটু বেশি রকমেরই ভালো। তারও মা-বাপ নেই, আছে কেবল এক মাসি। সে মাসি লোকের বাড়ির কাজকর্ম করে, ধান-টান ভেনে দিয়ে কোনওমতে দিন চালায়। দামু সেই মাসির আদরেই আছে, নইলে এতদিনে তার যে কী হাল হত জোর করে সেকথা বলা শক্ত।
ছেলেটা দারুণ হাবা। একবার কে যেন বলেছিল, দেখে এলাম, আমড়া গাছতলায় তোর ডান কানটা পড়ে আছে–তাই শুনে, নিজের কান পরখ না করেই, আধ মাইল দূরের আমড়াতলায় কান কুড়োতে ছুটেছিল দামু। আর-একবার, তার নিজের বাড়ি থেকে পঞ্চাশ গজ দূরে, কে যেন তার মাথায় একটা চাঁটি মেরে বলেছিল–তুই তো আর বাড়ি যেতে পারবি না, তুই হারিয়ে গেছিস–আর তাই শুনে পাক্কা দেড় ঘন্টা দামু সেখানে দাঁড়িয়ে ঘ্যানঘ্যান করে কেঁদেছিল: ওগো-আমি কেমন করে বাড়ি যাব গো–আমি যে হারিয়ে গেছি-মাসি গো…”
কিন্তু ক্যাবলাদেরও বুদ্ধিতে পাক ধরে, পাকাপোক্ত ব্যাপারে তারা হাতির নিচে নামে না, গরীবের ঘোড়ারোগ বলে যে কথাটা হাওয়ায় ওড়ে, ক্যাবলারা সে সবের থেকে অনেক উচ্চমার্গে বিরাজ করে…
আরও পড়ুন:
ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-১৪: আমার মন বলে চাই চাই
রিভিউ: ‘ঘুমর’ আসলে জীবনকে ফিরে পাওয়ার গল্প
“এখন অবশ্য দামুর কুড়িবাইশ বছর বয়েস হয়েছে, অতটা ক্যাবলামিও আর নেই, কিন্তু তাই বলে বুদ্ধিটা যে খুব পেকে উঠেছে তা-ও বলতে পারা যায় না। এখনও দামু যদি হাটে-বাজারে জিনিস কিনতে যায়-ধরো, সে দশ পয়সার কুমডোফালি আর আট পয়সার ঝিঙে কিনে দোকানিকে একটা আধুলি, মানে পঞ্চাশ পয়সা দিয়েছে তা হলে দোকানি হয়তো এইভাবে তাকে হিসেব বুঝিয়ে দেবে: দশ পয়সা আর আট পয়সায় হল চব্বিশ পয়সা-তুমি দিয়েছ-পঞ্চাশ-চব্বিশ আর বারোতে হল পঞ্চাশ–ঠিক তো? (দামু সঙ্গে সঙ্গে মাথা নাড়ল, হিসেব ঠিক আছে) তা হলে এই নাও বারো পয়সা ফেরত–আর দামু নাচতে নাচতে ওই বারো পয়সাই ফেরত নিয়ে আসবে। এ-হেন একটি সঙ্গীকে নিয়ে–পঞ্চানন ইতস্তত করতে লাগলেন।”
বুকুর ছেনুমাসি আর বেণুমাসির সঙ্গে আসা ডাম্বল বন্ধ আলমারির চাবি-তালা উপড়ে খুলে যাবতীয় বই খুঁজেও ছবির বই না পেয়ে হতোদ্যম হয়ে বসে পড়ে। বুকুর জিজ্ঞাসার উত্তরে ডাম্বল জানায় আলমারি সে ভাঙেনি, গুঁড়িয়ে ছাতু করে শুধু খুলেছে বৈ আর তো কিছু নয়! কিন্তু বুকুর সেজোকাকার বই মাটিতে রাখার সাহস সে ধরে দেখে বুকু আশ্চর্য হয়ে পারে না। যে বইতে ছবি নেই সেই হতচ্ছাড়া বইগুলোর মাটিই জায়গা, এমন মনোভাব ডাম্বল প্রকাশ করলে “বুকু গম্ভীরভাবে বলে, ছবি থাকবে কি জন্যে? ও কি ছোটদের বই? ও তো বড়দের বই। যেমন হাতির মতো চেহারা তোমার তেমন হাতির মতো বুদ্ধি। আচ্ছা আসুক না সেজোকাকা; মজা দেখিয়ে দেবেন একেবারে। পিঠের ছাল তুলবেন তোমার।”
কাহিনী আশাপূর্ণা দেবীর। গল্পের নাম “কী করে বুঝবো”…
সত্যিই, সব বোঝা যায় না তো। যারা সব বোঝে বলে তারা কি সত্যিই সঅঅবটাই বোঝে? যারা বোঝে না তারাই নেহাত ক্যাবলা? আদৌ কি তারা নির্বোধ?
ছেনুমাসি আর বেণুমাসি অপলক চোখে বুকুর কথা শোনেন, মনে মনে তার মুণ্ডপাত করেন, মুখে ডাম্বলকে শাসন করে বইগুলো তুলে রাখতে বলেন। “কী অসভ্য ছেলে বাবা! কথা নয় তো, যেন ইটপাটকেল! ছেলেকে কী শিক্ষাই দিয়েছে নির্মলা।”
বুকুর ছেনুমাসি আর বেণুমাসির সঙ্গে আসা ডাম্বল বন্ধ আলমারির চাবি-তালা উপড়ে খুলে যাবতীয় বই খুঁজেও ছবির বই না পেয়ে হতোদ্যম হয়ে বসে পড়ে। বুকুর জিজ্ঞাসার উত্তরে ডাম্বল জানায় আলমারি সে ভাঙেনি, গুঁড়িয়ে ছাতু করে শুধু খুলেছে বৈ আর তো কিছু নয়! কিন্তু বুকুর সেজোকাকার বই মাটিতে রাখার সাহস সে ধরে দেখে বুকু আশ্চর্য হয়ে পারে না। যে বইতে ছবি নেই সেই হতচ্ছাড়া বইগুলোর মাটিই জায়গা, এমন মনোভাব ডাম্বল প্রকাশ করলে “বুকু গম্ভীরভাবে বলে, ছবি থাকবে কি জন্যে? ও কি ছোটদের বই? ও তো বড়দের বই। যেমন হাতির মতো চেহারা তোমার তেমন হাতির মতো বুদ্ধি। আচ্ছা আসুক না সেজোকাকা; মজা দেখিয়ে দেবেন একেবারে। পিঠের ছাল তুলবেন তোমার।”
কাহিনী আশাপূর্ণা দেবীর। গল্পের নাম “কী করে বুঝবো”…
সত্যিই, সব বোঝা যায় না তো। যারা সব বোঝে বলে তারা কি সত্যিই সঅঅবটাই বোঝে? যারা বোঝে না তারাই নেহাত ক্যাবলা? আদৌ কি তারা নির্বোধ?
ছেনুমাসি আর বেণুমাসি অপলক চোখে বুকুর কথা শোনেন, মনে মনে তার মুণ্ডপাত করেন, মুখে ডাম্বলকে শাসন করে বইগুলো তুলে রাখতে বলেন। “কী অসভ্য ছেলে বাবা! কথা নয় তো, যেন ইটপাটকেল! ছেলেকে কী শিক্ষাই দিয়েছে নির্মলা।”
আরও পড়ুন:
কলকাতার পথ-হেঁশেল, পর্ব-৪: হাজরা মোড়ে নাম না জানা কচুরিখানা
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৪৭: সে কোন প্রভাতে হইল মোর সাধের ‘নবজন্ম’
কৌটিল্য বিদ্যার প্রতিশব্দ জানিয়েছিলেন, “বিনয়”… অবিনীত রাজা আর দুর্বিনীত রাজপুত্র, দুজনেই বিনষ্টি ডেকে আনে। রাজা স্বয়ং রাজ্যসহ বিনষ্ট হন, বিদ্যাহীন রাজপুত্র অথবা অবিনয়ী, উদ্ধত, বিপথগামী রাজপুত্রের দল রাজার মৃত্যু ডেকে আনতে পারে গুপ্তহত্যায়, প্রজাবিদ্রোহে, অন্তঃকলহে, গৃহযুদ্ধে। কেউ কেউ বলবেন, “স্বদেশে পূজ্যতে রাজা, বিদ্বান্ সর্বত্র পূজ্যতে”, তবু বিদ্যেবোঝাই গুরুমশায়ের নৌকা ডোবে, কেউ কেউ বলেন, “লেখাপড়া করে যে, গাড়িচাপা পড়ে সে”, কেউ কেউ বলবেন “গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে”…. অথবা “বিদ্যালাভে লোকসান, নাই অর্থ নাই মান”… কথাগুলো খুব কষে পণ্ডিতি করা ফুটোস্কোপধারী আনাচে কানাচে ‘স্কোপ’ খুঁজে চলা বিদ্যাধরদের জন্য নয়।
এই যে, শিক্ষা-দীক্ষা-বিদ্যা-অবিদ্যার নিরন্তর দ্বন্দ্ব, পঙ্গু মন, অন্ধ আবেগ, বিভ্রান্ত অন্তঃকরণ নিয়ে দৃষ্টিহীন নিশ্চেতন সপ্রাণ জড়সত্তা নিরালোক তমিস্রায় মহাবিপর্যয়ের ক্ষণ গণনা করে চলে। সেই তারা “জ্ঞান দাও, ভক্তি দাও, বিবেক দাও, বৈরাগ্য দাও, দৃষ্টি দাও” এমন বলার মতো হৃদয়বত্তা বহন করে না, বহন করে না “উত্তিষ্ঠত জাগ্রত প্রাপ্য বরান্ নিবোধত” বলার মতো মানসিক শক্তি, তাদের শিক্ষা থাকলেও দীক্ষা নেই, মন থাকলেও মনন নেই, তারা ব্রতী হয়েও নিজের কাছেই ব্রাত্য; তারা সফল হয়েও সার্থক নয়, তারা রাজা অমরশক্তির পুত্রদের মতোই বিজ্ঞ হয়েও মূর্খ, তাদের পঞ্চতন্ত্রের পাঠ কোনও সকালের দিকে নিয়ে চলে নাকি ইশোপনিষদে বলা সেই উপাসকদের মতোই তারা ডুবে যেতে থাকে আরও আরও গভীর নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে “ততো ভূয় ইব তে তমো য উ বিদ্যায়াং রতাঃ…”
বুকুর মা যখন ছেনুমাসিদের অভ্যর্থনা করে চলেন, বুকু অবাক হয়ে দেখতে থাকে সেই আশ্চর্য আত্মপ্রবঞ্চনার আসর, “ওমা! আমার কী ভাগ্য! ছেনুমাসি বেণুমাসি যে! এতদিনে বুঝি মনে পড়ল, আমি তো ভেবেছিলাম, ভুলেই গিয়েছ আমাকে, সত্যি কতকাল পরে দেখা কী আনন্দ যে হচ্ছে কী করে বলব! এত ভালো লাগছে ছেনুমাসি”… মায়ের এই অসম্ভব সত্যভাষণে বুকু ফ্যালফেলিয়ে তাকিয়ে থাকে, মায়ের এই “ফিল গুডের” ভাবকে দীর্ঘায়িত হতেই দেয় না সে…
“কথা শেষ হতেই বলে ওঠে, ও কী মা? এই মাত্তর যে বললে-বাবারে, শুনে গা জ্বলে গেল! অসময়ে লোক বেড়াতে আসা। ভালো লাগে না-এখন আবার ভালো লাগছে বলছ কেন?”
ক্যাবলামি কি সত্যবাদ? ক্যাবলামি কি স্বার্থপরতা? ক্যাবলামি কি বোকা বোকা ভাবাবেগ? আলোটুকু মুছে দেওয়ার ঔদ্ধত্য? নিরুচ্চার ক্ষ্যাপামি? নিরুত্তাপ নিস্পৃহ যাপন? অস্থির হৃদয়বৈকল্য? ঘাস-জলের জন্য রথের চাকা ভেঙে খাদের দিকে ছুটে চলা ঘোড়া? মায়াহরিণ? মৃগতৃষ্ণিকায় ছুটে চলা শ্বাপদের দীর্ঘশ্বাস?
এই যে, শিক্ষা-দীক্ষা-বিদ্যা-অবিদ্যার নিরন্তর দ্বন্দ্ব, পঙ্গু মন, অন্ধ আবেগ, বিভ্রান্ত অন্তঃকরণ নিয়ে দৃষ্টিহীন নিশ্চেতন সপ্রাণ জড়সত্তা নিরালোক তমিস্রায় মহাবিপর্যয়ের ক্ষণ গণনা করে চলে। সেই তারা “জ্ঞান দাও, ভক্তি দাও, বিবেক দাও, বৈরাগ্য দাও, দৃষ্টি দাও” এমন বলার মতো হৃদয়বত্তা বহন করে না, বহন করে না “উত্তিষ্ঠত জাগ্রত প্রাপ্য বরান্ নিবোধত” বলার মতো মানসিক শক্তি, তাদের শিক্ষা থাকলেও দীক্ষা নেই, মন থাকলেও মনন নেই, তারা ব্রতী হয়েও নিজের কাছেই ব্রাত্য; তারা সফল হয়েও সার্থক নয়, তারা রাজা অমরশক্তির পুত্রদের মতোই বিজ্ঞ হয়েও মূর্খ, তাদের পঞ্চতন্ত্রের পাঠ কোনও সকালের দিকে নিয়ে চলে নাকি ইশোপনিষদে বলা সেই উপাসকদের মতোই তারা ডুবে যেতে থাকে আরও আরও গভীর নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে “ততো ভূয় ইব তে তমো য উ বিদ্যায়াং রতাঃ…”
বুকুর মা যখন ছেনুমাসিদের অভ্যর্থনা করে চলেন, বুকু অবাক হয়ে দেখতে থাকে সেই আশ্চর্য আত্মপ্রবঞ্চনার আসর, “ওমা! আমার কী ভাগ্য! ছেনুমাসি বেণুমাসি যে! এতদিনে বুঝি মনে পড়ল, আমি তো ভেবেছিলাম, ভুলেই গিয়েছ আমাকে, সত্যি কতকাল পরে দেখা কী আনন্দ যে হচ্ছে কী করে বলব! এত ভালো লাগছে ছেনুমাসি”… মায়ের এই অসম্ভব সত্যভাষণে বুকু ফ্যালফেলিয়ে তাকিয়ে থাকে, মায়ের এই “ফিল গুডের” ভাবকে দীর্ঘায়িত হতেই দেয় না সে…
“কথা শেষ হতেই বলে ওঠে, ও কী মা? এই মাত্তর যে বললে-বাবারে, শুনে গা জ্বলে গেল! অসময়ে লোক বেড়াতে আসা। ভালো লাগে না-এখন আবার ভালো লাগছে বলছ কেন?”
ক্যাবলামি কি সত্যবাদ? ক্যাবলামি কি স্বার্থপরতা? ক্যাবলামি কি বোকা বোকা ভাবাবেগ? আলোটুকু মুছে দেওয়ার ঔদ্ধত্য? নিরুচ্চার ক্ষ্যাপামি? নিরুত্তাপ নিস্পৃহ যাপন? অস্থির হৃদয়বৈকল্য? ঘাস-জলের জন্য রথের চাকা ভেঙে খাদের দিকে ছুটে চলা ঘোড়া? মায়াহরিণ? মৃগতৃষ্ণিকায় ছুটে চলা শ্বাপদের দীর্ঘশ্বাস?
আরও পড়ুন:
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-১০: দশমহাবিদ্যা ও ঠাকুরের কালীভাবনা…
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-১২: সুন্দরবনের আর এক ব্যাঘ্রদেবতা বড় খাঁ গাজী
বুকুর এই “সত্য বৈ মিথ্যা বলিব না”র ঋতভাষণে যদি মা নিমেষেই বুঝে যান হাটে হাঁড়ি ভাঙা ঠিক কী বস্তু তাহলে কি ছেলেকে তিনি ক্যাবলা ভাববেন, গাল টিপে আদর করবেন, ভুবনের মাসির মতো চোখটি বুজে থাকবেন না চোখ কপালে তুলে দেওয়া হতভাগা সর্বনেশে ছেলের “আস্পর্দ্ধা” দেখে কথা হারিয়ে ফেলবেন?
রুনকু দিদি যখন দেখল তার দামুদাদার কথামতো আসল আস্ত হাতি দরজায় দাঁড়িয়ে মোটেই শুঁড় নাড়াচ্ছে না, বরং মোটরগাড়ির হর্ণের তারস্বর তাড়া দিচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে তখন সে বেঁকে বসল।
“দামু প্রমাদ গনল। ভাবগতিক দেখে তার নিরেট মগজটাও একটু করে সাফ হতে আরম্ভ করেছিল। দামু বুঝতে পারল, কাজটা খুব কাঁচা হয়ে গেছে। বড়লোকের আদুরে নাতনিকে হাতিমাকা গল্প বলা আদৌ বুদ্ধিমানের কাজ হয়নি।
দন্তবিকাশ করে, খানিকটা হেঁ-হেঁ আওয়াজ তুলে, মাথা-টাথা চুলকে দামু বললে, ওই হে-হে। রুনকু দিদি, ও আমি একটুখানি ঠাট্টা করেছিলাম। এবার না হয় মোটর গাড়ি চেপেই দাদুর বাড়ি চলল, তারপর দেখেশুনে একটা দাঁতওলা পেল্লায় হাতি—
আর বলতে হল না। রুনকু একেবারে সোজা বসে পড়ল ধুলোর ওপর। তারপর হাত-পা ছুঁড়ে শুরু হল দাপাদাপি–মোটর গাড়ি ছাই, মোটর গাড়ি বিচ্ছিরি আমাকে হাতি এনে দাও, এক্ষুনি এনে দাও…
তার পরের ব্যাপার আর না বলাই ভালো। মা-মরা নাতনিকে একটু বেশিই প্রশ্রয় দিয়েছিলেন ত্রিলোচন, কিছুতেই তার জেদ ভাঙানো গেল না।”
রুনকুর দামুদাদা খুঁজে পাবে একটা হাতি?
অথবা বুকু বুঝতে পারবে?
মেদুর বর্ষার অল্প আলোয় মেঘমণ্ডিত মহাকাশের তলে তলে হাতির ব্যাকুল মত্ততা, অঙ্কুশ তাড়নার বেদনায় অধীর দিক্-বারণের নভোবিদারণ অথবা হস্তীমূর্খের বাগাড়ম্বর—যেন তপোবনের নীরব শান্তির প্রেক্ষাপটে এক বিপুল বিক্ষোভ, ইন্দ্রিয়মত্ততার উদযাপনেই
“হরিণা বৈরী”র ফল্গুস্রোত। তবুও হস্তির পায়ের বেড়ি ভেঙে “তোমরা গেইলে কি আসিবেন মোর মাহুত বন্ধু রে?”
ঋণ স্বীকার:
● শিরোনাম: চন্দ্রবিন্দুর গান থেকে
● আবোল-তাবোল: সুকুমার রায়
● পঞ্চাননের হাতি: নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
● কী করে বুঝবো: আশাপূর্ণা দেবী
রুনকু দিদি যখন দেখল তার দামুদাদার কথামতো আসল আস্ত হাতি দরজায় দাঁড়িয়ে মোটেই শুঁড় নাড়াচ্ছে না, বরং মোটরগাড়ির হর্ণের তারস্বর তাড়া দিচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে তখন সে বেঁকে বসল।
“দামু প্রমাদ গনল। ভাবগতিক দেখে তার নিরেট মগজটাও একটু করে সাফ হতে আরম্ভ করেছিল। দামু বুঝতে পারল, কাজটা খুব কাঁচা হয়ে গেছে। বড়লোকের আদুরে নাতনিকে হাতিমাকা গল্প বলা আদৌ বুদ্ধিমানের কাজ হয়নি।
দন্তবিকাশ করে, খানিকটা হেঁ-হেঁ আওয়াজ তুলে, মাথা-টাথা চুলকে দামু বললে, ওই হে-হে। রুনকু দিদি, ও আমি একটুখানি ঠাট্টা করেছিলাম। এবার না হয় মোটর গাড়ি চেপেই দাদুর বাড়ি চলল, তারপর দেখেশুনে একটা দাঁতওলা পেল্লায় হাতি—
আর বলতে হল না। রুনকু একেবারে সোজা বসে পড়ল ধুলোর ওপর। তারপর হাত-পা ছুঁড়ে শুরু হল দাপাদাপি–মোটর গাড়ি ছাই, মোটর গাড়ি বিচ্ছিরি আমাকে হাতি এনে দাও, এক্ষুনি এনে দাও…
তার পরের ব্যাপার আর না বলাই ভালো। মা-মরা নাতনিকে একটু বেশিই প্রশ্রয় দিয়েছিলেন ত্রিলোচন, কিছুতেই তার জেদ ভাঙানো গেল না।”
রুনকুর দামুদাদা খুঁজে পাবে একটা হাতি?
অথবা বুকু বুঝতে পারবে?
মেদুর বর্ষার অল্প আলোয় মেঘমণ্ডিত মহাকাশের তলে তলে হাতির ব্যাকুল মত্ততা, অঙ্কুশ তাড়নার বেদনায় অধীর দিক্-বারণের নভোবিদারণ অথবা হস্তীমূর্খের বাগাড়ম্বর—যেন তপোবনের নীরব শান্তির প্রেক্ষাপটে এক বিপুল বিক্ষোভ, ইন্দ্রিয়মত্ততার উদযাপনেই
“হরিণা বৈরী”র ফল্গুস্রোত। তবুও হস্তির পায়ের বেড়ি ভেঙে “তোমরা গেইলে কি আসিবেন মোর মাহুত বন্ধু রে?”
ঋণ স্বীকার:
* ক্যাবলাদের ছোটবেলা (kyablader-chotobela): লেখক: ড. অভিষেক ঘোষ (Abhishek Ghosh) সহকারী অধ্যাপক, বাগনান কলেজ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগ থেকে স্নাতকস্তরে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত। স্নাতকোত্তরের পর ইউজিসি নেট জুনিয়র এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ পেয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগে সাড়ে তিন বছর পূর্ণসময়ের গবেষক হিসাবে যুক্ত ছিলেন। সাম্বপুরাণের সূর্য-সৌরধর্ম নিয়ে গবেষণা করে পিএইচ. ডি ডিগ্রি লাভ করেন। আগ্রহের বিষয় ভারতবিদ্যা, পুরাণসাহিত্য, সৌরধর্ম, অভিলেখ, লিপিবিদ্যা, প্রাচ্যদর্শন, সাহিত্যতত্ত্ব, চিত্রকলা, বাংলার ধ্রুপদী ও আধুনিক সাহিত্যসম্ভার। মৌলিক রসসিক্ত লেখালেখি মূলত: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়ে চলেছে বিভিন্ন জার্নাল ও সম্পাদিত গ্রন্থে। সাম্প্রতিক অতীতে ডিজিটাল আর্ট প্রদর্শিত হয়েছে আর্ট গ্যালারিতে, বিদেশেও নির্বাচিত হয়েছেন অনলাইন চিত্রপ্রদর্শনীতে। ফেসবুক পেজ, ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে নিয়মিত দর্শকের কাছে পৌঁছে দেন নিজের চিত্রকলা। এখানে একসঙ্গে হাতে তুলে নিয়েছেন কলম ও তুলি। লিখছেন রম্যরচনা, অলংকরণ করছেন একইসঙ্গে।