শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


কৈলাসে চা পান। চা পান মানে শুধু চা পান করা নয়, চা এবং পান পাতা সেবনের হাস্যরসাত্মক এক নাটককৈলাসে চা পান। আশাপূর্ণা দেবীর সাহিত্যনির্ভর গল্প অবলম্বনে ডাঃ অমিতাভ ভট্টাচার্যের রচনা এবং নির্দেশনায় এই নাটকটি বেলঘরিয়া থিয়েটার অ্যাকাডেমির এক অনন্য উপস্থাপন। আশাপূর্ণা দেবীর রচনা নিয়ে ইতিপূর্বে অনেক সিনেমা ইত্যাদি হয়েছে, কিন্তু নাটক সেভাবে খুব একটা হয়নি। মহাদেব মর্তে এসে পান পাতা সেবন করে পানের নেশায় পড়ে গেলেন, একইভাবে চা সেবন করে মা দুর্গারও ধরল চায়ের নেশা। শিব আর দুর্গা এমন অভিনব জিনিস এর আগে তো কখনও খাননি, তাই তাঁরা ঠিক করলেন সমস্ত দেবতাদের ডেকে তাঁরা চা আর পানের একটি পার্টি দেবেন। চা আর পান দিয়ে ভোজসভা! কীভাবে সম্ভবপর হল এমন ঘটনাটি! তারই মজাদার কাহিনিবিন্যাস নাটকের ছত্রে ছত্রে। পৌরাণিক চরিত্রগুলিকে অবলম্বন করে নাটক নির্মাণ হলেও, এই সকল চরিত্রের প্রতীকে নাটকটিতে মিশে আছে বর্তমান সমাজের নানা দিক। আমাদের মানবজীবনের মোড়কে পৌরাণিক চরিত্রগুলিকে সাজানো হয়েছে। বেলঘরিয়া থিয়েটার অ্যাকাডেমির প্রতিটি সদস্যের অভিনয় দক্ষতা বড়ই চিত্তাকর্ষক। শুধু সংলাপের ঘনঘটায় নয়, নৃত্য-গীত-বাদনের সমাবেশে এবং অভিনব মঞ্চসজ্জায় নাটকটি এক অন্য আঙ্গিকে উপস্থাপিত হয়েছে। অতিমারির আবহে আমরা সবাই হাসতে ভুলে গেছি। করোনা যে শুধু আমাদের শরীরে প্রবেশ করেছে তা নয়, বিপর্যস্ত আমাদের প্রত্যেকের মন-মানসিকতা। এহেন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে নির্মল হাস্যরসের এই পরিবেশনাটি কিছুক্ষণের জন্য হলেও আমাদের ভুলিয়ে দেয় বাস্তবের কঠোরতা। প্রাণখোলা হাসিতে, আনন্দে ১৩ ফেব্রুয়ারির সন্ধ্যাটি সকল দর্শককে সজীব করে তুলেছে।
দুর্গার চরিত্রে সোমা চক্রবর্তী, বিজয়ার ভূমিকায় মনীষা মুখোপাধ্যায়, মহাদেব সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, নন্দী ও ভৃঙ্গী যথাক্রমে তিলক নাথ থান্ডার ও সুব্রত সরকার, যমরাজ শিবনাথ আচার্য, পঞ্চু ও বিরিঞ্চি সোমনাথ মণ্ডল ও বাসুদেব পাল, সভা গায়িকা ধৃতিকণা ভট্টাচার্য, ব্রহ্মা ডাঃ অমিতাভ ভট্টাচার্য, বাচ্চাভূত ইন্দ্রজা চক্রবর্তী, সভার হারমোনিয়াম ও ঢোলবাদকের ভূমিকায় গৌতম চক্রবর্তী ও গোপাল চক্রবর্তী। এছাড়া সমগ্র নাটকটি প্রযোজনা ও নিয়ন্ত্রণ করেছেন ধৃতিকণা ভট্টাচার্য। নেপথ্য সহযোগিতায় এই সমগ্র অনুষ্ঠানটিকে যাঁরা সর্বাঙ্গসুন্দর করে তুলেছেন তাঁরা হলেন, আবহসংগীত এবং গানের সুর অমিত ঘোষ ও গৌতম চক্রবর্তী, আলোক পরিকল্পনা ও শয্যায় বাবলু চৌধুরি, রূপসজ্জা ও পোশাক বিশ্বনাথ মাইতি, কোরিওগ্রাফি বাসুদেব পাল। নাটকের গীতিকার ডাঃ অমিতাভ ভট্টাচার্য, যন্ত্রানুষঙ্গে সানি কর্মকার ও গোপাল চক্রবর্তী, নামাঙ্কন রঞ্জন দত্ত, মঞ্চ নির্মাণ সনাতন হাজরা (গদাই)।

Skip to content