শনিবার ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫


তরুণ মজুমদার

ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন পরিচালক তরুণ মজুমদার। সোমবার রাতেই তাঁর রাইলস টিউব খুলে নেওয়া হয়েছে। যদিও গলায় ব্যথা থাকায় লিখে নিজের ভাব প্রকাশ করার চেষ্টা করছেন তিনি। তবে কেউ কথা বললে তিনি সাড়াও দিচ্ছেন। এখনও ‘সিসিইউ’-তেই রয়েছেন। পরিচালককে উডবার্ন ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করার কথা এখনই চিকিৎসকরা ভাবছেন না। এসএসকেএম হাসাপাতাল সূত্রে এও জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল নাগাদ পরিচালকের এমআরআই করা হয়েছে।
৯২ বছরের পরিচালক তরুণ মজুমদার প্রায় ১০ দিন ধরে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাঁর একাধিক শারীরিক সমস্যার চিকিৎসা চলছে। পরিচালকের চিকিৎসার দায়িত্বে আছেন মেডিসিনের চিকিৎসক সৌমিত্র ঘোষ, চেস্ট মেডিসিনের চিকিৎসক সোমনাথ কুণ্ডু, নেফ্রলজিস্ট অর্পিতা রায়চৌধুরি, নিউরো মেডিসিনের চিকিৎসক বিমান রায়, কার্ডিওলজিস্ট সরোজ মণ্ডলের মতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তরুণ মজুমদারের আচ্ছন্নভাব কাটাতে যে স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়েছিল তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে ভাবছেন চিকিৎসকরা। তাঁর চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপিরও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁকে স্পিচ থেরাপির সাহায্যে কথা বলানোর চেষ্টা চলছে। এদিকে তাঁর দীর্ঘদিন ধরে কিডনির সমস্যা থাকলেও এখন ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা কম বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবারের পরে আর ডায়ালিসিস করতে হয়নি। কিছুদিন আগে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির খুব অবনতি হলে তাঁকে ভেন্টিলেশনে দিতে হয়েছিল। যদিও তা অল্প সময়ের মধ্যে খুলে নেওয়া হয়।
পরিচালককে বিভিন্ন সময় হাসপাতেলে এসে দেখে গিয়েছেন শহরের বিশিষ্টরা। গত বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন যাওয়ার পথে তরুণ মজুমদারকে দেখে গিয়েছেন। বিমান বসু, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়দের মতো রাজনীতিকরা যান পরিচালককে দেখতে।
উল্লেখ্য, পরিচালক তরুণ মজুমদার প্রথমে শচীন মুখোপাধ্যায় এবং দিলীপ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘যাত্রিক’ নামে একটি দল তৈরি করে ছবি পরিচালনার কাজ আরম্ভ করেন। এরপর আর একসঙ্গে নয়, নিজেই একের পর এক ছবি পরিচালনা করতে শুরু করেন। সত্তর দশকের অন্যতম সেরা পরিচালক কেমিস্ট্রির ছাত্র তরুণ মজুমদার ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘বালিকা বধূ’, ‘কাচের স্বর্গ’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’, কুহেলি, ফুলেশ্বরী, ‘আপন আমার আপন’, পলাতক, নিমন্ত্রণ, সংসার সীমান্তে ‘চাঁদের বাড়ি’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’, ‘আলো’-সহ একাধিক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন দর্শকদের। এর মধ্যে ‘কাচের স্বর্গ’ ছবির জন্য ১৯৬২ সালে তিনি জাতীয় পুরস্কারও পান। এছাড়াও তিনি পদ্মশ্রী সম্মান পেয়েছেন।

Skip to content