বুধবার ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪


কৌতুকশিল্পী রাজু শ্রীবাস্তব।

বলিউডের কৌতিকশিল্পী রাজু শ্রীবাস্তব প্রয়াত। মৃত্যু কালে তার বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি দিল্লির এইমসে ভর্তি ছিলেন। মঙ্গলবার সকাল নাগাদ দিল্লীর এইমসের রাজু শ্রীবাস্তবের মৃত্যু হয়। গত ১০ আগস্ট বুকে ব্যথা নিয়ে রাজু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। জিমে ট্রেড মিল করার সময়ে হঠাৎই পড়ে যান এই কমেডি শিল্পী। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে নয়াদিল্লির এইমস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। প্রথম দিকে তাঁর অবস্থার বেশ অবনতি হলেও পরে ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হচ্ছিলেন।
তবে গত ১ সেপ্টেম্বর ফের তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। সেদিন থেকেই শিল্পী ভেন্টিলেশনে ছিলেন। মাঝে প্রচণ্ড জ্বরের কারণে তাঁকে ভেন্টিলেশন থেকে বার করা হয়েছিল। ৪১ দিন ধরে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। তবুও জীবন যুদ্ধের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জেতা হল না তাঁর। হার মানলেন তিনি। চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তাঁর অকাল মৃত্যুতে শোকাহত বলি থেকে টলিপাড়া।
রাজুর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক অনিল মুরারকা জানিয়েছিলেন, গত ১০ আগস্ট বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর একের পর এক শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছিল তাঁর। হার্ট অ্যাটাকের পর প্রথমে তাঁর অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি হয়। দু’টি স্টেন্টও বসে। কিন্তু তাতে হার্ট সচল হলেও তিনি সুস্থ হননি। অবস্থার অবনতি দেখে তাঁকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টেই রাখা হয়। প্রায় ১৫ দিন ভেন্টিলেশনে থাকার পর ২৫ সেপ্টেম্বর তাঁর জ্ঞান ফেরে। এর পর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু গত ১ সেপ্টেম্বর কৌতিক শিল্পী আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। জ্বরের কারণে তাঁকে ফের ভেন্টিলেশন দেওয়া হয়। ২০ দিন ভেন্টিলেশনেই ছিলেন তিনি। কিন্তু বুধবার সকালে আর সঙ্গ দেয়নি তাঁর শরীর। হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন জনপ্রিয় কৌতুকশিল্পী।
আরও পড়ুন:

ছোটদের যত্নে: সন্তান জ্বরে ভুগছে? কী ভাবে সামলাবেন? রইল ঘরোয়া চিকিৎসার খুঁটিনাটি

আপনার হাড় দুর্বল হয়ে গিয়েছে? এই চারটি যোগাসন নিয়মিত করছেন তো?

উল্লেখ্য, ১৯৬৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর কানপুরে জন্ম হয় রাজু শ্রীবাস্তবের। বাবা রমেশচন্দ্র শ্রীবাস্তব ছিলেন কানপুরের প্রখ্যাত কবি। ছেলের নাম রেখেছিলেন সত্যপ্রকাশ শ্রীবাস্তব। কিন্তু তাঁকে সকলে রাজু নামেই ডাকতেন। ছোটবেলা থেকেই রাজু সবাইকে হাসাতে ভালোবাসতেন। বিভিন্ন মানুষজনের নকল করতে পারতেন। ছোটবেলা থেকেই রাজু কমেডিয়ান হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। তাঁর কৌতুক শিল্পের বেশ কদর ছিল কানপুরে। অনেকেই কারণে-অকারণে তাঁকে ডেকে নিতেন। এক সময় কানপুরে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন রাজু। মঞ্চে তাঁর উপস্থিতি অগণিত দর্শকদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলত।
কিন্তু তিনি বলিউডে নিজের জায়গা তৈরি করতে চেয়েছিলেন। বলিউডের টানেই তিনি মায়ানগরী মুম্বইয়ে পাড়ি দেন। স্ট্যান্ড কমেডি শো ছাড়াও বেশ কয়েকটি হিন্দি ছবিতে কমিক রোলে অভিনয় করেছিলেন রাজু। ম্যায়নে প্যার কিয়া, বম্বে টু গোয়া, আমদানি আঠানি খরচা রূপাইয়া, বাজিগর তার অন্যতম। ২০০৫ সালে রিয়েলিটি স্ট্যান্ড-আপ কমেডি শো দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার চ্যালেঞ্জের প্রথম সিজনে অংশগ্রহণ করার পর খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তিনি। তাঁর ‘গজোদর ভাইয়া’ চরিত্র অত্যন্ত জনপ্রিয়।
সম্প্রতি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন রাজু। প্রথমে সমাজবাদী পার্টি তাঁকে ভোটে লড়ার টিকিট দিয়েছিল। কিন্তু পরে তিনি তা ফেরত দিয়ে দেন। পরবর্তীকালে বিজেপিতে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘স্বচ্ছ ভারত’ অভিযানের অঙ্গ ছিলেন তিনি। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি উত্তরপ্রদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।

Skip to content