সোমবার ৮ জুলাই, ২০২৪


প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার

ভেন্টিলেশন থেকে আর ফেরা হল না। এসএসকেএম হাসপাতালেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন বর্ষীয়ান পরিচালক তরুণ মজুমদার। সোমবার সকাল ১১টা ১৭ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। চলচ্চিত্র পরিচালক কিডনি, হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যা ছাড়াও দীর্ঘ দিন ধরে একাধিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। তাঁকে গত ১৪ জুন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উডবার্ন ওয়ার্ড থেকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে তাঁকে স্থানান্তর করা হয়। এর পর সেখানে প্রবীণ পরিচালকের অবস্থার সামান্য উন্নতিও হয়েছিল। কিন্তু ফের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত রবিবার তাঁকে আবার ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখতে হয়। অনেক চেষ্টা করেও সেখান থেকে আর চিকিৎসকরা তাঁকে ফেরাতে পারেননি।
৯২ বছরের পরিচালকের তরুণ মজুমদারের চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন মেডিসিনের চিকিৎসক সৌমিত্র ঘোষ, চেস্ট মেডিসিনের চিকিৎসক সোমনাথ কুণ্ডু, নেফ্রলজিস্ট অর্পিতা রায়চৌধুরী, নিউরো মেডিসিনের চিকিৎসক বিমান রায়, কার্ডিওলজিস্ট সরোজ মণ্ডলের মতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
পরিচালককে বিভিন্ন সময় হাসপাতেলে এসে দেখে গিয়েছেন শহরের বিশিষ্টরা। গত বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন যাওয়ার পথে তরুণ মজুমদারকে দেখে গিয়েছেন। বিমান বসু, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়দের মতো রাজনীতিকরা যান পরিচালককে দেখতে।
উল্লেখ্য, পরিচালক তরুণ মজুমদার প্রথমে শচীন মুখোপাধ্যায় এবং দিলীপ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘যাত্রিক’ নামে একটি যৌথ দল তৈরি করে ছবি পরিচালনার কাজ আরম্ভ করেন। এরপর আর একসঙ্গে নয়, নিজেই একের পর এক ছবি পরিচালনা করতে শুরু করেন। সত্তর দশকের অন্যতম সেরা পরিচালক কেমিস্ট্রির ছাত্র তরুণ মজুমদার ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘বালিকা বধূ’, ‘কাচের স্বর্গ’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’, কুহেলি, ফুলেশ্বরী, ‘আপন আমার আপন’, পলাতক, নিমন্ত্রণ, সংসার সীমান্তে ‘চাঁদের বাড়ি’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’, ‘আলো’-সহ একাধিক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন দর্শকদের। এর মধ্যে ‘কাচের স্বর্গ’ ছবির জন্য ১৯৬২ সালে তিনি জাতীয় পুরস্কারও পান। এছাড়াও তিনি ১৯৯০ সালে পদ্মশ্রী সম্মান পেয়েছেন।
বিশিষ্ট পরিচালক তরুণ মজুমদারের জন্ম ১৯৩১ সালে, ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলার বগুড়ায়। বাবা বীরেন্দ্রনাথ মজুমদার একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী। কলকাতাতেই পড়াশোনা। সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল মিশন কলেজ এবং স্কটিশ চার্চ কলেজে পর রসায়নের ছাত্র তরুণ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। পড়াশোনা শেষ করার কয়েক বছর পর ১৯৫৯ সালে মাত্র ২৮ বছর বয়েসে ফিল্ম জগতে পদার্পণ পরিচালকের।

Skip to content